উপন্যাস        :         আজ ওদের মন ভালো নেই
লেখিকা        :          নৌশিন আহমেদ রোদেলা
গ্রন্থ             :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১৪ এপ্রিল, ২০২৪ ইং

লেখিকা নৌশিন আহমেদ রোদেলার “আজ ওদের মন ভালো নেই” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি তার ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে লেখা শুরু করেছেন।
আজ ওদের মন ভালো নেই || নৌশিন আহমেদ রোদেলা
আজ ওদের মন ভালো নেই || নৌশিন আহমেদ রোদেলা


১২তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

আজ ওদের মন ভালো নেই || নৌশিন আহমেদ রোদেলা (পর্ব -১৩ )


মৌনি যখন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরল তখন মাথার উপর ঝমঝমে বৃষ্টি। সারা গা ভিজে চুপেচুপে অবস্থা। রাস্তাঘাটে হাঁটু সমান জল। এই নোংরা জল পেরিয়ে আসতে গা ঘিনঘিন করে। মৌনির গা গুলালেও মেজাজ খারাপ হলো না। বৃষ্টির দিনে তার মন থাকে ফুরফুরে। কেউ গালি দিলেও আহ্লাদে গলে যায় শরীর। মৌনি নিজের ঘরে ফিরে ভেজা ওড়নাটা খোলে রেখে দ্রুত ফোন বের করল। বৃষ্টি নামতেই পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলেছিল; তারপরও যদি পানি ঢুকে যায় তাহলে সর্বনাশ! এই মাসে তার খুব টাকা-পয়সার ঝামেলা। দাদাজানের দ্বিতীয় শাস্তিটা গিয়েছে তার কলিজার উপর দিয়ে। মফস্বলে দাদীজানের নামে একটা এতিমখানা আছে। তার সকল আর্থিক দায়িত্ব দাদাজানের হাতে। তিনি হঠাৎ ফরমান জারি করেছেন, আগামী মাসে সেখানকার নির্দিষ্ট তিনজন কর্মচারীর মাইনে জোগানোর দায়িত্ব মৌনির। মৌনি যদি তাদের বেতন পরিশোধ না করে তাতে দাদাজানের কিছু যাবে আসবে না। মৌনিকে তিনি দ্বিতীয়বার মনে করিয়ে দেওয়ার কষ্টটুকুও করবেন না। সেই সাথে সেই তিনজন কর্মচারীর বেতনের খাতাও থাকবে শূন্য। তারা যদি অসহায়ত্বে প্রাণও ত্যাগ করে তবুও দাদাজান ফিরে তাকাবেন না। দাদাজান নিষ্ঠুর। মৌনি নিষ্ঠুর হতে পারে না। তার জন্য তিনজন নির্দোষ শাস্তি পাবে। তাদের পরিবারে ভোগান্তি হবে, এমনটা সহ্য করা কঠিন। মৌনি মোবাইল অন করতেই টং করে একটা নোটিফিকেশন এলো। শাওনের ম্যাসেজ। মৌনি ইনবক্সে না ঢুকে নোটিফিকেশন থেকেই দেখে নিল ম্যাসেজের বিষয়বস্তু। তারপর সময় নিয়ে গোসল করল। পোশাক পাল্টে এক কাপ গরম চা নিয়ে চুল শুকাতে বসে এক ফাঁকে ফোনটা হাতে নিতেই দেখল, শাওন ম্যাসেজ ডিলিট করে দিয়েছে। মৌনি গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে চায়ের কাপের ছবি তুলল। তার কাছে এখন দুটো অপশন আছে। এক, চায়ের কাপের ছবি পাঠিয়ে আগের ম্যাসেজ দেখেও না দেখার অভিনয় করা। দুই, শাওনকে কয়েকটা ধমক আর অদৃশ্য কিছু চপটেঘাত দেওয়া। ছোট থেকে বইয়ের সংস্পর্শে বড় হওয়ার কারণেই কিনা কে জানে মৌনির ধারণা তার অনুভূতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অকস্মাৎ কারো প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো ব্যাপার তার মধ্যে নেই৷ প্রেমে পড়ার ভয় নেই বলেই হয়ত মৌনি সকলের সাথে মিশে যেতে পারে নিঃসংকোচে। মৌনির এডমায়ারদের সংখ্যা খুব কম নয়। মৌনি খুব বিপদে না পড়লে তাদের কাউকেই তেমন একটা এড়িয়ে চলে না। সবার সাথেই তার স্বাভাবিক সম্পর্ক। প্রেমের প্রস্তাব পাওয়া মাত্র কথা বন্ধ, ব্লক, আনফ্রেন্ড করে সম্পর্কটাকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে ফেলা তার খুব একটা পছন্দ না। কাউকে ভালোবাসা অপরাধ না। ভালোবাসার প্রকাশেও অপরাধ নেই। কিন্তু পুরুষ জাতির সমস্যাটা অন্যরকম। প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার পরও যদি কোনো মেয়ে তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করে তাহলে সম্ভবত তাদের ধারণা হয় মেয়েটা অর্ধেক পটে আছে। আরেকটু প্রচেষ্টা করলেই কেল্লা ফতে। শাওন মৌনি সম্পর্কে এই ধরনের ভাবনা ভেবে থাকলে চিন্তার বিষয়। মৌনি একটু ভেবে শাওনকে লিখল,
‘ ডিলেট করে খুব একটা লাভ হয়নি। আমি দেখে ফেলেছি।’
শাওন বোধহয় ইনবক্সে ঘাপটি মেরে বসে ছিল। ম্যাসেজটা পাঠানো মাত্র সীন হয়ে গেল। ওপাশটা কিছুক্ষণ স্তব্ধ রেখে লিখল,
‘ কী দেখেছ?’
‘ যা লিখেছ।’
‘ কী লিখেছি?’
মৌনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাওনের নাম্বারে কল করল। কানে এয়ারপড লাগিয়ে হেয়ার ড্রায়ারে চুল শুকাতে শুকাতে সহজ গলায় বলল,
‘ চুমু ব্যাপারটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ শাওন। আমার বিশাল বন্ধুমহলে পুরুষ বন্ধু অসংখ্য। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কেউ কখনও আমার হাত স্পর্শ করারও অনুমতি পায়নি। এসব ব্যাপারে আমার সংস্কার ভিন্ন। আমার জীবনে দুটো উপায়ে পাওয়া পুরুষকে আমি চুমু খাব বলে পরিকল্পনা করে রেখেছি। প্রথমত, আমি যদি কখনও তুমুল প্রেমে পড়ি। প্রেমের যন্ত্রণায় আমার হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায় তাহলে এই অন্যায় কাজ আমি করে ফেলব। দ্বিতীয়ত, যাকে আমি বিয়ে করব।
প্রেমে আমি বিশ্বাস করি, শাওন। ভালোবাসাতেও বিশ্বাস করি। সেই সাথে বিশ্বাস করি, ভালোবাসা রূপ বদলায়। কারো সাথে খণ্ডকালীন অনুভূতি শেয়ার করে তাকে ছুঁয়ে দিয়ে ফিরে আসা আমার জন্য কঠিন এবং অপমানজনক। এই ইনসিকিউরিটি আমার মনে এতো গভীরভাবে গেঁথে গিয়েছে যে কোনো পুরুষের জন্য প্রেম আমার তৈরি হয় না। এতদিনে আমি বুঝে গিয়েছি, কারো প্রেমে পাগল হয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। কারো প্রেমে পড়ার জন্য আরেকটু বোকা হতে হয়। আমি একটু বেশি চালাক।’
শাওন বলল,
‘ তাহলে তোমার চুমু অসম্পূর্ণ থেকে যাবে? এই দারুণ একটা জীবনে কাউকেই চুমু খাবে না?’
মৌনি হেসে ফেলল। ফুরফুরে মেজাজে বলল,
‘ কেন নয়! দ্বিতীয় অপশনটা তো রয়ে গেল। বর। আমার ধারণা কী জানো? আমি প্রচন্ড বর পাগল হব। সে যেমনই হোক বিয়ে হওয়ার সাথে সাথে তার প্রেমে পাগল হয়ে যাব। তখন তো এই ইনসিকিউরিটি থাকবে না। সারা জীবনের সমস্ত প্রেমের ঢল নামবে। এখন আমার এতো প্রেমের ধকল সে সহ্য করতে পারলেই হলো!’
কথাটা বলে নিজেই হেসে ফেলল মৌনি। শাওন হাসল না। শুধাল,
‘ বিয়েও তো এখন ভেঙে যায় মৌনি। ওভাবে ভাবলে কোনো সম্পর্কই স্থায়ী না।’
‘ স্থায়ী না। কিন্তু এখানে বিবেকের দংশন নেই। তার সাথে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর তাকে চুমু খাওয়ার জন্য আমার আফসোস হবে না। লজ্জা হবে না। আমার মাথা নিচু হয়ে যাবে না। কারণ, যতটুকু আমি নিয়েছি ততটুকু আমার অধিকার ছিল। অন্যকারো অধিকার হরণ আমার পছন্দ না। আমি এই বাইশ বছরের জীবনে কখনও এক মিনিটের জন্যও কারো প্রেমে পড়িনি, কারো প্রতি তীব্রভাবে আকৃষ্ট হইনি, সচেতনভাবে কেউ আমাকে ছুঁতে পারেনি এটা আমার নিজের সাথে নিজের সততা। আমি সৎ থাকতে পছন্দ করি। সেটা যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক।’
‘ তোমার বর বোধহয় খুব ভাগ্যবান কেউ, মন।’
‘ হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। আমি ভীষণ পজিসিভ মানুষ। তাকে খুব জ্বালাতন করব। সে হিসেবে দুর্ভাগাও বলা যায়।’
শাওন ফিসফিস করে বলল,
‘ আমাকে বিয়ে করবে মৌনি?’
মৌনি শক্ত কণ্ঠে বলল,
‘ না শাওন।’
শাওন অধীর কণ্ঠে বলল,
‘ কেন? আমাকে কেন তোমার একেবারেই পছন্দ না?’
মৌনি হেসে বলল,
‘ তোমাকে আমার পছন্দ না, এটা খুব মিথ্যা শাওন। বরং তোমাকে আমার বাড়াবাড়ি রকম পছন্দ। আমি তোমাকে আমার সবথেকে প্রিয় বন্ধু হিসেবে ভালোবাসি। তোমার দুঃখ আমাকে দুঃখ দেয়। তোমার সাফাল্য আমাকে খুশি করে। কিন্তু আমি তোমাকে সেভাবে ভালোবাসি না যেভাবে তুমি চাইছ। এইযে তুমি আমাকে চুমু খাওয়ার কথা বললে? বিশ্বাস করো, তুমি আমাকে নিয়ে এভাবে ভাবো, ভেবেই আমার গা গুলাচ্ছে। অসহ্য লাগছে। গা ঘিনঘিন করছে। শাওন! কেন তোমার আমাকে প্রেয়সী হিসেবেই চাই? কেন আমরা শুধু বন্ধু হয়ে থাকতে পারি না? এমন তো কথা ছিল না। আই রেসপেক্ট ইউর ফিলিংস। হুয়াই ডোন্ট ইউ?’
শাওন কোনো উত্তর দিল না। মৌনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
‘ আমার মনে হয়, আমাদের এবার সবরকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত শাওন। আমার জন্য তুমি মুভ অন করতে পারছ না৷ তোমার জায়গায় অন্যকেউ হলে আমার কিছু আসত যেত না। কিন্তু তুমি আমার ভীষণ ভালো বন্ধু। আমি তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসি। আমি চাই তুমি মুভঅন করো। তুমি এতো চমৎকার একটা ছেলে! আমার মতো মেয়ের জন্য কেন নিজের জীবনীশক্তি নষ্ট করছ বল তো? তোমার আশেপাশে অনেকেই তোমাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। তুমি তাদের সুযোগ দাও৷ এই পৃথিবীতে তোমার জন্য কত ভালোবাসা জমে আছে তা তুমি চিন্তাও করতে পারছ না। আমি তোমাকে ডিজার্ভ করি না শাওন।’
নতুন করে প্রত্যাখানের আঘাত শাওনের বুকের ভেতর নীরব এক ঝড় বইয়ে দিয়ে গেল। বলতে ইচ্ছে হলো, ‘ কেন আমি এতো চমৎকার হলাম যে সেই "চমৎকার" আমাকে তোমার হতে দিচ্ছে না? পৃথিবীর সবাই আমাকে ভালোবাসলেও তো তুমি আমাকে ভালোবাসছ না, মন। এই দুঃখ আমি কোথায় রাখব? তোমাকে আমি কোথায় পাব?’ কিন্তু বলতে হলো অন্য কথা। কণ্ঠটাকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলল,
‘ রিল্যাক্স মৌনি! তুমি একটু বেশিই ভেবে ফেলেছ। ট্রাস্ট মি, আমি অনেকটাই ওভারকাম করে ফেলেছি৷ তোমার প্রতি আমার একটা অনুভূতি আছে ঠিক কিন্তু সেটা এখন খুব হালকা। অবসরে বসে ল্যাপটপের ফাইল ঘাঁটতে গিয়ে হঠাৎ তোমার কিছু ছবি বেরিয়ে এসেছিল। আমার এক বন্ধু ছবি দেখে পরিচয় জানতে চাইলে তোমার প্রতি দুর্বলতার কথা বলেছিলাম। সে আমাকে বোধহয় একটু দুঃখী প্রেমিক হিসেবে দেখতে চাইছিল৷ তাই একটু বাড়িয়ে চাড়িয়ে প্রেটেন্ট করলাম। তাতেই সে নৃত্য করতে করতে এই ম্যাসেজটা পাঠাল। এতে নাকি তুমি গলে যাবে। ওর সাথে ধস্তাধস্তি করে অবশেষে ম্যাসেজ ডিলিট করেছি। তুমি দেখে ফেলবে বুঝতে পারিনি। সরি!’
একের পর এক পোক্ত মিথ্যা। মৌনি বোধহয় কিছুটা আশ্বস্ত হলো৷ সন্দিহান কণ্ঠে বলল,
‘ শিওর?’
শাওন দুরুদুরু বুকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলল,
‘ অবিয়েসলি। তোমরা মেয়েরা কী বল তো? ‘ক’ বললেই কলিকাতা বুঝে বসে থাকো।’
‘ সরি! আচ্ছা, তুমি এখনও আমার ছবিগুলো রেখে দিয়েছ কেন? এর আগেও বহুবার ডিলিট করতে বলেছি। সবগুলো ছবি ডিলিট করো।’
শাওন কথা কাটানোর জন্য বলল,
‘ আচ্ছা করে দিব ডিলিট।’
‘ করে দিব না। এখন করো। আমাকে ভিডিও কলে রেখে তারপর ডিলিট করবে। এর আগেও এই রকম ফাঁপর তুমি বহুবার দিয়েছ।’
শাওন তাড়াহুড়ো করে বলল,
‘ এখন ভিডিও কল দেওয়ার সময় নেই। ব্রেক টাইম শেষ। আমাকে যেতে হবে। ডিলিট করে দিব বলেছি তো। আর থাকলেই বা কী? এতো রিয়েক্ট করছ কেন? আমি তো তোমার ছবি দিয়ে খারাপ কিছু করছি না।’
মৌনি মেজাজ খারাপ করে বলল,
‘ রিয়েক্ট করার মতো কাজ করলে রিয়েক্ট করব না? তুমি এখন মুভ অন করছ। নতুন সম্পর্কে যাবে। বিয়ে করবে। তোমার ল্যাপটপে আমার ছবি কেন থাকবে? তোমার সাথে তো আমার সেই রকম কোনো সম্পর্ক ছিল না শাওন। তুমি কী বাসর ঘরে বসে আমার ছবি দেখার পরিকল্পনা করছ?’
বিরক্ত হলো শাওন। বিগত চার বছর ধরে ছবি ডিলিট করো, ছবি ডিলিট করো বলে ঘ্যানঘ্যান করে চলেছে মৌনি। শাওন বুঝে না, তার কাছে ছবি থাকলে কী এমন বিপদ ঘটে যাবে মৌনির? ওর জীবনে ও মুভ অন করুক, বিয়ে করুক বা মৌনির ছবি দেখে দেখে দেবদাস হয়ে যাক। তাতে তার কী? সুপ্ত জেদ নিয়ে বলল,
‘ হ্যাঁ, ঠিক ধরেছ। প্রয়োজনে তোমার ছবির সাথেই বাসর করব আমি। তুমি এভেলএবল না কিন্তু তোমার ছবি তো এভেলএবল? তাতেই চলবে। তুমি যা করতে পারো করো।’
শাওনের উত্তরে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল মৌনি। যতক্ষণে সংবিৎ ফিরে রাগে চিৎকার করে উঠল ততক্ষণে ওপাশ থেকে ফোন কেটে দিয়েছে শাওন। তারপর থেকে ফোন অফ। কয়েকবার চেষ্টা করেও না পেয়ে রাগে চোখ-মুখ লাল হয়ে গেল মৌনির। শাওন বরাবরই শান্ত ছেলে, ভীষণ ভদ্র। সেই শান্ত ছেলে কেন হঠাৎ এমন ডেস্পারেট হয়ে উঠছে বুঝতে পারছে না মৌনি। শাওন কী একবারও নিজে ভেবে দেখেছে ও কী বলল? মৌনি দুই হাতে মাথা চেপে ধরে দীর্ঘক্ষণ বসে রইল। রাগটা কমা দরকার। এই মাসে তার অনেক কাজ। তিনটা বিজ্ঞাপনের কার্টুন, চারটা বইয়ের প্রচ্ছদ। একটা ম্যাগাজিনে একটা উপন্যাস দেওয়ার কথাও দিয়ে রেখেছে। এই ব্যস্ত সময়ে মাথা গরম করা উচিত না। তারপরও মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। তার সাথে শরীর বেয়ে নেমে আসছে গাঢ় এক বিষণ্ণতা। বারবর শাওনের কথা মনে পড়ছে। মৌনি মাথা নাড়তে নাড়তে বিড়বিড় করে বলল,
‘ ওহ্ শাওন! কেন তুমি এমন করছ? কেন!’
_______________
নাহিদ হাইওয়েতে বাইক ছুটাচ্ছে। তুমুল বৃষ্টি। কানে এয়ারপড। মিষ্টি কথা বলছে। তার কণ্ঠে উচ্ছ্বাস,
‘ তুমি জানো? আজকে আমি ইলিশ মাছের পাতুরি রান্না করেছি। আমার ফার্স্ট ট্রাই ছিল। এতো চমৎকার হয়েছে! তুমি চিন্তাও করতে পারবে না।’
নাহিদের পেছনে বিরক্ত হয়ে বসে আছে সৌধ। তার মেজাজের অবস্থা খারাপ। একে ঝড়ো হাওয়া, তুমুল বৃষ্টিতে চোখ খোলে রাখা যাচ্ছে না। নাহিদের পা এখনও পুরোপুরি সুস্থ না। এই অবস্থায় সে পারলে মেঘের উপর দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে নিচ্ছে বিষয়টা তার পছন্দ হচ্ছে না। মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে ধরা দিয়েছে আরও এক বিপদ। তাদের দৃঢ় ধারণা , তাদের পেছনে কেউ নজর রাখছে। এই বিপদের মধ্যে এসে জুটেছে এই মিষ্টি। এখনই তার নাহিদের সাথে প্রেমের আলাপ করতে হবে? ছেলেটা যদি মনোযোগ হারিয়ে একটা দূর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে? সৌধ পেছন থেকে গজগজ করে বলল,
‘ এই দুর্যোগের মধ্যে তোর এতো পিরিত কেমনে আসে বুঝি না। তোর বেগম ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করলে প্রেমশূন্যতায় মরে যাবে? আশ্চর্য!’
নাহিদ উত্তর না দিয়ে মোটরসাইকেলের আয়নায় তাকাল। হেলমেটের ভেতর শান্ত, স্থির তার চোখ। ভ্রুর কুঞ্চন বুঝিয়ে দিচ্ছে, জটিল কিছু ভাবছে সে। ঘন্টাখানেক ধরে দুটো গাড়ি তাদের অনুসরণ করে বেড়াচ্ছে। একটা গাড়িকে নাহিদ টেক্কা দিয়ে দিয়েছে আরেকটা নাছোড়বান্দার মতো পিছু ছুটছে। এটার একটা ব্যবস্থা করা জরুরি। নাহিদ মনে মনে ছক কষল। তার জটিল ভাবনা তার কণ্ঠে কোনো ছাপ ফেলল না। মিষ্টির উচ্ছ্বসিত কণ্ঠের সাথে তাল মিলিয়ে বলল,
‘ দারুণ! তুমি এতো ভালো রান্না পারো আমি তো জানতাম না। আমাকে কবে খাওয়াবে বলো?’
মিষ্টি বলল,
‘ খাওয়াতে হলে তো বাসায় আসতে হবে। বাসায় আসো।’
নাহিদ হাসল,
‘ আর ইউ শিওর? আমি কিন্তু সত্যি সত্যি চলে আসব। তুমি তো লজ্জায় আমার সাথে দেখাই করো না। খাওয়াবে কী করে?’
কথা সত্য। কোচিং শেষ হওয়ার পর, নাহিদ আর তার দীর্ঘ চার বছরের সম্পর্কে তাদের দেখা হয়েছে মোটে তিন থেকে চারবার। অথচ তারা একই শহরের বাসিন্দা। মিষ্টিকে চমকে দিয়ে নাহিদ বলল,
‘ তুমি বারান্দায় দাঁড়াও, আমি চলে এসেছি।’
মিষ্টি অবাক হয়ে বলল,
‘ কী?’
‘ আর পাঁচ মিনিটের ব্যাপার। তুমি বারান্দায় আসো।’
নাহিদের কথায় চোখ বড় বড় করে তাকাল সৌধ। মিষ্টিও বিস্ময়ে হতবাক হয়ে বলল,
‘ কিহ!’
নাহিদ বলল,
‘ এতো অবাক হচ্ছ কেন? তুমি ডাকলে আর আমি আসবে না, তাই হয়?’
মিষ্টি বিভ্রান্ত হয়ে গেল। নাহিদের চাপা মারার স্বভাব অবশ্য আছে। কিন্তু যদি সত্যি সত্যি চলে আসে? তখন কী হবে? বাবা-মা বাসায় আজ; দেখে ফেললে রক্ষা থাকবে না। ভয়ে অস্থির হয়ে রইল মিষ্টি। নাহিদ হাইওয়ে থেকে নেমে কোথা থেকে কোন রাস্তা, রাস্তার পর গলি, গলির পর গলি করে সৌধকে যেখানে উড়িয়ে নিয়ে এলো সেটা যে ঠিক কোথায় প্রথমে ধরতেই পারল না সৌধ। মাথাটা বার দুয়েক ঝাঁকিয়ে বিভ্রান্ত কণ্ঠে বলল,
‘ বাইক এতো জোরে টানছিস মাথার ঘিলু নড়ে গিয়েছে মনে হয়। কিছুই চিনতেছি না। কোথায় এলাম বন্ধু?’
নাহিদ সে কথার উত্তর না দিয়ে মিষ্টিকে বলল,
‘ আমি অতদূর থেকে চলে এলাম আর তুমি এখনও ঘর থেকে বারান্দায় আসতে পারলে না মিষ্টি?’
মিষ্টি দু'তলার বারান্দার দরজা থেকে উঁকি দিয়ে নাহিদকে দেখল। ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,
‘ তুমি সত্যি সত্যি চলে এসেছ? আল্লাহ! আব্বু বাসায়। প্লিজ চলে যাও। প্লিজ?’
নাহিদ অবাক হয়ে বলল,
‘ তুমি না দাওয়াত দিলে? এখন আবার তাড়িয়ে দিচ্ছ! তোমার মা কিন্তু আমাকে অপছন্দ করেন না।’
মিষ্টি করুণ কণ্ঠে বলল,
‘ এখন ফাজলামো করো না তো নাহিদ। প্লিজ যাও। প্লিজ।’
নাহিদ প্রত্যুত্তর করল না। মোটরসাইকেল নিয়ে মিষ্টির বাসার সামনে থেকে সরে গেল। কোনো এক অচেনা কারণে চোখ-মুখ ধীরে ধীরে থমথম হয়ে এলো তার। মিষ্টি-নাহিদের কথার মাঝেই মিষ্টির ফোনে ঈশানের কল এলো। পরপর দুইবার। মিষ্টি আর মোবাইল ফোনে মনোযোগ ধরে রাখতে পারল না। নাহিদকে বলল,
‘ এখন রাখি। মা ডাকছে।’
নাহিদ বলল,
‘ শিওর।’
মিষ্টি ফোন কেটে ফোনটা সাইলেন্ট করে টেবিলের উপর রেখে দিল। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল, ঈশানের ফোন সে রিসিভ করবে না। কিছুতেই না। ঘন্টাখানেক এটা ওটা করে কাটিয়ে দেওয়ার পর নিজেকে আর ফোন থেকে দূরে রাখতে পারল না মিষ্টি। ফোন হাতে তুলে দেখল ঈশান আর কল করেনি। কলের পরিবর্তে ছোট্ট একটা বার্তা পাঠিয়েছে,
‘ আর ইউ বিজি?’
মিষ্টির বুকের ভেতর অস্থিরতা শুরু হলো। ঈশানের ম্যাসেজের উত্তর কী সে দিবে? নাকি দিবে না? উত্তর দিলে যদি ফোন করে? মিষ্টি ঈশানের সাথে কথা বলতে চায় না। দুঃখজনক ব্যাপার, এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণে ফোন এলে তা এড়িয়েও যেতে পারে না। মিষ্টি একবার ভাবল, ব্লক করে দিবে। কিন্তু খালামণিও একটা অসহ্য। নিশ্চয় এসে জিজ্ঞাসা করবে, কী রে? ঈশানকে নাকি ব্লক করে দিয়েছিস? ও কী তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে? তখন কী উত্তর দিবে মিষ্টি? ভাবতে ভাবতেই ম্যাসেজের উত্তর দিয়ে ফেলল মিষ্টি,
‘ না।’
ম্যাসেজ দিয়েই ফোন কোলে বসে রইল মিষ্টি। তার মনে হচ্ছে ঈশান এখনই কল করবে। মিষ্টির অস্থির লাগছে। নিজের বিবেকের দংশনে তার হাউমাউ করে কান্না পাচ্ছে। মনে হচ্ছে, সে খুব ভয়ংকর অন্যায় করছে। অন্য মন বলছে, অন্যায় কী? কারো সাথে কথা বলা কী পাপ? তাছাড়া মিষ্টি তো কারো থেকে কিছু লুকাইনি। নাহিদ জানে ঈশান মাঝে মাঝে তাকে ফোন দেয়। ঈশানও জানে নাহিদের সাথে তার সম্পর্ক আছে। তারপরও কেন এত অস্থির লাগছে মিষ্টির? মিষ্টির ভাবনার মাঝেই ঈশানের কল এলো। ঈশান দারুণ পুরুষালি কণ্ঠে বলল,
‘ কেমন আছ, মিষ্টি? আমি তোমাকে কল করেছিলাম।’
মিষ্টি দুরুদুরু বুকে বলল,
‘ নাহিদের সাথে কথা বলছিলাম তো।’
ঈশান বিব্রত কণ্ঠে বলল,
‘ ওহ! সরি, ডিস্টার্ব করে ফেলিনি তো?’
মিষ্টি হাসার চেষ্টা করে বলল,
‘ না, না। তেমন কোনো ব্যাপার নেই।’
ঈশান কখনওই নাহিদের মতো সুদর্শন নয়। নাহিদের দারুণ চেহারা, উন্নত নাসা, দীর্ঘ গৌরবর্ণ দেহ। সবকিছু ছাপিয়ে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে নজরকাড়া আভিজাত্য কোনোটাতেই ঈশান তার তুলনায় খাটে না। ঈশান শ্যামকান্ত, দীর্ঘদেহী। নাহিদের মতো দুষ্ট-মিষ্টি, নিষ্পাপ ভাব নেই তার চোখে। বরং তার চেহারায় একটা বুনোভাব প্রকট৷ কণ্ঠস্বর চমৎকার। ব্যবহারে কিছু একটা আছে যা মিষ্টিকে টেনে রাখে চুম্বকের মতো। প্রতিবার ঈশানের সাথে কথা হওয়ার পর মিষ্টির নতুন করে নাহিদ আর তার সম্পর্কের শূন্যতা অনুভব হয়। কোথাও যেন কিছু একটা নেই। কী নেই? একটা তীব্র টান। নাহিদ যেন ঠিক তীব্রভাবে ভালোবাসে না মিষ্টিকে। মানসিক অশান্তিতে ছটফট করতে থাকে মিষ্টি। কোনটা ঠিক কোনটা ভুল সব যেন এলোমেলো হয়ে আসে। এই এলোমেলো কাব্য গুছিয়ে দেওয়ার মতো মানুষ তার নেই। হয়তো আছে। সে হলো, মৌনি।
______________
মেঘের স্বচ্ছ আঁচল ভেদ করে পৃথিবীতে নেমে এসেছে গোধূলির নরম আলো । চারদিকে বেলীফুলের ম ম ঘ্রাণ। রাস্তার দুই ধারে স্থির মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থেকে তাদের কেউই সিদ্ধান্ত নিতে পারল না, এখন কী উপায়? মিথি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। বুঝতে পারছে না, তার কী এগিয়ে যাওয়া উচিত? সাব্বির যেহেতু উদ্যোগ নিয়ে রিকশা থেকে নামল সে হিসেবে পরবর্তী স্ট্যান্ড মিথি নিবে এমনটাই কাম্য। কিন্তু এগিয়ে গিয়ে কী বলবে তাকে মিথি? সে তো আর আট-দশটা পরিচিত পুরুষের মতো কেউ নয়। তার সাথে কাজের কথাও বলা যাবে না। এদিকে কাজের বাইরে কথা বলাতেও মিথি অভ্যস্ত না। সবথেকে বিপদের কথা, এমন অদ্ভুত সম্পর্কে আবদ্ধ দুটো মানুষের মুখোমুখি কী কথা থাকতে পারে তাতেই এক বিস্ময়সূচক চিহ্ন। বিয়ের রাতে ব্যাপারটা অন্যরকম ছিল। কিন্তু এখন, এই মাঝ রাস্তায়, এই মুহূর্তে কী কথা বলবে মিথি? ভাবতে ভাবতেই দুয়েক পা এগিয়ে গেল মিথি। সাব্বিরও এগিয়ে এলো কিছুটা। তারা যখন প্রথমবারের মতো পাশাপাশি দাঁড়াল মিথি ভাবল শুধাবে,
‘ কেমন আছেন?’
কিন্তু মুখ থেকে বেরিয়ে এলো,
‘ মেয়েটা কে ছিল?’
মিথির কণ্ঠটা বেঈমানী করে বাজলও ঠিক সন্দেহপ্রবন বউদের মতোন। সাব্বির মিথির এমন প্রশ্নে চমকে মিথির মুখের দিকে তাকাল। মিথি যে প্রথমেই এমন প্রশ্ন করে বসবে সাব্বির তা কল্পনা করতে পারেনি বলেই হয়ত বিস্ময়ে বাক্যহারা হয়ে গেল। মিথি মনে মনে নিজের মাথা কুটে তিনভাগ করার মাঝেই সাব্বির মৃদু গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
‘ বিশেষ কেউ না।’
আবার একই ভুল করল মিথি। ভ্রু বাঁকিয়ে ঠেস দেওয়া কণ্ঠে বলল,
‘ বিশেষ কেউ না! বিশেষ কেউ না হলেও যে মানুষ এতো ঘনিষ্ঠ হয়ে রিকশা ভ্রমণে বেরোয় জানতাম না তো!’
মিথির আবারও বিরক্তিতে নিজের মাথা ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করল। কিন্তু বলে যখন ফেলেছে তখন আর ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া, ভুল কিছুও তো বলেনি মিথি। রাতের অন্ধকার বিয়ে করে এসে দিনের আলোয় অন্য মেয়ে নিয়ে রিকশা ভ্রমণ! কত বড় সাহস! মিথির কণ্ঠস্বর বা চোখ-মুখের অবস্থা দেখেই কে জানে? সাব্বির মনের অজান্তেই কৈফিয়ত দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল,
‘ রিকশা ভ্রমণ করছিলাম কোথায়? বাড়ি ফিরছিলাম। বৃষ্টি হুট করে উঠে পড়ল রিকশায়।’
‘ বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি? বাহ, চমৎকার!’
সাব্বির অসহায়বোধ করল। শুধু বউ না মেয়ে ব্যাপারটাই তার কাছে নবীন ও আতঙ্কের বিষয়। সে মিথিকে কৈফিয়ত দেওয়ার চেষ্টা করে বলল,
‘ দেখুন, আপনি ভুল ভাবছেন। বৃষ্টি বাচ্চা একটা মেয়ে…’
সাব্বিরের কথা শেষ করতে দিল না মিথি। ভ্রু উঁচিয়ে থমথমে কণ্ঠে বলল,
‘ ওকে আপনার বাচ্চা মেয়ে মনে হয়? মেডিক্যাল কলেজের স্টুডেন্ট আবার বাচ্চা হয় কী করে? আপনি তাকে বাচ্চা মনে করলেও সে নিজেকে বাচ্চা মনে করে না। ওর চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছিল, সে কী চায়।’
সাব্বির অসহায় কণ্ঠে বলল,
‘ আমার বয়সের তুলনায় সে তো বাচ্চাই মিথি। তাছাড়া আমি কী করতাম? ওকে রিকশা থেকে নামিয়ে দিতাম? বিষয়টা ভালো দেখাত?’
মিথি কঠিন চোখে তাকাল। তার থেকেও কঠিন কণ্ঠে বলল,
‘ নামিয়ে কেন দিবেন? আপনিই বরং উঠে পড়ুন৷ আপনার কাছে বৃষ্টির নাম্বার আছে না? তাকে কল দিন। মেয়েটা বোধহয় বেশিদূর যায়নি। তাকে বলুন অপেক্ষা করতে। তারপর গিয়ে রিকশায় উঠে বসুন এবং মনের আনন্দে বাড়ি ফিরুন। আমার জন্য একটা ঝামেলা হয়ে গেল সেজন্য দুঃখিত। আমি চলে যাচ্ছি।’
কথা শেষ করে এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে উল্টো পথে হাঁটা দিল মিথি। সাব্বির বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে বলল,
‘ আরে, আশ্চর্য তো! মিথি!’
দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলে মিথির পেছন পেছন গেল সাব্বির। এতোকিছুর ভিড়ে তাদের হয়ত খেয়ালই রইল না, টেকনিক্যালি আজই তাদের প্রথম সাক্ষাৎ আর তারা মাঝরাস্তায় স্বামী-স্ত্রীর মতো কী নিঁখুত ঝগড়া জুড়ে বসেছে। সৃষ্টিকর্তা বুঝি তাদের এই মিষ্টি যন্ত্রণায় বড় আনন্দ পেলেন। সেই আনন্দের স্বরূপ একটু পরই আকাশ ভেঙে ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। ঠান্ডা, শীতল জলধারায় মুহূর্তেই ভিজে গেল নিজেদের পরিবর্তনে বিস্মিত, হতভম্ব, কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবুঝ এক দম্পত্তি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১৪তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা নৌশিন আহমেদ রোদেলা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন