উপন্যাস : তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
1111111111111111111111
১৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১৫)
বরযাত্রী নূর এর বাসায় এসে পৌছাতেই আকাশে আতশবাজি ফুটতে লাগলো।চারদিকে বোমের শব্দ।মেহরাব ঘোড়া থেকে নামতেই নিলয় মেহরাবকে মালা পড়িয়ে দিলো।
নিলয়ঃওয়েলকাম জামাই বাবু।
মেহরাবঃযতই মেয়ে জামাই হই না কেন সবার আগে তুমি আমার বাবাই থাকবে।
আরাফ নিলয়কে জড়িয়ে ধরলো।
আরাফঃফাইনালি দোস্ত।আমরা বন্ধু থেকে সমন্ধি হতে যাচ্ছি।
নিলয়ঃহ্যা রে।বুড়ো হয়ে গেলাম।
আরাফঃতুই হবি বুড়া। আমি তো এখনো জোয়ান আছি।আর শোন এখন কিন্তু আমি ছেলের বাবা।আমাকে বেশি বেশি খাতির করবি।
নিলয়ঃকরছি তোরে খাতির।
নিলয় ধুম করে আরাফ পিঠে কিল বসিয়ে দিলো।
আরাফঃআর এ আর এ করছিস কি নিলয়?আমরা এখন শুধু বন্ধু না বর কন্যার বাবাও। মানুষ কি বলবে?
নিলয়ঃআজকে আমার কারো কথায় আসে যায় না।দীর্ঘ ৪ বছর পর আমার বন্ধুকে ফিরে পেয়েছি।ধুমসে ইঞ্জয় করবো আজকে। কোনো বাধা নাই।
আরাফঃএতো দিন যে তুই কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি রে?এখন মনে হচ্ছে আমার কলিজার বন্ধু।সেই কলেজ লাইফ এর নিলয়।
নিলয়ঃহা হা হা।আমার ও ভালো লাগছে রে।এখন সব ঠিক ঠাক মতোন হয়ে গেলেই হলো।
ওয়ারদা নবনির হাত ধরে ঘুরতে লাগলো।
ওয়ারদাঃবান্ধুপি আমি আজকে অনেক খুশিইইইই।আমাদের ছেলে মেয়ের বিয়ে হচ্ছে রে।আমার অনেক খুশি লাগছেএ।
নবনিঃআমার ও। দেখনা কয়জন বান্ধুবি আর এমন সুযোগ পায়।ইশশ।২৩ বছর এর বন্ধুত্বর পর আজ আমরা এই সৌভাগ্যটাও পাইলাম।
অনেক ভালো লাগছে রে দোস্ত।আমাদের কলেজ সবাইকে আমন্ত্রন করতে ইচ্ছে করছে।
ওয়ারদাঃসবাই আছে রে।নূর এর বিয়েতে দাওয়াত করেছিলাম।
নবনিঃতাই!কোথায় ওরা?
ওয়ারদাঃভিতরেই আছে।চল দেখা করাই।
নিলয় মেহরাবকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করলো।ব্যাকগ্রাউন্ড এ মিউকিজ বেজে উঠলো।আদ্রিতা আদ্রিয়ান সামনে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করে।মেহরাব তাদের আড়ালে থাকে।
Kabse aaye hain tere doolhe raja
Ab der na kar jaldi aaja
Kabse aaye hain tere doolhe raja
Ab der na kar jaldi aaja
নূরঃমেহের!মেহের এসে পরেছেন?
মিউজিক শুনে নূর সিড়ি পর্যন্ত ছুটে আসলো।নূর আসতেই আদ্রিয়ান আদ্রিতা সরে দাড়ালো।
মেহরাব নূর এর দিকে তাকিয়ে নাচতে শুরু করলো।
Tere ghar aaya main aaya tujhko lene
Dil ke badle mein dil ka nazrana dene
Tere ghar aaya main aaya tujhko lene
Dil ke badle mein dil ka nazraana dene
Meri har dhadkan kya bole hai
Sunn sunn sunn sunn
Saajanji ghar aaye
Saajanji ghar aaye
Dulhan kyun sharmaye
Saajanji ghar aaye
নূর লজ্জা পেয়ে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।রুমে যেয়ে ইচ্ছে মতো নাচতে লাগলো।
নূর~
Aye dil chalega ab na koyi bahana
Gori ko hoga ab sajan ke ghar jaana
Maathe ki bindiya kya bole hai
Sunn sunn sunn sunn
Saajanji ghar aaye
Saajanji ghar aaye
Dulhan kyun sharmaye
Saajanji ghar aaye
এদিকে একটা মেয়ে আদ্রিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।আদ্রিয়ান তাকিয়ে দেখে সেটা তিথি।
তিথি~
Deewane ki chal mein
Phans gayi main is jaal mein
Aye sakhiyon kaise bolo bolo
আদ্রিয়ান মাটিতে পড়ে রেগে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে।তিথি আদ্রিয়ানকে ওঠার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলো।সাথে আরো ২ টা মেয়েও হাত বাড়ালো আদ্রিয়ান এর দিকে। আদ্রিয়ান তাদের হাত ধরে উঠে পড়লো।তারপর সেই ২ টা মেয়ে নিজের পাশে টেনে নিলো।
আদ্রিয়ান~
Haan mujhpe to aye dilruba
Teri sakhiyan bhi fida
Yeh bolengi kya puchho puchho
তিথি রেগে বোম হয়ে গেলো।
তিথি~
Jaa re jaa jhoothe
Tareefein kyun loote
আরাফ নবনির হাত ধরে ঘুরালো।
আরাফ~
Tera mastana kya bole hai
Sunn sunn sunn sunn
মেহরাব আর আরাফ একসাথে ডান্স দেয়।
Saajanji ghar aaye
Saajanji ghar aaye
Dulhan kyun sharmaye
Saajanji ghar aaye
ওয়ারদা নিলয়ের মাথা টোকা দিলো
ওয়ারদা~
Naa samjhe naadaan hai
Yeh mera ehsaan hai
Chaha jo isko keh do keh do
নিলয়~
Chhede mujhko jaan ke
Badle mein ehsaan ke
De diya dil isko keh do keh do
তিথি এই লাইনটা মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে বললো।
তিথি~
Tu yeh naa jaane
Dil toote bhi deewane
আদ্রিয়ান তিথির হাত ধরে ঘুরিয়ে নিজের কাছে টেনে নিলো।
আদ্রিয়ান~
Tera deewana kya bole hai
Sunn sunn sunn sunn
মেহরাব~
Saajanji ghar aaye
Saajanji ghar aaye
Dulhan kyun sharmaye
Saajanji ghar aaye
আরাফ নবনি নিলয় ওয়ারদা আদ্রিয়ান তিথি আদ্রিতা সবাই একসাথে নাচ দিলো।
Saajanji ghar aaye
Saajanji ghar aaye
Dulhan kyun sharmaye
Saajanji ghar aye..
গান শেষে মেহরাব স্টেজে যেয়ে বসে পড়লো।নিলয় শরবত পরিবেশন করলো বরযাত্রীদের।
মেহরাব এর একপাশে আদ্রিতা আর এক দিকে আদ্রিয়ান।
মেহরাবঃআদ্রিতা।সবই বুঝলাম কিন্তু এটা বুঝলাম না আমার স্কুল ফ্রেন্ডদের এতো রাতে কি করে ম্যানেজ করলো আব্বু।আব্বুর কাছেতো আর ওদের সবার নাম্বার থাকার কথা না।
আদ্রিয়ানঃআমার ও একই প্রশ্ন। আমার স্কুল ফ্রেন্ডদেরতো আমি নিজেই ঠিকমতন চিনি না ওরা কি করে আসলো?
আদ্রিতাঃআমাকে মনে হয় আম্মু ডাকছে।তোরা বস আমি আসছি।
মেহরাব আদ্রিতার হাত ধরে বসিয়ে দিলো।
মেহরাবঃএই দাড়া।কোথাও পালাবি না। বস এখানে।
আদ্রিতা নিরুপায় হয়ে বসে পড়লো।
মেহরাবঃএখন বল সত্যিইটা কি?
আদ্রিতাঃভাই তুমি আমা খাও।গুটলি কেন গুনছো?
মেহরাব আর কিছু বলল না।এমনিতেই মন খারাপ। যাদেরকে ঠিকমতো চেনে না সেই বন্ধুরাও বিয়েতে আসছে কিন্তু তার বেস্ট ফ্রেন্ডই বিয়েতে উপস্থিত নাই।
আদ্রিয়ানঃকি হলো ভাইয়া?হুট মন কে খারাপ হয়ে গেলো?
আদ্রিতাঃবেস্ট ফ্রেন্ড নেই বলে তাই না ভাইয়া?
মেহরাবঃমানে?
আদ্রিয়ানঃমানে ২?
তখনই একজন দাড়িওয়ালা ব্লাক সান গ্লাস পড়া লোক ঢোল বাজাতে বাজাতে প্রবেশ করলো।
মেহরাবঃএটা আবার কে?
আদ্রিতাঃইয়া আল্লাহ।ওভার এক্টিং না করলে হয় না ইনার।নিলয় আংকেল না বুঝলেই হলো।
আরাফ আরিয়ানকে দেখে হতবাক হয়ে গেলো।
নিলয়ঃএটা কে রে?
আরাফঃবন্ধু।মেহরাব এর ছোট্ট কালের বন্ধু।তুই চল আমরা কাজির ব্যাপাটা সামাল দিয়ে ফেলি।
নিলয়ঃহ্যা চল।বিয়েতে আর দেরি করা ঠিক হবে না।
আরিয়ান~
Dholak mei tal hai payel mai chan chan
Ghungat mai gori hai sehra mai sajan
Jaha vi ye jaya
Bahare hi paye
Ye khusiya hi layee
Mera dil ne duyaa di haai
Mere yaaaaaaaar ki shadi hai.
Meraaa yaaaaaaar ki shadi haaii
আরিয়ান চশমাটা নামিয়ে চোখ টিপি দিলো।
মেহরাবঃআরিয়ান।
আদ্রিতা মুখ চেপে ধরলো।
আদ্রিতাঃকি করছো ভাইয়া।কেউ শুনে ফেললে বিয়ে আটকে যাবে।
আরিয়ান আদ্রিতাকে ঢেলে আদ্রিতা আর মেহরাব এর মাঝে বসে পড়ল।
আরিয়ানঃকেমন আছিস দোস্ত।
মেহরাব হতবিহ্বল হয়ে গেলো।
মেহরাবঃতুই এতোক্ষন কই ছিলি?কোথ থেকে আসলি?কি করে হলো এসব?আর এরকম লুকে কেন?
আরিয়ানঃহ্যা।আসল চেহারায় আসতাম আর তোর নিলয় বাবা আমারে তোর জায়গায় জোর করে বসিয়ে দিতো।গাধা।
আদ্রিতাঃআপনার কি ওভার এক্টিং না করলে হয় না?কি দরকার ছিলো এভাবে এন্ট্রি করার?
আরিয়ানঃবাহ রে!!নিজেরা তো নাচতে নাচতে এসেছো।আবার এখানে এসেও নাচছো। আর আমার একমাত্র বন্ধুর বিয়েতে আমার নাচার অধিকারটাও নাই বুঝি।
আদ্রিয়ানঃএই সব চুউউউউউউউপ।আমাকে বলবা তোমরা কি খিচুড়ি রান্না করছো আমাকে বাদ দিয়ে?
মেহরাবঃতুই ছোট মানুষ বুঝবিনা চুপ থাক।
আদ্রিতাঃহ্যা।এখনতো চুপ করাবেই।কি সুন্দর নিজের ছোট বেলা বন্ধু আরিয়ানকে দিয়ে নূর এর বিয়ে ঠিক করার প্লান করলে আমাকে আর আদ্রিয়ানকে কিছু জানালে পর্যন্ত না।
আদ্রিয়ানঃকিহহ!!আরিয়ান ভাইয়া ভাইয়ের বন্ধু।
আদ্রিতাঃহ্যা।দেখিস না। আমাদের থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে এগুলো করে বেড়িয়েছে।
মেহরাব রেগে আরিয়ান এর দিকে তাকালো।
আরিয়ানঃআর এ ভাই আমি কিছুই বলি নাই। আমার উপর ক্ষেপছিস কেন?
মেহরাবঃতুই না বললে কি ওরা উড়ে উড়ে জানলো?
আরাফঃএই তোরা কি ফিসফিস শুরু করেছিস?মানুষ কি বলবে?সবাই চুপ থাক।আর তুমি আরিয়ানকে ইশারা করে চলো আমার সাথে।
আরিয়ানঃআমিইই!!
আরাফঃহ্যা।ফাস্ট আসো।
আদ্রিতাঃআরো করেন ওভার এক্টিং। এইবার যেয়ে গন ধোলানি খান।
আরিয়ানঃ🥺🥺
আরিয়ান আরাফ এর পিছু পিছু চলে গেলো।
মেহরাবঃওই বল না। আরিয়ান এখানে কি করে আসলো।তোরা কি প্লান করেছিলি?আব্বু ওকে কেন নিয়ে গেলো?কি হচ্ছে?
আদ্রিতাঃযে আমাকে নিজের প্লান এ রাখে নাই তার সাথে আমার কোনো কথা নাই।
আদ্রিয়ানঃআর আমাকে তো মনে হচ্ছে কুড়িয়ে পেয়েছিলে তোমরা দুইটা।কারো প্লান এই আমি নাই।কথাই বলবো না তোমাদের সাথে।
আদ্রিয়ান মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।আদ্রিতা মেহরাব আদ্রিয়ান এর অভিমান ভাংগাচ্ছে।
মেহরাবঃআমার আজকে বিয়ে ভাই।আমার উপর আজকে অন্তত রাগ করিস না।
মেহরাব ক্যাতুকুতু দিচ্ছে।
আদ্রিয়ানঃনা ছাড়ো। কথা নাই।
আদ্রিতাঃআমার ভাই না ভালো। রাগ করে না।আমি মেহরাব ভাইকে কিছুই বলবো না।কিন্তু তোকে বলবো কানে কানে।
আদ্রিয়ান মিট মিট করে হাসছে।
আদ্রিয়ানঃআজকে তোমাদের দুইটাকে শায়েস্তা করবো।এখন বুঝো আদ্রিয়ান চৌধুরী কি! (মনে মনে)।
আরাফ আরিয়ানকে নূর এর রুমে নিয়ে আসলো।তারপর দরজা আটকে দিলো।
নূরঃআরাফ বাবা।উনি কে?
আরাফঃআরিয়ান।
নূরঃকিহ?!!
আরাফঃহ্যা।
নূরঃআরিয়ান কই চলে গিয়েছিলেন?আর এখানে এভাবে?
আরাফঃসব পরে বলবো নূর।এখন আমার কথা শুনো।
বিয়ের আগে তোমাদের মেহরাব আর আদ্রিতার অস্তিত্ব সর্ম্পকে জানাটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। মেহরাব আদ্রিতা কোনো সাধারন মানুষ নয়।তাদের মধ্যে জ্বীন এর অলৌকিক শক্তি বিদ্যামান।
নূর আর আর আরিয়ান কথাটা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেলো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
১৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন