উপন্যাস : অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
1111111111111111111111111111111
১৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১৯)
বিয়ের পরের দিন এর সকালে সিমরাহসান এর জীবনে নতুন আলো নিয়ে আসলো। সূর্যের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো সিমরান এর।
সিমরানঃউফফফফ।মাত্র ৮ টা বাজে।সূর্য মামা আমাকে ঘুমাতে দাও।ডিস্টার্ব করছো কেন!!
সিমরান মুখের উপর বালিশ চেপে ঘুমিয়ে পড়লো।পারভীন বেগম বেলুনি নিয়ে সিমরান এর রুমে দাঁড়িয়ে আছে।
পারভীনঃ নবাবজাদী। ঘুম থেকে উঠ। ঘড়ি দেখছিস কয়টা বাজে।এতো ঘুম ঘুমায় কি করে মানুষ!!!উঠ বলছি।সারারাত মোবাইল টিপবে আর সারাদিন ঘুমাবে।
সিমরানঃউফফফফ আম্মু।আমার শান্তির ঘুম ভালো লাগে না তোমার?!!কি করবো এতো সকালে উঠে!!
পারভীনঃকি করবি মানে!!সকালে উঠে মানুষ কি করে!!নাস্তা বানা আমার সাথে। তারপর খেয়ে পড়তে বস।
সিমরানঃআম্মু।ঘুমাইতে দাও।আর একটুসি।প্লিইজ।
পারভীন বেগম রেগে চলে গেলেন।তখনই রাজু রহমান সিমরান এর বাবা সিমরায়ায়ায়ায়ায়ায়ান বলে ডাক দিলেন।সিমরান ওইভাবেই উঠে দৌড় দিলো।
সিমরানঃহ্যা। আব্বু বলো!
রাজুঃমুখ ধুয়ে নাস্তা করতে এসো।
পারভীনঃআমি ডাকলাম আসলো না।বাবা ডাকার সাথে সাথে এসে পড়সে।
সিমরানঃআব্বু তো আদর করে ডাকে।তুমি তো ঝাড়ু বেলুন নিয়ে এসে পরো।
পারভীনঃহ্যা।আমি তো ভালো না।আমি মরে গেলে বুঝবি।মা কি!!
সিমরানঃসকাল সকাল এসব না বললে হয় না তোমার।
সিমরান মুখ ধুতে চলে গেলো।
পারভীনঃআমি না থাকলে এই মেয়ের কি হবে!কবে বড় হবে এই মেয়ে।কয়দিন পর কলেজে উঠবে এখনও বাচ্চাই রয়ে গেলো।
রাজুঃঠিক হয়ে যাবে।তোমার এতো টেনশন করতে হবে না।নাস্তা নিয়ে আসো।
পারভীন বেগম চলে গেলেন।
সিমরান নাস্তা করে আহসানকে ভিডিও কল দিলো।আহসান সাথে সাথে কল রিসিভ করলো।
আহসানঃগুড মর্নিং।পাখি।
সিমরানঃগুড নাইট।আমি এখন ঘুমাবো।আর তুমি আমাকে পাহাড়া দিবা।
আহসানঃগুড নাইট মানে!!সকালবেলা আবার কিসের ঘুম। উঠো।
সিমরান মোবাইল নিয়ে কম্বলের নিচে ঢুকে পড়লো।
সিমরানঃজামাই।
আহসানঃহ্যা। সেমাই।
সিমরানঃআসো না ঘুমাই।
আহসানঃএখন কি করে ঘুমাবো।বাসার সবাই উঠে পড়েছে।
সিমরান এর সব মনে পড়ে গেলো।
সিমরানঃবাসার পরিস্থিতি এখন কেমন?
আহসানঃসেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।আমি আছিতো।একটা কথা সবসময় মনে রাখবে। তুমি আমি ঠিক সব ঠিক।
সিমরান মুচকি হাসলো।
আহসানঃঘুমাও আমার কলিজা পাখি।
সিমরান চোখ বন্ধ করতেই ঘুমিয়ে পড়লো।আহসান ভিডিও কলে সিমরানকে মন ভোরে দেখতে লাগলো।
আহসানঃআমি থাকতে কোনো বিপদ তোমার পর্যন্ত পৌছাতে দিবো না।আই প্রমিজ।
ঘুম থেকে উঠে সিমরান আহসানকে কলেই পায়।
সিমরানঃগুড মর্নিং জান জ্বি।
আহসানঃগুড মর্নিং পাখি।উঠে পড়েছো।
সিমরানঃহুম।
আহসানঃকেমন ঘুম হলো?
সিমরানঃভালো না।ঘুমে দেখলাম তুমি অন্য একটা মেয়ের সাথে প্রেম করছো।তারপর আমি ওই মেয়েটা মার্ডার করে দিয়েছি।তুমি এমন কেনো করলে!!!
সিমরান কান্না করতে লাগলো।
আহসানঃআমি এমন কিছুই করি নাই।তুমি স্বপ্ন দেখেছো।
সিমরানঃস্বপ্নেই কেন করেছো?
আহসানঃএকটা দিমু ধরে। সারাদিন উলটা পালটা ভাববা আর উল্টাপাল্টা স্বপ্ন দেখে আমাকে দোষারোপ করবে।
সিমরান আবার কান্নার ভান ধরলো।
সিমরানঃতুমি আমাকে বকসো।আমাকে মারবা বলসো।
আহসানঃকবে বকলাম!!!আফ কবেই মারলাম??
সিমরানঃএই মাত্র বললা একটা দিমু!!
আহসানঃহ্যা।তো একটা দিবোই তো।
আহসান সিমরান ফ্লাইং কিস দিলো।
আহসানঃএটার কথা বলছি।আদর দিবো। মারবো কেন!!
সিমরানঃহি হি হি।
আহসানঃসব আদর পাওয়ার ধান্দা। নটাংকি বউ আমার।এতো দুষ্ট হয়েছো।বিয়ের আগে তো এমন ছিলে না।
সিমরানঃবিয়ের আগে তো তুমি ও আমার ছিলে না।আহসানঃওহ তাই।
সিমরানঃহুম।
আহসানঃএখন উঠো। কিছু খেয়ে নাও।
সিমরানঃখুদা নাই।
আহসানঃরাগ উঠাও না।না খেতে পিচ্চি হয়ে যাচ্ছো।এখন খাবে।যাও বলছি।
সিমরানঃআচ্ছা।আচ্ছা যাচ্ছি।
আহসানঃএই ফড়িং শুনো।
সিমরানঃহ্যা।মেন্ডাক বলো।
আহসানঃপানি দুই গ্লাস খাবা।তিন ঢোক না।বুঝছো?
সিমরান ভেংচি দিয়ে কল কেটে দিলো।
আহসানঃপাগলিটা আমার।
আহসান রুমের বাইরে যেতেই দিয়া আহসান এর মুখোমুখি হলো।
আহসানঃনাস্তা করেছো মা?
দিয়া আহসানঃছেলে যেখানে পর হয়ে যায় তখন গলা দিয়ে নাস্তা নামে না।
আহসানঃখোচা দিয়ে কথা কেন বলছো মা?কালকে যা ছিলো আজকেও তাই আছে। সিমরান এখানে উপস্থিত ও নেই। তাহলে তুমি কেন তাকে টেনে এনে সকাল সকাল নিজের মুড খারাপ করছো?
দিয়াঃএখানে না থাকলে কি হবে।তোর আর আমার মাঝেতো এসেই পড়েছে।
আহসানঃমা। বসো এখানে।
আহসান দিয়া আহসানকে হাত ধরে বসালো।
আহসানঃমা।তোমার আর আমার মাঝকানে কেউই আসতে পারবে না।আমার কাছে তুমি সবার আগে।তোমার থেকে বেশি আর কেউই না। সিমরান ও না।
কিন্তু মা ও আমার হাসির কারন।আমার বেচে থাকার কারন। ওকে ছাড়া আমি ভালো থাকতে পারি না মা।
সিমরান নরম কাদা মাটির মতো। তুমি ওকে যে ধাচে গড়বে সে ঠিক তেমনই রূপ ধারন করবে।
একবার তার সাথে কথা বলে দেখো।আর মা ও এখন আমার ধর্মীয় স্ত্রী।আমি এখন ওকে ছেড়ে দিয়ে তার সাথে অন্যায় করতে পারি না।মা তুমি কি তোমার ছেলেকে এমন শিক্ষা দিয়েছো যে এমন একটা সিচিউশনে এসে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিবে?
দিয়া আহসানঃনাস্তা করে নে।
আহসানঃখুদা নাই।
আহসান উঠে চলে গেলো।দিয়া আহসান আহসান এর যাওয়ার পথে চেয়ে রইলো।আহসান যেতেই মিষ্টি দিয়া আহসান এর পাশে এসে বসলো।
মিষ্টিঃমা।আপনি চিন্তা করবেন না।আহসান এখন সিমরান এর প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়েছে।তাই কিছুই দেখতে পারছে না।আমিও একটা সময় ওকে অনেক ভালোবাসতাম।কিন্তু ও যে এতোটা খারাপ আমি তা কল্পনাও করতে পারি নাই।
দিয়াঃআমার সিধাসাধা ছেলেকে ফাসিয়েছে ওই মেয়ে।ভাবছিলাম আমার বড় ফ্লাটটা আহসানকে দিবো আর ছোট ফ্লাটটা তোমাদের।কিন্তু এই মেয়েকে বাসায় আনলে আমি আহসানকেই বাসায় রাখবো না।আর রাখলেও ছোট ফ্লাটটা দিয়ে আলাদা করে দিবো।
মিষ্টি পৈশাচিক হাসি দিলো।
মিষ্টিঃনা মা।আপনি যা দিবেন আমরা তাই মেনে নিবো।আকাশতো আর আহসান এর মতো না।ও তো আপনাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না।আমরা কখনোই আপনাকে ফেলবো না।
দিয়াঃহ্যা।মিষ্টি। আমি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম।কিন্তু তুমি আসলেই এই বাসার লক্ষী।
যাও মা।রান্নাটা করে ফেলো।আমি একটু রেস্ট নেই।এতো টেনশন নিতে পারছি না।
দিয়া এ যেতেই মিষ্টির রাগ উপচে পড়ে।
মিষ্টিঃধ্যাত ভাল্লাগে না।এখন এই বুড়ির সামনে ভালো বউ এর অভিনয় করতে যেয়ে আমার রান্না করা লাগবে।ভালো লাগে না।
কিন্তু আমারতো এটা করতেই হবে।আমি সিমরানকে বোকা সোকা ভেবেছিলাম।ভেবেছিলাম আহসানকে ওর সাথে বিয়ে করালে ও আমার দাসত্ব করবে।আমাকে হুজুর হুজুর করবে।কিন্তু এই মেয়ে তো আমার ধারনার বাইরে ছিল।ডিরেক্ট বিয়ে করে নিলো।ওর জন্য আকাশ আমাকে দোষারোপ করলো।আর এই বাসার আসার পথটাও বানিয়ে ফেললো।
না। ও এখন এই বাসায় আসতে পারে বা।এই বাসায় আসলে এই বুড়ি আমার জায়গায় ওকে মাথায় নিয়ে নাচবে।আর আমি সম্পত্তির ভাগও পাবো না।আমি এটা হতে দিবো না।আমি এখানে সবার কানে এতো বিষ ঢালবো যে এখানে কেউই তোকে দুই চোখে দেখতে পারবে না সিমরান।আর একদিন ইনারাই আহসানকে বের করে দিবে বাসা থেকে।
মিষ্টি রান্না করতে চলে গেলো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
২০ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন