লেখিকা আভা ইসলাম রাত্রির “বৌপ্রিয়া” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি তার ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
বৌপ্রিয়া || আভা ইসলাম রাত্রি |
৩১তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
বৌপ্রিয়া || আভা ইসলাম রাত্রি (পর্ব - ৩২)
উচ্ছ্বাস শান্ত ভঙ্গিতে সব শুনে বলে, ‘পাঁচ মিনিট শান্ত হয়ে আমার কথা শুনো। তারপর অভিযোগ করবে, কুসুম। আমি বাঁধা দেব না। জাস্ট ফাইভ মিনিট’স! ‘
‘বিদেশ থেকে আসার পর, আমি চেম্বার খুলি। সেই সঙ্গে প্ল্যান করি, নিজের একটা হসপিটাল খোলার। হসপিটাল খোলা চাট্টিখানি কথা না জানোই তো। অনেক টাকার ব্যাপার। আমরা অনেকজন ডাক্তার ব্যাচমেট মিলে আমরা টাকা জমিয়ে শেয়ার কিনি। হসপিটালের জন্যে সবাই কিছু টাকা জমাই। বাকি টাকা ব্যাংক থেকে লোন নেই। হসপিটালের কাজ শুরু হয়েছে কদিন হয়েছে। কিন্তু জমি নিয়ে এখন ঝামেলা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের খপ্পরে পরেছে জমি। ভালো এবং দামি জমি হওয়ায় তাদের নজরে জমির লোভ। আজকে এসেছিল সাইটে ওরা। আমি কয়েকটা কটু কথা বলে দিয়েছিলাম। আসলে রাগে নিজেকে সামলাতে পারছিলাম না। তখন সাইটে ওরা কিছু না বললেও, আজকে বাড়ি আসার পথে কজন মুখ বাঁধা লোক হঠাৎ করে আক্রমন করে উঠে। হঠাৎ সবকিছু হওয়ায় ঠাল সামলাতে পারিনি। নিভে গেছিলাম। তার ফল এসব আঘাত, এই চোট!’
কুসুম হতভম্ব চোখে উচ্ছ্বাসের দিকে চেয়ে রইল। টালমাটাল জলে দু চোখ ভিজে। গড়িয়ে পরল জলের বিন্দু। এমন আঘাতে ক্ষতবিক্ষত উচ্ছ্বাসকে আগে দেখেনি কুসুম, এবং এখনও দেখার সাহস নেই। কুসুম কিছুক্ষণ হাত বাড়িয়ে উচ্ছ্বাসের কপালে থাকা ব্যান্ডেজ ছুঁয়ে দিল। উচ্ছ্বাস চোখ বন্ধ করে অনুভব করল কুসুমের হাতের ছোঁয়া। কি নরম করে ছুঁয়ে দিচ্ছে তাকে কুসুম। যেন সামান্য ছোঁয়ায় ব্যথায় মরণ হবে উচ্ছ্বাসের। উচ্ছ্বাস মৃদু হেসে কুসুমের চোখের পানি আঙুল দিয়ে মুছে দিল। বাচ্চাদের মত করে বোঝানোর ভঙ্গি করে বলল,
‘সামান্য চোট। ঠিক হয়ে যাবে। কেঁদো না।’
কুসুম কান্না আটকানোর চেষ্টা করল। নাক টেনে টেনে বলল,
‘আপনার জীবন কি এখন ঝুঁকিতে? কিছু কি করে ফেলবে ওরা আপনার? সত্যি করে বলেন।’
উচ্ছ্বাস কুসুমকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গি করে বলল,
‘আমি আসার পথে মামলা করে এসেছি। অবশ্য মামলায় কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই আমি উপর মহলের কিছুজনকে ধরেছি। এসব পাতি নেতাদের তারাই দেখে নিবে। চিন্তা করো না।’
কুসুম আশ্বস্ত হল। আনমনে চেয়ে রইল উচ্ছ্বাসের বুকের দিকে। খানিক পর উচ্ছ্বাসের বুকে আলতো করে হাত রেখে ভেজা কণ্ঠে উচ্চারণ করল,
‘আমি যদি আপনার বুকে একটু মাথা রাখি, আপনি কি খুব বেশি ব্যথা পাবেন?’
কি নিদারুণ আবদার! যে কেউ শুনে গলে যেতে বাধ্য। আর এ তো স্বয়ং উচ্ছ্বাস। কুসুমের একটুখানি আবদারে সকল ব্যথা যার সুখ হয়ে যায়! উচ্ছ্বাস দুহাত বাড়িয়ে দিল। চোখের ইশারা করে বলল,
‘আসো, ঝাঁপিয়ে পরো এই বুকে।’
‘এতোটা জ্বর। কি করব আমি? কমছে না কেন এই জ্বর। আপনার কথামত ঔষধ তো দিলাম। তাও কমছে না। আমি কি খালা.. আম্মাকে ডেকে আনব, প্লিজ!’
উচ্ছ্বাস হাত বাড়িয়ে মানা করল। গায়ের কম্বলটা নিজের সঙ্গে মিশিয়ে নেবার চেষ্টা করে বলল, ‘ খু–ব ঠা–ন্ডা লা-গ-ছে।’
কুসুম কি করব ভেবে পাচ্ছে না। হাত দিয়ে পায়ের পাতা মালিশ করে দিল, হাত মালিশ করে দিল। হিটার এনে পাশে রাখল। কুসুম যখন এত ব্যস্ত তখন হাত বাড়িয়ে উচ্ছ্বাস জ্বরের ঘোরে কুসুমকে নিজের দিকে টেনে নিল। কুসুমের গলায় মুখ রাখলে কুসুম উপলব্ধি করে তার গলায় কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কুসুম ছোট্ট করে উচ্চারণ করল, ‘জ্বরে পুড়ে যাচ্ছেন। ঔষধ দেই আরেকটা?’
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
৩৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তরুণ লেখিকা আভা ইসলাম রাত্রি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে। তবে তিনি তার ফেসবুক পেজে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, “গল্প লেখে সে, কলমের কালিতে কল্পনার চিত্র আঁকিবুকি করা তার নেশা! অক্ষরের ভাজে লুকায়িত এক কল্পপ্রেয়সী!”
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন