উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

1111111111111111111111

৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ০৯)

শয়ন বাড়ি পৌঁছালো সকাল আট'টায়।উঠোনে বড়ভাবি কে দেখে দ্রুত গিয়ে বলল,'ভাবি কি হয়েছে মায়ের?'
সামিহা ডাল বাছতে বাছতে বলল,'ঘরে আছে।নিজেই গিয়ে দেখো।'
শয়ন আর কথা না বাড়িয়ে মায়ের ঘরের দিকে চলে গেলো।ফারজানা বেগম উঠোন থেকেই ছেলের আসার শব্দ শুনে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন।শয়ন ঘরে ঢুকেই দেখলো বিছানায় কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে তার মা।ও মায়ের পাশে গিয়ে বসলো।বলল,'কি হয়েছে মা?'
ফারজানা বেগম মুখ গোজ করে রইলেন।কিছু বললেন না।শয়ন ব্যস্ত কন্ঠে আবার বলল,'মা,প্লিজ কথা বলো।'

ফারজানা বেগম রোষিত গলায় বললেন,'কি কথা কমু তোর লগে আমি?তুই আমার কথ শুনছ?'
'আচ্ছা শুনবো।এখন বলো কি হয়েছে তোমার?এত ইমার্জেন্সি কল করেছিলে কেন?আমি তো ভয়ই পেয় গেছিলাম।তাড়াহুড়ো করে চলে এসেছি।'
'আমার মনের অসুখ হইছে।তোরে ভালা কোনো জায়গায় বিয়া দিতে না পারলে আমার অসুখ ভালা হইবো না।'

শয়ন মায়ের এসব হেয়ালি কথাবার্তায় বুঝে নিলো ওকে প্ল্যান করে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।কিন্তু যখন ফোনে কথা বলছিলো তখন মনে হয়েছিল আসলেই অসুস্থ।তাই সারা রাস্তা ছটফট করতে করতে এসেছে শয়ন।এখন মা'কে তো কিছু বলাও যাবে না।তবুও দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শয়ন বলল,'কি চাও তুমি?'

'তুই ওই নষ্ট মাইয়ারে তালাক দিয়া আরেকটা বিয়া করবি এবং ওইটা কালকাই।আইজকা মাইয়া দেখতে যাবি আমার লগে।'
শয়ন এ পর্যায়ে ভিষণ ভাবে আৎকে উঠলো।বলল,'এসব কি বলছো মা?'
'হ,আমি যা কইছি তাই করবি।আইজকা গিয়া আংটি পরায় আইবি আর কালকা বিয়ে।'
'মা তুমি পাগল হয়েছো?'

'আমি পাগল হই নাই।পাগল তুই হইছস ওই নষ্ট মাইয়া তোরে পাগল বানাইছে।'
'মা প্লিজ এভাবে বইলো না।পাখি খারাপ মেয়ে না।'
'এইযে আমি কইছি না তুই পাগল হইয়া গেছস।এখন তোর ওই মাইয়ার সবই ভাল্লাগবো।'
'মা এসব বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।'
'একদম না।আমি যা করতাছি তোর ভালোর লাইগাই করতাছি।'
শয়ন মায়ের ওপর রেগে বিনাবাক্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেই পেছন থেকে ফারজানা বেগম বললেন,'তুই যদি আমার কথা না মাইনা এই বাড়ি থেইকা চইলা যাস তাইলে আমার ম/রা মুখ দেখবি।আমি কইয়া দিলাম।'

শয়ন থমকে দাঁড়ালো।চিৎকার করে বলল,'মা,চুপ করো।'
তারপর আর এক মিনিটও দাঁড়ালো না শয়ন অন্যঘরে এসে ধপ করে বসে পড়লো।রাগে আর বিরক্তিতে মাথায় আগুন ধরে গেছে।কেনো বারবার ওর সাথেই এমন হয়?ও তো পাখিকেও বিয়ে করতে চায় নি।আসলে সিনহা মারা যাবার পর আর কাউকেই ভালো লাগে নি ওর।কিন্তু মায়ের জেদের কারণে পাখিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে।ওদের বিয়ে হবার কথাও ছিলো কিন্তু হঠাৎ এক গাড়ি এক্সিডেন্ট সিনহার স্পটডেথ হয়।সেই থেকে পুরো দুই বছর ছন্নছাড়া জীবন কাটিয়েছে শয়ন কিন্তু মায়ের জেদের কারণে আর পারে নি।পাখিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলো।বিয়ের পরেও শান্তি নেই।তারপরও যা একটু স্বাভাবিক হয়েছিল এখন আবার আরেকটা বিয়ে করো মায়ের জেদের কারণেই।সবসময় ওর সাথেই কেনো এমন হয়?নিজের মাথা চেপে ধরে বসেছিলো শয়ন।একটু পর অয়ন ঘরে ঢুকে ভাইয়ের পাশে এসে বসলো।কাঁধে হাত রেখে বলল,'মা'কে বারবার মানা করেছিলাম এসব করতে কিন্তু সে কোনো কথাই শোনে নি।যা ইচ্ছা হচ্ছে করছে।'

শয়ন কাতর গলায় বলল,'এখন কি করবো ভাইয়া?'
'মায়ের সাথে কথা বলেছিস?'
'হ্যাঁ সে তার জেদের ওপরেই আছে।'
অয়ন হতাশ গলায় বলল,'মেয়ের পরিবারকে ও জানায় নি তোর বিয়ের কথা।'
শয়ন অবাক হয়ে বলল,'এটা তো প্রতারণা।যে প্রতারণা মানতে না পেরে উনি এসব করছে সেই প্রতারণা ই তো করছেন উনি।'
'আমিও সেটাই বুঝিয়েছি কিন্তু কোনো লাভ নেই।তার একটাই কথা।আমি ওর ভালোর জন্যই সব করছি।'

শয়ন বুঝতে পারছে না আসলে এখানে ভালোটা কোথায়।
সকালে একবার কল দিয়েছিলো পাখি কিন্তু রিসিভ হয় নি বিকেলে আবার দেওয়ার পর যখন বন্ধ পেলো তখন কেমন যেন চিন্তা হলো ওর।সব ঠিক আছে তো?শয়ন আর ওর মা  ছাড়া ওর বাড়ির কারোই নাম্বার নেই।কিন্তু ওর মা'কে তো আর ফোন দেওয়া যাবে না।কি করবে এখন?চিন্তায় তো অস্থির হয়ে উঠছে ও।

একপ্রকার জোর করে কসম দিয়ে শয়নকে নিয়ে যাওয়া হলো মেয়ে দেখাতে।শুধু ফারজানা বেগম আর শয়নই গেলো।মেয়ে দেখে আংটি পরানোর সময় শয়ন জরুরি কলের অজুহাত দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো।ফারজানা বেগম ব্যাপারটা বুঝে সামাল দেওয়ার জন্য নিজেই মেয়েকে আংটি পরিয়ে দিলেন।বিয়ে কাল বাদ আসর পড়ানো হবে ঠিক করা হলো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন