উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

1111111111111111111111

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ১০)

ফোনটাও ওর কাছ থেকে নিয়ে গেছে ফারজানা বেগম।মেয়ে দেখে আসার পর থেকে চোখে চোখে রেখেছে ওকে।শয়ন বুঝলো এখন কিছু করা যাবে না।বাড়িতে অনেক মানুষ ই আছে।যা করার সবাই ঘুমালে করতে হবে।

ফারজানা বেগম বড় ছেলে আর ছেলের বউকে পাঠিয়ে দিলেন টুকটাক বিয়ের বাজার করতে।এদিকে কিছু কাছের আত্নীয় স্বজনও চলে এসেছে।তারা ফারজানা বেগমের সাথে রসের আলাপে মত্ত আর কিছু আত্মীয় শয়নকে ওর! আগের বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন কিছু জিজ্ঞেস করছে।শয়ন কিছুরই জবাব দিচ্ছে না ঠিকমত।ওর নিজের ওপরই রাগ হচ্ছে।কেন যে এসেছে এখানে।এই অবস্থায় মেয়েটার জন্যও চিন্তা হচ্ছে।কি করছে কে জানে!খবরও নেওয়া হয় নি কোনো।

বাড়িতে মানুষ বেশি হওয়ায় অয়ন আর ও একসাথে শুয়েছে।রাত এগারোটা বেজে গেলো সবার শুতে।এই অপেক্ষাতেই ছিলো শয়ন।ভাইয়ের পাশ থেকে উঠে বসলো।অয়নও প্রায় সাথে সাথেই উঠলো।বলল,'বড় রাস্তা দিয়ে যাস না।চিপা গলি দিয়ে চলে যা।তালা দেই নি।পুকুর পাড়ে মতি তোর জন্য ভ্যান নিয়ে অপেক্ষা করছে।ও তোকে একেবারে বাস কাউন্টারে নিয়ে পৌঁছে দিবে।শেষ গাড়ি রাত বারোটায়।বেশি সময় নেই তাড়াতাড়ি বের হ।আর চিন্তা করিস এদিকটা আমি দেখে নিবো।'

'আচ্ছা,ভাইয়া।তুমি মা আর সবার খেয়াল রেখো।আমি আসি।'
'সাবধানে যাস।'
শয়ন নিঃশব্দে চোরের মত বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে।ভাইয়ের কথামত ঘরের পেছনের গলি দিয়ে পুকুর পাড়ে চলে গেলো।ওকে দেখে মতি বলল,'ভাইজান,জলদি উইঠা বসেন।'
শয়ন উঠে বসলো।পকেট থেকে নিজের বন্ধ ফোন বের করে চালু করলো।মা ঘুমানোর পর বড় ভাবিকে দিয়ে কৌশলে আনিয়ে নিয়েছিলো ফোনটা।এতক্ষণ চালু করে নি।এখন চালু হতেই দেখলো উনত্রিশ বার কল এসেছে পাখির ফোন থেকে।এখন আরও বেশি চিন্তা হচ্ছে।কোনো সমস্যা হয় নি তো মেয়েটার?তৎক্ষনাৎ ফোন করলো শয়ন কিন্তু ফোন বন্ধ।আরও কয়েকবার চেষ্টা করেও পেলো না।ক্রমশ চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠছে ও।

রাতে বিছানায় শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে পাখি।একফোঁটা ঘুমও আসছে না।ঘুম তো দূরের কথা স্বস্তিও পাচ্ছে না ও।মানুষটা যে গেলো এরপর একটুও খোঁজ পাওয়া গেলো না।ফোনটাও বন্ধ।এদিকে চার্জের অভাবে যে নিজের ফোনও বন্ধ হয়ে আছে সেদিকে খেয়ালই নেই পাখির।

বাস কাউন্টারে পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো মতি।আর দুইমিনিট দেরি করলেই বাস পেতো না শয়ন।কোনমতে বাসের টিকিট কেটে উঠে পড়লো।বাসে উঠেও বহুবার ফোন করলো কিন্তু আগের মতই বন্ধ।
দু'জনই দু'দিকে চিন্তায় ম/রছে কিন্তু কেউ কারো খবর জানে না।

শয়নের পৌঁছাতে রাত সাড়ে তিনটা বাজলো।গ্রামেই ফ্ল্যাটের চাবি ভূল করে ফেলে এসেছে এখন ঘরে ঢুকতে হলে কলিংবেল বাজাতে হবে।শয়ন বেল বাজালো।ওর অবস্থা খুবই খারাপ। বাস থেকে নামতেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল।সারা শরীর ভিজে গেছে বৃষ্টির পানিতে।অনেক কষ্টে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে একটা সিএনজি করে বাসায় ফিরেছে।

ঘরের সব জানালা,বারান্দার দরজা আঁটকে অন্ধকারে বসে রইলো পাখি।হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠলো।এত রাতে কে?টর্চ হাতে নিয়ে দটজার দিকে এগুলো পাখি।কিন্তু পকেট মিররে অন্ধকারে কাউকেই দেখতে পেলো না ও।তবুও কেন জানি হালকা গলায় আওয়াজ দিলো,'শয়ন!এটা কি আপনি?'
'হ্যাঁ,আমি।তাড়াতাড়ি খুলুন।'

ওপাশ থেকে সাড়া পাওয়া মাত্রই দরজা খুললো পাখি।একদম বিধ্বস্ত অবস্থায় শয়ন দাঁড়িয়ে আছে।ঘরে ঢুকে হঠাৎই নিজের ভেজা হাতে পাখির গাল ছুয়ে শীতল কন্ঠে বলল,'আপনার জন্য চিন্তা হচ্ছিলো।'
পাখি কোনো কথা বলতে পারলো না।বিষ্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।শয়ন পাখির গাল থেকে সরিয়ে ভেজা কাপড়েই নিজের ঘরে চলে গেলো।শরীর ভালোভাবে মুছে কাপড় পাল্টে ড্রইং রুমে আসলো ও।পাখি সেখানেই বসে আছে।শয়নও এসে বসলো।বলল,'এখনো জেগে আছেন কেন?'
'ঘুম আসছিলো না।'
'কেন?'

শয়ন একটু আগে যত সহজে নিজের দুশ্চিন্তার কথা বলে ফেললো ঠিক তেমন করেই নিজের দুশ্চিন্তার কথাও পাখির জানাতে ইচ্ছে হলো।বলতে ইচ্ছে হলো আমিও আপনার চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু বলতে পারলো না।শুধু শুকনো কন্ঠে বলল,'এমনিই।'
'আচ্ছা,যাইহোক শুয়ে পড়ুন।রাত কিন্তু বাকি নেই।অলমোস্ট চারটা বাজে।আর আপনার ফোনে মনে হয় চার্জ নেই।আমি ফোন চালু করে আপনাকে কল করেছিলাম কিন্তু বন্ধ দেখাচ্ছিলো।'

পাখি মাথা নাড়লো।শয়ন উঠে চলে যাচ্ছিলো তখনই পাখি বলে উঠলো,'আম্মা ঠিক আছে?'
শয়ন দীর্ঘশ্বাস ফেললো।গ্রামে যা হয়েছে তার কিছুই বলল না পাখিকে।শুধু সংক্ষেপে 'হু' বলেই চলে গেলো।তবুও যেন পাখির মন থেকে সন্দেহ গেলো না।কিছু তো অবশ্যই হয়েছে যা শয়ন লুকাচ্ছে।

অবেলার বৃষ্টিতে জ্বরে পড়লো শয়ন।যেমন তেমন জ্বর না।একদম কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলো।ঠান্ডায় গলা বসে গেলো।তাই অফিসে যেতে পারলো না।বসকে ফোন করে বলে দিলো।
সকাল থেকেই শিকদার বাড়িতে তোলপাড় লেগে গেছে।ফারজানা বেগম সকালে ছেলের রুমে এসে দেখলেন ছেলে নেই।তখনই তিনি অনুমান করে ফেলেছিলেন সব তবুও আশেপাশে ভালোমত খোঁজ লাগিয়েও পেলেন না।অতঃপর অয়নকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন,'তুই তো শয়নের সাথে শুইছিলি।তুই দেখোস নাই ওয় পালাইছে যখন।'
'মা,আমি তো তাড়াতাড়ি ঘুমায় গেছিলাম।'

'শয়ন রে ফোন দে।বাড়ি আইতে ক।নাইলে আমি কিন্তু যেদিক দুইচোখ যায় যামু গা।'
অয়ন শয়নের নাম্বার ডায়ল করে দেখলো ফোন বন্ধ।ফারজানা বেগম কয়েকবার নিজের ফোনে চেষ্টা করলেন কিন্তু আগের মতই ফোন বন্ধ।তিনি রাগে অন্ধ হয়ে গেলেন।এবার কি করবেন?কি করে মুখ দেখাবেন সবাইকে?
প্রচন্ড রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সবার অগোচরে নিজের ঘরের দরজা,জানালা আঁটকে ফ্যানের সাথে নিজের ফাঁস লাগালেন।

 আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন