উপন্যাস : কেয়া পাতার নৌকা
লেখিকা : রাজিয়া রহমান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২২ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ইং
লেখিকা রাজিয়া রহমানের “কেয়া পাতার নৌকা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৪ সালের ২২ই ফেব্রুয়ারী থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
কেয়া পাতার নৌকা || রাজিয়া রহমান |
২০ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
কেয়া পাতার নৌকা || রাজিয়া রহমান (পর্ব - ২১)
ঘটনা ঘটে পরদিন রাতে।ফাইজান বসে বসে পড়ছে।চাকরির জন্য পড়ছে।মাথায় একটা বিশাল চিন্তা তার।তরুকে বউ করে যত দ্রুত সম্ভব সে ঘরে নিয়ে যাবে।
একটা ভালো চাকরি হলে তরুকে নিয়ে ঘর বাঁধতে দেরি করবে না ফাইজান।
এই মেয়েটার দুই চোখ ভর্তি স্বপ্ন। স্বামী, সন্তান, শ্বশুর শাশুড়ী, সংসার নিয়ে অনেক স্বপ্ন তরুর।
ফাইজান নিজের কাছে নিজে প্রতিজ্ঞা করে তরুর সব কষ্ট সে মুছে দিবে।
কল রিসিভ করে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করার পর মা বললো, "বাবা,আমরা তো তোর জন্য পাত্রী পছন্দ করছি।তোর আব্বা চায় তোকে বিয়ে করাতে।তোর আব্বার শরীর খুব একটা ভালো যাচ্ছে না তাই তোকে বিয়ে করিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চায়।"
ফাইজান ভীষণ হতবাক হয় মায়ের কথা শুনে। কি বলছে এসব মা?
ফাইজান শান্ত স্বরে বললো, "মা আমি এখন এসব নিয়ে ভাবছি না। আমার লেখাপড়া এখনো শেষ হয় নি।আর আমার একজন পছন্দ করা আছে।আমি বিয়ে তাকেই করবো।"
ফাইজানের মা হতবাক হয়ে গেলেন ছেলের কথা শুনে। তার এই ছেলেটা সবসময় দেখেছে সবকিছু নিরবে মেনে নেয় সেই ছেলে কি-না আজকে বলছে তার পছন্দের মানুষ আছে।
ফাইজানের মা ভীত কণ্ঠে বললেন,"কি বলছিস এসব তুই?তোর পছন্দের মানুষ আছে মানে কি ফাইজান?তোকে লেখাপড়া করাচ্ছি কি এসব অসভ্যতা করার জন্য? তোর বাবা যদি জানতে পারে কি হবে ভেবেছিস?"
ফাইজান শান্ত রইলো।মা'কে বললো, "মা, আমি মেয়েটাকে ভালোবাসি। এটাই আমার কাছে একমাত্র সত্য।আমি তাকে কথা দিয়েছি কখনো তাকে কাঁদতে দিবো না মা।ও সারাজীবন অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। আমি তাকে ছাড়া অন্য কারো কথা ভাবতেও পারি না। ভালোবাসা কোনো অসভ্যতা না মা।আর যেটা অসভ্যতা সেটা কখনো ভালোবাসা না।
আমি ওকে ভালোবাসি।বিয়ে করবো আমি,সংসার হবে আমার। আব্বার তো রাগ করার কিছু নেই।"
ফাইজানের বাবা এগিয়ে এসে বললেন ফোন আমার কাছে দাও।
ফাইজান হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে ফাইজানের বাবা বললেন,"তুমি আমার ছোট ছেলে ফাইজান।আমার সবচেয়ে বেশি আশা ভরসা তোমাকে নিয়ে। তোমার দুই ভাই লেখাপড়া করে নি।তুমি লেখাপড়া করে ছোট বেলা থেকেই আমার মুখ উজ্জ্বল করেছো।আমি জানি এবার ও তুমি আমাকে হতাশ করবে না।আমার পছন্দ মতো মেয়েকেই বিয়ে করবে।"
ফাইজান যথেষ্ট শান্ত স্বরে বললো, "আব্বা,আমি একজনকে ভালোবাসি।আর আমি তাকেই বিয়ে করবো।এটাই আমার ফাইনাল সিদ্ধান্ত। "
ফাইজানের বাবা চুপ থেকে বললেন,"মেয়ের বাবা কি করে? "
"ওর বাবা মারা গেছেন ও ছোট থাকতেই।"
"মেয়ের মা আছেন?"
"হ্যাঁ আছেন,কিছুদিন আগেই ওনার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছে। "
ফাইজানের বাবা রেগে গিয়ে বললেন,"মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার ফাইজান?একটা এতিম মেয়েকে বিয়ে করার কথা ভাবছো কিভাবে তুমি? মেয়ের মায়ের ও নাকি বিয়ে হয়েছে। এরকম একটা মেয়েকে বিয়ে করার কথা তোমার মাথায় আসলো কিভাবে?
মানুষ হাসাহাসি করবে।বাস্তবতা বুঝার চেষ্টা কর ফাইজান।এরকম বিয়ের আগে মানুষের অনেক কিছুই হয় জীবনে, এটাকে এতো সিরিয়াসভাবে নেওয়ার কিছু নেই।এনজয় করার, ফূর্তি করার বয়স করেছো,বিয়ে আমার পছন্দ করা মেয়েকেই করবে।"
ফাইজান বললো, "আব্বা,আমি ওকে ভালোবাসছি।কোনো ফূর্তি করার জন্য না আব্বা।ও ওরকম মেয়ে না। আমি ওকে যতটা ভালোবাসি ততটাই সম্মান করি।ওকে আমি ইহকাল, পরকাল উভয় জায়গায় চাই।এসব নিয়ে আমি আর কথা শুনতে চাই না।"
"তোর বিয়ে আমি লতার সাথেই দিবো এটাই আমার শেষ কথা।"
ফাইজান চমকে উঠলো লতার কথা শুনে। লতার সাথে বিয়ের কথা ভাবছে আব্বা!
মাথায় রক্ত উঠে গেলো ফাইজানের।সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নিলো আগামীকাল এই বাড়ি থেকে চলে যাবে।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
২২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা রাজিয়া রহমান বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহন করেন। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন তিনি। তরুণ এই লেখিকা বৈবাহিক সূত্রে লক্ষ্মীপুরেই বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জননী। পেশাগতভাবে তিনি গৃহিনী হলেও লেখালেখির প্রতি তার ভিষন ঝোক। আর তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও শখের বশে ধারাবাহিকভাবে লিখে যাচ্ছেন একের পর এক উপন্যাস। ২০২২ সালের মধ্যদিকে গর্ভকালিন সময়ে লেখিকা হিসেবে হাতেখড়ি নিলেও এরই মধ্যে লিখে ফেলেছেন “তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর” ও “শালুক ফুলের লাঁজ নাই” -এর মতো বহুল জনপ্রিয় উপন্যাস।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন