উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৫৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৫৪)

আরাফ বাইরে আসতেই তানভীর আরাফকে চেপে ধরে।
তানভীরঃআপনি আমাকে এতো জোরে পায়ে বাড়ি মারলেন কেন?
আরাফঃকি বলতেসিলি ভিতরে?আমার বউ এর পিছন পিছন ঘুরবি?আর আরাফাত চৌধুরী তোরে ছেড়ে দিবো?!!মনতো চাচ্ছে তোর জিহবাটাই টেনে বের করে ফেলি।কতো শখ সারাদিন আমার বউ এর পিছন পিছন ঘুরবে সে।আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো??
তানভীরঃআমিতো কথার কথার বলেছিলাম।আপনি সিরিয়াস হন কেন?আমার মতো মাসুম বাচ্চার উপর জুলুম করেন খালি!
তানভীর কাদো কাদো মুখ করলো।আরাফ এর খুব হাসে পেল।কিন্তু সে মুখে গোমট ভাব বজায় রেখে বলে~
আরাফঃতোমারতো চাকরি গেছে।এখন যাও বিথী ম্যাডাম এর পিছনে।বলে আরাফ চলে গেলো।
তানভীরঃনা স্যার। আমি আপনার চাকরিই করবো।আমি গেলাম স্টোর রুম ঠিক করতে।
আরাফ হাসতে হাসতে চলে গেলো।
আরাফ যাওয়ার পর নবনি কেবিনটা লক করে মার্কার পেনটা হাতে তুলে নেয়।তারপর ওয়াইট বোর্ডে এক এক করে সব ঘটনাগুলো তুলতে থাকে।
১।সালাম জয়েন করে আরাফ হারিয়ে যাওয়ার পরের দিন।
২।আরাফ এর কফির ফ্লেভার আর সালাম যে কফি বানায় সেটা সেম।
৩।আরাফ এর পিএ তানভীর সালাম এর সাথে মিলে আছে।
৪।আরাফকে ডাকায় সালাম জবাব নেয়।
৫।আমার বাসায় আমার রুমে সালাম এর হাতের রিং পাওয়া যায়।


এ সমস্ত ঘটনা কি নির্দেশ করছে!সালাম ও কি তানভীর এর মতো আরাফকে সাহায্য করছে!নাকি সেই আরাফ এর আসল শত্রু!
কি করে বুঝি!!
নবনি বোর্ডটা মুছে ফেলে।
নবনিঃআমাকে বাসায় যেয়ে ঠান্ডা মাথায় সব বুঝতে হবে।
নবনি বাসার উদ্দেশ্য হাটা ধরে।কেবিনের বাইরে তানভীর স্টোর রুমে কাজ করাচ্ছে।নবনি তানভীর এর মুখোমুখি হয়।
নবনিঃকার পারমিশনে এই কাজ করছো তুমি?
তানভীরঃআর কার স্যার এর।
নবনিঃকি বললে?কোন স্যার?
তানভীরঃআদর স্যার বললেন এখানে দেয়ালে অনেক পুরোনো চুবি আছে। কেউ ব্যাথা পেতে পারে তাই এটা পরিষ্কার করতে।
নবনিঃবাবা বলেছেন?
সালামঃহ্যা হ্যা ম্যাম।আদর স্যার বলেছেন।আমি নিজে শুনেছি। ফোনে কথা হয়েছে।
নবনিঃওহ।আচ্ছা আমি বাসায় গেলাম এদিকটা বিথী দেখবে।তোমরা ওকে সাহায্য করবে।
নবনি চলে গেলো।তানভীর ফ্লোর এ শুয়ে গেলো।
তানভীরঃস্যার। আপনি আমাকে আবার চাকরিতে রাখেন।আমি আগে যা বলেছি সব ভুলে যান।প্লিজ স্যার। ওই বিথী সাতচুন্নির থেকে আমাকে বাচান।আমি আর নবনি ম্যাম এর চাকরি করতে চাই না।
আরাফঃতা তো আর হচ্ছে না।তোমার নবনির চাকরিই করা লাগবে।আর নাহলে না খেয়ে মরো। আমি আর চাকরি দিচ্ছি না।
তানভীরঃস্যার। স্যার গো। আপনি না ভালো।আমি খুব অসহায়।আমার আপনি ছাড়া আর কেউ নেই।
বিথীঃকাকে ছাড়া কেউ নেই আপনার?আর এভাবে সাপের মতো গড়াগড়ি করছেন কেন?
তানভীর এতক্ষন চোখ বন্ধ করে ছিলো।চোখ খুলে উপরে তাকিয়ে বিথীকে দেখে লাফ মেরে উঠে দাঁড়ায়।
তানভীরঃআমি ফ্লোরে ব্যায়াম করছিলাম।মোটুরা এসব বুঝবে না।জীবনেতো ব্যায়ামের ব ও করো নাই সেটা তোমার বডি দেখলেই বোঝা যায়।
বিথীঃকি বললেন?আমি মোটা!
বিথী তানভীর এর দিকে চোখ বড়বড় করে তাকালো। 
বিথীঃআমি মোটেও মোটা না।আপনি পাতলু। খাওয়া দাওয়া নাই নাকি বাসায়।নাকি কিপটামি করে চলেন যে এতো চিকন!!


তানভীরঃআমি চিকন!!এটাকে চিকন বলে না এটাকে পাফেক্ট বডি শেপ বলে।
বিথীঃআর আমাকে স্বাস্থ্যবান বলে মূর্খ।
বিথী ভেংচি কেটে চলে গেলো।
তানভীরঃএই স্যারটা কই গেলো।
তানভীর আরাফকে নবনির কেবিনে ঢুকতে দেখে।
তানভীর ও পিছন পিছন যায়।
তানভীরঃস্যার আমাকে একা রেখে কেনো চলে আসলেন?
আরাফঃতো কি কোলে করে নিয়ে আসবো?
তানভীরঃধুরু স্যার! কি যে বলেন না আমার লজ্জা লাগবে না বুঝি?
আরাফঃতাইলে তুমি যেয়ে বিথীকে কোলে নাও। তোমার সাথে মানিয়েছে।মোটু অর পাতলু কি জড়ি।
হা হা হা।
তানভীরঃআপনি সব শুনেছেন?
আরাফঃএতো জোরে জোরে তোমরা ঝগড়া করো যে আমি না পুরো অফিস শুনেছে।
তানভীরঃআমি না ওই করো।
আরাফ ল্যাপটপে কিছু দেখছে।
তানভীরঃস্যার কি দেখছেন?
আরাফঃআজকে কে কে এসেছে গিয়েছে সেটাই দেখছি।
তানভীরঃআপনি প্রতিদিন এটা কেনো দেখেন স্যার?
আরাফঃএই অফিসে শুধু বাবার ডিল ক্রাক হয় না তানভীর।এখানে আমার গোপনীয় কাজগুলো ও আমজ করি।
তানভীরঃকি গোপনীয় কাজ স্যার?
আরাফঃভয় পাবে না তো?
তানভীরঃনা ভয় পাবো কেন?
আমি আর্মি ছাড়ার পর আমাকে বাংলাদেশ সিক্রেট এজেন্সি থেকে হায়ার করা হয়।এখন আমি সেখানকার একটা সিক্রেট টিম এর হেড অফিসার।আমার আন্ডারে ১০০ জন সিক্রেট অফিসার কাজ করে।এরা সবাই আমী ছাড়ার পর এই টিমে জয়েন করেছে অবসর সময়েও দেশের সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।আর এদের সব কিছুর দায়িত্ব আমার উপর ন্যাস্ত।
এই এজেন্সির নিয়ম একটাই নিজের পরিবারকেও এটার কথা বলা যাবেনা।গোপনীয়তা রক্ষা করাই এটার প্রথম আর প্রধান কাজ। আর যদি কেউ সেটা জেনে যায় তাকে তখনই শুট করে মেরে ফেলার পারমিশন আছে সরকার থেকে।
তানভীর থর থর কাপতে লাগলো।
তানভীরঃআম আম আমাকেও কি মেরে ফেলবেন?
আরাফঃহ্যা।
তানভীরঃকিহ!!!
আরাফ তানভীর এর হাতে ইঞ্জেকশন পুশ করে তানভীর ফ্লোরে পড়ে যায়।
আরাফ কাকে যেন কল করে।
_হ্যা স্যার।আমি ফাইলটা খুজার সকল চেষ্টা চালাচ্ছি।যে করেই হউক ওই ফাইল আমি খুজবোই। 
_খুজবো না তোমার খুজতেই হবে।জানোতো তোমার হাতে ১০০ টা আর্মী অফিসার এর জীবন। 


_হ্যা স্যার।আমার নিজের কি আমার পরিবারের জীবন দিয়ে হলেও আমি তাদেরকে বাচাবো। আর ফাইলও খুজে বের করবো।আমার দেশের উপর আমার মতো হাজারো আরাফ কোরবান হলেও আফসোস থাকবে না।
_রাখি।
আরাফঃ যেই আছো তোমার মুখোশ ছিড়ে ফেলে দিবো আমি।আরাফাত চৌধুরী তার ভালোবাসার উপর একটা আচড়ও পরতে দেয় না।আর তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা। আমার দেশের উপর চোখ দিয়েছো।এই চোখ আমি উপড়ে ফেলবো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৫৫তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন