উপন্যাস : আম্বরি
লেখিকা : সামিয়া খান প্রিয়া
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা সামিয়া খান প্রিয়ার “আম্বরি” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
আম্বরি || সামিয়া খান প্রিয়া |
1111111111111111111111
৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
আম্বরি || সামিয়া খান প্রিয়া (পর্ব - ০৮)
পুরুষটির দেহের উষ্ণতা ধীরে ধীরে কমনীয় নারী তনুতে ছুঁয়ে যাচ্ছে।ঈষদুষ্ণ শ্বাসের সঙ্গে বৃষ্টিস্ন্যাত শীতল সমীরণ মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে।বাতাবরণের চারিধারে সোঁদা গন্ধ।মেহরীকে আরো সন্নিকটে নিয়ে এলো এরোন।বৃষ্টি কমে গিয়েছে অনেকটা।তবে ঝিরিঝিরি পড়ছে।মেহরীর সিক্ত হয়ে থাকা মেদুর অধরে এরোনের হাতের ত্বকের স্পর্শ পেলো।অকস্মাৎ বিদ্যুৎ চমকে উঠলো।এরোন পৃথিবীর সবথেকে নীরব কণ্ঠে সম্বোধন করলো,
"মেহরী।আমার দিকে তাকিয়ে দেখবেন একবার ।"
দুটো নেত্রপল্লব বুজে আসছে মেহরীর।তবুও চোখ তুলে তাঁকালো।এরোন শুধালো,
"কী দেখতে পাচ্ছেন?"
ঈষৎ তমসাচ্ছন্ন পরিবেশে এরোনের দৃষ্টিতে মায়া দেখতে পেলো মেহরী তার জন্য।সে কেন দূরে যেতে পারছেনা।ভেতরের স্বত্ত্বা চিল্লিয়ে বলছে,' এরোন স'র্ব'না'শা।প্রাচীন কোনো যোদ্ধার বিশেষ তলোয়ার।যা হাজার শ ত্রু র বিরুদ্ধেও জয় এনে দিতে সক্ষম।চোখ বন্ধ কর মেহরী।'অথচ হায় এতো রুপ পায়ে ঠেলে দেওয়া যায়?ভেতরে জ্বলতে থাকা কামনায় জর্জরিত নারীটি তো পারবেনা।রিচি স্বত্তাকে স্মরণ করতে পারছেনা মেহরী।এমনকি নিজেকেও ভুলে গিয়েছি সে।ধীরে ধীরে আরো সন্নিকটে এলো দুজন।পরম যত্নে এরোনের উষ্ণ বক্ষে মাথা ঠেকালো।দমকা হাওয়ায় শিওরে উঠলো দুটো দেহ।মেহরীকে বুকে নিয়ে এরোন মৃদু হাসলো।পকেট থেকে লাইটার বের করে তা জ্বালালো।যাতে পুরোপুরি অন্ধকারে ডুবে না যায় তারা।ছোট্ট এই শিখাটা ভারী সমীরণের সামনে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে বেশ চেষ্টা চালাচ্ছে।এরোন লম্বা শ্বাস নিয়ে বলল,
"What is the desire? To find you in my arms or not?"
ছোট্ট হলদেটে শিখায় মেহরীর মুখখানা দেখছে এরোন।জবাব না পেয়ে পুনরায় শুধালো,
"কথা বলেন মেহরী?"
খুব কষ্টে জবাব দিলো মেয়েটা,
"কী চাই আপনার?"
"আপনাকে।"
"আমার মধ্যে কিছু নেই।"
"আপনি হলেই হবে।"
"ভালোবাসেন এরোন?"
"নাহ।"
মেহরী ছিটকে দূরে সরে গেলো।সম্বিৎ ফিরে পেয়েছে সে।এরোন নিজেকে ধাতস্থ করে নিলো।এতো বছরের সংযম এক স্পর্শে ভেঙে দিলো মেয়েটা।কী আছে মেহরীর মধ্যে?প্রশ্নটা মুখ ফসকে বের হয়ে গেলো,
"কী আছে আপনার মধ্যে মেহরী?কেন বারবার আমার কাছে আসছেন?"
কণ্ঠে আকুলতা স্পষ্টত।হাত বাড়িয়ে চাঁদের ন্যায় শুভ্র সিক্ত নারীকে পুনরায় স্পর্শের চেষ্টা করলো।তবে অপারগ সে।
"ডোন্ট টাচ মি।আপনি আমার কেউ নয় এরোন।কেন এভাবে কাছে আসছেন?"
"আমি নিজেও জানিনা।কেন এমনটা হচ্ছে।"
মেহরী নিচে বসে কেঁদে ফেললো।এরোন ব্যস্ত হয়ে বলল,
"বাড়ীতে যাবেন?দিয়ে আসি।তবুও কাঁদবেন না।"
"আপনি ভীষণ খা রা প।"
বৃষ্টি এখনও পুরোপুরি কমেনি।অ চে ত ন মেহরীকে কোলে করে বাড়ীর ভেতর ঢুকছে এরোন।কয়েকটা সিঁড়ি অতিক্রম করতেই ফাঁকা দেয়ালের সামনে এসে দাঁড়ালো।হাত সেখানে রাখতেই সংক্রিয় ভাবে দেয়ালটি সরে গেলো।ভেতরে প্রবেশ করলো এরোন।এখানের পরিবেশ আরো একটু বেশী শীতল।মেহরীকে গোলাকৃতির বিছানায় শুইয়ে দিলো।পাশে নিজেও আধশোয়া হলো।ফুঁ দিয়ে মেহরীর কপালের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে উঠে বসলো।মাথাটা ঝিমঝিম করছে তার।ভেজা কাপড়েও অস্বস্তি হচ্ছে।উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো।দরজা বন্ধ হওয়া শব্দে মেহরী চোখ খুলে বসলো।এতোসময় সে অ জ্ঞা ন হওয়ার নাটক করছিলো।ভেতরে আবারও রিচি স্বত্তা ফিরে এসেছে।শুকনো ঢোক গিলে অধরে মৃদু হাসি ফুঁটিয়ে তুললো।যে করে হোক।আজকে ভিক্টোরিয়ার কথা জানতে হবে তার।তা নয় বুঝবে কীনা তার নিকট যেই ভিক্টোরিয়া আছে ওটা আসল কী নকল?
(***)
দূর আকাশ পানে তাঁকিয়ে স্পর্শিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেললো।শাওন আজকে রাতে ল্যাবে কাঁটিয়ে দিবে বিধায় এখানে তাবিয়াকে সবটা জানানোর জন্য এসেছে সে।যদিও কাজ হবে কীনা জানেনা।সে নিজের জীবনের থেকেও শাওনকে বেশী ভালোবাসে।অতীতে দুজনের বিচ্ছেদ কিংবা নতুন মানুষের আগমনে বুঝেছিল মন থেকে চাওয়া পাওয়া না থাকলে মানুষটার জীবনভর মিথ্যা আশ্বাসে ঠকার সম্ভাবনা আছে।তাইতো রিচি স্বত্তা রাফসানকে ভালোবাসার কথা বললেও নিজ বোন মেহরীকে ঠকাতে পারবেনা স্পর্শিয়া।কোনোভাবে না।মৃত মানুষের চাওয়ার জন্য মেহরী নিজেকে কেন হারাবে?এটা কী নি র্দ য়ের কাজ হবেনা?অবশ্যই হবে।রাফসান কেন যে একথাটি বুঝতে চায়না।
"আপু আপনার জন্য কফি।"
রিয়ার থেকে মুচকি হেসে কফির মগটা হাতে তুলে নিলো স্পর্শিয়া।মৃদু চুমুক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় ঝড়ো হওয়া বইতে লাগলো।ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।স্পর্শিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
"মেহরী কখনো কী নিজেকে খুঁজে পাবে এক জীবনে?ভুলে যাওয়া মনে রাখার সমীকরণের দ্বন্ধে?"
(***)
এরোন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো মেহরী হাঁটু ভাজ করে বিছানায় বসে আছে।ভ্রু ক্রুটি হয়ে গেলো ছেলেটির।ক্ষণ পূর্বের উ ন্মা দ না শেষ হয়ে গিয়েছে।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
"কী হলো?বাসায় ফিরে যাবেন না মেহরী?"
"খালামণি বাহিরে আছেন।তো না ফিরলেও চলবে।"
"আমার সাথে থাকতে চাচ্ছেন নাকী?"
"ধরে নেন সেটাই।"
এরোন মৃদু হাসলো।এই রুমে ছোট একটা ফ্রিজ আছে।সেখান থেকে রুট বিয়ারের(এ ল কো হ ল মুক্ত) ক্যান বের করে তাতে চুমুক বসালো।মেহরীর নিজেরেও বড় তৃষ্ণা পাচ্ছে।একটু কেশে বলল,
"যা খাচ্ছেন আমাকে দেওয়া যাবে?"
"অবশ্যই।ক্যানে রুট বিয়ার আছে।ভয় নেই।এটা...।"
"আমি জানি ।বিস্তারিত বলতে হবেনা।"
এরোনের আধ খাওয়া ক্যানটি হাতে নিয়ে পিপাসা মিটালো মেহরী।
"মেহরী আপনার ফিরে যাওয়া উচিত এখন।"
"আচ্ছা আপনি কী সত্যিই মাফিয়া?"
"সন্দেহ আছে?"
"অবশ্যই থাকার কথা।"
"সাথে করে দশ পাঁচটা অ স্ত্র নিয়ে ঘুরলে নিশ্চয় বিশ্বাস হতো।"
"ওই মেয়েটাকে তো মে রে ফেললেন।আমাকে কেন বাঁ চি য়ে রেখেছেন?"
এরোন ফ্রিজ থেকে আরো একটি ক্যান বের করতে করতে বলল,
"ভিক্টোরিয়ার জন্য।আমার বিশ্বাস সমস্যার সূত্র আপনার কাছে এসে কোনো একদিন থামবে।"
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
লেখিকা সামিয়া খান প্রিয়ার বাস বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলায়। শখের বশে লিখালিখি করলেও ইতোমধ্যে তার বেশ কয়েকটি বই এবং ইবুক প্রকাশিত হয়েছে। যা ইতোমধ্যে পাঠকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।তরুণ এই লেখিকা সম্পর্কে এর বেশি কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন