লেখিকা আভা ইসলাম রাত্রির “বৌপ্রিয়া” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি তার ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
বৌপ্রিয়া || আভা ইসলাম রাত্রি |
২৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
বৌপ্রিয়া || আভা ইসলাম রাত্রি (পর্ব - ২৪)
কেটে গেছে কটাদিন। কুসুম এবং উচ্ছ্বাস কদিনের মধ্যে হানিমুনে কক্সবাজার যাবে। তবে তার আগে উচ্ছ্বাসের ফুপুর মেয়ে মানহার জম্মদিন পালন করা হবে। মানহা এবার বায়না ধরেছে ধুমধাম করে জম্মদিন করার। তাই উচ্ছ্বাসের ফুপা মেয়ের বায়না রেখেছেন। বাড়িতে ধুমধাম করে জম্মদিন করার পাশাপাশি মাদ্রাসা এবং এতিমখানায় খাওয়ানো হবে। তাই উচ্ছ্বাস হানিমুনের তারিখ আরো দুইদিন পেছালো।
কুসুমের অসহায় গলা শুনে উচ্ছ্বাস মোটেও চিন্তিত হল না। বরং তাকে নিশ্চিন্ত দেখা গেল। সেদিন শাড়ির পাতলা আঁচল দেখেই উচ্ছ্বাসের মেজাজ পুরোপুরি বিগড়ে গিয়েছিল। কৌশনে কুসুমকে বোঝাতে চেয়েছিল শাড়িটা উচ্ছ্বাসে ভালো লাগে নি। কিন্তু অবুঝ কুসুম সেটা বুঝে নি। তাই উচ্ছ্বাস রাতের দিকে কুসুম ঘুমে থাকাকালীন শাড়ি নিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। কুসুম সেটাই এখন খুজছে?
কুসুম তাজ্জব বনে গেল। এগিয়ে এসে বলল, ‘ কেন? কেন ফেললেন? শাড়িটা কি সুন্দর ছিল। আমাকে ভালো লেগেছিল শাড়িতে। আপনার সামনেই না সেদিন ট্রায়াল দিলাম। তখন কেন বললেন না কিছু। এখন আমি আজকে পরব। আজকেই ফেলে দিলেন। কেন? ‘
উচ্ছাস পায়ের থেকে স্যান্ডেল খুলল। চশমা খুলে টেবিলে রেখে সাদা শার্ট আর প্যান্ট দিয়ে বাথরুমে গোসল করতে চলে গেল। যাবার আগে বলে গেল, ‘ এখন থেকে শরীর বোঝা যায়, এমন শাড়ি পরার দরকার নেই। লাইট অফ করে দাও। আমি ঘুমাব। ‘
কুসুম রেডি হয়ে নিচে নেমেছে। জন্মদিনের আয়োজনে সবাইকে সাহায্য করে উচ্ছ্বাসকে ডাকতে উপরে এল। উচ্ছ্বাস তখন তৈরি হয়ে হাতে হাতঘড়ি পরছে। সাদা ব্লেজারে বেশ ভালো লাগছে উচ্ছ্বাসকে। কুসুম শুধু চেয়েই থাকলো উচ্ছ্বাসের দিকে। চোখে যে। ধাঁধা লেগেছে তার। কুসুমকে দেখে উচ্ছ্বাস চুলে জেল লাগাতে লাগাতে বলল,
‘ শাড়ি ফেলে দিয়েছি বলে কি রাগ করেছ? শাড়ি আমার ভালো লাগেনি আসলে। তোমাকে আমি দেখে দেখে আরো সুন্দর শাড়ি কিনে দেব। তবে আজ থেকে ওসব শাড়ি পরে আমার অন্তর পুড়িও না, হুঁ? ‘
কুসুম হেসে ফেললো উচ্ছ্বাসের কথা শুনে। এগিয়ে এসে উচ্ছ্বাসের ব্লেজারের কলার ঠিক করে বলল,
‘ মোটেও রাগ করিনি আমি। আর না আপাতত আমার কোনো শাড়ি লাগবে না। শাড়ি আছে আলমারিতে। বিয়েতেও অনেক শাড়ি পেয়েছি। সেগুলো শেষ করি আগে। ‘
উচ্ছ্বাস মৃদু হাসলো। একটু সূক্ষভাবে কুসুমকে দেখে নিয়ে মোহগ্রস্ত গলায় বলল,
‘ শাড়িতে মোটেও তোমাকে ছোট লাগে না। সমবয়সী মনে হচ্ছে এখন।’
কুসুম মুচকি হাসলো। উচ্ছ্বাসকে দ্রুত তৈরি হতে বলে চলে যেতে নিলে উচ্ছ্বাস পেছন থেকে কুসুমের হাত আটকে নেয়। হাতে ধরে হেচকা টান দিতেই কুসুম ছিটকে এসে উচ্ছ্বাসের বুকে এসে পরে। কুসুমের নাক এসে লাগে ম্যানলি পারফিউমের গন্ধ। কুসুম মোহিত হয়ে যায়। উচ্ছ্বাস নিজের বুক থেকে কুসুমের মুখ দুহাতের আজলায় পুড়ে নিয়ে উচু করে তুলে। কুসুম চোখ বন্ধ করে। তারপর ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকায়। দুজনের চোখে চোখ পরে। চোখে চোখে কথা হয়। পবিত্র কিছু অনুভূতি দোলা দিয়ে যায় দুজনের মনে। উচ্ছ্বাস মৃদু স্বরে বলে,
উচ্ছ্বাস খানিক পর ঢোক গিলে ফিসফিস করে কুসুমের কানের কাছে মুখ এনে বলে,
‘ কুসুম, ক্যান আই কিস ইউ নাও? আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ টুডে ইন দ্যাট ক্রিটিক্যাল মোমেন্ট।’
কুসুমের বুক ধড়ফড় করে উঠে। বুকের উঠানামার গতি বেড়ে যায়। অস্বাভাবিক হয়ে যায় শরীরের রক্তপ্রবাহের সঞ্চালন। কুসুম মাথা নত করে। পরপর আবার মাথা তুলে তাকায়। ঢোক গিলে মাথা নেড়ে সায় দেয়। উচ্ছ্বাস হাসে। ঝলমল করে উঠে উচ্ছ্বাসের চেহারা। মুখ নামিয়ে আনে কুসুমের পাতলা ঠোঁটে। কুসুম ভেসে যায় আনন্দে। প্রথমবারের মত দুজনের মধ্যে হওয়া গভীরতম স্পর্শ। পাঁচ সেকেন্ডের মাথায় উচ্ছ্বাস সরে আসে। কুসুম লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখ নত করে রাখে। থুতনি যেন মিশে যায় বুকের সঙ্গে। উচ্ছ্বাস আলতো কণ্ঠে বললো,
‘ ট্রাস্ট মি কুসুম, দিস ইজ দ্য বেস্ট ফিলিং এবার। এমন অনুভূতি আমি আমার সাতাশ বছরের জীবনে পাইনি। তুমি সত্যি আমার জন্যে বিশেষ কেউ। ‘
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
২৫তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তরুণ লেখিকা আভা ইসলাম রাত্রি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে। তবে তিনি তার ফেসবুক পেজে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, “গল্প লেখে সে, কলমের কালিতে কল্পনার চিত্র আঁকিবুকি করা তার নেশা! অক্ষরের ভাজে লুকায়িত এক কল্পপ্রেয়সী!”
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন