উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

1111111111111111111111

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ০১)

বৌভাতের দিন শয়ন জানতে পারলো এটা তার স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে এবং ওর একটা দুই বছরের বাচ্চাও আছে।পরকিয়ার দায়ে ওর প্রথম স্বামী ওকে তালাক দিয়েছে।বিয়ের সময় শয়নের পরিবারকে এসব কিছুই জানানো হয় নি।সবকিছু লুকিয়ে বিয়েটা দেওয়া হয়েছে।
নিজের বৌয়ের সম্পর্কে এসব তিক্ত সত্য জানতে পেরে শয়নের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।এভাবে প্রতারিত হতে হলো ওকে?বৌভাতের অনুষ্ঠান থেকে দ্রুত বেরিয়ে পড়লো ও।এখানে থাকলে নিজেকে কন্ট্রোল করা অসম্ভব।

শিকদার বাড়ির ছোট ছেলের বিয়েতে নানা জায়গা থেকে লোকজন এসেছে।অনেক বড় করে করা হয়েছে অনুষ্ঠান।এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি'রাও এসেছেন।সবাই ছোটো বউয়ের রুপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।বড় আর মেজো বউয়ের থেকেও ছোটো বউ সুন্দরী।

বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে যখন বউ আর বরকে নিয়ম অনুযায়ী বউয়ের বাপের বাড়িতে যেতে হবে তখনই সবাই খেয়াল করলো অনেক্ক্ষণ ধরে শয়নকে কোথায় দেখা যাচ্ছে না।পুরো বাড়ি খুঁজেও কোথাও পাওয়া গেলো না ওকে।বড় ভাই অয়ন ফোন দিয়ে দেখলো ফোন বন্ধ।তাই নতুন বউ আর তার পরিবারকে বুঝিয়ে একাই বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।বলা হলো রাতে আসবে শয়ন এখন হয়তো কোনো জরুরি দরকারে বেরিয়েছে।

শয়ন ট্রেনের টিকিট কেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলো।রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।সিদ্ধান্ত নিলো ফ্যামিলিকে জানিয়ে দু'একদিনের মধ্যে ডিভোর্স দেবে।এমন প্রতারক ফ্যামিলির সাথে সম্পর্ক রাখার প্রশ্নই আসে না।

এদিকে পাখি স্বামীর প্রতিক্ষায় বসে আছে।অনেক রাত হয়ে গেছে এখনো আসছে না কেনো?ওই বাড়ি থেকেও কোনো খবর আসে নি।চিন্তায় আর থাকতে না পেরে পাখি তার শ্বাশুড়িকে ফোন করলো।ফোন রিসিভ হতেই বলল,'আম্মা,আপনার ছেলে তো এখনো এলো না।'
'আসবো।তুমি চিন্তা কইরো না।অয়ন বাইর হইছে ওরে খুঁজতে।'
'আচ্ছা আম্মা।আমারে জানাইয়েন।'

ফোন রেখে ঘড়ির দিকে চোখ রাখলো পাখি।এখন রাত বারোটা পাঁচ।পাখির মা পারুল বেগম ঘরে ঢুকে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেন,'কি কইলো তোর শ্বাশুড়ি?'
'তার বড় ভাই খুঁজতে বাইর হইছে।আমারে চিন্তা না করতে কইছে।'
'আইচ্ছা শোন বাবু ঘুম থেইকা উইঠা গেছে।দিয়া যামু তোর কাছে?'
'দেও।'
ফ্ল্যাটে এসেই বাসায় ফোন করে বলল ও ঢাকা চলে এসেছে।কেন এসেছে বা কি হয়েছে এসব কিছুই বলে নি শয়ন।

স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে করতে পাখি ঘুমিয়েই পড়েছিলো।তারপর পরেরদিন সকালে মায়ের থেকে জানতে পারলো কালই নাকি কোনো এক কারণে শয়ন ঢাকা চলে গেছে।পাখির মনে মনে ভয় হলো।শয়ন সবকিছু জেনে যায় নি তো?কান্না পেয়ে গেলো ওর!বিয়ের সময় সব বলে দিতে চেয়েছিলো ও কিন্ত বাবা,মায়ের কসমের জন্য বলতে পারে নি।এখন কি হবে?শয়ন কি ওকে ভুল বুঝবে?সব না জানলো অবশ্যই ভুল বুঝবে।আবারও কি সবকিছু শেষ হয়ে যাবে?পাখি আর কিছুই ভাবলো না।চোখমুছে সবার অগোচরে ব্যাগ গুছিয়ে ফেললো।ও ঢাকা যাবে এখনি।নিজের জমানো টাকা আর বিয়েতে দেনমোহরে যে টালা পেয়েছে সব নিয়ে চুপিসারে বেরিয়ে পড়লো বাড়ি থেকে।শয়ন কোথায় থাকে সেটা পুরোপুরি জানে না তবে খুঁজলে পেয়ে যাবে।

টিকিট কেটে বাসে উঠে বসলো পাখি।কখনোই একা একা এতদূর যায় নি ও।কিন্তু আজ সবকিছু অন্যরকম।নিজের সংসার টিকিয়ে রাখতে হলে এই ঝুঁকি তো নিতেই হবে।
বাসে ওর পাশে এক বৃদ্ধ মহিলা বসলো।প্রথমে বৃদ্ধ মহিলাই আগ বাড়িয়ে কথা বলা শুরু করলো।পাখিও বলছিলো অল্পস্বল্প।কথায় কথায় পাখি জানতে পারলো মহিলা তার ছেলের বাড়ি যাচ্ছে।ঢাকা এসে বাস থেকে নেমেই পাখি বুঝতো পারলো ওর টাকার ব্যাগ চুরি হয়েছে।ওখানে দেনমোহরের আর ওর জমানো সব টাকা ছিলো।এখন শুধু ওর কাছে দুইশো ত্রিশ টাকা আছে।এই টাকা দিয়ে কি শয়নের কাছে যাওয়া যাবে?চিন্তায় গলা শুকিয়ে গেলো পাখির।একটা রিকশা নিয়ে ও মিরপুর চলে গেলো।এখন বাসা খোঁজার পালা।ফোন থেকে শয়নের ছবি বের করে প্রত্যেকটা বাড়ির দারোয়ান কে জিজ্ঞেস করছিলো পাখি।অবশেষে অনেক কষ্টে একটা বাড়ির দারোয়ান বলল এই বাড়ির পাঁচ নাম্বার ফ্লোরে থাকে শয়ন।পাখি ওকে বাড়িতে ঢুকতে দিতে বললে দারোয়ান বলল পারমিশন আনতে।পারমিশন ছাড়া ঢুকতে দেওয়া দিবে না।পাখি অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করলো যে ও শয়নের স্ত্রী কিন্তু দারোয়ান তার কথাতেই অনড়।অগত্যা পাখি খালি পেট নিয়ে ওই বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে রইলো শয়নের আশায়।সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরলো শয়ন।গেটের সামনে পাখিকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে নিলেই পাখি ওর সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,'প্লিজ আমার কথাটা একটাবার শুনুন।'
শয়ন পাখি'কে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিয়ে বলল,'কিচ্ছু শোনার নেই আমার।গেট লস্ট।'
কথাটা বলেই গেটের ভেতর ঢুকে গেলো আর দারোয়ানকে বলল কোনো অবস্থাতেই যেন ও এই বাড়িতে ডুকতে না পারে।

চোখভর্তি জল আর পেটভর্তি ক্ষুধা নিয়ে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে রইলো পাখি।ভাগ্য এতটো খারাপ না হলেও পারতো।পাখি সিদ্ধান্ত নিলো আজ যদি শয়ন ওর কথা না শোনে তাহলে ও আর ফিরবে না।রেললাইনে গলা দিয়ে জীবনের সকলের দুঃখ ঘুচিয়ে নেবে।রাত বারোটা বাজে।আর দাড়িয়ে থাকতে পারছে না শরীরে সব শক্তি শেষ হয়ে গেছে।অতিরিক্ত চিন্তায় আর ক্ষুধায় মাথা ঘুরে সেখানেই জ্ঞান হারালো পাখি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

০২ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন