উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান Bangla Golpo - Kobiyal - Love Story
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৪৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৫)

আদ্রিয়ান তিথিকে নিয়ে মিরার রুমে প্রবেশ করে।তিথি এখনো জানে না আদ্রিয়ান ওকে কোথায় নিয়ে এসেছে।ভিতরে কোথাও মিরা নেই।
তিথিঃএখানে নিয়ে এসেছিস কেন?
আদ্রিয়ানঃএত প্রশ্ন করছিস কেন?একটু পর তো নিজেই জানতে পারবি।
তিথিঃএখন বললে কি সমস্যা?
আদ্রিয়ানঃবললাম না একটু......
কথা শেষ করার আগেই বিদ্যুৎ চলে গেলো।
তিথিঃএটা কি হলো?ভয় পাচ্ছি আমি।আদ্রিয়ান। 
তিথি আদ্রিয়ান এর হাত চেপে ধরলো।আদ্রিয়ান শিহরিত হয়ে উঠলো।হার্ট বিট হুট করে বেড়ে গেলো।

আদ্রিয়ানঃআমি কি তিথির কে সন্দেহ করে ভুল করছি?আমার তিথিপাখি কি আদো এমন কিছু করতে পারে? (মনে মনে)
আদ্রিয়ান অন্যমনস্ক হয়ে পড়লো।মিরার উপস্থিতি আদ্রিয়ান এর ধ্যান ফেরালো।
মিরা মুচকি হেসে মোমবাতি নিয়ে উপস্থিত হলো।তিথির মিরাকে দেখামাত্র রাগ উঠে গেলো।
তিথিঃআমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছিস? আদ্রিয়ান??
মিরাঃআরে আরে উত্তেজিত হচ্ছো কেন?আস্তে আস্তে সব জানতে পারবে। আগে বসো।
আদ্রিয়ান তিথির হাত ধরে সোফায় বসালো।

মিরাঃতুমি আমাকে অযথাই ভুল বুঝেছো।
তিথি পালটা কিছু বলছে না।আদ্রিয়ান ভয় পাচ্ছে এই না ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়।
মিরাঃতোমাকে এখানে এনেছি আমাদের মাঝে ভুল বোঝাবোঝি গুলো দূর করতে।সরি। আমি একটু মজা করছিলাম।


তিথিঃহুম।
মিরাঃআচ্ছা।কেমন আছো?তিথি?
তিথিঃভালো।
মিরাঃআমাকে জিজ্ঞেস করবে না কেমন আছি?
তিথিঃকেমন আছেন?
মিরাঃএইতো ভালো।
তিথিঃআপনি এই রুমে একা থাকেন?
মিরাঃহুম।ফ্রেন্ডদের সাথে আসছিলাম।ওরা ও আছে ওদের রুমে।
তিথিঃওহ।
মিরাঃআচ্ছা এই সব বাদ।বলতো তিথি তুমি কতক্ষন এক জায়গায় স্থির তাকিয়ে থাকতে পারো?আমি তো ১ মিনিট পারি।
তিথিঃ আদ্রিয়ান এর সামনে নিজেকে আমার থেকে ভালো প্রমান করতে চাচ্ছে।ফালতু মেয়ে। (মনে মনে)

আমি এর থেকে বেশি পারবো।
মিরাঃআমার মনে হয় না।
তিথি হুট করে রেগে গেলো।
তিথিঃবললাম না পারি?
মিরাঃঠিক আসে।প্রমান হয়ে যাক।
তিথিঃঠিক আছে।
মিরা একটা লকেট নিয়ে আসলো।লকেটটার মাঝের ডিজাইনটা গোলাকার।
তিথিঃএটা কেমন লকেট?ডিজাইন মশা মারার কয়েল এর মতো কেন?
মিরাঃএটা আমার ফেভারিট লকেট।আমি এটা তোমার সামনে ধরবো।তুমি এটার দিকে তাকিয়ে থাকবে।তুমি জানো আজ পর্যন্ত কেউ এটার দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারে নাই।
তিথিঃএ আর তেমন কি ব্যাপার।যা কেউ পারে না তা তিথি পারে।আর যা তিথি পারে তা কেউ পারে না।
মিরাঃচলো দেখি তাহলে।


মিরা লকেটটা তিথির সামনে তুলে ধরে।আদ্রিয়ান মিরা হাত চেপে ধরে ইশারায় নিষেধ করে।মিরা চোখ চোখে আশস্ত করে কোনো কিছু হবে না।
তিথিঃলকেটটার দিকে কিছুক্ষন তাকানোতেই মাথা ঘোরানো শুরু করে।চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।তবুও তাকিয়ে থাকবো।আমার জিততেই হবে।

মিরাঃতিথি। 
তিথিঃহুম।
মিরাঃতোমার নাম কি?
তিথিঃতিথি চৌধুরী। 
মিরাঃআদ্রিয়ান কে?
তিথিঃআমার বেস্ট ফ্রেন্ড। 
মিরাঃস্বামী না?
তিথিঃহুম।
মিরাঃভালোবাসো উনাকে?
তিথিঃহুম।
আদ্রিয়ান স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
মিরাঃউনি চলে যাওয়ায় কষ্ট পেয়েছিলে?
তিথিঃনা।
আদ্রিয়ান চমকে উঠলো।
মিরাঃযাওয়ার পর কি হয়েছিলো?
তিথিঃনূরকে রাস্তা থেকে সরিয়েছি।

আদ্রিয়ান নড়েচড়ে বসলো।মিরা কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবে তখনই আদ্রিয়ান মাথা দিয়ে নাবোধক ইশারা করলো।মিরা চুপ হয়ে যায়।আদ্রিয়ান তিথির মুখোমুখি বসে।
আদ্রিয়ানঃমেহরাব ভাইকে ভালোবাসিস?
তিথিঃঅনেক।যতটা ভালোবাসলে সব করা যায় ততটা।
আদ্রিয়ানঃআমাকে কেন বিয়ে করলি?


তিথিঃওই বাসায় থাকার জন্য।নূরের আসায় আমি আলাদা হয়ে গিয়েছিলাম মেহরাবের কাছ থেকে।তাই তোকে বিয়ে করলাম যাতে তার কাছাকাছি থাকতে পারি।
আদ্রিয়ানঃকেন বললি আমাকে ভালোবাসিস?
তিথিঃবন্ধু হিসেবে ভালোবাসি। এর থেকে বেশি কিছুই না।
আদ্রিয়ান কেপে উঠলো।মিরা আদ্রিয়ানের কাধে হাত রাখলো।
মিরাঃসবকিছু শুরু থেকে বলো।কি কি করেছো তুমি মেহরাব ভাইয়াকে পেতে?কিভাবে করেছো।

তিথিঃনূর আর মেহরাব এর বিয়ের পর মেনে নিতে পারি নাই আমি।তারপরে দিন আদ্রিয়ান আর নূরকে একসাথে দেখে মেহরাব ভাইয়াকে বলি।যাতে নূর মেহরাব আলাদা হয়ে যায়।কিন্তু হওয়ার আগেই আমার সামনে এমন কিছু আসলো যা আমার মুখ্য হাতিয়ার মনে হলো।
আদ্রিয়ান আমাকে ভালোবাসে এটা জানতে পারলাম।আমি তখনই ভেবে নিলাম মেহরাব নূরকে আলাদা করা সহজ হবে না।এর জন্য আমাকে ওই বাসায় থাকতে হবে আর আস্তে আস্তে সব করবো ।

আমি আরাফ বাবাইকে কথা বলতে শুনেছিলাম যে ওই দিনই আদ্রিয়ান দেশ ছেড়ে চলে যাবে।
আমি সুযোগটা কাজ এ লাগাই।আদ্রিয়ানকে বিয়েতে বাধ্য করি।এটা আমার কাছে সহজ ছিলো কারন আদ্রিয়ান আমাকে ভালোবাসতো।ওর ভালোবাসা ব্যবহার করে আমি ওই বাসায় নিজের জায়গা করে নিলাম।

তারপর ও চলে গেলো।আর আমি মেহরাব নূরকে আলাদা করার জন্য উঠে পড়ে লাগলাম।
আল্লাহও চাইতো আমি আর মেহরাব এক হই।তাই আরাফ বাবাই নবনি মা মারা গেলেন।উনারা যেতেই সবাই ভেঙে পড়লো। আমার কাজ সহজ হয়ে গেলো।
আমি নূর মেহরাব এর মাঝে ছোট ছোট সমস্যা বাধাতাম।কিন্তু নূর অনেক বিশ্বাস করতো মেহরাবকে।কোনোভাবেই ওদের ভাংতে পারলাম না আমি।


তারপর নূর ভাবীর গর্ভে মেহরাব ভাইয়ার সন্তান আসলো।আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তখন।যে আমি বিয়েটাই মেনে নিতে পারলাম না।আমি কি করে এটা মেনে নিতাম।
মেহরাব ভাইয়ার সাথে অন্য মেয়ের কিছু ইডিট ভিডিও দেখালাম নূর আপুনিকে।উনি এমনিতেই আরাফ বাবাই নবনি মামনি যাওয়ার জন্য ডিপ্রেশনে ছিলেন।উনাকে এটা দেখাতেই উনি ভেঙে পড়েন।

মেহরাব ভাইয়ার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে চায়।কিন্তু ভাইয়া রাজনীতিতে এত ব্যস্ত ছিলো যে সময় দিতে পারে নাই।
নূর আপুনি মেহরাব ভাইয়ার থেকে দূর হতে শুরু করে।
এতটা দূর যে প্রেগ্ন্যাসির কথাটা ও বলে না।
এক রাতে নূর আপুনি আমার কাছে আসে।চোখ দিয়ে তার আগুন ঝড়ছে।
ফ্ল্যাশব্যাক ~
তিথিঃআপুনি কিছু বলবে?রেগে আছো যে?
নূরঃআমাকে মিথ্যে কেন বললে তিথি?কেন আমাদের মাঝে ঝামেলা সৃষ্ট করলে?
তিথিঃকি মিথ্যা?
নূরঃভিডিওটা যে ইডিটেড আমি জেনে গিয়েছি।
তোমার কি সত্যিই মনে হয়েছে এগুলো দেখার পরও আমি চুপ চাপ বসে থাকবো?
আমি এটা সেইদিনই টেস্ট করতে দিয়েছিলাম যে দিন তুমি দেখিয়েছিলে।আর আজকে জেনেও গেলাম। এখানে ইডিট করে মেহরাব এর ফেস বসানো হয়েছে।
একজন রাজনীতিবিদের স্ত্রীকে বোকা ভাবা তোমার ভুল ছিলো।এখন বলো কেন করছো?এমন?

তিথিঃজেনে যখন গিয়েছো তাহলে শুনো ভালোবাসি আমি মেহরাবকে। অনেক ভালোবাসি।তোমার থেকেও বেশি ভালোবাসি।
নূরঃছি তিথি!আদ্রিয়ান তোমার স্বামী। তুমি এগুলো কি বলছো?
তিথিঃবিয়েটা হয় নাই।কাজীটা নকল ছিলো।
আদ্রিয়ান এটা শোনার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলো না।মাটির নিচে জমিনটা যেন সরে গেলো।হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসলো।


মিরাঃআদ্রিয়ান ভেঙে পড়বেন না।এখনো অনেকটা জানা বাকি আছে। 
আদ্রিয়ান জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। চোখ গুলো লাল হয়ে গিয়েছে।জেনো এখনই তিথিকে মেরে ফেলবে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন