উপন্যাস        :         তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
লেখিকা         :         মাধুর্য মাধুরী
গ্রন্থ              :         
প্রকাশকাল     :         
রচনাকাল      :         ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মাধুর্য মাধুরীর “তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১৬ই নভেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী


1111111111111111111111

০৩ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী (পর্ব - ০৪)

সকালে ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে আরণ্যাকে পায় না আর্য। ব্যালকনির দিকে চোখ পড়তেই লক্ষ্য করে, সবুজ শাড়িতে এক রাশ ভিজে চুল ঝাড়ছে আরণ্যা। আর্য এক নিঃশব্দে আরণ্যার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো। ভিজে চুলের ঝাপটায় জলের ফোঁটা এসে পড়লো তার চোখে-মুখে। হাত বাড়িয়ে সে চুলটা ছুঁয়ে দিতে চাইলো। কিন্তু তার আগেই ঘুরে তাকালো আরণ্যা। আর্য তার একদম পিছনেই দাঁড়াবার কারণে সে তাল সামলাতে না পেরে আর্যর বুকে আছড়ে পড়লো। আর্যর যেন সম্বিৎ ফিরলো।  আরণ্যার পিঠে হাত দিতে গিয়েও হাত সরিয়ে থেমে গেলো সে।
আরণ্যা লজ্জা পেয়ে সরে গেলো। আর্য বিব্রত হয়ে পড়লো।
লজ্জায় লাল-নীল হয়ে আরণ্যা কফি বানাচ্ছে। আজ আর্যকে নিজেই কফি দিতে যাবে সে। জয়া কফির জন্য আসতেই ওকে ফিরিয়ে দিলো আরণ্যা। কফি হাতে আর্যর ঘরের দিকে পা বাড়াতেই জয়া বলে উঠলো,
-'দাদা কিন্তু খুব রাগ করবে বৌদিমণি। তুমি বরং আমাকে পাঠাও, আমিই নাহয়...'
জয়াকে থামিয়ে মুচকি হেসে আরণ্যা বলল,
-'তুমি চিন্তা করো না জয়া। উনি আজ আমাকে কিছুই বলবেন না।'
আর্যকে কফিটা দিতে যেতেই আর্য বলে উঠলো,
-'আজ আপনি? কী ব্যাপার? আপনাকে না বলেছি, আমার কাজ করে দিয়ে, নিজেকে আমার স্ত্রী ভাবার চেষ্টাও করবেন না।'
আরণ্যা তবুও কফিটা সামনে ধরতেই, আর্য কফিটা নিয়ে এক চুমুক দিয়েই কাপ-প্লেট সমেত ছুঁড়ে ফেললো মেঝেতে। আরণ্যার গায়ে গরম কফিটা ছিটকে খানিকটা লাগলো। আরণ্যা মৃদু চিৎকার দিয়ে উঠলো। আর্য সে'সব পরোয়া না করে আঙুল তুলে রুক্ষ স্বরে আরণ্যাকে বলল,
-'দ্বিতীয় দিন থেকে আসে-পাশে ঘুরঘুর করে আমার কাজ করার চেষ্টাও করবেন না। আমার কাজ মেটানোর জন্য অনেক সার্ভেন্ট আছে। আপনার সেখানে কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু আমার জীবনটাকে তছনছ করতেই আপনার এখানে আসা। নাউ জাস্ট গেট আউট ফ্রম হিয়ার!'
আরণ্যা টলমল চোখের পাপড়ি ফেলতেই টপটপ করে জল গাল বেয়ে পড়লো।
আর্য দেখে বিরক্ত কণ্ঠে বলল,
-'আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিম্প্যাথি গ্র্যাব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মোস্ট ইরিটেটিং পারসন!'
আরণ্যা আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো। সে জানতেও পারলো না, অন্যমনস্কতার জন্য কফিতে সে চিনির বদলে লবন মিশিয়ে ফেলেছিল।
অভিমানী আর্য নিজের বাবা-মা'র সাথে বিয়ে করে আরণ্যাকে নিয়ে আসা ইস্তক বিশেষ  কথা বলেনি। উপরের ঘর থেকে আর্যর চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসার সময় লক্ষ্য করলেন, আরণ্যা চোখ মুছতে মুছতে নীচে নামছে। উনি আর্যর দরজায় নক করলেন। আর্য দরজাটা খুলেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
-' তুমি?'
অঞ্জলি বিষণ্ণ কণ্ঠে বললেন,
-'আর কতদিন রাগ করে থাকবে আর্য? তোমার বাবা আর আমি তো তোমার ভালোই চাই। নির্দিষ্ট কারণেই আমরা আরণ্যার বিয়ে ঠিক করেছিলাম। হয়তো কারণটা একদিন জানার চেষ্টা করবে তুমি।'
-'কারণ যা'ই হোক, আমার জীবনটা তো তছনছ হয়ে গেলো!'
-'আরণ্যা এমন মেয়ে নয় আর্য। ও মধ্যবিত্ত পরিবারে বড়ো হলেও, আমাদের সাথে এই অল্প সময়েই এডজাস্ট করে নিতে পেরেছে।'
-'আমার সাথে ওর এডজাস্টমেন্ট কোনোদিনও হবে না মা। এডজাস্ট তো দূরের কথা, ওর মতো চিপ মেয়েকে আমি জাস্ট টলারেটও করতে পারি না।'
-'ওকে জানার চেষ্টা করো আর্য। নিশ্চই ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।'
আর্যর মা চলে গেলেন। আর্যকে কিছু সময় দেওয়া প্রয়োজন। হয়তো ও সেই সময়ের মধ্যে মানিয়ে নেওয়া শিখে নেবে।
আরণ্যা পোড়া জায়গায় মলম লাগাতে লাগাতে ভাবছিল, আর্য সত্যিই বদলায়নি এতটুকুও। ও এখনো অরণ্যাকে সহ্য করতে পারছে না। তবে আরণ্যা ওকে উপযুক্ত সময় দেবে, আর দেবে ভালোবাসা। আর্য নিশ্চই আরণ্যার সাথে মানিয়ে নিতে পারবে একদিন। আরণ্যার মুখে রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো। আর্যর বদলে যাওয়ার সময়ের অপেক্ষা করতে লাগলো সে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মাধুর্য মাধুরী তার সামাজিক মাধ্যম প্রফাইলে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন - “নিজেকে প্রকাশ করতে চাই না। পৃথিবীর সব রহস্যের মধ্যে আমি অধিকতর রহস্যময়।” এছাড়া তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন