উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান Bangla Golpo - Kobiyal - Love Story
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৪৫ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৬)

তিথি আবারো বলতে শুরু করলো।
তিথিঃসেই দিন নূর ভাবীকে রাগে সব সত্য বলে ফেলি আমি।উনি সব কিছু মেহরাব ভাইয়াকে বলার হুমকি দিতে থাকে আমাকে।
আমি নিজের স্বাভাবিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলি।উত্তেজিত হয়ে উনার পেট বরাবর লাথি দিয়ে দেই।উনি ছটপটিয়ে মাটিতে বসে পড়েন।

ব্যাথায় কাতরাতে শুরু করেন।আমার এক ফোটা মায়াও জন্মায় নাই উনার উপর।চোখের সামনে ওইদিনটাই ভাসছিলো যেদিন নূর আপুনি মেহরাব ভাইয়ার সাথে বিয়ে করে এই বাসায় পা রাখেন।আমার চোখের সামনে থেকে সব কিছু ছিনিয়ে নিয়েছিলেন উনি।
প্রতিশোধের আগুন জ্বলজ্বল করছিলো আমার চোখে।দৌড়ে রান্নাঘর থেকে ফলের ছুড়িটা নিয়ে আসি।উনার মৃত্যুই যেন আমার ভেতরে থাকা সকল কষ্টের নিস্তার। 
নূর আপুনি নিজের সর্বশক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।আমি উনার কাছে গেলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন আমাকে।ড্রয়ারের কোনা লেগে কপাল কেটে রক্ত পড়তে লাগে আমার।আমি উঠে উনার দিকে তাকাতেই দেখি উনি নেই।

উনি ভয়ে খালি পায়ে হেটে দৌড়ানো শুরু করে।আমি গাড়ি নিয়ে উনার খোজে বেড়িয়ে পড়ি।
মাঝরাস্তায় আমি তাকে পেয়েও যাই।ঠিক আমার গাড়ির সামনেই দৌড়াচ্ছিলেন উনি।গাড়িটা উনার উপর দিয়ে চালিয়ে দেই আমি।
আমার এক ফোটা হাত ও কাপে নাই।একটু ও না।এটা যে ছিলোও মেহরাবকে পাওয়ার লড়াই।


আদ্রিয়ান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো।মিরা অবাক চোখে সামনে বসে থাকা বোরখা পড়া সহজ সরল মেয়েটাকে দেখছে।এই মেয়েটা যে এত ভয়ানক হতে পারে তা কল্পনারও বাইরে।
মিরার ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে দুচারটা চড় বসিয়ে দিতে।মিরা ইচ্ছেটা দমাতে না পেরে এগিয়েও যায় তিথির দিকে। আদ্রিয়ান হাত ধরে ফেলে।

আদ্রিয়ানঃএখন না।ওর শাস্তি তো আমি দিবো।ওর করা পাপের থেকেও ভয়ানক শাস্তি।
তিথিঃ নূর আপুনি ছিটকে গাছের পাশে যেয়ে পড়েন।আমি গাড়ি থেকে বেরিয়ে উনার কাছে যাই।উনি আমার পা ধরে আকুতি মিনতি করতে শুরু করেন।
নূরঃতিথি।আমার বাচ্চা।আমার বাচ্চাক্র বাচাও।আমি চলে যাবো। সত্যিই চলে যাবো।অনেক দূরে চলে যাবো।ওকে মেরে না।

তিথিঃএটা তো আগেই ভাবা উচিত ছিলো যখন জানতে পেরেছো আমি তোমাকে আলাদা করতে চাই।কেন সরে যাও নাই তখন?
আজ তোমার বাচ্চাকে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার যে ব্যাথা তুমি সহ্য করছো এই ব্যাথা আমিও সহ্য করেছিলাম যখন আমার কাছে থেকে আমার মেহরাব ভাইয়া কেড়ে নিয়ে ছিলে।

কথাটা বলে আমি উল্টোপথে হাটা ধরি।
নূরঃনা।তিথি এমন করো না।তুমিও কোনো দিন মা হবে।আমাদের মাঝের লড়াইয়ে আমার নিষ্পাপ বাচ্চাকে টেনো না।তিথিইইই।।
আমি গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।এর পর উনি মরে গিয়েছেন হয়তো।এত কিছুর পর তো বাচার কথা না।


আদ্রিয়ান রক্তাক্ত চোখে উগ্র কন্ঠে বললো~
আদ্রিয়ানঃএরপর বলো?
তিথিঃএরপর মেহরাব ভাইয়া পাগলামো করেন।উনার পাগলামোর সব দোষ যেয়ে পড়ে নূর আপুনির উপর।কারন বাসায় সবাই ভাবতো নূর আপুনি ঠকিয়েছে মেহরাব ভাইয়াকে।
তারপর পর আদ্রিয়ান নিখোঁজ এর কথা বেড়িয়ে আসলো।আমার খুব খারাপ লেগেছিলো আদ্রিয়ান এর হারিয়ে যাওয়ায়।কারন আমি কখনো আদ্রিয়ানে ক্ষতি চাই নাই।কিন্তু পরে ভাবলাম যা হয় তা হয়তো ভালোর জন্যই হয়।

আদ্রিতা আপু আমাকে মেহরাব ভাইয়ার সাথে বিয়ে দেয়ার সিধান্ত নেয়।মেহরাব ভাইয়া কোনো রেসপন্সই করতো না।হ্যা ও না আবার না ও না।
উনার মধ্যে গিল্ট কাজ করতো যে আদ্রিয়ান এর এভাবে চলে যাওয়ায় আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেলো।তাই উনি কখনো আমাকে না শব্দটা বলে নাই।
আদ্রিয়ানের প্রতি তার ভালোবাসা আমাকে তার কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।কিন্তু এই খুশিটা দীর্ঘদিন স্থায়ী হলো না।আদ্রিয়ান ফিরে আসলো।
সব কিছু বদলে গেলো।আদ্রিতা আপুও পল্টি নিয়ে নিলেন।মেহরাব ভাইয়া তো এমন ভাব করলেন যেন অনেক বড় বাচা বাচলেন।

আমার আদ্রিয়ানকে ইদানীং সহ্যই হচ্ছে না।একমাত্র ওর জন্য আমার তিলে তিলে গড়া প্ল্যানটা নষ্ট হয়ে গেলো।
আদ্রিয়ানঃমেরে ফেলতে ইচ্ছে করে না আমাকে?
তিথিঃনা।কিন্তু ইচ্ছে করেই খারাপ ব্যবহার করি যাতে আমার কাছ থেকে সরে যাস।
মিরা মেয়েটার সাথে তোর সম্পর্ক থাকলে খুব খুশি হইতাম।আমার কাছে সবকিছু সহজ হয়ে যেতো।কিন্তু আদ্রিয়ান সেই আগের মতোই আমার জন্য পাগল।
আদ্রিয়ান তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো।


মিরাঃআদ্রিয়ান আরো কিছু জানার আছে? 
আদ্রিয়ানঃআর জানার প্রয়োজন মনে করছিনা।এতটুকু দিয়েই সারাজীবন ঘৃনা করা যাবে তিথি নামটাকে। 
আদ্রিয়ান বেড়িয়ে গেলো।
মিরাঃঘুমিয়ে পড়ো তিথি।
তিথিঃহুম।
মিরা আদ্রিয়ান এর পিছনে ছুটে গেলো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন