উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৫৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৫৮)

নবনিঃসেদিন কার কল এসেছিলো?কার কল এ আপনি ছুটে গেলেন?
আরাফঃআমি আর্মী ছাড়ার পর দেশের এক্স আর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একটা সংস্থায় জয়েন করি। সেদিন সকালে সেই সংস্থার হেড কোয়ার্টার থেকে কল আসে।সামনের মাসে আমাদের একটা মিশন ছিলো।সেটার ফাইল নিয়ে আমাকে হাজির হতে বলা হয়।
সংস্থাটিতে আমরা দেশদ্রোহীর বিরুদ্ধে কাজ করতাম।আমাদের কাজ ছিলো গোপনে যারা দেশের গোপন তথ্যগুলো পাচার করে তাদেরকে ধরা।আর সেখানে মেরে ফেলা।
 এমন অনেকে আছে যারা আমাদের দেশের তৈরী অস্ত্র চুরি করে অন্যান্য দেশে মোটা অংকের মুল্যে বিক্রি করে দেয়।এতে তারা ধনী হয়ে যায়।আর বাংলাদেশ আর্মী গরিব।এই একটা কারনে আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে আছে অন্যান্য দেশ থেকে।কারন আমরা যা দেশের জন্য তৈরী করি তা তো পাচার করে দেয়া হয়।তাছাড়াও নারী পাচার সহ বিভিন্ন কাজে এরা জড়িত থাকে।
আমি আর্মী জয়েন করার পর একটা জিনিস খুব ভালো করে বুঝতে পারি যে আমাদের কাছে উন্নত মানের ও পর্যাপ্ত অস্ত্রর যোগান নেই।তাই আমি আমার নামে থাকা একটা ফ্যাক্টরিতে গোপনে অস্ত্র তৈরি করি করতে শুরু করি।কি করে জানি শত্রুরা এই তথ্য জেনে যায়।আর আমার উপর আক্রমণ করে। বাবা সেই বার আমাকে রক্ষা করে ফেলেছেন।তারপর তিনিই আমাকে বাসায় সিক্রেট রুম তৈরী করে দিয়েছিলেন।সেখানে আমি সব অস্ত্র গুলো সেফলি রাখি।আর তোমার মনে আছে আমার ওপর যে হামলা হয়ে ছিলো বাবা তোমাকে সে দিন বলেছিলো আমি আর্মী অফিসার! 
নবনিঃহ্যা।সেটার সাথে এখন কার ঘটনার কি কানেকশন?
আরাফঃহামলাটা দেশদ্রোহীরাই করেছিলো।তারা আমার থেকে অস্ত্র গুলোর ব্যাপারে জানতে এসেছিলো।আমি না বলায় আমাকে মেরে ফেলতে চায়। কিন্তু সে যাত্রাও বাবা আর তুমি আমাকে বাচিয়ে আনো।অবশ্যই আল্লাহই তোমাদের পাঠিয়েছিলেন।
তারপর আমি দেরি না করে অস্ত্রগুলো সব বাংলাদেশ আর্মীর কাছে বুঝিয়ে দেই।
তারপর আমরা মেহরাব আদ্রিতাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরি। আর গ্রামে চলে যাই।গ্রাম থেকে আসার পর আমি তোমাদেরকেই সময় দেই।
সেদিন সকালে স্যার এর কল আসে। উনি আমাকে মিশনে জয়েন করতে বলেন।আমার কাছে ফাইল ছিলো। যেটাতে আমার সহযোগী ১০০ জন আর্মী অফিসার এর ডিটেইলস ছিল।আর সামনে মাসের মিশন এর প্লানটা ও সেই ফাইলেই লিখা ছিল।আমি সিক্রেট রুমে ফাইলটা আনতে যাই।সারা ঘর তন্ন করে ও আমি ফাইলটা পাই না।আমার স্পষ্ট মনে আছে গ্রামে যাওয়ার আগে ফাইলটা আমার কাছে ছিল।কিন্তু আসার পর আমি আর চেক করি নেই।
হেড কোয়ার্টার এই কথা জানানোর পর তারা আমাকে দায়িত্ব দেয় যে করেই হউক ওই ফাইলটার খোজ করতে।তারপর আমি সব ছেড়ে সেই ফাইল এর খোজ করতে শুরু করি।
তুমি বুঝতেও পারছো না ফাইলটা যদি একবার শত্রুদের হাতে লাগে তাহলে আমি সহ ১০০ টা আর্মী অফিসার ও তাদের পরিবারকে তারা মেরে ফেলতে পারে।দেশের ১০০ জন আর্মী অফিসার আমার ভুলে জন্য জীবন হারাবে।এটা আমি কি করে হতে দেই?!!


নবনিঃআমাদের বাসা থেকে ফাইল কি করে হারাতে পারে!!
আরাফঃএটাতে আমাদের পরিবার এর কেউই জড়িত আছে।বাইরের কেউ এমপি আদর চৌধুরীর বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবে না।যে টাইট সিকিউরিটি।আমি প্রবেশ করতে পেরেছিলাম কারন আমি বাসার কোনো কোনা জানি বুঝি। গার্ডদের পজিশন আর টাইম ও জানি।কিন্তু বাইরের কেউ এতো কিছু জানতে পারার কথা না।
নবনিঃকিন্তু বাসার কে হতে পারে?
আরাফঃজানি না।কিন্তু আরো একটা ইনফরমেশন পেয়েছিলাম যে বাবার অফিসেও অবৈধ অনেক কিছু হয়।সেটা যাচাই করতে আমি এখানে আসি।কারন আমার মনে হয় এখানে যে এই কাজ গুলো করে বেড়াচ্ছে তার কাছেই হয়তো ফাইলটা আছে।কিন্তু এখানে সন্দেহপ্রবন কাউকে আমি দেখছি না।
প্রতিদিন সিসিটিভিতে খোজার চেষ্টা করি কিন্তু কিছু পাচ্ছি না।
নবনিঃঅফিস পুরোটা চেক করেছেন?
আরাফঃহ্যা।
নবনিঃস্টোর রুম???
আরাফঃনা। সেখানে কি বা হতে পারে। সেটাতো বন্ধই থাকে।
নবনিঃআরাফ। আপনি যেদিন স্টোর রুমে লুকিয়েছিলেন সেদিন আমি পুরো স্টোর রুম তন্ন তন্ন করে খুজেছিলাম।তখন পুরানো ফাইলগুলোর মাঝে নতুন একটা ফাইল চোখে পরেছিল।কিন্তু আমি সেটা গুরুত্ব দেই নাই।
আরাফঃফাইলটা কি ব্লাক কালার ছিলো??
নবনিঃহ্যা।।
আরাফ স্টোর রুমের দিকে দৌড় লাগালো।নবনিও পিছনে পিছনে গেলো।
আরাফঃকোথায় দেখেছিলে ফাইল?
নবনিঃওই যে ওই খানে।
আরাফ নবনি সেখানে যেয়ে দেখে কিছুই নেই।পুরোটা খালি।
নবনিঃআরাফ এখানে ছিলো। আমি দেখেছিলাম সত্যিই।
আরাফ সে জায়গাটা মোবাইল এর ফ্ল্যাশ দিয়ে দেখলো।
আরাফঃহ্যা। ফাইলটা এখানেই ছিলো।
নবনিঃকি করে বুঝলেন?
আরাফঃভালো করে দেখো নবনি।ধুলা ভরা জায়গাটায় ফাইল এর ছাপ পরে আছে।তার মানে এখান থেকে ফাইল সরানো হয়েছে।
নবনিঃকিহ!!
আরাফঃহ্যা।আমি আবারো ভুল করলাম।সারা অফিস খুজলাম অথচ স্টোর রুমটা দেখলাম না।এখনই এটা সার্চ করতে হবে।
আরাফ জায়গাটা আরো ভালো করে দেখতে লাগলো।একটা কোনায় সাদা পাউডার এর মতো কিছু পরে আছে।


আরাফঃনবনিইই।তুমি এখানে কিছু দেখেছিলে??
নবনিঃহ্যায়া।এখানে সাদা লবনের মতো দেখতে কিছু প্যাকেট ছিলো।
আরাফঃwhat!!তুমি একটা বার ভাবো নেই। অফিসে  লবন কি করে আসবে?
নবনিঃভেবেছিলাম।আর বাবাকে এটা জিজ্ঞেস ও করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভুলে গিয়েছি।
আরাফঃনবনি এটা লবন না।এটা ড্রাগস ছিলো।তার মানে এখান থেকে ড্রাগস গুলো ও সরানো হয়েছে।
নবনিঃওহ মাই গড। এটা আমার ধারনার বাইরে ছিলো।আমি ভাবতেও পারি নাই এমন কিছু হতে পারে।
আরাফঃএখানে মিনিয়াম কয়টা প্যাকেট ছিলো??
নবনিঃ১০০ + হবে।
আরাফঃকিহ!! 
নবনিঃআপনি যখন এখানে লুকিয়েছিলেন তখন দেখেন নাই??
আরাফঃনবনি স্টোর রুম কত বড় তুমি দেখেছো।আমি শুধু দরজার পিছনে লুকিয়ে ছিলাম।ভিতরে কিছুই আমি দেখি নাই।
নবনিঃএখন কি করবো?ফাইলটাতো চলে গেলো।
আরাফঃআমিতো ভাবছি এতো গুলো ড্রাগস এখান থেকে নিয়ে গেলো কি করে!!আমি কই ছিলাম?
নবনিঃহয়তো যখন আমার বাসায় গিয়েছিলেন তখন!!
আরাফঃহতে পারে।আচ্ছা সিসিটিভি দেখলেই বোঝা যাবে। চলো।
আরাফ নবনি সিসিটিভিতে কিছুই পেলো না।
আরাফঃফুটেজ ডিলিট করা হয়েছে। কে করেছে?
নবনিঃসিসিটিভিতো তানভীর এর আন্ডারে ছিলো।
আরাফঃতানভীর এর কাছে না বিথির কাছে। ভুলে গেলে তুমি যে সব বিথিকে বুঝিয়ে দিয়েছিলে??
নবনিঃহ্যা।সেটাতো আমাকে বাবাই করতে বলেছেন।
আরাফঃওয়েট।কি বললে? বাবা বিথিকে কেন দিবেন?
নবনিঃআমি আপনার ব্লাড পাই স্টোর রুমে সেটার বাবার সাথে মেচ করি তারপর জানতে পারি আপনি অফিসে আছেন।আর বাবা যখন শুনেছেন আপনি এই অফিসে তখন বিথিকে আমার সাথে দিয়ে দিলেন।
আরাফঃবাবা জানে আমি এখানে?
নবনিঃহ্যা।
আরাফঃওহ নো।আমি বাবাকে একটু আগে স্টোর রুমে ঢুকতে দেখেছিলাম।
নবনিঃনা বাবা এখানে কেন আসবেন?বাবাফ কাছে তো মেহরাব আদ্রিতা।তাদেরকে রেখে উনি কেন আসবেন?আপনি হয়তো ভুল দেখেছেন।
আরাফঃএখনই জানা যাবে। ওয়েট।
আরাফ সিসিটিভি আবার চেক করলো। সেখানে কোথাও আদর চৌধুরীর ক্লিপ নেই।তারা আসা যাওয়ার ফুটেজ মুছে দেয়া হয়েছে।
আরাফ এক এক এ দুই মিলাতে লাগলো।কিছু একটা বুঝতে পেরে  মাথার হাত দিয়ে বসে পরলো।
নবনিঃকি হয়েছে আরাফ??কি হয়েছে?
আরাফঃবাবাকে স্টোর রুমের ব্যাপারে কিছু বলেছিলে?
নবনিঃহ্যা।কালকে রাতে তানভীরকে জিজ্ঞেস করায় সে বলেছিল বাবা নাকি তাকে বলছে স্টোর রুম ঠিক করতে।আমি রাতে বাবাকে এটা জিজ্ঞেস করেছিলাম তিনি না করে দিলেন। তারপর কোথায় যেন চলে গেলেন।রাতে আর বাসায় ফিরে নেই।আমি তাকে সকালে বাসায় আসতে দেখি।


আরাফঃএটা কেন হলো?নবনি। আমি ভুল মানুষকে ভরসা করলাম। হেরে গেলাম।হেরে গেলাম আমিইই!!
নবনিঃকি হয়েছে আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন?আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
আরাফঃবাবা দেশদ্রোহী!! আমার বাবা আরাফাত চৌধুরীর বাবা দেশদ্রোহী। এটা আমাকে মানতে হবে!!
নবনিঃকি বলছেন আপনি? এটা হতে পারে না।বাবার মতো মানুষই হয় না।উনি খুব ভালো উনি কিছুই করতে পারে না।এটা আমার বিশ্বাস। 
আরাফঃআমি মন থেকে চাই তোমার বিশ্বাস জিতে যাক। আমি হেরে যাই।নাহলে ইতিহাস সাক্ষী হবে যে ছেলের হাতে বাবার মৃত্যু হয়েছে।ইতিহাস সাক্ষী হবে একজন আর্মী অফিসার এর বাবা দেশদ্রোহী। 
আরাফ এর চোখ দিয়ে টপ করে পানি পরলো নবনি সেটা হাতের মুঠোয় বন্ধ করে নিলো।
আরাফঃএমন কয় ফোটা পানি মুঠোয় বন্ধ করবে নবনি।আমার বাবা আমাকে ঠকালে যে সারাজীবন এই পানি চোখ দিয়ে পরতে থাকবে।
নবনিঃউঠেন আরাফ।চলেন বাসায়। বাবার কাছে চলেন।
আরাফ আজ ১৮ দিন পর চৌধুরী ভিলায় প্রবেশ করে।
আদর চৌধুরী বাড়িতে নেই। মেহরাব আদ্রিতাও বাসায় নেই।নবনি তার শাশুড়ীর রুমের দিকে ছুটে যায়।আরাফও তার পিছু নেয়।
নবনি নিলীমা চৌধুরীর রুমে যেয়ে দেখে তিনি বেড থেকে নিচে পড়ে আছেন।
আরাফ তাকে কোলে করে বেড এ রাখে নিলীমা চৌধুরীর অবস্থা খুব সিরিয়েস।নবনি ডাক্টারকে কল দিতে নেয়।নিলীমা চৌধুরী তার হাত চেপে ধরে।
নবনিঃহ্যা মা।বলেন। 
আরাফ এর চোখ দিয়ে টলটল করে পানি পরছে।
নিলীমা চৌধুরীঃনবনি মা আমি আরাফকে দেখার জন্যই হয়তো বেচে ছিলাম এতো দিন।মৃত্যুতো আমি সেই দিনই দেখেছিলাম যেদিন আরাফ নিখোঁজ হওয়ার পর নিজের স্বামীর কালো চেহারা সামনে আসে।
আরাফ এর দিকে তাকায় নিলীমা চৌধুরী। 
তোর বাবা একজন দেশদ্রোহী।আমার ঈমানদার দেশপ্রেমিক আর্মী অফিসার ছেলের বাবা দেশদ্রোহী। আমি এটা মেনে নিতে না পেরে হার্ট এট্যাক করি।
তোর বাবাকে এটা বলিস না যে আমি এগুলো জানি।যেমন হউক মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবেসেছে।আমি চাই না সে আমার সামনে নিজেকে ছোট মনে করুক।
নিলীমা চৌধুরী আরাফ এর হাত নবনির হাতে দিলেন।
নিলীমা চৌধুরীঃমা আমাকে ক্ষমা করে দিও।বেচে থাকতে তোমাকে মেনে নিতে পারি নাই আমি।কিন্তু আমি আজকে দোয়া করে দেই।তুমি আমার ছেলের সাথে অনেক সুখি হও মা।
আমার চোখের মানিককে দেখে রেখো মা।আরাফকে আমি তোমার কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছি।
আরাফাত চৌধুরী আজকে ভেংগে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।তুমি টুকরো গুলো কুড়িয়ে রেখো।আমার সবসময় হাসতে থাকা ছেলেটাকে তুমি হারাতে দিও না।
আরাফ তার মায়ের বুকে মাথা রেখে কাদতে থাকে।


নিলীমা চৌধুরীঃকাদিস না। আমার বাবাটা।তোর সামনেতো তোর বাবা নামক দেশদ্রোহী দাঁড়িয়ে আছে। তোর তার মুখোমুখি হতে হবে।তোর মায়ের দোয়া তোর সাথে আছে।
নিলীমা চৌধুরী নবনির মাথার উপর হাত রাখলেন।
ভালো থেকো তোমরা।আমার মেহরাব আদ্রিতাকে দেখে রেখো।
নবনি আর আরাফ নিলীমা চৌধুরীকে জড়িয়ে কাদতে লাগলো।নিলীমা চৌধুরীর হাত নবনি মাথার উপর থেকে সরে গেলো।
নবনিঃআরাফ। আরায়ায়াফফ।
আরাফ অবুঝ বাচ্চার মতো নবনির দিকে তাকালো।
নবনিঃমা আর নেইইইইই।
আরাফ এই শব্দটা শোনার জন্য একটু প্রস্তুত ছিলো না। কোনো সন্তান এটা মেনে নিতে পারবে না।আরাফ তার মাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো।
নবনি অস্থির হয়ে উঠলো। নিয়তি এটা কি করলো।মা মারা যাওয়ার পর নবনি ভেবেছিলো তার শাশুড়ী তার মা হবে আর কিন্তু  তার শাশুড়ী তাকে কখনো মেনে নেয় নাই।আর যখন মেনে নিলো তখনই পৃথিবী ছেড়ে দিলো।তার ২ য় মায়ের হাতটা ও মাথা থেকে সরে গেলো।
আরাফ পুরো বরফ হয়ে গিয়েছে।
নবনির কানে তার শাশুড়ির বলা শেষ কথা বাজছে।
আরাফাত চৌধুরী  আজকে ভেংগে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।তুমি টুকরো গুলো কুড়িয়ে রেখো।আমার ছেলেকে হারাতে দিও না।
নবনিঃআরায়াফ। আরায়ায়াফ।
আরাফ কোনো নড়চড় করছে না।
নবনিঃআরাফ।শুনেন না।মেহরাব আদ্রিতাকে আনতে যেতে হবে।ওরা বাবার
আরাফঃনায়ায়ায়।উনি আমাদের বাবা না।উনি একজন দেশদ্রোহী। আমার মায়ের হত্যাকারী। তাকে আমি নিজ হাতে শাস্তি দিবো।আজকে হয়তো আমজ লাশ হয়ে ফিরবো আর নয়তো উনি।আজকে এই বাসা থেকে দুইটা লাশ উঠবে।
আরাফ নিলীমা চৌধুরীকে বিছানায় শুইয়ে দিলো।
আমি আসছি মা।আমাদের সাথে করা অন্যায়গুলোর জবাব নিয়ে আমি আসছি।
আরাফ বেড়িয়ে পরলো। নবনি আরাফ এর পিছনে দৌড় দিলো।
নবনিঃকেন এমন করলেন বাবা।আজকে আর্মী অফিসার আর দেশদ্রোহীর মধ্যে লড়াই হবে না।আজকের লড়াইটা বাবা ছেলের। যেই জিতুক না কেন হারবে দুইজনই।কেউ বাবা হারাবে আর নয়তো কেউ ছেলে।
আমার বুকের ভিতরটা কু ডাক দিচ্ছে।মাকে হারালাম। আর না জানি কার ভালোবাসা আজ কপাল থেকে মুছে যাবে।দুইজন মানুষই যে আমার খুব আপন।



আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৫৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন