উপন্যাস : শরম
লেখিকা : তসলিমা নাসরিন
গ্রন্থ : শরম
প্রকাশকাল :
জনপ্রিয় লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বহুল আলোচিত উপন্যাস 'লজ্জা'। ১৯৯৩ সালে এটি বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রকাশের প্রথম ছয় মাসেই বইটি পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি বৈধ কপি বিক্রি হয়। এরপর ধর্মীয় মৌলিবাদিদের একতরফা বিতর্কের মুখে উপন্যাসটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালিন বাংলাদেশ সরকার। পরবর্তীতে 'লজ্জা' উপন্যাসটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন দেশে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি লেখার কারণে দেশ ছাড়তে হয়েছিল লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে।পরবর্তীতে 'লজ্জা' উপন্যাসের নায়কের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দেখা হয়েছিলো লেখিকা তসলিমা নাসরিনের। সেই অনুভূতিকে পুজি করে তিনি লিখলেন নতুন উপন্যাস 'শরম'। এ উপন্যাসটি কবিয়াল পাঠকদের জন্য ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো।
![]() |
শরম || তসলিমা নাসরিন |
২৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
শরম || তসলিমা নাসরিন (পর্ব - ২৫)
সুরঞ্জন বাড়ি ফেরে দুপুর বেলা। ফিরে দেখে মায়া তার দুই বাচ্চা নিয়ে বাড়িতে উঠেছে। সঙ্গে দুটো বড় বড় সুটকেস। বলছে শ্বশুরবাড়ি আর সে যাবে না। সে এখানেই থাকবে মা দাদার সঙ্গে। বাচ্চা দুটো এখান থেকেই ইস্কুলে যাবে।
কেন, কী হয়েছে, শ্বশুরবড়ির কে কী করেছে, এসব কথা জিজ্ঞেস করে না কিরণময়ী, না সুরঞ্জন। দুটো ঘরে পাঁচ জনের জায়গা ঠিক কী করে হবে সে জানে না। মায়ার এমন স্বামী বা শ্বশুর শাশুড়ির সঙ্গে রাগ করে চলে আসা এ প্রথম নয়। যদিও বলে যে, আর না, ওভাবে ওই নরকে আর থাকা যায় না, সাত দিন পেরোনোর আগেই আবার সুটকেস গুছিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। বলে যায়, একবার যখন বিয়ে হয়েছে, স্বামী যেমনই হোক, মেনে তাকে নিতেই হবে। এসব বুদ্ধি তাকে কে দেয় সুরঞ্জন জানে না। কিরণময়ীও না। কেউই মায়াকে কোনও দিন বলেনি যা শ্বশুরবাড়ি চলে যা বা মানিয়ে নিতে চেষ্টা কর বা বিয়ে যখন হয়েছে স্বামী পাগল ছাগল হলেও তো স্বামী। স্বামীই মেয়েদের দেবতা।
অশান্তিতে মানুষের শরীর নষ্ট হয়, শরীর হয় মেদ-এ ভরে যায়, নয় হয় হাড়গিলে। মায়ার শরীর চাবুকের মতো। ফোলা গাল উবে গিয়ে এখন ভাঙা গাল। ঘন কালো চুল আগে পিঠে পড়তো, যত্ন করতে পারে না বলে ঘাড়ের ওপর কেটেছে। সুবিধের জন্য জর্জেট শিফন শাড়ি পরে, সুতি তাঁত পোষায় না। মেট্রো ধরতে, দৌড়ে বাস অটো চড়তে কোনও অসুবিধে হয় না। মায়া স্বনির্ভর মেয়ে। বাচ্চা দুটো না থাকলে ও দিব্যি থাকতে পারতো। কেন যে পাঁড় মাতালদের সঙ্গে শুয়ে বাচ্চা নেয় মেয়েরা।
মায়া আসার পর বাড়িটা কলকল করে উঠলো। যেন সত্যিকার বাড়ি এটি। কিন্তু ছোট দুটো ঘরে কী করে বাস করবে ওরা! মায়া অবশ্য বারবারই বলছে, বাচ্চা নিয়ে আমি শ্বশুরবাড়িতে যে ঘরটিতে থাকি, সে ঘরটি এবাড়ির একটা ঘরের চেয়েও অনেক ছোট। সুরঞ্জন একটা ক্যাম্প খাট কিনে নিয়ে আসে। রাতে বিছিয়ে একজন শুতে পারবে। সেই একজনটি সে নিজে। আর নিজের বিছানাটি দেয় বাচ্চাদের জন্য। কিরণময়ীর খাটে কিরণময়ী আর মায়া, মা আর মেয়ে। সুরঞ্জন ক্যাচর ম্যাচর হই চই পছন্দ করে না, কিন্তু আশ্চর্য, মায়ার এই চলে আসা, এক সঙ্গে এক বাড়িতে বাস করার সিদ্ধান্ত তাকে প্রচুর প্রশান্তি দেয়। যেন আগের জীবন। যেন হঠাৎ করে ফিরে এলো কৈশোর-যৌবন। ফিরে এলো সেইসব দিন। ছেলেবেলার সেই সব ধুলোখেলা, সেই উচ্ছ্বাস, আবেগ। সেই ভালোবাসায় ভরা দিন। কিরণময়ীর জীবনে হঠাৎ একটা পরিবর্তন। নাতি-নাতনিদের নিয়ে তাঁর জীবনটাও যেন পাল্টে গেছে। কিন্তু এ বাড়িতে তো সংসার চলবে না, বড় বাড়ি ভাড়া নিতে হবে। বড় বাড়ি নেওয়ার পক্ষে কিরণময়ী মত দেন না। কারণ মায়ার আবার মতিগতি যদি পাল্টায়, যদি শ্বশুরবাড়ির কেউ তাকে নিতে আসে, স্বামী আসে আর মায়া যদি চলে যায়, অথবা কেউ না এলেও সে যদি সিদ্ধান্ত নেয় হঠাৎ করে সে চলে যাবে শ্বশুরবাড়ি। তখন বড় বাড়ি কী করে সামলাবেন কিরণময়ী!
মায়া কারও কথা শুনবে না। দিন দিন সে একটা গোঁয়াড়ে পরিণত হচ্ছে। ঘিঞ্জি গলিতে পলেস্তারা খসা হাড়গোড় বেরিয়ে আসা স্যাঁতা পড়া নোনা ধরা বাড়িতে সে থাকবে না জানান দিয়ে বাড়তি যা ভাড়ার টাকা, তা সে নিজে দেবে এই আশ্বাস দিয়ে কাছেই বেগবাগানে নিজেই একটা ভালো বাড়ি দেখে বড় বড় দুটো ঘর, রান্নাঘরটা আগেরটার চেয়ে বড়, স্নান ঘর পায়খানা ঘরের সঙ্গে লাগোয়া, এক চিলতে একটা বারান্দাও আছে, উঠলো। এ অঞ্চলেও মুসলমান বেশি। আসলে মুসলমানদের সঙ্গে পাশাপাশি থেকে জন্ম থেকে অভ্যাস যাদের, তারা হঠাৎ নাক সিঁটকোবে কেন। মুসলমান চাকর বাকর। এতেও অস্বস্তি হয় না। এই গলিতে স্যাঁতসেঁতে ভাব কিছু কম। আগের গলির চেয়ে এ গলি কম সরু। কিছু কম অন্ধকার। তাই, ভাড়া আগেরটির চেয়ে আটশ টাকা বেশি। জিনিসপত্র যা আছে জাননগর থেকে নিয়ে এসে গুছিয়ে নিল। নিজের জমানো টাকা থেকে একটা স্টিলের আলমারি কিনলো। একটা খাট কিনলো। দরজা জানালার ভালো পর্দা কিনলো। চারটে বেতের চেয়ার কিনলো। সব সে নিজেই করলো, এসবে না ছিল কিরণময়ী, না সুরঞ্জন। যেন এ সংসার তার সংসার। দাদা আর মাকে সে তার সংসারে রাখছে। চাকরিতে তার মাইনে বেড়েছে। মায়া কি আর পেছনে তাকায়! কিন্তু এত সহজে প্রথা ভাঙার মেয়ে তো মায়া নয়। মায়ার সমস্ত বুদ্ধি বিবেচনা সাহস শক্তি প্রচলিত প্রথার কাছে হেরে যায়। স্বামীর সংসার ছেড়ে সে চলে এসেছে, অমন স্বামীর সঙ্গে থাকার কোনও মানে হয় না বলে। কিন্তু সিঁথিতে সিঁদুর ঠিকই পরছে, শাঁখা পলা পরছেই, এমনকী লোহাও বাদ রাখছে না। সুরঞ্জন দেখে হাসে, বলে, কী রে, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই, আর এগুলো পরে আছিস যে! স্বামীর যেন মঙ্গল হয়, তাই?
মায়া চুপ। কথা বলে না।
সুরঞ্জন জোরে হাসে।
ওই হাসির দিকে মায়া ক্রুদ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে। হাঁপাতে থাকে সে। চোখ ফেটে জল আসতে চায়।
এবার সে ফেটে বেরোয়।
- শোনো দাদা, এই জগৎটা তো পুরুষের। জানো তো! তোমাদের জগৎ এটা। তোমাদের যা ইচ্ছে তাই করার জগৎ। আমি যদি আজ সিঁদুর মুছে ফেলি, তোমার মতো বদমাশগুলো সব আমার পেছনে ছুটবে। কিসের লোভ? এই শরীরটার ওপর লোভ। সিঁদুর হল তোমাদের মতো লোকদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য আমার সিকিউরিটি। আর কিছু না।
সকাল বেলা চোখের সামনে যখন আনন্দবাজার মেলে ধরা, আর হঠাৎ মায়ার এই বিস্ফোরণ সুরঞ্জনকে বাকরুদ্ধ করে দেয়। সে জানে না তার কী বলা উচিত। সে জানে তার ইচ্ছে করে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে। কারও কোনও কথা বা কাজ পছন্দ না হলে এই যে স্থান ত্যাগ করার স্বভাব, এটিকে পলায়নপরতা বলে সে বিশ্বাস করে। কিন্তু কখনও তার পক্ষে সম্ভব হয়নি এটি ত্যাগ করা। এটি ত্যাগ করতেই সে ঠায় বসে থাকে, চোখ আনন্দবাজারে। কথা বলতে গিয়ে কেন মায়া আজ পুরুষদের বদলে তোমাদের মতো শব্দদ্বয় ব্যবহার করলো, তা ভাবছে সুরঞ্জন। তাহলে কি জুলেখার সঙ্গে তার সম্পর্কের মূল কারণ সম্পর্কে কিছু সে জেনেছে কোথাও? জুলেখা যেহেতু তার চোখের বালি, তার পক্ষ হয়ে মায়ার তো কিছু বলার কথা নয়। বরং মুসলমান মেয়ের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছিল সেটিই ঠিক ছিল, পরে আদর দেখানোটাই শুধু অনুচিত এবং অন্যায়-এরকমই বলার কথা। তোমার মতো বদমাশ, তোমাদের মতো লোক-এর মানে কী? মানে সুরঞ্জন বদমাশ ছেলে, তার মতো লোকেরা খারাপ লোক, মেয়েদের ওপর লোভ করে, মেয়েদের জীবন নষ্ট করে, তার মতো লোকদের কাছ থেকে বাঁচতে হয়। সে কোন মেয়ের ওপর লোভ করেছে আর তার সর্বনাশ করেছে? ভাবে সে। জীবনের প্রতিটি মেয়ের কথা ভাবে এবং মেয়েদের চোখ দিয়ে সে দেখতে চেষ্টা করে নিজেকে। সুদেষ্ণার কথা কি মায়া বলতে চাইছে, মায়ার পক্ষ নিতে গিয়ে যার সঙ্গে তিক্ত হয়ে উঠেছিল সম্পর্ক? নাকি জুলেখার? সুদেষ্ণার সঙ্গে বদমাইশি হয়নি, শরীরের লোভের কারণে কিছু ঘটেনি, আর তার জীবনে তার কারণে বিপর্যয়ও কিছু আসেনি। এই কথাগুলো খাটে জুলেখার বেলায়। বদমাইশি, লোভ, বিপর্যয় সব কিছুর শিকার জুলেখা। আর যার প্রতি মায়া তার থাক, তার তো জুলেখার প্রতি কোনও মায়া থাকার কথা নয়। সে কি এমনি এমনি নিজেকে রক্ষা করতে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে আর তীরগুলো লেগে গেছে যথাস্থানে? নিশ্চয়ই সে খুব কষ্ট থেকে বলেছে, যে কষ্ট থেকে জন্ম নিয়েছে ক্ষোভ। ক্ষোভটাই শুধু দেখা যায়, কষ্টটা অদৃশ্য থাকে।
অনেকদিন পর জুলেখার কথা মনে পড়ে তার। কেমন আছে, জানে না। খোঁজ-খবরও নেই। কদিন দেখা না হলে সে যে চলে আসতো বাড়িতে, তেমনও হচ্ছে না। এ বাড়িতে এখন তো আসা তার পক্ষে আর সম্ভবই না। আর তার ওই মামার বাড়িতে সুরঞ্জনের যাওয়াও সম্ভব নয়। দেখা হওয়ার বাকি যে জায়গা, বাড়ির বাইরে, মাঠে, গাছতলায়, চায়ের দোকানে, ফুটপাতে, রাস্তায়। দেখা করার তাগিদটা কারও ভেতরেই নেই। নাকি একজনের আছে, সে অভিমান করে বসে আছে। অভিমান সুরঞ্জন করে, তবে এখন অভিমানের চেয়েও বেশি কাজ করছে আলসেমি। মাঝে মাঝে এমনই হতাশা তাকে গ্রাস করে ফেলে যে তার আর জগতের কোনও কিছুতে জড়াতে ইচ্ছে করে না। জুলেখা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। থাকুক সে ব্যস্ত। সুরঞ্জন তো আর তার জীবনের কোনও কাজে আসছে না। জীবনে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান এই তিন নিয়ে অপূর্ণতা থাকলে বোধহয় প্রেমেও ঠিক মন বসে না। জুলেখাকেও কদিন উদাস উদাস দেখেছে সে। নিজের পায়ে কিছুটা হলেও সে দাঁড়িয়েছে, এখন ভাবছে মেয়েদের কোনও একটা মেসে বা চাকরিজীবী মহিলাদের কোনও হোস্টেলে উঠে যাবে। ছুটোছুটি করছে মেয়ে।
সময় নেই তার। দেখা করার সময় নেই, নাকি সুরঞ্জনের আবেগহীনতা অপদার্থতা ইত্যাদি কারণে অভিমান? ভালোবাসার তো আর কেউ নেই তার, তবে জুলেখার প্রতি এই অনীহা কেন, যখন রিশপে এত ভালো কাটালো দুজন! কত না স্বপ্ন দেখলো! হয়তো ওই স্বপ্ন দেখাটাই কাল হয়েছে। স্বপ্ন একটা বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। স্বপ্নের বোঝা ভীষণ বোঝা, ওসব বাস্তবায়নের একটা চাপ থাকে। সামনে কোনও স্বপ্ন না থাকলে, কোনও প্ল্যান প্রোগ্রাম না থাকলে, কোনও অঙ্গীকার না থাকলে, কোনও আশা না থাকলে দিব্যি সুখে কাটানো যায়। দুজন একসঙ্গে থাকবো, একটা বাড়ি, একটা উঠোন, কিছু গাছপালা, একসঙ্গে চা, একসঙ্গে খাওয়া, একটা বিছানা, রাতে বাড়ি ফেরা, শোয়া, শুয়ে আদর আহলাদ, একটা বাচ্চা, একটা ইস্কুল, টাকা পয়সার হিসেব, পাকা চুল, অবসরজীবন, নাতি নাতনি, মৃত্যু। চোখের সামনে নিশ্চিত ওই জীবন। সুখের স্বস্তির জীবন।
ভাবলে সুরঞ্জনের গা কাঁপে। রিশপে রাত্তিরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জড়াজড়ি করে শুয়ে স্বপ্নের কথা বলছিল দুজন। সারারাত। আকাশে চাঁদ ছিল, চাঁদের আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা যে কী অপরূপ হয়ে উঠতে পারে, তা না দেখলে বিশ্বাস হয় না। জুলেখার সঙ্গে তার সবচেয়ে ভালো সময় ওই রিশপেই কেটেছে। এক জীবনে আর কী দরকার! ওই স্মৃতি নিয়ে তার বাকি জীবন চমৎকার কেটে যাবে। জুলেখা থাকুক তার মতো করে, সুখে। সুখে থাকাটাই তো আসল। ওই স্বপ্নগুলো সামনে থাকলেই সুখে থাকা যায়। পূরণ হয়ে গেছে তো স্বপ্ন বলতে তখন কিছু থাকে না। সুখে কাটানোর চেয়ে সুরঞ্জনের মনে হয় সামনে সুখের স্বপ্ন নিয়ে অসুখে কাটানো ঢের ভালো। এতে উত্তেজনা থাকে। উত্তেজনা না থাকলে মৃত্যুর মতো ভয়াবহ শীতল একটি জীবন নিয়ে চরমতম হতাশার অন্ধকারকে সঙ্গী করে ঠায় বসে থাকতে হয়। সে নিজে যেমন বসে আছে। জুলেখা চেষ্টা করে তার জোয়ার দিয়ে মাঝে মাঝে সুরঞ্জনের মধ্যে তরঙ্গ তুলতে। ওঠে তরঙ্গ, কিন্তু কাছে সে না থাকলে আবার শান্ত হয়ে যায় চরাচর। সম্ভবত মেয়েটি তাকে নিয়ে আর কোনও স্বপ্ন দেখে না। না দেখুক। একবার শুধু মাঝে এসএমএস পাঠিয়েছে, কোথায়? লিখে। উত্তর দিয়ে দিয়েছে, বাড়িতে। ব্যস। আর কোনও কথা নেই। সুরঞ্জন একবার আই মিস ইউ লিখেও সেন্ড করেনি। সত্যিই সে জুলেখাকে কি মিস করছিল? তখন মনে হয়েছে না করছে না। বরং একটা বই নিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতেই তার মনে হয়েছে জুলেখার সঙ্গে প্রেম করার চেয়ে ভালো। বরং তার মনে হয়েছে সোবহানের সঙ্গে গল্প করাও ওই প্রেম করার চেয়ে ভালো। এখন মায়ার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সময় কাটানো মনে হচ্ছে ঢের আনন্দের কাজ। জুলেখার সঙ্গে সম্পর্কটা সম্ভবত গড়ে উঠেছিল তার নিঃসঙ্গতার কারণে। কিছু অসৎসঙ্গের সঙ্গে টানা পোড়েন, নিজের মধ্যে কিছু ভাঙাচোরা, ঠিকানা পাল্টানো, শুরু থেকে সবকিছু শুরু করা, আগের জীবন ঝেঁটে বাদ দিয়ে নতুন জীবন গোছাতে গেলে একটা শূন্যতা তৈরি হয়। এই শূন্যতাই ঢুকিয়েছিল জুলেখাকে। প্রায়শ্চিত্ত- ওসব বাজে কথা। প্রায়শ্চিত্ত কখনও কিছু দিয়ে হয় না। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। জুলেখাকে যেভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তা কোনও দিন ওর জীবন থেকে মুছে দেওয়া যাবে না। ধর্ষকগুলোকে সব ফাঁসি দিলেও ওই বীভৎস স্মৃতি জুলেখা যতদিন বাঁচে, বেঁচে থাকবে তার সঙ্গে। তার শ্বাসের সঙ্গে শ্বাস নেবে স্মৃতি।
বাড়িটা আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে দেখতে। এখন মায়ার স্বপ্নের সংসার গড়ে উঠছে বাড়িটায়। শ্বশুরবাড়ির কেউ এখনও খবর অবধি নেয়নি। কিরণময়ীর খুব ভালো লাগছে দেখতে যে মায়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিদিনকার দুঃসহ জীবন থেকে নিজেকে মুক্তি দেবে। দিতে কি সত্যিই পারবে? আবার হঠাৎ কখন কার ওপর বিগড়ে যায়, কখন আবার কারও আচরণে মন খারাপ হলে তল্পিতল্পা নিয়ে রওনা হবে। ভয় হয় কিরণময়ীরই। ঠিক এ সময় কিরণময়ী বুঝতে পারছেন না সুরঞ্জন কী রকম ভাবে নিচ্ছে পুরো ব্যাপারটা। সে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। বাড়িতে বোনপো বোনঝি নিয়ে কাটায়, বাকি সময় বই পড়ে নয়তো টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। জুলেখা অনুপস্থিত। তবে কি দুজনে কোনও মনোমালিন্য হল, ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল কী! যদি হয় হয়েছে, এ নিয়ে কিরণময়ী ভেবেই বা কী করবেন। ভগবান যা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন। মায়ার উপস্থিতি যদি জুলেখার অনুপস্থিতি ঘটায়, তবে হয়তো কোথাও কোনও মঙ্গল সত্যিই আছে। মায়া সুরঞ্জনের বোন। বোন চিরকাল থাকে। স্ত্রী বা প্রেমিকা আজ আছে কাল নেই। সুদেষ্ণা আর জুলেখা এসেছে, গেছে বা যাবে। যার এত বছরেও সংসার হয়নি, তার আর হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। কিরণময়ী মনে করেন না সুরঞ্জনের আর সংসার করার বয়স আছে, বা ও ব্যাপারে সুরঞ্জনের কোনও সত্যিকারের উৎসাহ আছে। কত কত পুরুষ অবিবাহিত অবস্থায় থাকে। সুরঞ্জনের কপালেও তাই আছে। আর এমন তো ধন সম্পদ নেই তাদের যে মনে হতে পারে, মরে গেলে এগুলো ভোগ করবে কে বা খাবে কে তাই কিছু বংশের প্রদীপ রেখে যাই। কোনওভাবে সংসার চলে, চলে পর্যন্তই। সদস্য বাড়ানোর কোনও আর দরকার নেই। এমন কিছু রোজগার কারওর নেই যে উজ্জ্বল ঝকঝকে কোনও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা আছে। এভাবেই টিউশনি করে, এভাবেই ছোট খাটো কাজ করে, এভাবেই দুতিনটে শাড়ি কাপড় বিক্রি করে শহরের মধ্যিখানের নাম করে মুসলমান অধ্যুষিত অন্ধকার গলিতে বাস করতে হবে। এর মধ্যে যদি পরিবারটি খানিকটা সুখে স্বস্তিতে থাকতে পারে, তারই চেষ্টা করতে হবে। সুরঞ্জনের না হয় হল না, এখন সে যদি বোনের দুটো বাচ্চাকে মানুষ করতে পারে, তবেই তো ছেলেপুলে না হওয়ার দুঃখ অনেক ঘুচবে। ঠিক কিরণময়ীর মতো করে মায়াও ভাবছে, সুরঞ্জনও কি ভাবছে না? তার অবচেতনেই ভাবনাটা বসে আছে।
পরিবারের সবাইকে এক করে দিল মায়া। একজন সদস্য নেই, দুজন সদস্য বেড়েছে। জুলেখা এই পরিবারের কোনও সদস্য নয়। মায়ার স্বামীও সদস্য নয়। কেমন সব। সুরঞ্জনের অবশ্য কোনও অদ্ভুত জিনিসে আপত্তি নেই। সে বরং এক ধরনের মজাই পায়। এই ঘটতে থাকা অদ্ভুত জিনিসগুলো জীবনে কিছুটা হলেও তরঙ্গ তোলে তার।
এর মধ্যেই একদিন বাড়িতে মায়া তার মেয়ের জন্মদিন পালন করছে। ভালো রান্না হচ্ছে। মায়ার মনও খুব ভালো। এই দিন সুরঞ্জন বলেছে তার এক বন্ধুকে সে ডাকবে। মায়া বলে, একজন কেন, একশ জনকে ডাকো, কিন্তু মুসলমান কাউকে যেন ডেকো না। মায়া যে জুলেখার কথা ভেবে বলেছে তা সে জানে।
- কাকে বলছো? নাম কি?
- তুই চিনবি না।
- না চিনি। নামটা তো বলতে পারো।
- শোভন।
সোবহানকে সে শোভন উচ্চারণ করলো। মিথ্যে বলছে, বুঝেই করলো।
ফোনে তার বন্ধুটিকে নেমন্তন্ন করলো নতুন বাড়িতে। বাড়ি বলতে একটা তিনতলা বাড়ির একতলা। ঠিকানাও ফোনে দিয়ে দিল। বলেও দিল, এ বাড়িতে তোমার নাম এখন থেকে শোভন।
শুনে ওদিকে সোবহান বললো, - কী বললে?
- বলছি তুমি শোভন।
- তাই নাকি? হাসলো সোবহান।
- হাসছো কেন?
- আমাকে আরও অনেকবার হিন্দু সাজতে হয়েছে এবং এই নামটিই তখনও ব্যবহার করতে হয়েছে।
- বাহ, তাহলে অবশ্য এ রকম আশা করিনি।
- তোমার বাড়িতে তো ভালোই।
- আমিও করিনি। কিন্তু এ ছাড়া অন্তত আজ উপায় নেই।
- কেন ডাকছো, বলো তো।
- বাড়িতে ছোট একটা অনুষ্ঠান আছে। তাই...
- অনেকে আসছে বুঝি?
- কেউ না। ফ্যামিলির বাইরে শুধু একজনই তুমি একজনই। তুমি।
- শুধু শুধু বাইরের মানুষ ডাকবে কেন? ফ্যামিলি নিয়েই আজকে করো অনুষ্ঠান।
- ও, তোমার দূর হয়ে যায়, তাই বুঝি?
- না, সে কথা না।
- তবে কী কথা?
- খাওয়ার জন্য যাবো? অত দূর যাবো? খেতে তো আমার তেমন ইচ্ছে করে না। ... তার চেয়ে ....
- একটা কথা বলবো? সুরঞ্জন গলা শক্ত করে বলে।
- বল কী কথা।
- তোমাকে আমার খুব ইচ্ছে করছে দেখতে। তাই ডাকছি। খাওয়াটা উদ্দেশ্য না।
ওদিকে কিছুক্ষণ চুপ থেকে সোবহান বলে। - কটায় যাবো?
- যখন ইচ্ছে।
পার্টি বলতে কিছু বেলুন টাঙানো, হ্যাপি বার্থডে লেখা কাগজ টাঙানো। একটা কেক কাটা। আর খাওয়ার মধ্যে বড়দের জন্য ভাত, ডাল, বেগুন ভাজা, পার্শে মাছ, চিংড়ি মাছ আর কাতলা মাছ। ছোটদের জন্য ফ্রাইড রাইস আর চিলি চিকেন। অতি সামান্য আয়োজন। কিন্তু সোবহান একেবারে অবাক।
- এত রান্না কেন?
কিরণময়ী বললেন, - বাবা শোভন আমরা পূব বাংলার মানুষ। ওখানে খাওয়াদাওয়াটা খুব ভালো। অনেক আইটেম রান্নার চল। অতিথিদের খাওয়ানোর চল। এখন সুরঞ্জনের বাবা চলে যাওয়ার পর কিছুই কি আর আগের মতো আছে? কোনওভাবে বেঁচে থাকা আর কী! মেয়েটার শখের কারণে উৎসবটা করছে।
এমন পারিবারিক হইচই আনন্দের পরিবেশে সোবহানকে ডাকতে পেরে সুরঞ্জনের খুব ভালো লাগে। সোবহান বাচ্চাদের সঙ্গে কত রকম খেলা খেলছে । আর মায়ারও ভালো লাগছে বাচ্চাদের চমৎকার একটা নতুন আংকল জুটেছে বলে। জন্মদিনের কথা শুনে সে এনেছে লাল একটা ব্যাকপ্যাক-এর মধ্যে রং পেনসিলের বাক্স, ছবি আঁকার খাতা, কয়েকটা ছড়ার বই, একটা গ্লোব, আর ছবিঅলা একটা এনসাইক্লোপেডিয়ার বিশাল বই। বইটা মায়াও অনেকবার উল্টে উল্টে পড়ে বলেছে, শোভনদা, থ্যাংকু সো মাচ। বইটা এক কথায় অসাধারণ।
বাড়িতে কোনও খাবার টেবিল নেই। বিছানায় বসে খাওয়া। খবরের কাগজ পেতে বিছানাতেই খাওয়া হয়। একমাত্র অতিথি শোভনকে বেশ যত্ন করে খাওয়ায় মায়া।
- শোভনের বাড়ি কোথায়।
- বেলঘরিয়া।
- বেলঘরিয়ার কোথায় বলো তো। আমরাও তো বেলঘরিয়ায় ছিলাম।
সুরঞ্জন বলে, - ফিডার রোডে।
কিরণময়ী মাথা নাড়েন। - তা হবে। ওখানে তো বেশ সম্পন্ন লোকেরা বাস করে।
শোভনের বাড়িতে কে কে আছে, শোভন কী করে, কোথায় চাকরি কোথায় ব্যবসা এসব কিরণময়ী আর মায়া জিজ্ঞেস করে করে জেনে নেয়। সুরঞ্জনের বন্ধুদের মধ্যে শোভনই যে সবচেয়ে ভালো, এত ভালো ভদ্র অমায়িক সজ্জন ছেলে বন্ধু হিসেবে তার যে আগে জোটেনি, তা মায়াই বলে কিরণময়ীকে। বলে শোভন কী কারণে সুরঞ্জনের মতো একটা অকর্মণ্য আলসে আর হোপলেসের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে, তা বোঝার ক্ষমতা তার নেই। মায়ার এই কথার তীরটি গেঁথে যায় সুরঞ্জনের মাথায়। সুরঞ্জন পুরুষ বলে তার ওপর আশা করা হয় অনেক, সে জানে। কিন্তু তাই বলে এসব তীরের হাত থেকে মুক্তি পাবে না সে কখনও? তাকে কি অহর্নিশি বুঝিয়ে দেওয়া হবে যে অযোগ্য, যেহেতু অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের মতো তাকে টিউশনি করে চলতে হয়, যেহেতু টাকা এতে অঢেল নেই, টাকা? সুরঞ্জন দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ছোটবেলায় শিখেছিলো দরিদ্রের দেশে টাকা করা লোকেরা কোনও সৎ লোক নয়। কম টাকাতেও জীবন চলে, চলতে পারে। মানুষ হিসেবে বড় হও সেটাই বড় কথা। টাকা না হয় সুরঞ্জনের কম হয়েছে। কিন্তু মানুষ হিসেবে সে কি বড় হতে পেরেছে, বোঝে যে সে হয়নি। খুব গভীর করে যখন ভাবে, বোঝে। সোবহানের সামনে যখন সে দাঁড়ায়, বোঝে। ওর চোখে যখন চোখ রাখে, বোঝে। সোবহানকে সে ভেতরে ভেতরে ভালোবাসে, আবার ঘৃণাও করে কম না। মায়া কিরণময়ী দুজনই যখন সোবহানের প্রশংসা করছিল, একদিকে ভালো লাগছিল তার বন্ধু বলে, অন্যদিকে ঈর্ষা হচ্ছিল। এই প্রশংসা কেউ কি তাকে করেছে কখনও? যেমন দেখতে, তেমন পড়াশোনায়, তেমন নিষ্ঠ কাজে, তেমন সিনসেয়ার, আপাদমস্তক সভ্য ছেলে। এ হচ্ছে সোবহান। এই ছেলে কেন সুরঞ্জনের সঙ্গে মেশে? তাকে কেন বন্ধু বলে মনে করে? সুরঞ্জন অনুমান করে, তার মতোই নিঃসঙ্গ সে।
সুরঞ্জন বলে, সেদিন সে যা বলেছিল, সবই কিন্তু মদ খেয়ে। - ডোন্ট মাইন্ড।
সোবহান বলে, - মদ না খেয়ে কি ওগুলো তুমি বলবে না?
মাথা নাড়ে, বলবে না।
- বলবে বলে মদ খাও নাকি মদ খাও বলে বলো? সোবহান হেসে শুধোয়।
সুরঞ্জন হেসে বলে, - হয়তো দুটোই।
আমারও মনে হয় তাই। - সোবহান বলে।
- তুমি মদ খাও না কেন ?
- খাই না।
- কোনও ধর্মীয় বাধা?
- মোটেই না
- তবে কেন?
- অভ্যেসটা হয়নি ছোটবেলা থেকে। আর যা খেলে নেশা হয়, তা খেতে চাই না। সিগারেট খাইনি কোনও দিন ।
- চশমা পরা স্কুলের ভালো ছাত্রদের মতো তুমি। সকলে ভালো বলে। তোমার মতো ভালো নাকি কেউ নেই।
- ওটা বেশি দিন বলে না। লম্বা বলে, চশমা পরি বলে, চুল ভালো করে আঁচড়ানো থাকে বলে হয়তো। কম গুণ্ডামি করেছি ছোটবেলায়?
- বলো কী? তুমি জানো গুণ্ডামি করতে?
- খুব জানি।
- এখন ভালো হয়ে গেছ?
- না।
- তবে যে সেদিন অচিন্ত্যকে কিছু বললে না?
- ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করি না।
সোবহান চা খেতে খেতে হাসে। গা ছমছম শুরু হয়ে গেছে সুরঞ্জনের। তবে কি এর ভেতরেও গলদ আছে? সোবহানকে নিয়ে সাত রকম ভাবনা ভাবে। মানুষটার উদ্দেশ্য কী তার
সঙ্গে মেশার? এমনি বন্ধুত্ব নাকি কোনও বদ উদ্দেশ্য আছে? সংশয় সুরঞ্জনকে সোবহান থেকে দূরে রাখে।
চলবে.......
২৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
জনপ্রিয় প্রথাবিরোধী লেখিকা তসলিমা নাসরিন ১৯৬২ সালের ২৫ আগষ্ট ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭৮ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস পাস করেন। তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সাল অবদি চিকিৎসক হিসেবে ঢাকা মেডিকেলে কর্মরত ছিলেন।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে লেখালেখি নয়তো চাকুরি ছাড়তে বললে তিনি লেখালেখি ছাড়েন নি। বরং সরকারি চিকিৎসকের চাকুরিটিই ছেড়ে দেন তিনি। তখন এই লেখিকাকে কেন্দ্র করে উগ্র মৌলবাদীদের আন্দোলনে উত্তাল ছিলো পুরো দেশ। বেশ কিছু মামলাও হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে। শেষে এককথায় বাধ্য হয়েই দেশত্যাগ করেন নারীমুক্তির অন্যতম অগ্রপথিক তসলিমা নাসরিন। এরপর তিনি নির্বাসিত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন