উপন্যাস : তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
লেখিকা : মাধুর্য মাধুরী
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা মাধুর্য মাধুরীর “তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১৬ই নভেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী |
1111111111111111111111
০৬ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী (পর্ব - ০৭)
আজ তিন দিন হল আরণ্যাকে বাড়ি আনা হয়েছে। আর্য যথেষ্ঠ যত্ন নিয়ে আরণ্যার সেবা করে চলেছে। এই কয়েক দিন সে একদমই বেরোয়নি, সারাদিন আরণ্যার সাথেই রয়ে গেছে। আরণ্যার অবশ্য এখন জায়গা হয়েছে আর্যর বিছানায়। রাতে শোওয়ার সময়ে মাঝখানে বালিশ দিয়ে দু'জনে দু'দিকে শুয়ে থাকে। একজন ঘুমের ওষুধ খেয়ে অঘোরে ঘুমন্ত, আরেকজন অপলক দৃষ্টিতে আলতো হাতে তার মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়।
কুচানো ফল ভর্তি বাটিটা এনে আরণ্যার হাতে ধরিয়ে দেয় আর্য। আর্যকে আসতে দেখেই আরণ্যা মুখ কুঁচকে পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমাবার ভান করতে থাকে। আর্য সেটা লক্ষ্য করে হাসি চেপে আরণ্যাকে মৃদু স্বরে বার দুয়েক ডাকলো। আরণ্যা কোনো সাড়া-শব্দ না করাতে, এক টানে ঘাড় ধরে টেনে তুললো আরণ্যাকে। আরণ্যা ঘুমে ঢুলে পড়ার ভান করতেই কষে এক ধমক দিলো আর্য। আরণ্যার সব ঘুম যেন এক নিমেষেই ছুটে গেলো।
-'আমি ভালো করেই জানি আরণ্যা, তুমি একটুও ঘুমাওনি। এমন কি তোমার চোখে ঘুমের লেশ মাত্র নেই। সো, নাটক অনেক হয়েছে, এবার উঠে পড়ো। এই ফ্রুটস যদি আজ ফিনিশ না করতে পেরেছো, তোমার কপালে দুঃখ আছে বলে দিলাম।'
আরণ্যা কান্না-কান্না স্বরে বলল,
-'আপনি আগেরদিনও আমাকে ভয় দেখিয়ে সব ফলগুলো খাইয়েছেন। এত এত ফল মানুষে খেতে পারে? আপনি রোজ স্যালাড খান বলে কি দুনিয়াশুদ্ধ সবাই রোজ রোজ স্যালাড খাবে?'
-'মুখে মুখে তর্ক করা ভালোই শিখেছো দেখছি। তোমার হাতে অনলি ফিফটিন মিনিটস। তারপর তোমায় মজা দেখাবো।'
আর্য স্টপ ওয়াচে টাইম সেট করে দিলো। আরণ্যা হুড়মুড় করে বাটিটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো। আর্য আবারও হাসি'টা চেপে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো আরণ্যার খাওয়া শেষ হওয়ার। বাটিটা শেষ হতেই আরণ্যা মুখ ভর্তি ফলের কুচি চিবাতে চিবাতে ভয়ে ভয়ে তার দিকে তাকালো। আর্য ইশারা করে মুখের খাবারটা শেষ করতে বলে খালি বাটিটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
আজকাল আর্যর যেন বড্ড ভালো লাগে আরণ্যার ওই নিষ্পাপ হাসি'টাকে। সারাদিন কাছাকাছি থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে। খানিকটা সময়ও পাশাপাশি না থাকলে কেমন যেন অস্বস্তি বোধ হয় তার।
আর্য বেরিয়ে যেতেই আরণ্যার ফোনে টুং-টাং শব্দ করে মেসেজ ঢুকলো। আরণ্যা মেসেজ চেক করার আগেই ফিরে এলো আর্য। ওষুধগুলো আরণ্যার হাতে দিয়ে বলল,
-'খেয়ে নাও। তোমাকে এখন রেস্ট নিতে বলেছেন মুখার্জি ম্যাম। সামান্য কিছু ইনজুরি আছে, তবে সে'টা ঠিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আমার কথা শুনে চলো, দ্রুত সুস্থ হতে পারবে।'
আরণ্যা চটপট উত্তর দিলো,
-'আমি আপনার অতো কথা শুনতে পারবো না। সবসময় খালি হুকুম করা!'
-'কে কার কথা শোনে সময় এলেই দেখা যাবে। এখন মেডিসিন'টা খেয়ে নাও। আমি লাইট অফ করে দিলাম। চুপচাপ শুয়ে পড়বে।'
আর্য লাইট অফ করে জানলার পর্দাগুলোও টেনে দিলো। দুপুরের পড়ন্ত রোদ আড়াল হয়ে গেলো। আরণ্যার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলো আর্য। আরণ্যার মনে হল, আর্য বুঝি সত্যি সত্যিই তার জন্য পাল্টে নিয়েছেন নিজেকে। হয়তো মানুষটা অনেক নরম, কিন্তু নিজের কঠিন আবরণটা কাটিয়ে সহজে বেরিয়ে আসতে পারেন না। আরণ্যা মিষ্টি হেসে আর্যকে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরলো।
আর্য আজ বেরিয়েছে। আরণ্যা জানলার দিকে চেয়ে ঝিম ধরে বসে আছে। একটা ছোট্ট নোট,'কী ভেবেছো? আর্য তোমার? নাহ, আর্য আগেও আমার ছিলো, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।' নোটের সাথে অ্যাটাচ করা একটা সুন্দরী মেয়ে আর আর্যর কিছু অন্তরঙ্গ ছবি। মেসেঞ্জারে ঢুকতে প্রথমেই লক্ষ্য করেছিলো, একটা অপরিচিত আইডি থেকে ছবিগুলো এসেছে।আরণ্যা বিমর্ষ চেহারায় কল করলো,
-'হ্যালো, আরণ্যা স্পিকিং। আর ইউ মিস্টার সেন?'
-'ইয়াহ ম্যাম, অর্ণব স্পিকিং। এনি অর্ডার ফ্রম ইউ?'
-'আই নিড মোর এন্ড মোর ইনফরমেশন এবাউট মিস্টার আর্য চৌধুরী। ফলো হিম ইচ এন্ড এভরি টাইম। কালেক্ট ইনফরমেশন এন্ড কন্ফার্ম মি সুন।'
আরণ্যা কল'টা ডিসকানেক্ট করে, ফোনের সিমকার্ড'টা বদলে ফেললো। আলমারি থেকে আর্যর একটা টি-শার্ট বের করে মুখ ডোবালো সে। আর্যর পারফিউমের কড়া ঘ্রান তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে শিহরণ জাগিয়ে তুললো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মাধুর্য মাধুরী তার সামাজিক মাধ্যম প্রফাইলে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন - “নিজেকে প্রকাশ করতে চাই না। পৃথিবীর সব রহস্যের মধ্যে আমি অধিকতর রহস্যময়।” এছাড়া তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন