উপন্যাস                  :         শরম 
লেখিকা                    :         তসলিমা নাসরিন
গ্রন্থ                          :         শরম 
প্রকাশকাল              :       

জনপ্রিয় প্রথাবিরোধী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বহুল আলোচিত উপন্যাস 'লজ্জা'। ১৯৯৩ সালে এটি বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রকাশের প্রথম ছয় মাসেই বইটি পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি বৈধ কপি বিক্রি হয়। এরপর ধর্মীয় মৌলিবাদিদের একতরফা বিতর্কের মুখে উপন্যাসটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালিন বাংলাদেশ সরকার। পরবর্তীতে 'লজ্জা' উপন্যাসটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন দেশে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি লেখার কারণে দেশ ছাড়তে হয়েছিল লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। 

পরবর্তীতে 'লজ্জা' উপন্যাসের নায়কের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দেখা হয়েছিলো লেখিকা তসলিমা নাসরিনের। সেই অনুভূতিকে পুজি করে তিনি লিখলেন নতুন উপন্যাস 'শরম'। এ উপন্যাসটি কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। আজ প্রকাশিত হলো 'শরম' উপন্যাসের ৪র্থ পর্ব।
শরম || তসলিমা নাসরিন
শরম || তসলিমা নাসরিন


৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শরম || তসলিমা নাসরিন (পর্ব - ০৪)

- কে এসেছে?
- সুরঞ্জন দত্ত।
সুজাতা বললো।
- সুরঞ্জন দত্ত?
- তাই তো বললো। আর, আগেও তো একদিন এসেছিল। বলি দরজা খুলে ড্রইংরুমে বসাতে। এরকম হুট করে না বলে কয়ে কেউ আসে না আমার বাড়িতে। এসব সেই ছোটবেলায় ঘটতো। যে কেউ যে কারও বাড়ি চলে যেত হঠাৎ। দরজার কড়া নাড়তো। দরজা খুলে দেওয়া হত ভেতর থেকে। সাদরে ভেতরে ডাকা হত অনাহুত অতিথিদের। চা বিস্কুট সেমাই পায়েস এসব দেওয়া হত খেতে। বড় হওয়ার পর এমন দেখিনি। বিশেষ করে বারো বছর ইওরোপ আমেরিকায় বসবাসের সময়। কলকাতায় বাস করছি। না। কলকাতাতেও এমন ঘটনা দেখিনি। না বলে কেউ কারও বাড়িতে আসে না। সুরঞ্জন কি এখনও দেশের স্বভাবটাই রেখে দিয়েছে নাকি! ভাবি। সপ্তাহখানিক আগে এসেছিল সে। হঠাৎ আজ আবার কিসের প্রয়োজন! ভাবি। মোটে তো কথাই বলে না কেমন আছে কী করছে। কথা কি আজও আমারও বলে যেতে হবে। নাকি কথাহীন নৈঃশব্দকে সামনে নিয়ে অস্বস্তিকর বসে থাকাই হবে!

কমপিউটারে লিখছিলাম। কমপিউটারেই লিখি আজ ষোলো বছর। লেখা ফেলে ড্রইংরুমে ঢুকে দেখি সুরঞ্জন। সেদিনের চেয়ে আজ তাজা লাগছে। নীল একটা ফুল সার্ট পরেছে। এরকম সার্টও যে কাউকে ভালো দেখাতে পারে, আগে বোধহয় এতটা জানা ছিল না। কালো একটা কর্ডের প্যান্ট। জুতোটাও আগের দিনের মতো নয়। খোঁচা খোঁচা দাড়ির চিহ্ন নেই। নীলাভ গাল। চোখ নত নয়। খোলা। মুখে স্মিত হাসি। হাতের আঙুলে আগের দিনও সুরঞ্জনের পাথর বসানো আংটি দেখিনি। কব্জিতে লাল সুতো দেখিনি। আজও নেই। একটু অবাকই হই। এই কলাকাতায় শিক্ষিত হোক অশিক্ষিত হোক, ধনী দরিদ্র, শিল্পী, মহাশিল্পী, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বৈজ্ঞানিক, বৈমানিক সবারই হাতে লাল সুতো দেখি। কারও খালি কব্জি দেখলে একটু অবাক হই। ব্যাপার কী, এ লোক কি ধর্মে বিশ্বাস করে না? খবর নিয়ে দেখি, করে, তবে শিগগিরই কোনও পুজো সারেনি। 
সুরঞ্জনের কব্জিতে সুতো আশা করার কারণ তো ওই একটিই। ধীরে ধীরে সুরঞ্জনের সাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠা, নাস্তিকের ধর্ম বিশ্বাসী হওয়া। লজ্জার লজ্জা তো ওইখানেই ছিল সবচেয়ে বেশি। নাগরিকদের নিরাপত্তা না দিয়ে অসাম্প্রদায়িক আদর্শবাদী একটা প্রজন্মকেই নষ্ট করে দিয়েছিল রাষ্ট্রের উদাসিনতা। সুরঞ্জন একসময়ের সাম্যবাদে বিশ্বাসী কমিউনিস্ট পার্টি করা ছেলে কিনা ভীষণ রকম হিন্দু হয়ে উঠলো। মুসলমানদের সব এককাতারে ফেলে দিয়ে বললো, ওরা। কাউকে ক্ষমা করেনি।


তসলিমাকে করেছিল? নাকি তসলিমা ইসলাম ত্যাগ করেছিল বলে সুরঞ্জনের ক্ষমা পেয়েছিল! লাল সুতোহীন দুটো হাতের দিকে তাকিয়ে বললাম, বসো। তারপর কী খবর বলো। এদিকে এসেছিলে কোথাও?
সুরঞ্জন সোজা আমার চোখে তাকিয়ে বলে, - না। আপনার কাছেই এসেছি।
- ও।
- আমার ফোন নম্বরটা বোধহয় তোমার নেই। তাই না?

সুরঞ্জন আমার ফোন নম্বরটি নেওয়ার কোনও আগ্রহ দেখায় না। তবু আমি একটি কাগজে নম্বর লিখে বাড়িয়ে দিই। অগত্যা সে কাগজের টুকরোটি হাতে নেয়। নেয় বটে, নম্বরের দিকে একবারও না তাকিয়েই বুক পকেটে ঢুকিয়ে দেয়। এসেছে নিশ্চয়ই কিছু বলতে এসেছে।
- বলো কী খবর। ভালো আছো?

মাথা নাড়ে সে। একবারও জিজ্ঞেস করে না আমি ভালো আছি কি না। এ শহরের আরও অনেককে দেখেছি, ভালো আছো বা আছেন কি না জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিয়ে বসে থাকে। পাল্টা জিজ্ঞেস করে না তুমি বা আপনি কেমন আছো বা আছেন। ধন্যবাদ দেওয়ার অভ্যেসও নেই। এই যে আমি ফোন নম্বরটা দিলাম, একটি ধন্যবাদ তো প্রাপ্য ছিল। অবশ্য বাঙালিরা মনে করে ধন্যবাদ জানালে খাটো করা হয়। সে কারণেই হয়তো খাটো করেনি আমাকে।

মাথা নাড়ার পর আর কোনও কথা নেই। এখন সোফায় মুখোমুখি বসে থাকতে হবে। না, এ আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কথা বল নয়, চলে যাও। এরকম রাগ আমার অবয়বে।
- আচ্ছা তুমি কি এরকমই কম কথা বলো সুরঞ্জন! নাকি আমার সঙ্গেই বল! আগে তো এত চুপচাপ ছিলে না। খুব পাল্টে গেছ কি?

সুরঞ্জন হাসে। এই হাসিটি কোনও সরল হাসি নয়। হাসিটির অনুবাদ করা খুব সহজ বলে আমার মনে হয় না। একে নিয়ে ঠিক কী করবো, বুঝতে পারি না।
- তুমি কি কিছু বলবে আমাকে? জিজ্ঞেস করি।
সুরঞ্জন মাথা নত করে। মাথা নত করা লোকদের নিয়ে আমি খুব স্বচ্ছন্দ বোধ করি না। সম্ভবত কিছু বলতে চায় সে। আমার ইচ্ছেটির কথা বলি, যে, একদিন তার মার সঙ্গে আর মায়ার সঙ্গে দেখা করতে চাই।
এবার চোখ তুলে তাকায়। ঘাড় নাড়ে। হ্যাঁ সে রাজি।
- আজ চলো, আমার সঙ্গে খাবে। সময় আছে তো? কাজ নেই তো?
আমার দিক থেকে প্রস্তাব। সুরঞ্জন লুফে নেয়।


ওকে নিয়ে দুপুরে মারকো পোলোয় যাই। বুফে খাবার। খেতে খেতে সুরঞ্জন বলে সে ছিয়ানব্বই সালে বিয়ে করেছিল সুদেষ্ণা নামের এক মেয়েকে। দুজনই দমদমের এক বেসরকারি কলেজে পড়াতো। ইতিহাস পড়াতো সুরঞ্জন।
- তারপর?
- তারপর আর কী! ডিভোর্স হয়ে গেছে।
- কেন?
শীতল উত্তরের শীতল প্রশ্ন।

এর সরাসরি উত্তর নেই। উঠে গিয়ে আরও খাবার নিয়ে আসে সুরঞ্জন। মনে হয় অনেকদিন পর সে ভালো ভালো খাবার পাচ্ছে। বেশ খুশি মনে খাচ্ছে। কাঁকড়া নিল কয়েক টুকরো। ওগুলো কেটে খাবার জন্য ওয়ালা যন্ত্র দিয়ে গেল ওয়েটার। যন্ত্রটা ব্যবহার করলো সে। ব্যবহার করতে করতেই বললো, ফোর নাইনটি এইট, জানেন তো বধূনির্যাতন মামলায় ফাঁসিয়েছিল আমাকে, বিয়ের দু বছর পর।

আমি তীক্ষ্ন চোখে সুরঞ্জনকে দেখি। এ তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। আর একে আমি নেমন্তন্ন করে খাওয়াচ্ছি। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ভেতর থেকে। আমার কোনওদিন বোধহয় শিক্ষা হবে না। ভুল মানুষদেরই আমি খাতির করে যাবো জীবনভর। বাংলাদেশে অনেকে তো অত্যাচারিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক লোকদের অত্যাচারের মুখে পড়লে সাম্প্রদায়িক হয়ে যেতে হয়! কী ছিল সুরঞ্জনের যেটা নিয়ে আমি তার প্রতি সহৃদয় হতে পারি। ভেবে দেখি কিছু না। একটা অতীত ছিল তার। যে অতীতে সে হিন্দু মুসলমানে কোনও ভেদ করেনি। সে মানুষ হিসেবেই সবাইকে বিচার করতো। ধর্ম মানতো না। ধর্মীয় রীতিনীতির নিন্দা করতো। কিন্তু সুরঞ্জনের ওই মনটা তো অতীত। আসলে সত্যিকার মানববাদী নাস্তিক হলে দুম করে কেউ হিন্দু হয়ে যেতে পারে না। সন্দেহ হয়, আদৌ ভেতরে ভেতরে সুরঞ্জন শক্তপোক্ত কোনও নাস্তিক ছিল কি না। ছিল না, থাকলে এমন হয় না। তাহলে কী আছে আর যে কারণে সুরঞ্জনের প্রতি সহানুভূতি আমার! খাবার আমি দ্রুত খেতে থাকি। শেষ করেই উঠবো, ঘড়িও দেখে নিই ফাঁকে। নিজের আদর্শের সঙ্গে মেলে তো না-ই, তার ওপর নারী নির্যাতনকারী একজনের সঙ্গে সময় নষ্ট করার সময় আমার থাকা উচিত নয়। কেবল তার জীবনের গল্প নিয়ে উপন্যাস লিখেছিলাম বলে যে তার সব দুষ্কর্ম আমাকে মেনে নিতে হবে, তা তো নয়। সুরঞ্জন ক্ষীণ কণ্ঠে বলে, আমি সুদেষ্ণাকে মেরেছিলাম।

আমি প্রায় চেঁচিয়ে বলি, - চমৎকার। চমৎকার কাজ করেছো। মেরেছো। ওই মেয়েটাকে ধরে এনে ধর্ষণ করেছিলে যে রাতে, সেদিনও ওকে মেরেছিলে। মারোনি? শরীরে বেশ শক্তি তো তোমার, মেয়েদের ওপর তাই ক্ষমতা দেখাতে হয়! নিজের মাকেও বোধহয় মারো। নাকি মা বলে তাকে রেহাই দাও?


- মদ খেয়েছিলাম সেদিন। সুরঞ্জনের শান্ত গলা।
- যেদিন ঢাকার ওই মেয়েটাকে মেরেছিলে?
- না। যেদিন সুদেষ্ণাকে।
- মদের দোষ দিচ্ছ?
সুরঞ্জন চুপ করে থাকে। আমি দাঁতে দাঁত চেপে বলি, - মদের দোষ দিও না। দোষ তোমার। মদ আরও অনেকে খায়, কাউকে মারে না। জেল খাটতে হয়নি?
- জেলে ছিলাম অনেকদিন। পরে ডিভোর্স হয়ে গেছে। চাকরিটাও গেছে।
- বেশ।
আমি বেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললাম। - ঠিক শাস্তিই তবে হয়েছে তোমার। সুদেষ্ণা চাকরি করছে তো ওই কলেজে? সুরঞ্জন মাথা নাড়ে। করছে।

আমার সত্যি বলতে কী, ভালো লাগে। সে আমার উপন্যাসের নায়ক হোক, তাকে আমি দীর্ঘকাল চিনি বা জানি যাই হোক না কেন, একটি মেয়ের সঙ্গে অন্যায় করার শাস্তি যে সে পেয়েছে, সে কারণেই ভালো লাগে আমার।

- কেন মেরেছিলে? জিজ্ঞেস করি। এবার একটু উত্তেজিত স্বরে। 
সুরঞ্জন ঠাণ্ডা গলায় বললো, - মায়াকে সে সহ্য করতে পারতো না।
- কেন?
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, - মায়ার কেন বিয়ে হয় না। কেন সে বাড়ি ছেড়ে যায় না। এসব নিয়ে। বুড়ো হোক, বদমাশ হোক, যে কোনও কারও সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি ছিল সে। আমি ছিলাম না।
- তারপর?
- সুদেষ্ণার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হল। মায়ারও পরে যে-কারও সঙ্গেই অবশ্য বিয়ে হল।

সুরঞ্জন চোখ রাখে আমার চোখে। চোখ দুটোয় বিষণ্নতা। বললাম, মিষ্টি আছে ওখানে। যাও নিয়ে এসো। আইসক্রিম ভালোবাসো না?
সুরঞ্জন বলে দেয়, সে খাবে না। বিল মিটিয়ে ভেবেছিলাম ওকে রেস্তোরাঁ থেকেই বিদেয় দেব। কিন্তু গাড়ির কাছে গিয়ে বলি, আমি তো বাড়ি যাবো। তুমি কী করবে?
- অসুবিধে হবে আমি যদি আপনার সঙ্গে যাই?
- না না। অসুবিধে কী!

সুরঞ্জন এল সঙ্গে। খাবার পর কোনওদিন আমার অভ্যেসের মধ্যে নেই সিয়েস্তার। তাই বাঁচোয়া। কিন্তু ও কি একটু বিশ্রাম নিতে চাইছে! জিজ্ঞেস করলে না না করে ওঠে! কিন্তু কোনও কি কথা আছে ওর, আছে নিশ্চয়ই তা না হলে সঙ্গে এল কেন! কোনওকালে লিখেছিলাম ওকে নিয়ে গল্প, ওর পারিবারিক সামাজিক দুর্দশার গল্প। তার কি খেসারত এখন দিতে হবে! এসেছে। ভালো একটা রেস্তোরাঁয় খাওয়ালাম। এখন তো ও বাড়ি চলে গেলেই পারতো! আমি তো নিজের সময় নষ্ট করে ওর পেট থেকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কোনও গল্প বার করতে আর চাই না। আমার যথেষ্ট গল্প আছে লেখার। এখানে ওরা নিশ্চয়ই ভালো অথবা মন্দ আছে, যে কোনও মানুষের মতোই। ওদের নিয়ে গল্প লেখার তো কারণ নেই আমার। সুরঞ্জনের বুদ্ধি যে একেবারে নেই এ বিষয়ে তা তো নয়। ওর বোঝা উচিত যে আমার উপন্যাসের নায়ক বলেই ওর অধিকার নেই যে কোনও সময় আমার বাড়িতে উপস্থিত হওয়ার। তারপরও দেশের লোক বলে আমি খাতির করে যাচ্ছি, অথবা সত্যি কথা বলতে কী, সুরঞ্জন বলেই খাতিরটা করছি। কিন্তু তার যদি ব্যক্তিত্ব মনুষ্যত্ব কিছুই না থাকে, তবে আর কদ্দিন করবো! বারান্দার রকিং চেয়ারে বসে এরকম ভাবছিলাম আর উদাস তাকিয়েছিলাম আকাশের দিকে। বারান্দার দরজা আমার খোলাই থাকে দিন রাত্তির। ড্রইংরুমের সোফা থেকে উঠে সুরঞ্জন আমার চেয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে বলে, আমি আপনাকে বিরক্ত করছি, আমি জানি। আপনার যদি বিশ্রাম নেওয়ার থাকে, বা কোনও কাজ করার থাকে আপনি নিশ্চিন্তে করুন।


চলবে.......

৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ: 
জনপ্রিয় প্রথাবিরোধী লেখিকা তসলিমা নাসরিন ১৯৬২ সালের ২৫ আগষ্ট ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭৮ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস পাস করেন। তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সাল অবদি চিকিৎসক হিসেবে ঢাকা মেডিকেলে কর্মরত ছিলেন। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে লেখালেখি নয়তো চাকুরি ছাড়তে বললে তিনি লেখালেখি ছাড়েন নি। বরং সরকারি চিকিৎসকের চাকুরিটিই ছেড়ে দেন তিনি। তখন এই লেখিকাকে কেন্দ্র করে উগ্র মৌলবাদীদের আন্দোলনে উত্তাল ছিলো পুরো দেশ। বেশ কিছু মামলাও হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে। শেষে এককথায় বাধ্য হয়েই দেশত্যাগ করেন নারীমুক্তির অন্যতম অগ্রপথিক তসলিমা নাসরিন। এরপর তিনি নির্বাসিত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। 

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন