উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৪৪তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৫)
নিলয় আর ওয়ারদার রিপোর্ট আসবে আজকে।তাই সবাই হাসপাতালে অপেক্ষা করছে।মেহরাব আদ্রিতা নিলয় আর আরাফ এর কোলে।নবনি ওয়ারদার হাত ধরে রেখেছে।
ওয়ারদাঃখুব ভয় করছে দোস্ত।
নবনিঃভয়ের কিছু নেই।ডাক্টার রোগ বলবে আমরা চিকিৎসা করাবো। চিকিৎসা করালে তুই বা ভাইয়া যারই সমস্যা হোক না কেন ঠিক হয়ে যাবে।
ওয়ারদাঃআমি লাস্ট ডাক্টার দেখিয়েছিলাম উনি বলেছিলেন কিছুই করার নেই।আমি কখনোই মা হতে পারবো না।
নবনিঃএমন কিছুই হবে না।সবটা আল্লাহর হাতে কোনো ডাক্টার এগুলোর নিশ্চয়তা দিতে পারবে না।তুই ঠান্ডা হো দোস্ত।
কেবিন থেকে একজন নার্স আসলো বাইরে।
নার্সঃআপনারা ভিতরে যেতে পারেন।
আরাফ বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে দাড়ালো। নবনি ওয়ারদা নিলয় ভিতরে গেলো।
ডাক্টারঃবসুন আপনারা।
নিলয়ঃজ্বী।
ওয়ারদাঃকি রিপোর্ট এসেছে ডক্টর।
ডাক্টারঃনিলয়ের রিপোর্ট এসেছে একটু আগে আমার হাতে।উনার কোনো সমস্যা নেই।
ওয়ারদাঃতাহলে?!
ডাক্টারঃআপনার জরায়ুতে সিস্ট দেখা দিয়েছে মিসেস ওয়ারদা।যার মানে ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে।আর এটার জন্য জরায়ু দুর্বল হয়ে পরেছে ফলে কনসিভ করতে পারছেন না।
কথাটা শুনে ওয়ারদা চোখ গুলো ছলছল করছে।নবনি ওয়ারদার হাত আরো শক্ত ভাবে ধরে চোখ দিয়ে আশ্বস্ত করলো।
নবনিঃডক্টর।সমাধান কি?কোনো না কোনো উপায় অবশ্যই আছে।
ডক্টরঃজ্বি।উনি নিয়মিত চিকিৎসার করলে ওষুধ খেলে এক বছর এর মধ্যে সুস্থ হতে পারবেন।আর কনসিভ করতে পারবেন।এমনটা আমার মনে হয়।বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
নিলয়ঃচিকিৎসা কবের থেকে শুরু করবেব ডক্টর?
ডক্টরঃকালকে থেকে আসতে পারেন আপনারা।দেরি করা ঠিক হবে না।
নিলয়ঃওকে ডক্টর।
সবাই ডক্টর এর কেবিন এর থেকে বের হয়ে আসলো।নবনি আদ্রিতাকে কোলে নিলো আরাফ এর কাছ থেকে।
আরাফঃকি বলেছে?ডক্টর।
নবনিঃপরে বলছি।ভাইয়া আপনারা বাসায় যেয়ে রেস্ট নিন।আর ওয়ারদা একদম কান্নাকাটি করবি না। আল্লাহ রাস্তা যখন দেখিয়েছেন সব ঠিক ও করে দিবেন।
ওয়ারদাঃহুম।
নবনি আরাফ নিজেদের গাড়িতে উঠলো আর নিলয় ওয়ারদা ওদের গাড়িতে। আরাফ গাড়ি চালাচ্ছে।নবনি দুই বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসেছে।
আরাফঃমন খারাপ?
নবনি মলিন হাসলো।
আরাফঃসব ঠিক হয়ে যাবে।
নবনিঃহুম।
নিলয় ওয়ারদা বাসায় এসে পৌছায়। ওয়ারদা খুব চুপচাপ হয়ে গিয়েছে।নিলয় রাস্তায় অনেক কথা বলেছে কিন্তু ওয়ারদা কোনো উত্তর দেয় নাই।
ওয়ারদা বাসায় এসে রান্না বান্না করতে চলে যায়।নিলয় রান্নাঘরে যেয়ে ওয়ারদাকে কোলে তুলে নিয়ে আসে।
ওয়ারদাঃআরে কি করছেন?রান্না করতে হবে তো।
নিলয়ঃলাগবে না।আজকে আমরা ঘুরতে যাবো।
আমি তোমাকে নিজ হাতে রেডি করাবো। চলো চলো।
ওয়ারদাঃআমি পারবো তো।
নিলয়ঃশিসসসসস।
নিলয় ওয়ারদাকে শাড়ি পরিয়ে দেয়।তারপর চোখে টান করে কাজল আর ঠোঁট এ হালকা লিপস্টিক দিয়ে দিলো।
নিলয়ঃমাশাল্লাহ।আমার বউটা কত সুন্দর।
ওয়ারদা লজ্জা পেল।নিলয় ওয়ারদার কপালে চুমু খেল।
নিলয়ঃতোমাকে লাজুক চঞ্চলই ভালো লাগে ওয়ারদা।চুপচাপ ওয়ারদা আমার চাই না।আল্লাহ দিলে আমাদের ছোট্ট একটা পরি অবশ্যই হবে।এটা নিয়ে আর এক দিন ও কান্না করবে না।আমাদের বেবি অবশ্যই হবে। তুমি দেখে নিও।
ওয়ারদাঃআপনার কথার উপর পুরো বিশ্বাস করি। আর কখনো কাদবো না।
চলো তাহলে। হুম চলেন।
আরাফ নবনি মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে।আর বাবুরা খেলছে।
আরাফঃতোমার চুল গুলো এতো ঘন আর লম্বা কেন?
নবনিঃআরাফ।
আরাফঃহুম।বলো।
নবনিঃআমি ওয়ারদার জায়গায় হলে আপনি কি আমাকে ছেড়ে দিতেন।আমার যদি বেবি না হতো।
আরাফঃতুমি সব সময় অসময়ে উল্টা পালটা কথা বলো।তেল দেয়া হয়ে গিয়েছে।বেনি করে নাও।
আরাফ বারান্দায় চলে গেলো।নবনিও পিছু পিছু গেলো।নবনি আরাফকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
নবনিঃআরাফ।অনেক অনেক ভালোবাসি।
আরাফঃআমিও। খুব ভালোবাসি।কখনো তোমার হাত ছাড়বো না।পরিস্থিতি যাই হয় না কেন।বাচবো একসাথে মরবো ও এক সাথে।
নবনি আর বাবুরা গভীর ঘুমে। আরাফ আস্তে করে বের হয়ে গেলো।আরাফ এর গাড়ির আওয়াজে নবনির ঘুম ভেঙে যায়।
নবনিঃএতো রাতে। আরাফ কোথায় গেলো।কেন গেলো?
নবনি আরাফ এর পিছনে যেতে চায় কিন্তু মেহরাব উঠে কান্না করতে থাকে। নবনি বাবুদের রেখে আর যায় না।তাদেরকে নিয়ে ঘুমানের চেষ্টা করে।
আরাফ একটা অন্ধকার গুডাউন এ ঢুকে। বাইরে থেকে গুডাউন মনে হলেও এটা আরাফ এর টর্চার সেল।ভিতরে যাকে বেধে রাখা হয়েছে তার মুখটা দেখে আরাফ এর ঠোঁটে বাকা হাসি ফুটলো।
আরাফঃকেমন আছো বেবি?
মেয়েটা হুংকার দিয়ে উঠলো।মেয়েটার চোখে আগুন জ্বলছে।
আরাফঃআহা বেবি। এই রাগটা আমাকে দেখিয়ো না তো। তোমার এই রাগ দেখলে তোমাকে আরো ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।
আরাফ কেচি নিয়ে এগিয়ে গেলো মেয়েটির কাছে।
মেয়েটা চিৎকার দিয়ে উঠলো।
আরাফঃহা হা হা।
দিয়াঃছেড়ে দিন আমাকে।আমি আর আপনাকে ভালোবাসবো না।আপনার পথে আসবো না।
আরাফঃএতো তাড়াতাড়ি ভালোবাসার ভুত নেমে গেলো।ইসসস।কিন্তু আমার যে নামছে না।
আরাফ দিয়ার সব গুলো চুল কেটে ফেলেছে।নিজের এমন অবস্থা দেখেই দিয়া চিৎকার করেছিলো।
আরাফঃখেতে দিয়েছো একে?
গার্ডসঃনা স্যার।
আরাফঃআহা। এত নিষ্ঠুর হলে হয়?যাও খাবার নিয়ে এসো।
আরাফ এর হাতে ছুড়ি।
আরাফঃএটা সেই ছুড়ি না যেটা দিয়ে হাত কাটতে চেয়েছিলে?
দিয়া ভয়ে থর থর করে কাপছে।
আরাফঃআহা। এখনোতো কিছু করি নেই।তুমি কাপছো কেন?
দিয়াঃনা না কি কি কিচ্চছু
আরাফ কথা শেষ হওয়ার আগেই দিয়ার ডান হাতে অনেকগুলো টান মারে।দিয়ার বাম হাতও কেটে দেয়।দুই হাত দিয়ে রক্ত পরছে।
স্যার খাবার এসে পরেছে।
দিয়া খাবার এর দিকে তাকিয়ে আতকে উঠলো। ভাত শুকনো মরিচ আর ফাকি মরিচ দিয়ে মাখানো।
আরাফঃআর এ তুমি ভেবো না। লবন ও দেয়া আছে।লবন ছাড়া কি আর ভাত মাখা খাওয়া যায়।তাই আমি খুব সুন্দর করে তোমার কথা ভেবেই এটা আনিয়েছি।খেয়ে নাও সারাদিনতো না খেয়েই ছিলে।
দিয়ার পেটে অনেক ক্ষুদা কিন্তু ও এগুলো কি করে খাবে।আরাফ হাত এর যা অবস্থা করেছে।খেতে গেলেই জ্বলবে।কিছুই করার নেই।দিয়া বাধ্য হয়ে খেতে লাগলো।আর জোরে জোরে চিৎকার করতে লাগলো।
আরাফ জোরে জোরে হাসতে লাগে।
দিয়ার খাওয়া শেষ হলে আরাফ সেখান থেকে বাসায় চলে আসে।কিন্তু এসে নবনিকে সজাগ দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
৪৬তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন