উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
২৬তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২৭)
পরিঃ ১২ টা বেজে গেছে আরাফ। তুমি তোমার রুমে পৃথিবীতে যাওয়ার রাস্তা পাবে। নবনিকে নিয়ে চলে যাও। দরজা শুধু রাত ১২ টায় খুলে ৩ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যাবে। এই দরজা ভাইয়া ছাড়া আর কেউ আনতে পারবেনা। তোমরা তাড়াতাড়ি যাও।
আরাফঃ চল নবনি।
নবনিঃ হুম।কিন্তু পরি!
পরিঃ এইজন্যই বুঝি ভাইয়া তোমাকে এত ভালোবেসেছে। আমি তোমার বাচ্চাকে মারতে চাইলাম। তোমাকে মারতে চাইলাম। আর তুমি আমার জন্য ভাবছো। তুমি কি দিয়ে তৈরি?
আরাফঃ তাড়াতাড়ি চলো নবনি।
নবনিঃ তোমার যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে মনে কইরো। পরি। তোমার ভাই না থাকলেও এই বোন আসে। পৃথিবীতে তুমি একা না। আমি আর আরাফ সব সময় আসি।
পরিঃ ধন্যবাদ নবনি ভাবি। আমি তোমাকে ভাবী ডাকবো। আর আরাফ কে ভাইয়া। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি প্রতিশোধ প্রবনতায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। এখন আমি বুঝতে পারছি আমি কি পেতে গিয়ে কি হারালাম। আমার জন্য চিন্তা করো না। আমি এখন থেকে ভাইয়ার ফেলে যাওয়া রাজ্যের দেখাশোনা করবো। যতদিন না ভাইয়া ফিরে আসে।
আরাফঃ ফিরে আসবে মানে!!
পরি মুচকি হাসলো।
পরিঃ তাড়াতাড়ি যাও। তোমরা।
নবনি আর আরাফ রুমে যেয়ে দেখলো দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাদের যেতে যেতে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো।
আরাফঃOh no.
আরাফ আর নবনি খেয়াল করলো একটা নীল আলো দরজায় পরছে আর দরজা খুলে যায়।আরাফ আর নবনি দরজা দিয়ে দুনিয়ায় এসে পরলো।
আরাফঃ নীল রশ্মি কি করে আসলো?
নবনিঃ মেহরাব হয়তো কিছু করে রেখেছিল।
আরাফঃ হতে পারে। চলো বাসায়।
নবনি আর আরাফ ফিরে আসে বাসায়।খান বাড়িতে উৎসব শুরু হয়।নবনির বাবা নবনিকে জড়িয়ে ধরেন।আরাফ তার বাবাকে কল দিয়ে জানিয়ে দেয়।তারা ফিরে এসেছে।
আরাফঃ শশুর ফাদার সব আদর কি মেয়েকেই করবা? ছেলের দাম নেই?
আসাদ খানঃহা হা হা।তুমি না থাকলে তো নবনিকেই ফিরে পেতাম না।এসো বুকে।
আসাদ খান দুই জন কেই জড়িয়ে নেয়।
আদর চৌধুরী আর নিলীমা চৌধুরী আসেন খান বাড়িতে।
আরাফ তার মাকে দেখে অবাক হলো।নিলীমা চৌধুরী শুকিয়ে গিয়েছেন অনেক।চোখের নিচটা কালো হয়ে গিয়েছে।৪ মাস পর মাকে দেখে আরাফ।
নিলীমা চৌধুরীঃনবনি মা।আমাকে ক্ষমা করে দাও।তোমাদের ছাড়া চৌধুরী বাড়ি শূন্য হয়ে আছে।আমার সাথে বাসায় চলো।
আরাফ কিছুই বললো না।
নবনি আরাফ এর হাত তা মায়ের হাতে দিলো।
নবনিঃআমরা অবশ্যই যাবো।আরাফ যা হয়েছে ভুলে যান।উনি মা হয়ে ক্ষমা চাইতে পারলে। আমরা সন্তান হয়ে মাফ করতে পারবো না?
আরাফ ওর মাকে জড়িয়ে ধরে।কোনো সন্তানই মা ছাড়া ভালো থাকতে পারে না।আরাফ ও ছিল না।
আদর চৌধুরীঃ কেমন আছো নবনি মা?
নবনিঃ খুব ভালো আছি বাবা।
আরাফঃ আমাকে কেউ ভালোইবাসে না এখানে?
আদর চৌধুরীঃ কেমন আছিস হতচ্ছারা?
আরাফঃআজকে থেকে এই সব নামে ডাকা বাদ দাও।আমার ছেলে মেয়ের সামনে মানসম্মান থাকবে না।
আদর চৌধুরীঃএভাবে বলছিস যেন বাবা হয়ে গিয়েছিস?
আরাফঃ বাবা।
আদর চৌধুরীঃকিহ!!?
আরাফঃশশুর Father.
আসাদ খানঃকিহ!!??
আরাফঃবাবারা।
আসাদ খান আর আদর চৌধুরীঃ😒
আরাফঃ বাবারা। আমি তো বাবা হয়ে গিয়েছি😁
নবনি লজ্জা পেয়ে রুমে চলে গেলো।
আদর চৌধুরী আর আসাদ খান একসাথে বললোঃ কিহহহহহহহ!!!
আরাফঃ জ্বীহ। হা হা হা।
আদর চৌধুরীঃ আমি দাদা হবো। যা আমি তো বুড়ো হয়ে গেলাম।
নিলীমা চৌধুরীঃ ভালোই হইসে। আমি আমার Handsome দাদুভাইয়ের সাথে ঘুরবো।হুহ
আদর চৌধুরীঃ🥺
নিলয়ঃআমি চাচ্চু হচ্ছি দোস্ত।
ওয়ারদাঃআর আমি খালামনি।😄
নবনি আর ওয়ারদা বাসায় ঢোকার সময় সব শুনতে পেলো।
আরাফঃতুই চাচ্চু হইতে যাবি কেন?তুই তো হবি শশুর। 😂😂
নিলয়ঃ😒আমি এটা মেনে নিবো না।এটার ডিসিশনতো আমার মেয়েই করবে।
আরাফঃহা হা হা। দেখা যাবে।
নবনি জায়নামাজ এ বসে দোয়ার হাত তুলেছে।
_আল্লাহ তুমি আমাকে যা দিয়েছো সেটার জন্য তোমার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া।তোমার কাছে আমার একটাই চাওয়া তুমি মেহরাবকে জান্নাতি কইরো।তাকে তুমি ভালো রেখো।মেহরাব এর ভালোবাসা ছিল ফুলের মতো পবিত্র।কিন্তু সে আমাকে ভালোবেসে ভুল করেছে।কারন আমি ছিলাম বিবাহিত। তুমি উনার গুনাহগুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখো।আমার সন্তানগুলোকে নেক বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করো।
আমীন।
নবনি মোনাজাত শেষে ডান দিকে ফিরে দেখে আরাফ ও মোনাজাত শেষ করলো।
নবনিঃকখন আসলেন?
আরাফঃযখন মোনাজাতে ছিলা।
নবনিঃকিছু খাবেন?
আরাফঃনা।আমি খাবো না।খাবে তো তুমি।
নবনিঃআমিই?
আরাফঃহ্যা। এখন থেকে বেশি বেশি করে খেতে হবে।তোমার জন্য একবার।বাবুদের জন্য। আরো ২ বার।
নবনিঃ😒
আরাফঃকি খাবা বলো?
নবনিঃঘুমাবো।আরাফ।অনেক ঘুম পাচ্ছে।
আরাফঃআচ্ছা।
৩ মাস পরঃ
নবনির ফোন বেজেই যাচ্ছে।কিন্তু নবনির তাতে কোন হেলদোল নেই।আরাফ অনেক আগেই অফিসে চলে গিয়েছে।বাবুরা আসার পর থেকে নবনির ঘুম বেড়ে গেছে।সারাদিনই খালি ঘুম পায়।এখনো উঠতে ইচ্ছে করছে না।নবনি খুব কষ্টে চোখ খুলে ফোনটা রিসিভ করলো।
নবনিঃহ্যালো।কে রে এত সকালে ঘুমটা নষ্ট করলো।
ওয়ারদাঃআমি তোর একমাত্র এতিম বান্ধবী।
নবনিঃনিলয় ভাইয়া থাকতে তুই নিজেকে এতিম বলিস কেন রে!!?
ওয়ারদাঃএতিম নাতো কি ? সারা ভার্সিটিতে এতিম এর মতো ঘুরছি।কথা বলার মতো একটা ফ্রেন্ডও নেই।আমার থেকে গরিব আর কেই বা আসে।আর তুই তো বিয়ে কইরা পড়ালেখা তাকে উঠিয়েছিস।বাসায়ই পইরা থাকবি না ভার্সিটিতেও আসবি?
নবনিঃআসতেসি রাখ।
নবনি উঠে আরাফকে কল দিলো।কিন্তু আরাফ ধরলো না।কিছুদিন যাবত আরাফ খুব ব্যাস্ত হয়ে পরেছে।নবনির সাথে ৫ মিনিট কথা বলার মতো সময়টাও তার নেই।আরাফ একসাথে খান ইন্ডাস্ট্রি আর চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি চালাচ্ছে।সকালটা খান ইন্ডাস্ট্রি তে কাটলে বিকেল টা চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রিতে কাটে।বেচারা দুই দিকে সামলে হাপিয়া উঠছে।রাজ খান ও অফিসে যায় আরাফ এর জোরাজোরিতে। আরাফ চাচ্ছে রাজকে কাজ শিখিয়ে খান ইন্ডাস্ট্রি বুঝিয়ে দিতে।নবনি সব বুঝেও বাচ্চাদের মতো আচরন করে আজকাল।প্রেগ্ন্যানসি নবনিকে বদলে দিয়েছে।
আরাফ কল ব্যাক করে।
নবনিঃকি দরকার ছিল।কল দেয়ার। না দিলেও পারতেন।
আরাফঃএকটু ব্যস্ত ছিলাম।নবনি পাখি। রাগ করো না।
নবনিঃআমাকে তো এখন আর ভালো লাগেনা।মোটা হয়ে গেসি না!!
আরাফঃকই মোটস হইসো?আমি বলসি ভালো লাগেনা?😑😕
নবনিঃবুঝি বুঝি।সবই বুঝি।২ অফিস চালান। এখনতো মেয়েদের লাইন লেগে গিয়েছে।আর আমি তো মোটা পচা হয়ে যাচ্ছি।আমাকে ভালো লাগবে কি করে!
আরাফঃনবনি আমার মিটিং আছে। পরে কথা বলছি।
আরাফ কল রেখে দিলো।নবনি রেগে বোম হয়ে গেলো।জিদ দেখিয়ে গাড়ি না নিয়েই ভার্সিটির দিকে হাটা ধরলো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
২৮তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন