উপন্যাস       :        আদিল মির্জা'স বিলাভড
লেখিকা        :         নাবিলা ইষ্ক
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ ইং

লেখিকা নাবিলা ইষ্ক-র “আদিল মির্জা'স বিলাভড” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৫ সালের ১৭ই অক্টোবর থেকে লেখা শুরু করেছেন।

আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক
আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক

আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক (পর্ব - ১০)

এলেন দাঁড়িয়ে আছে আদিল মির্জার রুমের সামনে। নিপুণভাবে খেয়াল করলে বোঝা যাবে তার গম্ভীরমুখে্র উজ্জ্বলতা। গতকাল দ্রুতো ফিরে জম্পেশ এক ঘুম দিয়েছিল। সারারাত ঘুমিয়েছে। ঘুম ভালো হলে মেজাজ ভালো থাকে। এইতো তার ফুরফুরে মেজাজটা ফানুসের মতো উড়ে গেলো শান্তর আগমনে। তাড়াহুড়ো করে এসে দাঁড়িয়েছে পাশে। কনুই দিয়ে পেটে দুটো গুঁতো মেরে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে -
‘বস উঠেছে?’
এলেন সতর্ক হয়। শান্তর বিচলিত চোখমুখ দেখে ডান ভ্রু তুলে। সন্ধিহান কণ্ঠে প্রশ্ন করে, ‘কী ব্যাপার? মিস রোযা কোথায়? ধ্রুব এখনো ফেরেনি?’
শান্ত জবাব দেবার প্রয়োজনবোধ করল না। দরজায় নক করল। দুটো শব্দের বিপরীতে ভেতর থেকে আদিলের কণ্ঠ শোনা গেলো। শান্ত প্রবেশ করল দরজা ঠেলে। আদিল ফর্মাল গেট-আপে আবৃত হয়ে বসে আছে সোফায়। তার পাশেই শার্টের ওপরে পরার ভেস্ট আর কোট রাখা। হাতে ব্যবসা আর অর্থনীতির ম্যাগাজিন। পৃষ্ঠা উল্টেপাল্টে বেশ মনোযোগ দিয়ে তাই দেখছিল।
‘কী?’ 
আদিলের প্রশ্নে আরেকটু এগুলো শান্ত। সামনাসামনি বলবে বলে। হঠাৎ বেহিসাবিতে চোখ গেলো টেবিলের ওপর। শ্বাস আটকে এলো মুহূর্তে। জমে গেলো সে। মুখটা হা করে একবার তাকাল নির্বিকার বসের দিকে আরেকবার টেবিলের ওপরে রাখা ট্যাবলেটের দিকে। ট্যাবলেটে তখনো গতবছরের লাইভের একাংশ চলছে— হৃদির রুমের। মিস রোযা হৃদিকে নিয়ে বসে আছে সোফায়। হৃদি ঘুমিয়ে আছে তার বুকে, আর রোযা বই পড়ছে। ট্যাবলেটের পাশে একটা বায়োডাটার ফাইল অবহেলায় পড়ে আছে। ফাইলের ওপরে মিস রোযার ছবি। 
শান্ত বড়ো করে ঢোক গিলল। পরমুহূর্তেই নিজেকে নির্বিকার করার সামান্য চেষ্টা করল। কী বলবে সে আর? মনে হচ্ছে তার বস সবই জানেন ইতোমধ্যে! তারমানে কী দাঁড়াচ্ছে? বস মিস রোযাকে সিসিটিভি দিয়ে এতোকাল দেখে এসেছেন? শান্তর গলার ভেতরটা শুকিয়ে এলো। পার্সোনাল বডিগার্ড হয়েও কোনো আঁচ পেলো না তারা! শান্ত কথা বলতে গিয়ে সামান্য তোতলালো -
‘ব-বস, মিস রোযা আজ আসবে না।’
আদিল তাকাল না ম্যাগাজিন থেকে। জবাবে নাকমুখে শব্দ করল শুধু। শান্তর মাথায় মনে হয় বড়ো একটা বাজ পড়ল। সে যে এমন কঠোর পরিশ্রম করে গেলো বসের ডেটিং লাইফ বানাতে — এতো উস্কালো সেসবের কি তবে কোনো মানে নেই? বস তলে-তলে টেম্পু নিজেই গুছিয়ে রেখেছেন? শান্ত বলদের মতো বলল -
‘বস, মি-মিস রোযা মনে হয় ওই.. ওই বলদটাকে বিয়েটিয়ে করে ফেলতে পারে।’
আদিল ম্যাগাজিন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তাকাল শান্তর দিকে। স্বাভাবিক চোখে তাকালেও শান্তর পিঠ বেয়ে যেন শিহরণ বয়ে গেলো। কথা ঘুরিয়ে ফেলল -
‘না মানে বিয়ে খেতে কী যাওয়া উচিত না? কি-কিছু কিনব কি-না!’
আদিল আবারও ম্যাগাজিনে দৃষ্টি রাখল। পৃষ্ঠা ওল্টাতে ওল্টাতে বলল -
‘গতকাল একটা ডোজ খেয়েছে। রাতারাতি বিয়ে করে ফেলার মতো সিদ্ধান্ত নেয়াটাই স্বাভাবিক।’
ডোজ? কেমন ডোজ বস? শান্তর মাথায় নানান দৃশ্য ভাসল। দুষ্টু ভাবনাদের অশ্লীল পর্যায়ে যেতে দিলো না। এলেন গলাটা পরিষ্কার করে নিলো। বেচারা কিছুক্ষণ স্তব্ধ ছিলো শান্তর পেছনে। এযাত্রায় স্বাভাবিক হয়ে বলল -
‘বস, তুলে নিয়ে আসবো?’
শান্তর মুখটা হা হয়ে এলো। মাথাটা ঘুরিয়ে তাকাল গিরগিটির থেকেও দ্রুতো চেহারা বদলে নেয়া মুখের দিকে। এই না তাকে বকল, চোখ রাঙাল বসকে সে উস্কিয়েছে বলে? এখন যেই বুঝল জল ঘোলা আর গভীর —ওমনি রূপ পরিবর্তন করে ফেলল! এলেন ভ্রুক্ষেপ করল না। নিজের মতো দাঁড়িয়ে আছে আদেশের অপেক্ষায়। তখুনি মৃদু শব্দ তুলে প্রবেশ করল হৃদি। ঘুম থেকে উঠে এখনো ফ্রেশ হয়নি। শরীরে তখনো কার্টুনের নাইটস্যুট। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। হাতের লম্বা, পাতলা, চিকন বিড়ালের পুতুলটা বাম হাত দিয়ে পেটের দিকে জড়িয়ে রাখা। পুতুলের বিড়ালের লম্বা পা-জোড়া মেঝে স্পর্শ করছে। চোখমুখ কেমন অসহায় ওর -
‘ড্যাডি, স্নো-হোয়াইট এখনো কেনো আসেনি।’
আদিল তখুনি তাকাল। ম্যাগাজিন পাশে রেখে দু-হাত বাড়িয়ে হৃদি বাবার কোলে চড়ে বসল। কাঁদোকাঁদো মুখে প্রশ্ন করে গেলো -
‘সবসময় স্নো-হোয়াইট এসে আমার ঘুম ভাঙায়। হোয়ের ইজ শি, ড্যাড?’
হৃদি আঙুল তুলে এলেন, শান্তকে দেখাল, ‘টেল দেম টু ব্রিং হার টু মি।’
আদিল মেয়ের ধূসর রঙা চোখের দিকে তাকায়। নিজের কার্বনকপি মুখটার দিকে তাকালেই তার শ ক্ত হৃদয়ে যেন বাতাসের দোল লাগে। হৃদি কেঁদে দেবে দেবে ভাব। মেয়ের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে দিয়ে, গাল ছুঁয়ে দিয়ে আস্তে কর প্রশ্ন করল -
 ‘ডু ইউ লাইক হার দ্যাট মাচ?’
হৃদি অসন্তুষ্ট হলো যেন, ‘লাইক? আই লাভ হার ড্যাডি।’
আদিলের গম্ভীর মুখে হালকা নম্রতা নেমে এলো, ‘উম। হোয়াট এবাউট ইওর স্নো-হোয়াইট? সে তোমাকে কতটা ভালোবাসে? ভালোবাসে তো?’
‘ভীষণ। স্নো-হোয়াইট বলেছে, সে কল্পনাও করতে পারে না আমাকে ছাড়া থাকার কথা। শি লাভস মি আ লট।’
আদিল সম্মত হয় এইকথায়। তার চোখে ভাসে সেদিনকার দৃশ্য। নিজের জীবন ঝুঁকিতে রেখে হৃদিকে আগলে নেয়া, বন্দুক হাতে তুলতে দ্বিধা না করা, গু লি ছুঁড়তে দ্বিধা না করা রোযাকে। সত্যটা জানলে নিশ্চয়ই পিছিয়ে যাবে? যাবে তো? আদিল ঝুঁকি নিবে। বড় ধরনের ঝুঁকি। মেয়ের চুল বুলিয়ে বলল -
‘যাও, মিসেস মরিয়ম তোমাকে রেডি করে দেবে, অ্যান্ড দ্যান উই উইল গো আউট। উড ইউ লাইক টু গো শপিং উইদ ড্যাডি?’
হৃদি আনন্দে, উচ্ছ্বাসে হাসতে লাগল। দু-হাতে বাবার গলা জড়িয়ে সমানে মাথা দোলাল। মিসেস মরিয়ম এসে দাঁড়িয়েছে দুয়ারের সামনে। আদিল মেয়ের মাথায় ঠোঁট ছুঁইয়ে নামিয়ে দিলো মেঝেতে। হৃদি লাফাতে লাফাতে চলে গেলো মিসেস মরিয়মের হাত ধরে। মেয়ে দৃষ্টির বাইরে যেতেই কেমন আদিলের মুখটা গম্ভীর হয়ে এলো। শান্ত আড়চোখে দেখে দৃষ্টি নামাল। সে কিছু বলতে চায়, কিন্তু সাহস পাচ্ছে না। এলেন একবার ভয়ানক বাক্য বলেছে। তাই দ্বিতীয়বার আর কিছু বলার সাহস করছে না। চুপচাপ বসের আদেশের অপেক্ষায় ওরা। আদিল অনেকটা সময় পরে মুখ খুলল -
‘চোখ রাখতে বল শুধু। কিছু করতে হবে না।’
শান্ত ছটফট করছে। হাঁসফাঁস করছে বারেবারে আড়ে-আড়ে ট্যাবলেটের দিকে চেয়ে। আদিল একবার তাকিয়ে এযাত্রায় বলল -
‘কী বলতে চাচ্ছিস?’
শান্ত খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে প্রশ্ন করল, ‘ব..বস পটল কি আগেই তোলা হয়ে গিয়েছিল?’
এলেন আঁতকে উঠে শান্তর থেকে কয়েক কদম সরে দাঁড়াল। আগেই জানিয়ে দিচ্ছে, এই ছেলের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই বস। আদিল নির্বিকার মুখে উঠে দাঁড়াতেই শান্ত দরজার দিকে পিছুতে পিছুতে বলল -
‘বস অন্য কোনো মিনিং করিনি। সত্য, এলেনের কসম। এলেনের কসম।’
এলেনের মুখে একগাদা গালি জমে আছে। সে দিতে পারছে না। আদিল থামল না। এসে শান্তর পেটে কয়েকটা সফট ঘুষি মার তেই বেচারা ফ্লোরে বসে পড়ল ভীষণ ড্রামাটিক ভাবে। আদিল ফের এসে বসল সোফায়। আড়চোখে তাকাল ট্যাবলেটের দিকে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে দু-জোড়া বড়ো বড়ো দৃষ্টির সামনে তুলে নিলো। ছোটো ছোটো কিছু ক্লিপ্স আলাদা করা। সব সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে কাট করা। এলেন আড়চোখে চেয়ে প্রশ্ন করে ফেলল -
‘বস, ওখানে এখনকার ভিডিওতো সব, তাই না?’
আদিল উত্তর দিলো না। ফোল্ডার করা চারটা। চারটা, একেকবছরের…চার বছরের চারটা। আদিলের মনে পড়ছে না সে কবে থেকে মিস রোযাকে খেয়াল করেছিল। সে শুধু নিজের মেয়েকে দেখতো। নিজের মেয়ের সেইফটি নিশ্চিত করতে নজর রাখতো। এরপর মেয়ে বাদেও নজর কোথাও একটা, ভীষণ আগে থেকেই ছিল। তা ভয়ংকর রূপ সম্ভবত ওইদিনই নিয়েছে। যেদিন সে রোযার চোখে আগুন দেখেছে, হাতে বন্দুক দেখেছে। 
.
চারটা গাড়ি বাগিচার মধ্যের সরু রাস্তা জুড়ে। একসাথে বেরুবো। বডিগার্ডস তৈরি হয়ে আছে গাড়ির সামনে। শান্ত আর এলেন কিছু একটা নিয়ে এখনো বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। স্বপণ ওদের মধ্যে দাঁড়িয়ে শুনছে। সেসময় আদিল বেরিয়ে এলো। এবারে নেভিব্লু শার্টের ওপরে কালো ভেস্ট পরা। কোট বাম হাতে। ডান হাত ধরে রেখেছে হৃদি। ও ভীষণ পছন্দ করে বাবার সাথে ঘুরতে যেতে। বলা যায়, ভালোবাসে। মুখিয়ে থাকে এইদিনের জন্য। এইতো সুন্দর করে লাফিয়ে লাফিয়ে এগুচ্ছে। গাড়ির সামনে এসে আদিলের চোখ পড়ল মেয়ের জুতোয়। ফিতে ঢিলে হয়ে ছুটে এসেছে। আদিল কোট-টা শান্তর হাতে দিয়ে বসল দু-পায়ের ওপর ভর দিয়ে। বেঁধে দিলো ফিতাগুলো। 
‘লেটস গো।’
হৃদির বাবার সুরে সুর মেলাল, ‘লেটস গোওওঅঅঅঅ….’
———
লিভিংরুমের সোফায় বসে টেলিভিশনে মন দেয়ার চেষ্টা করছিল রোযা। কিন্তু কোনোভাবেই মনোযোগ দিতে পারছে না। হৃদির কথা মনে পড়ছে! বাচ্চাটা রেডি হয়ে স্কুল গিয়েছে কী? একটা বেলা দেখতে না পেয়েই কেমন শূন্য শূন্য লাগছে। তোতাপাখির মতো, স্নো-হোয়াইট ডাকটা যে সে ভীষণ মিস করছে। রোযা পাশ থেকে ফোনটা হাতে তুলে নিলো। ফটোসে গিয়ে দেখতে থাকল ছবিগুলো। কতশত ছবি তাদের দুজানার। ওসময় পেছন থেকে একটা মাথা ফোনের স্ক্রিনের ওপর চলে এলো। রাজু হৃদির ছবি দেখে বলল -
‘পুতুলের মতো লাগে। ও কি আর্টিফিশিয়াল?’
রোযা সঙ্গে সঙ্গে ভাইয়ের কান টেনে ধরল, ‘বাজে কথা কম বকবি।’
‘আচ্ছা রে বাবা, ছাড়ো। কানটা ছিঁড়ে দিবা তো। মা.. ও মা, তোমার মেয়েকে বলো কান ছাড়তে। এই কেমন জলদস্যুর মতো কর্মকাণ্ড!’
নিপা বেগম মাথাটা কাঁত করে চেয়ে আবারও নিজের কাজে মনোযোগ দিলেন। রোযা ছাড়ল। ফের ছবি দেখতে দেখতে বলল,
 ‘মাকে বল চা করে দিতে এক কাপ।’
আজিজুল সাহেব খুঁড়ে খুঁড়ে এলেন লিভিংরুমে। রোযা গিয়ে ধরে বাবাকে বসাল সোফায়। নিজেও বসল পাশে। ভদ্রলোক আমতা-আমতা করলেন একটু জিরিয়ে নিয়ে -
‘কিছু তো বললা না। কিছু কী হইসে কাজের যায়গাতে? কিচ্ছু বলতে চাও না। সব নিজের মধ্যে রাখলে হয়?’
রোযা অসহায় চোখে তাকিয়ে বলল, ‘কিছু হলে না বলবো! কিছুই হয়নি। তুমি এক কাপ চা খাও, বাবা। অবশ্যই সুগার কম দিয়ে।’
বলে রোযা পুনরায় ফোনে মনোযোগ রাখল। একটা পোস্ট করল হৃদিকে নিয়ে। ছবিতে হৃদি আর সে। হৃদি মুখ আড়াল করা। এই সিঙ্গেল ছবিটিতে গান লাগিয়েছে। গানটা - 
‘লক্ষ্মী সোনা, আদর করে দিচ্ছি তোকে…’
কোনো ক্যামশন নেই। এই একাউন্ট পাব্লিক। ভার্সিটির, কলেজের, স্কুলের সহ অনেক বন্ধুরা আছে। ওদের মধ্যেই একজন ইতোমধ্যে কমেন্ট করে ফেলেছে। রোযার ওসব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। সে গানটা শুনে ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ চোখ গেলো আশ্চর্যজনক এক নামে। এইমাত্র একটু একাউন্ট তার পোস্টে রিয়াক্ট করেছে। নাম - আদিল মির্জা। রোযার হাত থেকে ফোন পড়তে গিয়েও পড়েনি। সে দ্রুতো ওই নামের একাউন্টে ঢুকল। দেয়ার ইজ নাথিং! ফাঁকা একাউন্ট। প্রোফাইল নেই, কভার নেই, পোস্ট নেই। কে এটা? কিছুক্ষণের জন্য বিচলিত হলেও পরমুহূর্তে শান্ত হলো। আদিল মির্জা হবে কেনো? আবার হতেও তো পারে? রোযা দ্বিধান্বিত বড্ড। 
চিন্তাভাবনার মধ্যে কল এলো জিহাদের। রোযা দ্রুত রিসিভ করল। বলল -
‘কোথায় তুমি? তোমাকে পাওয়া যাচ্ছে না কেনো? বাসায় আসো বিকেল দিকে আন্টি, আংকেলকে নিয়ে। জরুরী কথা আছে।’
———
‘হাউ এবাউট দিস ওয়ান স্যার?’
সেলস উইমেনের হাতে একজোড়া গোলাপি রঙের জুতো। স্টনের কাজ করা অল্প। ভীষণ সুন্দর দেখতে। আদিল বসেছিল সোফায়। ফোন হাতে। ফিডে রোযার পোস্ট। তার পাশেই হৃদি। এযাত্রায় আদিল তাকাল পাশে বসা মেয়ের দিকে। হৃদিও চেয়ে আছে বাবার দিকে। চোখ দিয়ে যেমন প্রশ্ন করছে, বাবা জুতোজোড়া কি সুন্দর? নেবো? আদিল হাত বাড়িয়ে জুতো জোড়া নিয়ে নিজেই মেয়ের পা-জোড়ায় পরিয়ে প্রশ্ন করে -
‘ভালো লাগছে?’
হৃদি মাথা দোলাতেই জুতোজোড়া প্যাক করতে দিয়ে দিলো। হৃদি সোফা থেকে নেমে ঘুরছে ছোটো ছোটো পায়ে। কিছু আর পছন্দ হচ্ছে না দেখে ফিরে এলো। শান্ত ইতোমধ্যে ক্যাশিয়ারে কার্ড দিয়ে পেমেন্ট সেরে ফেলেছে। টোটাল বারোটা ব্যাগ তার হাতে। আদিল মেয়ের হাত ধরে স্টোর থেকে বেরিয়ে এলো। পাশেরটায় ঢুকল। এটা বাচ্চাদের সুন্দর সুন্দর জামাকাপডড়ের। হৃদি ঢুকে একমুহূর্তে ঘুরে কয়েকটা ড্রেস ধরে সেলসগার্লকে দেখিয়ে বাবার পাশে এসে হাত ধরে দাঁড়াল। শান্ত গিয়ে পেমেন্ট করে শপিং ব্যাগ গুলো নিলো। এরপর তারা শপিংমলের পার্কিং এরিয়াতে চলে এলো। তাদের গাড়ি এখানেই পার্ক করা। এলেন ছিলো গাড়িতে। বেরিয়ে এসে গাড়ির দরজা খুলে ধরেছে। মেয়েকে উঠিয়ে আদিল ওপর পাশ দিয়ে উঠে বসল। দ্বিতীয় গন্তব্য ফাইভস্টার রেস্টুরেন্ট। দুপুরের লাঞ্চ করবে ওখানে। হৃদির ওদের রেস্টুরেন্টের সি-ফুড পছন্দের। মেয়েটার জন্মদিন চলে আসছে প্রায়। অক্টোবরের ছয় তারিখ। আজ এক। আর মাত্র পাঁচদিন। প্রত্যেকবার দেশের বাইরে জন্মদিন পালন করা হলেও এবারে দেশেই আয়োজন করবে। মির্জা বাড়িতেই…. 

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


 Follow Now Our Google News



চলবে ...

১১তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা নাবিলা ইষ্ক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন