উপন্যাস       :        অনন্ত প্রেম
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১১ই জুন, ২০২৪ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “অনন্ত প্রেম” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৪ সালের ১১ই জুন থেকে লেখা শুরু করেছেন।
অনন্ত প্রেম || আরশি আয়াত
অনন্ত প্রেম || আরশি আয়াত

৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

অনন্ত প্রেম || আরশি আয়াত (পর্ব - ৮)


আহাদের বোনের সাথে দিশা কথা বলেছে।এখন আর দ্বিধা নেই।আহাদ ওকে বড়বোনের বাসায় নিয়ে এলো।আহাদের বড়বোন আয়শা ভীষণ আন্তরিক।ওকে দেখে খুশি হয়ে বললেন,'তুমি এসেছো আমি খুবই খুশি হয়েছি।সেদিন যদি তুমি রুমিকে না বাঁচাতে তাহলে আমার মেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে।'শেষের কথাটুকু বলতে বলতে গলা কেঁপে উঠলো আয়শার।দিশা আয়শার হাত ধরে বলল,'আরে না আপু।সবকিছু আল্লাহর হাতে।মানুষ তো কেবল উছিলা।'
পরিচয় পর্ব শেষে আয়শা দিশাকে গেস্টরুমে নিয়ে গেলো।আহাদ বেশিক্ষণ থাকে নি।কাল আবার অফিস আছে।
খাওয়ার মত মন মানসিকতা নেই তাই আয়শাকে মানা করে বিছানায় এসে বসলো ও আর তখনই ফোন এলো সায়েমের।মন তো চাইছে না তবুও ফোন রিসিভ করলো।ওপাশ থেকে সায়েম বলল,'কেমন আছো সুইটহার্ট?'
'ফোন করেছেন কেন?'
'তুমি অসুস্থতার নাটক করতে পারলে আমিও একটু খোঁজখবর নেবার নাটক করতেই পারি তাই না সুইটহার্ট?'
এই কথার বিপরীতে দিশা কিছুই বলল না।অবশ্য দিশার বলার অপেক্ষা করেও নি সায়েম।হুমকি স্বরুপ বলল,'এবার তো বেঁচে গেলো কিন্তু নেক্সট টাইম তোমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।'
দিশা ব্যঙ্গাত্মক হেসে বলল,'সে দেখা যাবে।কার দৌড় কতটুকু।'
কথাটা বলেই ফোন রেখে দিলো দিশা।সায়েমের কথায় বোঝা গেলো ও এখনো বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবার ব্যাপারে কিছুই জানে না।কিন্তু যখন জানবে ওকে রিজেক্ট করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে দিশা তখন নিশ্চিত কিছু একটা করার চেষ্টা করবে।
আহাদ ফোন দিয়েছে ঘন্টাখানেক পর।দিশা তখনও ঘুমায় নি।ভাবছিলো কিছু একটা।ফোন রিসিভ করতেই ইতস্তত স্বরে আসাদ বলল,'ঘুমিয়ে পড়েছিলেন নাকি?'
'না না,ঘুমাইনি।'
'আচ্ছা।ফোন দিয়েছিলাম কাল যদি ফ্রী থাকেন তাহলে আপনাকে যেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো সেখানে নিয়ে যাব।'
'আমি কাল ফ্রী।কখন যাব আমরা?'
'দুপুরের পর।'
'আচ্ছা।'
আহাদ ফোন রেখে দিলো।
ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো দিশার।কালরাতে এতকিছু ভাবতে ভাবতে কখন ঘুম এসেছে খেয়ালই নেই।বাড়ি থেকে বের হবার পর বাবা-মা এখনও ফোন দেয় নি তবে এখন উষার ফোনে ঘুম ভাঙলো।দিশা উঠে বসে রিসিভ করলো।ওপাশ থেকে উষা হিসহিসিয়ে বলল,'এসব কি শুনছি আমি?'
'কি শুনছো?'
'নাটক করছিস?তুই নাকি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিস?'
'হ্যাঁ।আমার হাতে দু'টো অপশন ছিলো।প্রথমটা তোমার ওই ফালতু ভাসুরকে বিয়ে করা,আর দ্বিতীয়টা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া।আমি দ্বিতীয়টাই বেছে নিয়েছি।ভালো করেছি না?'
'তুই সবসময় নিজের পায়ে কুড়াল মারিস কেন?তুই কত বড়ো ভুল করেছিস নিজেও জানিস না।'
'জানার দরকারও নেই।রাখছি।'
দিশা আর কথা বাড়ালো না।কেটে দিলো কল।ইতিমধ্যে সায়েমও ফোন করে ফেলেছে কয়েকবার।তারমানে খবর ততোদূর পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে।
দুপুরে আহাদের কল পাওয়ার পর দিশা বেরিয়ে গেলো।আহাদ অপেক্ষা করছিলো বাসার নিচেই।দিশাকে দেখে বলল,'বাসা থেকে কল করেছে কেউ?'
'বাবা-মা কেউ করে নি।উষা করেছে শুধু আর হ্যাঁ সায়েমও ফোন করেছিলো কিন্তু রিসিভ করিনি।'
'গুড মুভ।এখন ও প্রতিশোধপরায়ণা হয়ে উঠবে।আর এতেই আমাদের লাভ।'
'প্রতিশোধ নিতে চাইবে সেটা আমিও জানি তবে আমাদের লাভ কিভাবে সেটা বুঝলাম না।'
'বুঝবেন।এখন যে জায়গায় নিয়ে যাব সেখানে গেলে সব বুঝবেন।'
দিশার কৌতুহল বাড়লো।আসলে কি দেখাতে চায় আহাদ?
সামনেই এসিডে ঝলসে যাওয়া এক কদাকার মুখশ্রী।বিষ্ময়ে বাকরুদ্ধ দিশা।সামনের মেয়েটি দেখতে পায় না।তাকে কোথাও আনা নেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক কাউকে থাকা লাগে।আহাদ মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলো।আশ্চর্যজনক ভাবে মেয়েটি খুশি হয়ে উঠলো বলল,'ভাই,তুমি এসেছো?'
আহাদ মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,'আমি এসেছি বোন।'
মেয়েটি খুশি হয়ে উঠলো আবার পরক্ষণেই অভিযোগের সুরে বলল,'তুমি অনেক পঁচা হয়ে গেছো ভাই।আমাকে দেখতেও আসো না।'
আহাদ মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে বলল,'স্যরি আমার মিষ্টি বোনটা।এবার থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে আসব।'
মেয়েটি খুশি হয়ে হাসলো।বাড়িতে ওর বাবা-মাও থাকেন।আহাদ বাবা-মায়ের সাথে দেখা করে দিশাকে পরিচয় করিয়ে দিলো নিজের কলিগ হিসেবে।এখনই কাউকে কিছু বলা ঠিক হবে না।
দেখা-সাক্ষাৎ শেষ করে কিছুক্ষণ থেকে বেরিয়ে এলো ওরা।পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে আহাদ বলল,'কিছু বুঝতে পেরেছেন?'
দিশা ওপর-নিচ মাথা দোলালো।আহাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,'জুই তখন ক্লাস টেনে।বড় আপার নতুন বিয়ে হয়েছে আর আমি উন্নত পড়াশোনার জন্য বিদেশের মাটিতে পা রাখি।ভালোই চলছিলো সবকিছু।কিন্তু হঠাৎ একদিন শহরের একটা হাসপাতাল থেকে ফোন আসে বাসায়।জুইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ওর মুখ এসিডে ঝলসে দেওয়া হয়েছে।এটা কে করেছে জানেন?ওই কু*ত্তার বাচ্চা!ওকে আমার বোন রিজেক্ট করেছিলো।পরে বাড়াবাড়ি করায় সবার সামনে অপমান করেছিলো।এই অপমান সহ্য করতে না পেরে শু*য়োরের বাচ্চা আমার বোনটার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে।ওর নামে কেইস করা হয়েছিল কিন্তু টাকার আর পাওয়ারের জোরে বেঁচে যায়।এরপর আর আগায় নি আমার পরিবার।তখনও আমি এসব কিছু জানি না।পরে জানতে পরে চলে আসি দেশে।ওকে খুঁজতে শুরু করি পরে জানতে পারি দেশের বাইরে চলে গেছে।আমি হাল ছাড়ি নি অপেক্ষা করছিলাম ওর জন্য।অবশেষে পেয়েই গেলাম।ওকে ওর নিয়তি টেনে এনেছে আমার কাছে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন