উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111

৩১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৩২)

মেহরাব ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি ড্রাইভ করছিলো। হুট করে একটা মেয়ে সামনে চলে আসায় মেহরাব হন্তদন্ত হয়ে ব্রেক কষলো।মেয়েটা চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।মেয়েটার সামান্য দূরত্বে এসে গাড়ি থামলো।মেহরাব রেগে গাড়ি থেকে বের হলো।
মেহরাবঃএই মেয়ে!আপনি কি পাগল?কেউ এইভাবে মাঝরাস্তায় হুট করে চলে আসে?
মেয়েটা রেগে মেহরাব এর কানে থাকা ব্লুটুথটা এক টান দিয়ে খুলে ফেলে দিলো।তারপর সেটা পা দিয়ে কচলে ভেঙেই ফেললো।

মেহরাব চোখ গরম করে মেয়েটার দিকে তাকালো।চোখ দিয়েই যেন গিলে খাবে মেয়েটাকে।
মেহরাবঃমেয়েটার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি।মেহরাব চৌধুরীর ব্লুটুথ ভাঙে।কালো বোরখার আড়ালে নিজেকে আড়াল করে রেখেছে মেয়েটা।মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ায় চোখ গুলোও দেখা যাচ্ছে না।ষ্টুপিড মেয়ে।ড্রেসিং সেন্স জিরো।

নেহাঃকানে ব্লুটুথ লাগিয়ে ড্রাইভ করলে মনোযোগ থাকবে কি করে?আপনি ভুল পথে ড্রাইভ করছিলেন।এই পথ দিয়ে ট্রাক চলাচল করে। এখনই এক্সিডেন্ট করতেন।
আপনাদের মতো মানুষদের জন্য সাধারন মানুষ আর আপনার নিজের পরিবার ভুক্তভোগী হয়।আমি যদি না আসতাম তাহলে হয়তো আপনি এক্সিডেন্ট করতেন আর নয়তো অন্য কাউকে চাপা দিয়ে চলে যেতেন।আপনার জন্য কোনো মাসুম জান হয়তো ঝড়ে যেতো তাতে আপনার কি!? আপনি তো সময়মতো গন্তব্যে পৌছে যেতেন।

মেহরাবঃএই মেয়ে।মুখ সামলে কথা বলেন বাংলাদেশে নতুন এসেছেন মনে হচ্ছে।চিনেন আমাকে?আমি কে? 
মেহরাব চৌধুরী নাম আমার।আর আমি ইচ্ছে করেই এই রাস্তা ব্যবহার করেছি। নিজের ড্রাইভিং স্কিল এর উপর পুরো আস্থা আছে আমার।তাই এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।আপনাকে মাঝখান দিয়ে সমাজ সেবা করতে কে বলেছে?
নেহাঃআপনার কি মাথার তার ছেড়া আছে নাকি?ড্রাইভিং স্কিল দেখানোর জন্য আপনি ভুল পথে ড্রাইভ করবেন?

আর কি যে বললেন নাম আপনার?মেহরাব না সোহরাব।তো শুনেন মিস্টার সোহরাব। এটা আপনার কেনা রাস্তা না।আর আপনি কোথাকার মন্ত্রী না যে আমার আপনাকে চিনতে হবে।
মেহরাব এর পিছনে থাকা গাড়ি গুলো থেকে কিছু বডিগার্ড নেমে এসে মেহরাব এর চারপাশে ঘেরাও করলো।
মেহরাব বাকা হাসলো।
মেহরাবঃমেহরাব চৌধুরী কোনো মন্ত্রী থেকে কমও না।দেখে তো মনে হচ্ছে বাংলাদেশে নতুন এসেছেন।

আপনার ভালোর জন্য বলছি যে দেশে নতুন এসেছেন কারো সম্পর্কে না জেনে তার সাথে ঝগড়া বাধাতে যাবেন না।কে জানি কোন সময় আপনার মাথামোটা মাথাটা কাটা পড়ে।
মেহরাব পকেট থেকে বের করা সানগ্লাসটা পড়ে উল্টো পথে হাটা ধরলো।তখনই হাতঘড়িটা নেহার হিজাব এ আটকে যায়।নেহা সেটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছিলো।মেহরাব কপাল কুচকে ঘড়ির লক খুলে ঘড়িটা ফেলে রেখে চলে যায় ।দামী ঘড়িটা পড়ার আগেই নেহা ধরে ফেলে।
নেহাঃআজিব তো।এই মিস্টার শুনেন।ঘড়িটা তো....

মেহরাব চুলটা হাত দিয়ে ঠিক করতে করতে যেয়ে গাড়িতে বসে ধুম করে দরজা আটকে দিলো।নেহা কেপে উঠলো শব্দে।
একজন সিকিউরিটি গার্ড নেহাকে যাওয়ার সময় বললো~
ম্যাম।স্যার এই বার এলেকশনে মন্ত্রী পদে দাড়াবেন।উনি সঠিক রাস্তা দিয়ে আসলে সাধারন মানুষ এর চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যেত ঘন্টাখানিক এর জন্য।জনগনকে এই ভোগান্তির হাত থেকে বাচাতে তিনি ট্রাক যাতায়াতের রোড টা চুজ করেছেন কারন এই সময় তেমন একটা ট্রাক চলে না।আর উনি টাইমলি পৌছাতে পারবেন।
আর আশেপাশে মেহরাব চৌধুরীর নাম নিয়ে দেখবেন উনি কোনো রাজা থেকে কমও না।সাবধানে থাকবেন।আপনি উনার সাথে এমন আচরন করে নিজের জন্য বিপদ ডেকে এনেছেন।
গার্ডটা চলে গেলো।

নেহাঃইয়া আল্লাহ।এই বার কি সত্যিই আমার মাথা কাটা পড়বে?এই লোক কি করে মন্ত্রী হতে পারে?মন্ত্রীরা কি দিন দুপুরে মানুষ এর মাথা কাটার ধমকি দেয় নাকি!!
মেহরাব গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে দিলো।নেহা ছিটকে সরে আসলো।মেহরাব এর গাড়িটা শো করে চলে গেলো।নেহার কলিজা ধক ধক করছে।

নেহাঃইয়া আল্লাহ।আর একটু দেরিতে সরলে তো গাড়িটা আমার উপর দিয়ে নিয়ে যেতো।
এই লোক মন্ত্রী না কসাই। মানুষ খুন করার কসাই। এখনই আমার প্রানপাখিটা দেহ থেকে বেড়িয়ে যেতো।বাসায় যেয়ে শুকরি আদায় নফল নামায পড়তে হবে।
 নেহা বাসায় যাওয়ার জন্য রিকশা নিলো।রিকশায় উঠে রিকশা চালককে জিজ্ঞেস করলো
_আচ্ছা মামা মেহরাব চৌধুরী কে?
_কি বলছেন!মজা করছেন আমার সাথে তাই না?
_না। আসলে আমি বাংলাদেশে নতুন।
_ওহ।তাই বলি।বাংলাদেশের বাচ্চা বাচ্চাও মেহরাব চৌধুরীকে চিনে।এইবার এলেকশনে উনিই জিতবেন দেইখেন। সবার মনে রাজ করেন মেহরাব বাবা।

রাজনীতিবিদ আদর চৌধুরীর বড় নাতি।আদর চৌধুরী অনেক কিছু করেছিলেন দেশের জন্য।তার নাতিটা একদম তার মতোই হয়েছে।
আমাদের মতো গরিবদের জন্য উনি ফেরেশতা।এই যে রিকশাটাতে আপনি বসে আছেন। এটা আমাকে মেহরাব বাবাজী কিনেদিয়েছিলেন।শুধু আমাকেই না আরো অনেককে উনি কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।আজ উনি না থাকলে না খেয়ে মরতে হতো আমাদের মতো গরিবদের।

নেহাঃকিন্তু আমি তো শুনেছি উনি অনেক রাগী।বদমেজাজি।
_তা একটু আকটু সত্যি বটে।অসৎ মানুষদের জন্য উনি কাল।আমিও শুনেছি চোখের পলকে মানুষ খুন করে ফেলতে পারেন উনি।কিন্তু যারা ঠকবাজ তারাই মেহরাব বাবা জীকে ভয় পান।বাকিরা অনেক ভালোবাসে তাকে।

নেহাঃআমাকে কি তার ঠকবাজ মনে হয় নাকি?আমার সাথে এমন করলেন কেন? (বিড়বিড় করে)
_কিছু কি বলেছেন?
নেহাঃহ্যা।বলছিলাম কি মেহের নামের কাউকে চিনেন আপনি?
_না।মামা।আই তা কইতে পারমু না।
_আমিও না। মেহের কি আর মেহরাব চৌধুরীর মতো সেলিব্রিটি নাকি যে সবাই তাকে চিনবে।আমার স্বামীতো খুব সাধারন কেউই হবে।যে শুধু আমার মনে রাজত্ব করবে। হি হি হি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৩৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন