উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

1111111111111111111111

০৪ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ০৫)

পাখি আতঙ্কে নিজের ঘরে গিয়ে গুটিশুটি মেরে বসে রইলো।এভাবে আরও কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আর শব্দ হলো না।ও ভয়ে ভয়ে আবার দরজার পকেট মিররে চোখ রাখলো।এখন কেউ নেই।যাক এতক্ষণে জানে পানি এলো।পাখি ক্লান্ত পায়ে হেটে এসে সোফায় বসলো।টেবিলের ওপর রাখা আধা গ্লাস পানি ঢকঢক করে গিলে চোখবুজে কিছুক্ষণ সোফায় এলিয়ে রইলো।
অফিস থেকে ফেরার সময় গেটে দারোয়ানের সাথে দেখা হতেই শয়ন বলল,'বইগুলো কোথায়?'

'ওইগুলা আমি ঘরে নিয়া রাখছি স্যার।আপনে উপরে যান।আমি নিয়া আসতাছি।'
'না না মকবুল ভাই আপনার কষ্ট করতে হবে না।আমাকে দিন আমিই নিয়ে যাবো।'
শয়ন নিজেই দারোয়ানের ঘর থেকে পাখির জন্য গ্রাম থেকে আনানো বইগুলো নিয়ে গেলো।ঘরে ঢুকেই পাখিকে ডেকে বলল,'এই যে আপনার বই।ক্লাসে গিয়েছিলেন?'
'হ্যাঁ।'
'ক্লাস কেমন লাগলো?'
'ভালো।'
'আচ্ছা,পড়ুন তাহলে।'

কথা শেষ করে শয়ন নিজের ঘরের দিকে যেতে নিলেই পাখি ইতঃস্তত গলায় বলল,'আজকে দু'টো লোক এসেছিলো বিকেলে।দরজা নক করছিলো বারবার।দেখতে গুন্ডা,বখাটে ধরনের।'
শয়ন পাখির কথা শুনে হেসে ফেললো।ঠোঁটে হাসি রেখেই বলল,'ওরা কোনো গুন্ডা মাস্তান না।ওদের আমিই পাঠিয়েছিলাম আপনার বইগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য।পরে আপনার সাড়া না পেয়ে আমাকে ফোন করেছিলো আমি ভেবেছিলাম আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন তাই আর ফোন করি নি।দারোয়ানের কাছে রেখে যেতে বলেছিলাম।'
পাখি লজ্জা পেয়ে বলল,'ও,আমি আরও মনে করেছিলাম..'
শয়ন আবার শব্দ করে হেসে বলল,'আপনি ভয় পেয়েছিলেন?'
পাখি মাথা নাড়লো।শয়ন বলল,'তাহলে ফোন করলেন না কেন?'
'আপনার ফোন নাম্বার নেই আমার কাছে।'
'ও হ্যাঁ।আপনার নাম্বারও নেই আমার আছে।'
তারপর নাম্বার আদান-প্রদান করে শয়ন নিজের ঘরে চলে গেলো আর পাখিও ওর ঘরে গিয়ে নিজের বইগুলো গুছিয়ে রাখলো।
শয়ন ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ নিজের কাজ করলো তারপর বাইরে এসে পাখিকে ডেকে বলল,'চলুন,রাতের খাবারটা সেরে ফেলি।আমি আজ তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বো।'
'কিন্তু আমি তো আজ রান্না করি নি।'
শয়ন ভ্রু কুঁচকে বলল,'কেন?'
'কারণ বাসায় বাজার নেই।'
শয়ন অপরাধীর সুরে বলল,'ইশ!আ'ম রিয়েলি সরি।আমার মনে ছিলো না।আপনি দুপুরে কিছু খেয়েছেন?'
'হ্যাঁ,নুডলস।'

'ওহ হো!আচ্ছা ওয়েট আমি অর্ডার করে দিচ্ছি।আর কাল সকালেই বাজার করে দেবো।'
শয়ন অনলাইনে খাবার অর্ডার করে করলো।খাবার আসতে বেশি সময় লাগলো না।খাওয়ার সময়ই শয়ন বলল,'কাল আমি বাড়ি যাবো।'
পাখি কিছুটা শঙ্কিত হয়ে বলল,'কেন?'
'তেমন কিছু না।মা'কে দেখতে।আসতে অনেক রাত হবে।'
'কালই ফিরবেন?'
'হ্যাঁ।পরশু অফিস আছে।'
'ওহ!আচ্ছা।'
'হুম,আপনি সাবধানে থাকবেন আর আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন।'
পাখি মাথা নাড়লো।

খাওয়া শেষ করে শয়ন ঘুমাতে চলে গেলো আর পাখি সবকিছু গুছিয়ে ঘরে গিয়ে আবার পড়তে বসলো।কিন্তু পড়ায় মন বসছে না শয়নের কথা শুনে।শুধু মা'কে দেখতে যাচ্ছে না সে এটা বোঝাই যাচ্ছে।নিজের শ্বাশুড়িকে নিয়ে ভিষণ ভয় হচ্ছে পাখির।
আজ খুব সকালে উঠলো শয়ন।তবে পাখির আগে নয়।ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে বের হওয়ার সময় পাখিকে ডেকে বলল,'আমি এখনই বের হবো।একটু পরে দারোয়ান আপনাকে বাজার করে দিয়ে যাবে আমি বলে দিয়েছি।ভয়ে পাবেন না কিন্তু আর সাবধানে থাকবেন।কোনো সমস্যা হলে আমাকে ফোন করবেন।আল্লাহ হাফেজ।আসছি।'
পাখিও হাসিমুখে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় দিলো।যেমন একজন স্ত্রী দেয়।
শয়নের বাড়ি পৌঁছাতে সকাল দশটা বাজলো।ফারজানা বেগম ছেলেকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন।হঠাৎ কিছু মনে হতেই ছেড়ে দিয়ে বললেন,'ওই হতচ্ছাড়ি,বেয়াদব মাইয়াটা কই?ওরে আনোস নাই?'
'না মা।ও আসে নি।'
'কেন?তোরে না কইলাম ওরে নিয়া আয়।ওরে আমি বিদায় দিমু।'
'মা ঘরে চলো।ঘরে গিয়ে কথা বলি।'

ফারজানা বেগম ছেলেকে নিয়ে ঘরে গেলেন।বেরিয়ে এসে বড় বউকে রান্না বসাতে আর ছেলের জন্য নাস্তা নিয়ে আসার জন্য বললেন।বড় বউকে হুকুম দিয়ে আবার ছেলের কাছে গিয়ে বসলেন।নরম গলায় বলা শুরু করলেন,'আব্বা,মা'র কথা শুনো।ওই মাইয়া'রে তালাক দিয়া দেও।ওই মাইয়া তোমার যোগ্য না।আমারই ভূল আমি ভালো মত খোঁজ নেই নাই।আমার আরও খোঁজ খবর করা দরকার ছিলো।এখন যা হইছে হইছে ওই মাইয়ারে তাড়াও।আমি তোমার বিয়া আরও ভালো জায়গায়  করামু আব্বা।'
'আম্মু মেয়েটাকে ওর ফ্যামিলি নেবে না।ওকে এখন বের করে দিলে যাবে কোথায়?আগে ওর একটা ব্যাবস্থা করে তারপর এগুলো ভাবি?'
ছেলের এমন অতি দরদী কথা শুনে ফারজানা বেগম রেগে বললেন,'না তুই আমার কথা শুনবি।তুই ওরে তালাক দিবি।কোনো ব্যাবস্থা করা লাগবো না।'
'মা....।'
শয়নকে থামিয়ে দিয়ে ফারজানা বেগম বললেন,'তুই যদি ওরে তালাক না দেস আমি বাড়ি ছাইড়া দিমু।আর জীবনেও আমার মুখ দেখবি না তুই।'

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

০৬ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন