উপন্যাস : তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৩৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৩৫)
আদ্রিয়ান বাসায় এসে তিথিকে রেডি হতে বলে।
তিথিঃকেন?কোথায় যাবো?
আদ্রিয়ানঃঘুরতে।আমি শুধু ৩ মাসের ছুটিই পেয়েছি।এই ৩ টা মাসের প্রতিটা মূহুর্ত আমি তোর সাথে কাটাতে চাই মাই তিথি বার্ড।তাড়াতাড়ি ব্যাগ গোছা। রাতের ফ্লাইট।
তিথিঃকিন্তু!
আদ্রিয়ানঃকিন্তু পরান্তু অন্তু জন্ত বাদ দে।আর রেডি হয়ে নে।তোর তো আবার এক ঘন্টা লাগবে ব্যাগ গোছাতে।
তিথিঃআদ্রিয়ান।
আদ্রিয়ানঃহুম বল না।শুনছি তো।
তিথিঃতুই শুনছিস কই?তুই তো এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছিস।
আদ্রিয়ানঃতিথি আমি ক্যাপ্টেন আদ্রিয়ান। ওকে?আমার সব দিকেই মনোযোগ আছে তুই বল।
তিথিঃআমরা চলে গেলে আশমিন কার কাছে কে থাকবে?
আদ্রিয়ান এর হাত থেমে গেলো।চোখের ভ্রযুগল উঁচু করে তিথির দিকে ঘুরে তাকালো।বিছানায় রাখা ল্যাগেজটা বন্ধ করে আদ্রিয়ান তিথির কাছে এসে বসলো।তিথি হাত দুইটা নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
আদ্রিয়ানঃতিথি।আমি আসার পর থেকে তোকে ১ ঘন্টাও আশমিনের পাশে বসতে দেখি নাই।আশমিন আরিয়ান ভাইয়া আদ্রিতা আপু আর মেহরাব ভাইয়ার কাছেই থাকে।তাহলে তুই চলে গেলে আশমিন এর থাকার কষ্ট কেন হবে?
তিথিঃনা মানে!
আদ্রিয়ানঃতিথি!তোর বিহেভিয়ার গুলো আমি আসার পর থেকে নোটিস করছি।স্ট্রেঞ্জ বিহেভ করছিস।আমার সাথে আগের মতো কথাও বলছিস না।দূরে দূরে থাকিস।রাতে আমি ঘুমানোর পর রুমে আসিস।সারাক্ষন ফোনে মাথা ঢুকিয়ে রাখছিস।
আমি প্রথমে ভেবেছিলাম অনেক দিন পর এসেছি বলে স্বাভাবিক হতে পারছিস না।তাই তোকে নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর প্ল্যান করলাম।ভাবলাম একসাথে থাকলে আমাদের মাঝখানের ডিফারেন্স গুলো দূর হবে আর এখন এটাতেও তুই তালবাহানা শুরু করেছিস।
ইজ দ্যাট এনি প্রবলেম?আমাকে বল।কি হয়েছে তোর?
তিথিঃ৩ বছর অনেক সময় আদ্রিয়ান।সব কিছু বদলে গিয়েছে।
আদ্রিয়ানঃআমার প্রতি ভালোবাসাও?
তিথি ছলছল চোখে তাকালো আদ্রিয়ান এর দিকে।
তিথিঃএমন কিছুই না।আমি ব্যাগ গুছাচ্ছি।তুই ঠিকই বলেছিস আমাদের নিজেদের সময় দেয়া দরকার।
আদ্রিয়ান আর কিছুই বললো না।আদ্রিয়ান এর মাথায় একটা কথাই বাড়ি খাচ্ছে।তিন বছরে অনেক কিছুই বদলে গেছে।
আদ্রিয়ানঃআমার অনুপস্থিতিতে আরো কিছু কি বদলেছে?যা আমি জানি না। (মনে মনে)
তিথিঃআদ্রিয়ান।ব্যাগ গুছিয়ে ফেলেছি।চলুন বের হয়ে পড়ি।
আদ্রিয়ান ল্যাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।তিথি বাসার দিকে একবার তাকিয়ে ডোর লক করে চলে গেলো।
পরের দিন সকালে~
নেহা চৌধুরী ভিলার গেটে দাঁড়িয়ে আছে।ভিতরে প্রবেশ করবে কি করবে না ভাবছে।
নেহাঃআদ্রিয়ান এর ফোনটা সকাল থেকে অফ।উনি থাকলে ভালো হতো।এখানে তো আমি কাউকে চিনিও না।
আরিয়ান মেডিকেল এর জন্য বের হচ্ছিলো গেটে নেহার সাথে দেখা হয়।
আরিয়ানঃবাসায় বাঘ ভালোই থাকে না।মানুষই থাকে।এভাবে দেখার কিছু নেই।
নেহা হেসে সালাম দিলো।
আরিয়ানঃওয়ালাইকুম আসসালাম।তুমিই কি সে যাকে আশমিন এর জন্য রাখা হয়েছে?
নেহাঃজ্বী।আপনি?
আরিয়ানঃআমি আশমিন এর বাবা।আরিয়ান।তুমি বয়সে ছোট হবে আমার তুমি করি সম্বোধন করলাম। মাইন্ড করলে নাকি?
নেহাঃতাহলে আমিও ভাইয়া বলে সম্বোধন করি?আপনি মাইন্ড করবেন না তো?
আরিয়ানঃহুম।করাই যায়।এমনিতেও আমার বোন বলতে মামাতো বোনই ছিলো।কিন্তু সে ও এখন নেই।তুমি ভাইয়া ডাকলে মনে হবে নূরই ডাকছে।
নেহাঃএই বাসায় সবাই নূরকে অনেক ভালোবাসে তাই না?সবার মুখে এই নামটাই প্রথমে শুনি।
আরিয়ানঃহুম ভালোবাসে। কিন্তু এই বাসায় এই নাম নেয়া নিষিদ্ধ। ভুলেও আদ্রিতা আর মেহরাবের সামনে এই নাম নিও না।খুব রেগে যাবে।
নেহার খুব ইচ্ছে করলো জিজ্ঞেস করতে মেহরাব নিজের স্ত্রী নাম নিলে রেগে যাবে কেন?!!তবুও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রনে রাখলো।এভাবে প্রথম দিন এসেই কারো পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলানো ঠিক হবে না।
আরিয়ানঃআচ্ছা।তুমি ভিতরে যাও।আদ্রিতা তোমারই অপেক্ষা করছে।
নেহাঃআচ্ছা ভাইয়া।সাবধানে যাবেন।
আরিয়ানঃযাবেন না যাবে হবে। বোনু।
নেহাঃআচ্ছা।মনে থাকবে।আল্লাহ হাফেজ।
আরিয়ানঃআল্লাহ হাফেজ।
আরিয়ান চলে গেলে নেহা বাসায় প্রবেশ করে।আদ্রিতা আশমিনকে চুপ করাচ্ছে।আরিয়ান চলে যাওয়ায় আশমিন কান্না করছে।আদ্রিতা এদিক ওদিকে হাটা হাটি করছে। খেলনা দেখাচ্ছে কিন্তু আশমিন কোনো ভাবেই চুপ হচ্ছে না।
নেহা হাত বাড়িয়ে আশমিনকে কোলে নিলো।আশমিন আরো কান্না করতে লাগলো।আদ্রিতা চুপ করে দেখছে নেহা আশমিনকে সামলাতে পারে কি না।
নেহা আশমিনকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।নেহার কাছে একবারের জন্য মনে হলো আশমিন তারই হারিয়ে ফেলা বাচ্চা।
নেহা আশমিনকে নিয়ে গেটের বাইরে বাগানটায় চলে আসলো।ঘরের বাইরে নিয়ে আসায় আশমিন চুপ হয়ে টুকুর টুকুর করে সব দেখছে।
নেহাঃওই যে দেখো পাখি।
আশমিনঃপাক্কি?
নেহাঃহুম।পাক্কি।এই পাখি এইখানে আসো।আশমিন তোমাকে ধরবে।
আশমিনঃধব্বো ধব্বো।
নেহাঃধরবে?সত্যিই?
আশমিনঃহুম।
নেহাঃতাহলে বাসায় চলো।খাওয়া দাওয়া করে আমরা আবার আসবো পাখিকে ধরতে। ঠিক আছে?
আশমিনঃআচসা।
নেহা আশমিনকে নিয়ে ভিতরে চলে আসলো।আদ্রিতা খুশি হলো নেহার ব্যবহারে।
আদ্রিতাঃবাচ্চাদের সাথে এতো ভাব।তোমার বাচ্চা আছে?
নেহাঃআছে।আল্লাহর কাছে।
আদ্রিতার চেহারা হাসিটা মুছে গেলো।
আদ্রিতাঃওহ সরি।আমি জানতাম না।
নেহাঃইটস ওকে। ম্যাম।
আদ্রিতাঃআচ্ছা।আমি যাই। তুমি ওকে নিয়ে বাসায়ই থেকো।দরজাটা আটকে দাও।আমাদের সবার কাছে চাবি আছে।তোমার গেট খুলতে হবে না। পারবে তো পুরো বাসায় একা থাকতে?
নেহাঃহুম।আপনি নিশ্চিন্তে যান।
আদ্রিতা মুচকি হেসে চলে গেলো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৩৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন