উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৪৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৪)
নবনি বাসায় এসে আদ্রিতা মেহরাবকে বিছানায় রেখে বোরখা খুলতে থাকে।আদ্রিতা টু শব্দ করছে না সে বুঝতে পারে তার মা প্রচন্ড রেগে আছে।মেহরাবও আদ্রিতা থেকে দূরে সরে বসে আছে।সেও আদ্রিতার উপর রেগে আছে।তার জন্য তার মা বকা খেয়েছে।
নবনিঃযাওয়ার সময় কত তোর জোর করলাম খেলি না। মেহরাব চুপচাপ খেয়ে নিলো কিন্তু তুই বাবার রাজকুমারি খেলে না। খাবি কি করে খেলে তো তোর বাবার হাতে বকা খাওয়াতে পারতি না।চলে যাবো আমি আমার ছেলেকে নিয়ে থাক তোর বাপ মেয়ে।আমিতো তোরে খাবার দেই না।বাপ এ খাওয়াবে থাকিস বাপ এর কাছে।
আদ্রিতা বেচারি একবার মা এর দিকে তাকায় আর একবার ভাইয়ের দিকে তাকায়।মেহরাব ও তাকে পাত্তা দিচ্ছে না।যে তার মাকে বকা খাওয়াছে তার সাথে কথা নেই।
নবনি আদ্রিতাকে সুজি খাওয়ালো।আদ্রিতা ভয়ে কোনো ঢং না করে চুপ করে খেয়ে নিলো। অন্য সময় হলে দুষ্ট আদ্রিতা অনেক জ্বালাতো নবনিকে।
মেহরাব খাট ধরে আস্তে আস্তে করে দাড়ালো।তারপর নবনির গালে হাত বুলালো।নবনি মুচকি হেসে দিলো ছেলের কান্ডে।এতো টুকু বয়সে অনেক পাকনা হয়ে গিয়েছে ছেলেটা।নবনি মেহরাব এর কপালে চুমি খেল।
নবনিঃআমার মা ভক্ত ছেলেটা।
আরাফ নবনির কাছে যাওয়ার জন্য বের হলেও যেতে পারলো না।তার আগেই অফিস থেকে ফোন আসলো।
আরাফঃহ্যালো।
ম্যনেজারঃস্যার।অফিসে প্রবলেম হয়েছে।আপনার আসতে হবে।
আরাফঃকি হয়েছে?মেজর কিছু না হলে তুমি হ্যান্ডেল করো। আমি আজকে আসতে পারবো না।
ম্যানেজারঃস্যার আমি পারছি না বলেই আপনাকে ডাকছি।প্লিজ একটু আসুন।
আরাফঃআচ্ছা। আসছি।
আরাফ অফিস এ যেয়ে দেখে সবাই আরাফ এর কেবিন এর বাইরে জড়ো হয়ে আছে।
আরাফঃহচ্ছেটা কি এখানে?
ম্যানেজারঃস্যার দিয়া ম্যাম।
আরাফ নিজের কেবিনে ঢুকে দেখে দিয়া আরাফ এর চেয়ারে বসে আছে।
আরাফঃHow dare you!?
দিয়াঃআপনার হবু স্ত্রী তো এই চেয়ারে বসার ডেয়ার দেখাইতে পারে আরাফ।
আরাফঃতোর মতো মেয়ের সেই যোগ্যতা নেই আরাফাত চৌধুরির স্ত্রী হওয়ার।আরাফ এর স্ত্রী একজনই নবনিতা চৌধুরী।
দিয়াঃআপনি আমাকে আজকে এখনই বিয়ে করবেন নাহলে আমি আমার হাত কেটে ফেলবো।
দিয়া একটা ছুরি বের করে হাতে নাভস এর উপর ধরে।
দিয়াঃআমি নিজেকে মেরে ফেলবো।যে জীবন এ আপনি নেই সে জীবন আমার চাই না।
আরাফঃনা না না। এমন করো না।তুমি যা বলবা তাই করবো।আমি তোমাকে
দিয়ার মুখে হাসি ফুটে।
আরাফঃহা হা হা।তুই কি ভাবলি আমি এমন কিছু করবো?!!হা হা হা।তুই মরলে আমার কি!!আর তুই যদি না মরিস তাহলে আমি নিজ হাতে তোকে মারবো। এর থেকে ভালো তুই মরে যা?কেমন?
দিয়াঃআমি কিন্তু সত্যিই হাত কেটে ফেলবো।
আরাফঃকাট। এখন কাটবি।কাট।তোর মতো মেয়ের বেচে থাকার অধিকার এমনিতেও নেই।যে মেয়েরা একজন বিবাহিত ছেলের উপর কুনজর দেয়।নিজে মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের সুংসার ভাংগে তাদের এভাবেও বেচে থাকার অধিকার এর কৌটা শুন্য।মরে যা তুই।
দিয়া কাপাকাপা হাতে ছুড়িটা ধরে রেখেছে।
আরাফঃম্যানেজার!ম্যানেজার!
ম্যানেজার দৌড়াতে দৌড়াতে আসলো।
ম্যানেজারঃজ্বী স্যার। বলুন।
আরাফঃএই কাজে তুমি আমাকে ডেকেছো! লাইক সিরিয়াসলি?তোমার জন্য আমি কত ইম্পটেন্ট কাজ ফেলে এসেছি?ডু ইউ হ্যাফ এনি সেন্স?
ম্যানেজারঃস্যার কিন্তু উনি মরে যেতে চাচ্ছিলেন।
আরাফঃতো মরে যাক।এরপর এই অফিস এই মেয়ের মতো আদপাগল মরে গেলেও আরাফাত চৌধুরীকে ডাকবে না।দরকার পরলে পুলিশ ডেকে এনে ধরিয়ে দিবা।
আরাফ পিছনে তাকিয়ে হনহন করে বেরিয়ে গেলো।দিয়া রাগে অপমানে সেখানে থেকে বেরিয়ে গেল।যাওয়ার আগে বলে গেলো।
দিয়াঃএর শাস্তিতো আপনি পাবেন। মিস্টার আরাফাত চৌধুরী। আপনার সব থেকে দুর্বল জায়গায় আমি আঘাত করবো।
আরাফ গাড়ি চালাচ্ছে আর মনে মনে ভাবছে।
আরাফঃআমি একজন এক্স আর্মি অফিসার দিয়া।আমি এক সেকেন্ড এ ধরে ফেলতে পারি শত্রুর মনে কি চলছে।আর তুমি আমার সামনে মরে যাওয়ার ঢপকি দাও।তোমার মরে যাওয়ার থাকলে যে তুমি আমার আসার আগেই মরে যেতে। আর যে মেয়ে ছুড়িটাও উল্টো হাতে ধরে সে কি না মরে যাবে!!এসব আমার সাথে যায় না দিয়া।তুমি ভুল জায়গায় পা দিয়েছো।এর আগে সিয়ামকে জীবিত রেখে যে ভুলটা করেছিলাম সেই ভুল আমি আবারো করবো না।যে হাত আমার পরিবার এর দিকে এগোবে আমি সেটা ভেংগে টুকরো টুকরো করে দিবো। গেট রেডী।তোমার আর বেশি সময় নেই।
আরাফ এর বাসায় পৌছাতে পৌছাতে বিকেল হয়ে যায়।
আরাফঃআজকে তুই শেষ। বউ সকাল থেকে রেগে আছে এতক্ষনেতো সে রাগ আগুনের গোলা হয়ে গিয়েছে।
আরাফ নিজের রুমে যেয়ে দেখে মেহরাব আর নবনি ঘুমাচ্ছে।আর আদ্রিতা শুয়ে শুয়ে একা একা খেলছে।আরাফ ফ্রেশ হয়ে এসে আদ্রিতাকে কোলে নেয়।আদ্রিতার মন খারাপ।
আরাফঃকি হয়েছে আম্মু।আমার আগে তোমার ক্লাস নিয়েছে তোমার মা?
আদ্রিতা আরাফ এর বুকে লুকিয়ে গেলো।আরাফ আদ্রিতাকে বুকে নিয়ে সমস্তঘর হাটাহাটি করে। যতক্ষন না আদ্রিতা ঘুমিয়ে পড়ে।আরাফ মেহরাব আদ্রিতাকে ঝুলনায় রেখে দেয়।
নবনি এখনো গভীর ঘুমে।আরাফ নবনির বুকে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে ধরে।নবনি নড়েচড়ে উঠে।আরাফ নবনিকে আরো গভীর ভাবে চেপে ধরে।
নবনিঃকি করছেন।সরুন আমার উপর থেকে।
আরাফঃসরি বউ।আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।আমাকে ক্ষমা করে দিন।
নবনিঃকিসের ক্ষমা!!ভুলতো আমার। সরুন বলছি।
আরাফঃখুব ক্ষুদা লেগেছে।সকাল থেকে কিছুই খাই নাই।
নবনিঃসরুন।খাবার নিয়ে আসি।
আরাফঃতোমার জন্যও আনবা।আমি জানি তুমি রাগ দেখিয়ে না খেয়ে আছো।
নবনিঃতাতে আপনার কি?আপনার ছেলে মেয়েতো খেয়েছে।আমি খাই না খাই মরে
আরাফ নবনির মুখে মুখ ডুবালো।নবনি হাত পা সমানে ছুড়ছে কিন্তু আরাফ ছাড়ছে না।অনেকক্ষন ধস্তাধস্তি করেও যখন নবনি পেরে উঠলো না শান্ত হয়ে আরাফ এর ডাকে সাড়া দিলো।তখন আরাফ নবনির কাছ থেকে সরে আসলো।
আরাফঃএটাই শাস্তি।আমার কাজে বাধা দেয়ার।
নবনিঃবদ লোক। আপনাকে মাফ করাই উচিত ছিলো না।
আরাফঃও তুমি তাহলে আমাকে মাফ করে দিয়েছো?আমি তো ভাবসি আরো কতো কিছু করবো। এতো সহজ এ মেনে গেলে?
নবনিঃনা করি নাই।কখনো করবো না।
নবনি ওড়না গায়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।আরাফ উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো।নবনির মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেলো।
নবনিঃ বদলোক। আদ্রিতা ইনার মতো হয়েছে।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
৪৫তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন