উপন্যাস : অনন্ত প্রেম
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১১ই জুন, ২০২৪ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “অনন্ত প্রেম” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৪ সালের ১১ই জুন থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
অনন্ত প্রেম || আরশি আয়াত |
৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
অনন্ত প্রেম || আরশি আয়াত (পর্ব - ৬)
আচমকাই চড়টা পড়লো বাঁ গালে।দিশা গালে হাত দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো রাগে অজগরের মত ফোঁসফোঁস করছে সায়েম।নিজের অপরাধ বুঝতে পারলো না দিশা।কি করেছে ও?কেনোই বা মার খেলো?বিষ্মিত কন্ঠে দিশা শুধালো,'কি করেছি আমি?মারলেন কেন?'
'মানে?'
'ন্যাকামি করিস না।ভালোয় ভালোয় বল কার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি?'
'একটা ফ্রেন্ড।'
'ফ্রেন্ড নাকি বয়ফ্রেন্ড।'
প্রথমে চড় এবং পরে উল্টাপাল্টা কথা শুনে ক্রমেই মেজাজ গরম হয়ে উঠলো দিশার।সেও ত্যাড়া গলায় বলল,'এটার কৈফিয়ত তো আমি আপনাকে দিব না।'
'তো কাকে দিবি?মনে রাখিস তোর বিয়ে আমার সাথে ঠিক হয়েছে।
দিশা উত্তর দিয়ে কথা বাড়ানোর প্রয়োজন মনে করলো না।পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলল,'ঠিক হলেও হবে না বিয়ে।'
সায়েমের মন চাইলো দিশাকে লবণ মরিচ ছাড়া কাঁচা চিবিয়ে খেতে।সে পাল্টা ঘুরে কিছু বলবে তার আগেই দেখলো দিশা চলে গেছে।আজকের মত রাগ হজম করলো।দিশার বাবা আছে বাসায় তাই বাসায় গিয়ে সিনক্রিয়েট করা ঠিক হবে না।তবে এর শোধ ভয়ংকর ভাবে তুলবে।
দিশা বাসায় আসতেই নার্গিস বলল,'কোথায় ছিলে?সায়েম ভাই এসে তোমাকে খুঁজে গেলো।'
থমথমে গলায় দিশা বলল,'দেখা হয়েছে তার সাথে।'
কথাটা বলেই আর দাঁড়ালো না।রুমে ঢুকেই দরজা আঁটকে দিলো।মাথার মধ্যে বাজছে আহাদের কথা গুলো।ছেলেটা কথা শেষ করে নি।বলেছিলো সবটা জানতে হলে তার সাথে আগামীকাল কোথাও যেতে হবে।দিশা রাজি হলো।আগামীকালের অপেক্ষায় চলে আসলো বাসায় কিন্তু কাল কক্সবাজার যাওয়াটা আটকাবে কিভাবে?অনেক ভেবেচিন্তে বুদ্ধি বের হলো একটা।এখন দেখার বিষয় এটা কতটুকু কাজে লাগে।
সায়েম অনেক্ক্ষণ আগেই এসে অপেক্ষা করছিলো দিশার জন্য।দিশা হেলেদুলে রেডি হয়ে নিজের লাগেজ নিয়ে বের হলো।সায়েম ওর দিকে তাকিয়ে শরীর জ্বালানো হাসি দিয়ে বুঝালো ও জিতে গেছে।দিশার ভাবান্তর হলো না যেন ও দেখতেই পায় নি কিছু।বাড়ি থেকে বের হয়ে লাগেজ গুলো যখন গাড়িতে তোলা হচ্ছিলো তখন আচমকাই দিশা মাথা ঘুরে পড়ে গেলো সবার সামনে।এমন হঠাৎ পড়ে যাবার কারণে সবাই ঘাবড় গেলো।দিশার বাবা,মা দ্রুত মেয়ের কাছে গেলেন।সায়েমও বুঝতে পারলো না কি হলো!দিশার মা কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন 'কি হলো আমার মেয়েটার!'
মইনুল ইসলাম সায়েম'কে বলল,'বাবা,একটা অ্যাম্বুলেন্স ডাকো।'
সায়েম হাত ঘড়িতে তাকিয়ে বুঝলো অ্যাম্বুলেন্স আসার অপেক্ষা করলে দেরি হয়ে যাবে।ওদের গাড়ি করেই নেওয়া ভালো।ও দিশার বাবাকে বলল,'আঙ্কেল অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হবে ওকে আমার গাড়িতে নিয়ে যাই।'
'হ্যাঁ এটাই ভালো হবে।চলো।'মইনুল ইসলাম সম্মতি দিলেন।
দিশাকে সবাই মিলে ধরে সায়েমের গাড়িতে ওঠানো হলো।সাথে ওর বাবা,মাও গেলো।হাসপাতালে আসার পর ওকে একটা কেবিনে নেওয়া হলো।ডাক্তার চেকআপের জন্য সবাইকে রুম থেকে বের করে দিলেন।যদিও সায়েম চেয়েছিলো থাকতে কিন্তু তাকে থাকতে দেওয়া হয় নি।সবাইকে বের করে দেওয়ার পর ডাক্তার যখন চেকআপ করছিলো তখনই দিশা হঠাৎ ভূতের মত চোখ খুললো।ডাক্তার বিষ্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,'আপনি ঠিক আছেন?'
দিশা মুখে আঙুল দিয়ে ফিসফিস করে বলল,'আস্তে,আস্তে বলুন।বাইরে থেকে শুনতে পাবে।'
'শুনলে সমস্যা কি?'
'ম্যাম,আমি একটা বিপদে পড়েছি।আমাকে একটু সাহায্য করুন।'
'কি?'
'এখানে যে ছেলেটিকে দেখলেন ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু আমি বিয়েটা করতে চাই না।ছেলেটা অনেক খারাপ।তার চরিত্রও ভালো না।'
'তাহলে বাবা-মাকে জানান।'
'লাভ নেই তারা চায় আমি ওকে বিয়ে করি।তারা আমার একটা কথাও শুনছে না।ওই ছেলেটা চায় আমি ওর সাথে বিয়ের আগেই কক্সবাজার যাই।কিন্তু আমি চাই না।আমাকে জোর করে নেওয়া হচ্ছে।'
'এখন আমি কি উপকার করতে পারি?'
'আপনি প্লিজ আমাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিন আর ওদের বলুন আমি প্রচন্ড দুর্বল তাই মাথা ঘুরে পড়ে গেছি।'
'আমি নাহয় করলাম এসব আপনার জন্য কিন্তু পরবর্তীতে কি করবেন?'
'আমার একটা বন্ধু আমাকে সাহায্য করবে বলেছে।'
'আচ্ছা।আপনি শুয়ে থাকুন।আমি ইনজেকশন দিচ্ছি।আপাতত চার-পাঁচ ঘন্টা এমনিই ঘুমাবেন।'
'থ্যাংকিউ ম্যাম।তাতেই চলবে।'
মেয়েটার কথায় অনেক মায়া হলো ডাক্তার শারমিনের।কতোটা অসহায় গলায় সাহায্য চাইছিলো তার কাছে।তাই তিনি আর না করতে পারেন নি।বাইরে এসে দিশার পরিবারকে মিথ্যাটাই বলা হলো।এটা শুনে সায়েমের এতোটা রাগ উঠলো যে পুরো হাসপাতাল চূর্ণবিচূর্ণ করপ ফেলতে ইচ্ছে করলো!সব প্ল্যান বরবাদ!সায়েম বুঝে গেছে এই মেয়েটা ইচ্ছা করে এসব করেছে।যতোটা সহজ সরল মনে হতো অতোটাও নয়।প্রতিপক্ষকে এত দুর্বল ভাবা মোটেও উচিত হয় নি।
হাসপাতাল থেকে বিকেলেই ডিসচার্জ পেলো দিশা।সায়েম দিশার জন্য ট্যুর ক্যান্সেল করে নি।ও দিশাকে ছাড়াই চলে গেছে।এটাই তো চেয়েছিলো দিশা।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন