উপন্যাস : উজল প্রাতের আরশি
লেখিকা : সাদিয়া খান সুবাসিনী
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা সাদিয়া খান সুবাসিনীর “উজল প্রাতের আরশি” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
উজল প্রাতের আরশি || সাদিয়া খান সুবাসিনী |
১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
উজল প্রাতের আরশি || সাদিয়া খান সুবাসিনী (পর্ব - ০২)
"Can I be your new year kiss?"
শ্যাম্পেইনের গ্লাসটা উষ্ণার দিকে এগিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করলো ইযহান।ঠোঁটে লেগে আছে হালকা হাসির রেশ৷ দুই চোখে খেলা করছে আবেদনময়ী হাসি। একটা বছর বিদায় নিচ্ছে এবং শুরু হচ্ছে আরো একটি বছর।সেই আনন্দ ভাগ করে নিতেই সকল বন্ধুরা একত্র হয়েছে ইয়োর্টে। সী বীচের সীমানায় চলছে নিউ ইয়ার পার্টি। গানের সঙ্গে চলচে নাচ।উষ্ণা আজ লাল রঙের একটা শাড়ি পরেছে।গায়ে জড়ানো রয়েছে ইযহানের কোর্ট।কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে। মাত্র দশ সেকেন্ড এরপর নতুন বছর। প্রায় চার বছরের সম্পর্ক ইযহান এবং উষ্ণার। কয়েক সেকেন্ড পর যে বছরটা আসবে সেই বছরে বিয়ে করে নিবে দুজন। ইযহানকে কিছুটা রাগিয়ে দিতে উষ্ণা বলল, "নো, আই হ্যাভ মাই ম্যান। সো নো চান্স।"
ইযহান হেসে হাত রাখে প্রেয়সীর উন্মুক্ত কোমরে।শীতল স্পর্শে শিহরিত হয়ে যায় উষ্ণা। প্রণয়ের জলে ডুব দেওয়াটা তাদের কাছে প্রথম না হলেও উষ্ণাকে লজ্জায় ফেলে দিতে পারদর্শী ইযহান।সে মাথা নিচু করে ফিসফিস শব্দে বলে,
"তুমি কি জানো?তোমাকে পেয়ে আমার আর পাওয়ার কিছুই নেই।তাই তোমার মানুষটার থেকে তোমাকে চুরি করে নয়, ডাকাতি করে নিতে এসেছি।"
প্রেয়সীর ললাটে অধর ছোঁয়াতেই সমস্বরে সবাই বলে উঠে
"হ্যাপি নিউ ইয়ার।"
শুরু হয় আতশ বাজি।চারিদিকে আলোর ঝলকানিতে ছেয়ে যাচ্ছে। সেই আলোর দিকে তাকিয়ে উষ্ণা ধীরে ধীরে বলল,
"এ বছরে তোমার সব দুঃখ আমার হোক ইযহান।আমি তোমার সব আক্ষেপ,আবেগ,ভালোবাসা এবং বিশ্বাস নিজের করে চাই।খুব করে চাই তুমি কেবল আমার হও নয়তো অন্য কারো নও।"
ইযহানের দুই হাতের বন্ধন দৃঢ় হয়। পারলে সে পিষে ফেলতে চায় উষ্ণাকে।সামান্যতম দূরত্ব যেন সইতে পারছে না সে। অথচ রাত এখনো অনেক বাকী।
ড্রিংক'স বারে ফিরে এসে উষ্ণা একটা জুস দিতে বলল।বড়লোক বাবার মেয়ে সে।পেশায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। মানুষের মন পড়ে তাদের সুখের সন্ধান দেওয়া কিংবা কারোর কারোর মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা ভয়,রাগ কিংবা অপরাধ বোধ থেকে মুক্তি দেওয়াই তার কাজ।শহরে নাম করা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলে উষ্ণাকেই জানে মানুষ। অপর দিকে ইযহান বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করছে। টেস্ট অভ লাভ নামে তাদের একটা বেকারী রয়েছে।পুরো ঢাকায় তাদের সাতটে ব্রাঞ্চ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে প্রতিটি বিভাগে।কিছু জেলা শহরেও রয়েছে। মা মারা যাবার পর বেকারীর দায়িত্বটা তার অপর দিকে বাবার বয়সের কারণে তার সিমেন্ট কোম্পানির দেখাশোনাও করতে হচ্ছে।টেস্ট অভ লাভ ছিল ইযহানের মায়ের ভালোবাসায় তৈরী। বাবার ব্যবসার জন্য অন্যের উপর নির্ভর হলেও মায়ের ভালোবাসাটাকে ইযহান সামলে রেখেছে।
উষ্ণার পাশে তার বান্দবী কিঞ্জা এসে বসেছে। একটা ককটেল অর্ডার করে বলল,
"তুই কিন্তু ড্রিংকস নিতেই পারিস।ইযহান আছে তোকে ম্যানেজ করে নিতে পারবে।"
"আমি ড্রিংকস করি না।জানিস তো।"
"তুই আর তোর সব মোরাল টক'স। আর প্রয়োজন কি?তোর জীবনে কোনো কষ্ট আছে না কি?বাবার টাকায় বড় হয়েছিস,এতো নাম ডাক তাছাড়া ইযহান তোর সবচেয়ে বড় পাওয়া। হ্যান্ডসাম রিচ বিজনেসম্যান যাকে কত মানুষ নিজ থেকে সার্ভ করতে চায় সে তুই ছাড়া কিছুই বুঝে না।"
স্মিত হাসে উষ্ণা। এই মদ, নেশা করে করে তার পরিবারটা শেষ হয়েছে। তার বাবা -মায়ের বেপোরোয়া জীবন যাপনের জন্য কতোটা কষ্ট পেয়েছে সে শৈশবে কেবল উষ্ণা জানে।বড় আপুটার সাথে একদিন কি হয়েছিল সে জানে না। আট বছর বয়সী উষ্ণা বুঝতে পারেনি তখন কেন তার বড় আপু দরজা বন্ধ করে কাঁদতো। হাসি খুশি চঞ্চল বোনটা একদিন সিলিংফ্যানের সাথে ঝুলে পড়লো। বড় হয়ে জানতে পেরেছিল তার বোনটা রেপ হয়েছিল। বোনের কথা মনে পড়তেই আকাশের দিকে তাকালো সে।রাতের আকাশে তখন আলোর ঝলকানিতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল এক দৃষ্টিতে। সেই দৃষ্টিতে রয়েছে কেবল অতৃপ্তি।
ঢাকার আকাশেও তখন আলোর ঝিলিমিলি। ছোট্ট উঠানে একটা পিড়িতে চাদর গায়ে বসে আছে শর্মী।তার মনেও চলছে উষ্ণার মনে চলতে থাকা একই প্রশ্ন, "ধর্ষিতা হলেই কি মরে যেতে হয়? কিন্তু সে তো বাঁচতে চায়।তার পেটের সন্তানটাকে বড় করতে চায়। হাতে থাকা ছোট্ট স্যাভনলের বোতলটার দিকে তাকালো সে। বেঁচে থাকাটা এতো যন্ত্রণার কেন?
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
০৩ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা সাদিয়া খান সুবাসিনী সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন