উপন্যাস : বজ্রমেঘ
লেখিকা : ফাবিয়াহ্ মমো
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১৩ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
লেখিকা ফাবিয়াহ্ মমোর “বজ্রমেঘ” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৪ সালের ১৩ই এপ্রিল থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
বজ্রমেঘ || ফাবিয়াহ্ মমো |
৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
বজ্রমেঘ || ফাবিয়াহ্ মমো (পর্ব - ৬)
দুটো রক্ত হিম করা চোখ কাঁপন ধরিয়ে দিল। চোখদুটো যেন জ্বলন্ত অঙ্গার। যেন ভস্মীভূত আগুন। দাবানলের বিক্ষুদ্ধ ক্রোধ ঠিকরে ঠিকরে বেরুচ্ছে যেন। একদণ্ড ওই চোখে চোখ রাখা সম্ভব নয়! দরজার দিকে সহসা চোখ পরতেই চরম আঁতকে উঠলেন বৃদ্ধা দাদী! গা শিউরোনো ভয়ে আচমকা বুকের ভেতরটা খপ করে মোচড়ে উঠল! এ কী সর্বনাশা চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ও? তিনি কী ভয়াবহ কোনো অপরাধ ঘটিয়ে ফেলেছেন? তার আদরের প্রিয় নাতী ওইভাবে কেন তাকিয়ে আছে? ওই সুন্দর নীল চোখদুটো ওভাবে . . ওরকম . . ভয়ে গলার কাছটায় কাঁটা বিঁধলো বৃদ্ধার। নাজুক হৃৎপিণ্ডে ধ্বক্ ধ্বক্ করে হাতুড়ি পেটা পড়ছে। তিনি শঙ্কিত চেহারায় অস্থির হয়ে ঠেলেঠুলে হাসি ছুঁড়লেন,
- শো-শো-শোয়েব, দাদু তুমি এসে গেছ! এসো দাদু, ভেতরে এসো। কতক্ষণ ধরে তোমার অপেক্ষা করছি।
ঠোঁটের মৃদু হাসি, কথার আবেগী বুলি কোনোটাই ছুঁতে পারল না তাকে। তেমনি নির্জীব, নিঃসাড়, নির্লিপ্ত মুখে চেয়ে আছে শোয়েব ফারশাদ। দুহাতের বজ্রমুঠিতে ফুলে থাকা নীলাভ শিরাগুলো অতি ভয়াবহ দেখাচ্ছে। চোয়ালের সুদৃঢ় কাঠিন্য কোনোভাবেই স্বাভাবিকত্বের পরিচয় নয়। বৃদ্ধা ফাতিমা নাজ বুঝতে পারলেন তার সামান্য মিথ্যা এক মিথ্যাতে কালঝড় ধাবিত হয়েছে। যার করুণ পরিণাম নাতীর মুখে ওরকম কঠিন বজ্রকঠিন ছাপ! দরজার চৌকাঠ মাড়িয়ে সশব্দে ভেতরে ঢুকে অদূরবর্তী থাকা রোকেয়ার দিকে তাকাল শোয়েব। নিষ্পলক ক্রুদ্ধ চাহনির মাঝে চাপা ইঙ্গিতটি বুঝিয়ে দিলে সম্মতির সাথে মাথা নাড়িয়ে প্রস্থান করল রোকেয়া। যেন ভাইজানের অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ইশারা সে অকপটে বোঝে! ফ্লোরে হাঁটু গুঁজে জুতোর কালো ফিতাগুলো খুলতে লাগল শোয়েব। দাদীর কীর্তিকাণ্ড, তার অবস্থা, তার বিশেষ ভীত চাহনির প্রতি ভ্রুঁক্ষেপ নেই। কানে এখনো শুনতে পেল দাদী অনুতপ্ত সুরে আস্তে আস্তে বলছে,
- দাদু? শোয়েব, তুমি কী রেগে গেলে দাদু? আমি তো তোমার সঙ্গে মশকারা করতে চেয়েছিলাম। তুমি এমন ভুতের বাংলোয় একা থাকো বলেই অজানা ভয়টা বাজিয়ে দেখেছি। তুমি যে সত্য সত্য-ই ভয় পাবে তা তো বুঝিনি দাদু। ও দাদু? কিছু তো বলো? ওভাবে ঠোঁট সেলাই করলে ভালো লাগে?
জুতোজোড়া খুলে প্যান্টের বাঁ পকেটে ফোন ঢুকিয়ে সোজাসুজি দাঁড়ায় শোয়েব। দাদীর দিকে দু কদম এগিয়ে এসে দরাজ গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠল সে,
- তুমি কী জানো, তুমি ক্ষমার অযোগ্য অন্যায় করেছ? নিজেকে আমার জায়গায় একবার রাখো। যে উত্তরটা পাবে সেটা কোনোদিন অন্যের সঙ্গে কোরো না। ভূতের বাংলো বলে বারবার অপমান করে যাচ্ছ, কিন্তু এই বাড়িটা আমার। এখানে নিশ্চিন্তে আমি ঘুমোই। শান্তিতে বসবাস করি। কোনোদিন বিপত্তি ঘটেনি। অপমান কোরো না! আজ মেজাজ বড্ড খারাপ। রুমে যাও। রোকেয়াকে বলে দিয়েছি চা-নাস্তা এনে দিতে।
বৃদ্ধার হতভম্ভ মূর্তিকে পাশ কাটিয়ে সোজা সিঁড়ির দিকে চলে গেল শোয়েব। আজ মেজাজ মর্জির উচ্চতা অস্বাভাবিক রকম খারাপ। সাত-সকালে রেহানা হানিফের ধূর্ত চাল, অসহ্য বিষযুক্ত কথা, তার উপর বাড়িতে এসে দাদীর মিথ্যা অকপট তামাশা। দুটোই অসহন পর্যায়ে মেজাজ খিঁচড়ে দিয়েছে। বৃদ্ধা ফাতিমা নাজ অপলক চোখে শোয়েবের যাওয়াটা দেখলে হঠাৎ ঝনঝন করে হাতের ফোনটা কাঁপুনি দিয়ে উঠে। কলার নামটা দেখে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে পরিষ্কার নারীকণ্ঠটি শুধিয়ে উঠল,
- পৌঁছে গিয়েছ আম্মা?
বৃদ্ধা হাপিত্যেশের সুরে দম ছেড়ে বলেন,
- পৌঁছে গিয়েছি। তবে এখানকার পরিস্থিতি বড্ড গরম। তোর ভাইপো আমার উপর বেজায় চটে গেছে। খেপে টুপে কথা বন্ধ। আমার দিকে ঠিক করে পর্যন্ত তাকায়নি! আমি তো ভয় পাচ্ছি ফরিদা। ও কী আসাদকেও ছাড়িয়ে ফেলছে না? এভাবে তো হয় না ফরিদা। এভাবে ফরিদা।
ওপাশ থেকে নারীকণ্ঠটি যেন ভীষণ বিচলিত হয়ে পড়ল। চিন্তিত সুরে তৎক্ষণাৎ শুধিয়ে বলল,
- কী হয়েছে আম্মা? যেতে না যেতেই কী বিপত্তি আবার বাঁধল? কী করেছ? ও তো যত্রতত্র কারণে রাগ করবে না। শোয়েব কেমন তা তো তুমি জানো। ঘটনা কী ঘটেছে সেটাই খুলে বলো।
সোফার নরম তুলতুলে গদিতে গা ছেড়ে দিয়ে কিছুটা আরামবোধ করলেন ফাতিমা। ভারি একবুক শ্বাস নিঃসৃত করতেই ভীষণ উদাসী বিষণ্ণ সুরে বলে উঠলেন,
- আমি ওর সাথে সামান্য একটু দুষ্টুমি করেছিলাম। ছোটবেলার মতো। ফোন-টোন দিয়ে একটু মজা করে বুঝিয়েছি আমার বড় বিপদ! ও সত্যিই ভেবেছে আমার কোনো বিপদ ঘটে গিয়েছে। তাই সবকিছু ছেড়েছুড়ে ছুটে এসে আমার সুস্থ শান্ত অবস্থা দেখল। ব্যস, আর কোনো কথা নেই, বার্তা নেই। দুটো ঝরঝর করে কঠিন কথা শুনিয়ে রুমের পথে চলে গেল। শূন্য খাঁ খাঁ বাড়িটায় কীভাবে ও থাকছে? বল তো। আমারই তো নাভিশ্বাস উঠে যাবে। তোর ভাইপো কী একা একা থাকাতে ফাপড়ে ভুগে না?
কলের বিপরীত প্রান্ত থেকে চাপা দীর্ঘশ্বাসটা ফোঁস করে ছাড়ল ফরিদা। বৃদ্ধা মায়ের কণ্ঠস্বরে যেটুকু ঘটনা আঁচ করবার ছিল তা সে বুঝে গেছে। তার মা যে মন ভালো থাকলে একটু আধটু দুষ্টু কীর্তি ঘটিয়ে থাকেন এটা তো অজানা বিষয় নয়। কিন্তু শোয়েবের সাথে এ ধরণের কীর্তিকলাপ আজও সহনশীল পর্যায়ে আসেনি। ছেলেটা এসব মোটেও সহ্য করতে পারে না। হয়তো আজও দাদীকে ঠাণ্ডা ক্রোধে কথা শুনিয়ে প্রস্থান করেছে সে। ছোট ভাই আসাদের বেলাতেও একই রূপের বহিঃপ্রকাশ দেখেছে। কিন্তু তা ছিল অল্প। যৎসামান্য। তবে আসাদের পুত্র শোয়েবের বেলায় সেই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে অবর্ণনীয় ভয়ানক। বিপদসীমায় না উঠলে সবাইকে মান্য-গণ্য শান্তভাবে সম্মান প্রদর্শন করবে, কিন্তু বিপদসীমাটা আচানক ছাড়িয়ে গেলে কাউকে তিলবিন্দু তোয়াক্কা করবে না! ফরিদা ভীষণ ঠাণ্ডা সুরে মাকে বুঝিয়ে বলল,
- ওর সঙ্গে ওরকম মশকারা কোরো না আম্মা। খবরদার। ফলাফল খারাপের দিকে যাবে। তুমি কেন ওকে আর দশটা নাতীর মতো ভাবতে যাও? আসাদ কেমন ছিল মনে নেই? আসাদ কিন্তু কম চটা ছিল না। শোয়েব তোমার বাকী নাতীদের মতো ঢলঢলে নয়। তুমি বারবার এটা উপেক্ষা করছ। ওকে খেপিয়ে তুলো না। কেমন আছে এখন? ওখানকার অবস্থা কেমন দেখছ?
ফাতিমা নাজ সোফার আসনে মাথা হেলিয়ে আরাম করে বসলেন। পিঠে বার্ধক্যের ব্যথাটা টনটন করছে। তবু মেয়েকে বুঝতে না দিয়ে সরল সুরে বলে উঠলেন তিনি,
- ভালো আছে রে। সুস্থই দেখছি। মনে হচ্ছে এখানকার পরিবেশ বেশ পছন্দ করেছে। জায়গাটা নিয়ে যতই ভূতুড়ে বলে খেপাই না কেন, তুই এলে বুঝতি জায়গাটা কত সুন্দর। মন বসে যাবে। মায়া মায়া লাগবে। কী যে শান্তি....আহ!
বৃদ্ধার কোমল মিশ্র কণ্ঠের কাছে সবটুকু সজীব উচ্ছ্বাস টের পায় ফরিদা। মনের কল্পনায় অনুভব করে একটি ছিমছাম বাড়ি, চারিদিকে সুবিশাল গাছ-গাছালি, মাথার উপর সুনীল সুছাঁদ মুক্ত আকাশ, বাতাসে ধূলো-ময়লাহীন সতেজ শ্বাস . . . বাংলার নরম সবুজ রূপ! বুক ভর্তি করে শান্ত শ্বাসটুকু টেনে নিয়ে নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলে উঠল,
- ও যা যা খেতে চায়, একটু কষ্ট করে রেঁধে দিয়ো আম্মা। ঝাল কম দিবে। ওখানে কী সব খেয়ে বেড়াচ্ছে সেদিকে কড়া নজর রাখবে। তোমার ব্যাগের ভেতরে . . . .
ফোনের ওপাশে অবিরাম কথা বলে চলল ফরিদা। সেদিকে অন্যমনষ্ক হয়ে আছেন বৃদ্ধা। তিনি সুদূর আকাশে ক্ষীণদৃষ্টি মেলে কী যেন ভেবে যাচ্ছেন। বার্ধক্যের এমন বয়সে এসে জীবনের অধ্যায়গুলো আবারও মনে করতে চাইছেন। কিন্তু ঝাপসা ঝাপসা স্মৃতিতে কিছুই মনে পড়ছে না। কিছুই ধরা দিচ্ছে না। শুধু মনে পড়ছে, আসাদের ঘর আলো করে যেদিন পুত্র সন্তানের আগমন হলো, সেদিনটি ভারি কোমল ছিল। পৃথিবীর দীর্ঘতম রাতকে সাক্ষী রেখে ফুটফুটে পুতুলটি কোলজুড়ে এসেছিল। হঠাৎ কলের ওপাশ থেকে তীব্র ঝাঁজালো সুরে ডেকে উঠল ফরিদা,
- আম্মা! কোথায় গেলে তুমি? কথা কী শুনছ না? হ্যালো? . . . হ্যালো!
হঠাৎ পিলে চমকে উঠে মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠেন বৃদ্ধা। চিন্তার সুঁতো ছিঁড়ে যেতেই ত্রস্তসুরে বলে উঠেন,
- হ্যাঁ, শুনছি। বল।
- কী বলেছি শুনেছ? ছয়টা ছবিসহ একটা খাম তোমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছি। মনে করে খামটা শোয়েবকে দেখাবে। সেখান থেকে একজনকে পছন্দ করলে আমি আর দেরি করব না। খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি, সবগুলো মেয়েই চমৎকার। প্রত্যেকে ভদ্র পরিবারের মেয়ে। দেখতেও বেশ রূপবতী। ওর পছন্দ না হবার কোনো কারণ নেই।
ফাতিমা ভড়কে গিয়ে শুধোলেন,
- তুই কী মুখে ঘাস নিয়ে আছিস? আক্কল নেই? খাম দেখলে এক্ষুণি তিন টুকরা করে বাইরে ফেলবে জানোস না?
- আশ্চর্য কথাবার্তা বলো তো! এগুলো কী ধরণের আচরণ? ব্যাটা মানুষ কুমারব্রত পালন করবে নাকি?
- এই কথা ওর সামনেও উচ্চারণ করিস না। এমনিই আমার নাতী আমার উপর প্রচণ্ড খেপে আছে। এর মধ্যে তুই আগুনে ঘি ঢালার কুকর্মটা করছিস। ও পছন্দ করতে পারলে বিয়ে করুক। তুই খবরদার এই কাজে ঢঙ ঢঙ বাজাতে আসবি না। তোর খাম দিয়ে রাখবনি। এখন রাখি। মাথা ধরেছে। ঘুম দিব।
কলটা কেটে ছোট্ট বাটন ফোনটা পাশে রাখলেন ফাতিমা। মাথাটা সত্যিই একটু ধরে এসেছে। জার্নি করে আসার পর বিশ্রাম নেননি তিনি। এর মধ্যে রোকেয়া সামনের টেবিলে ট্রেভর্তি নাস্তা রেখে গেছে তা খেয়াল করলেন মাত্র। একগ্লাস ঠাণ্ডা লেবুর শরবত কুঁচকানো হাতে তুলে নিতেই আচমকা কে যেন সালাম দিয়ে উঠল,
- আসসালামুয়ালাইকুম দাদী। ভালো আছেন?
সবে চুমুক দিতে নিচ্ছিলেন বৃদ্ধা, ঠিক তখনি ঠোঁটদুটো স্থির করে সপাটে দরজামুখো তাকালেন। চৌকাঠে দাঁড়ানো ড্রাইভার লোকটি সমীহের সুরে বলল,
- স্যার, গাড়িতে একটা ডায়রি ফেলে গেছে। ওটা দিতে আসলাম দাদী।
ফাতিমা লোকটাকে চিনতে পেরে ডানহাত দিয়ে ভেতরে আসার ইঙ্গিত করলেন। ড্রাইভার হাসান জুতো ছেড়ে ভেতরে ঢুকলে ডায়েরিটা বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেল। এক কাপ চা খাওয়ার জন্য তোষামোদ করলেন ফাতিমা, কিন্তু কর্মপরায়ণ ড্রাইভার সে কথা শুনল না। ফাতিমা ডায়েরিটা হাতে নিতেই চরম আহাম্মক বনে গেলেন। কোনোভাবেই বুঝতে পারছেন না তার নাতীর কাছে মেয়েদের মতো ডায়েরি কেন? এই বস্তু দিয়ে ওই ব্যাটা করেটা কী? ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তির ফলে চোখদুটো ছোট ছোট করে ডায়েরির উপরিভাগটা দেখতে লাগলেন বৃদ্ধা। নীচের দিকে ডানকোণাটায় কী যেন লেখা আছে। ফাতিমা শিক্ষিত। ইংরেজি বর্ণগুলো ঝাপসা দৃষ্টির কাছে কোনোমতে উচ্চারণ করতে লাগলেন, S...H...E...H...Z...A...N...A . . . SHEHZANA . শেহজানা মানে!
ইয়া খোদা! কী দেখছেন কী তিনি! দুহাতে চোখ ডলে আবারও তাকালেন ফাতিমা। শেহজানা? কী সর্বনাশ! তার নাতী কী চুটিয়ে প্রেম করছে? এই ডায়েরি, এই শেহজানা . . . তার মানে ? বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে দারুণ উত্তেজনায় শিরশিরিয়ে উঠেন ফাতিমা। বুকের ভেতরটা শান্তি শান্তি কাজ করছে! মুখে ওই বদটা একবারও স্বীকার করল না প্রেম করছে! অথচ, ভাবখানা এমন কোনো মেয়ে সামনে দাঁড়ালে জীবনটা ধ্বংস হয়ে যাবে! ফাতিমা আবারও কাঠ মলাটের ডায়েরিটায় দৃষ্টি দিলেন, বয়সের ভারে চামড়া কোঁচকানো হাতে ছুঁয়েও দেখলেন। এক অনির্বচনীয় সুখের কাছে ডুবো ডুবো হয়ে ডায়েরিটা খুললেন তিনি। চরম বিস্ময়ে বশীভূত হয়ে কাঠ হলেন তিনি! অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে রইলেন ফাতিমা নাজ বেগম! মুখে কোনো শব্দ জুটল না . . . .
.
সমস্ত রুম তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ডায়েরিটা পায়নি শাওলিন। আলমারি, বিছানা, লাগেজ, গাড়ি সমস্ত এলোমেলো করে খোঁজ চালিয়েছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। ডায়েরিটা যেন গায়েবি বস্তুর মতো পৃথিবী থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। হাসপাতালে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, তারাও কোনো তথ্য উপাত্ত দিতে পারেনি। বরং ডায়েরির মতো মামুলি বস্তু নিয়ে তারা মাথা ঘামাতে ইচ্ছুক নন। মোবাইল ডিভাইস হলে অন্য বিষয়। এ কথা শোনার পর আশার হালটা পুরোপুরি ছেড়েই দিয়েছে। হয়তো খোলা হ্যাণ্ডব্যাগ থেকে ভুলবশত ডায়েরিটা পড়ে গিয়েছিল। খুব উত্তেজিত থাকায় সেদিকে ধ্যান ছিল না ওর। গভীর বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে সময়গুলো বড় দুর্বিসহ ঠেকল। কারো কোনোকিছু খোয়া গেল না, এদিক ওদিক হলো না, হারালো শুধু ওরই প্রিয় মূল্যবান জিনিস। মানুষকে সাহায্য করলে এভাবেই ক্ষতি পূরণ হয়, তাই না? এভাবেই নিজের সর্বস্ব দিয়ে সাহায্যের প্রতিদান পাওয়া লাগে? স্রষ্টা কী ভুক্তভোগী বানানোর জন্য তাকেই নির্বাচন করছে? সে কী খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছে? কেন সে-ই সবসময় বিপত্তির মুখে পড়ে? কেন, কী জন্য? এমন ভয়াবহ খারাপ কু-চিন্তার কাছে নত হয়ে যাচ্ছিল শাওলিনের মন। কিছুতেই নিজেকে বুঝ দিয়ে পারছিল না সবকিছুর পেছনে সে দায়ী নয়। তার ভাগ্য দায়ী নয়। বরং স্রষ্টার পরিকল্পনা অকল্পনীয় অচিন্তক। দুচোখ ভিজে টপ টপ করে অশ্রুফোঁটা ঝরছে। ফরসা টাইলসের ওপর গোল বিন্দুকণা তার ভঙ্গুর মনকে প্রকাশ করছে। সে যে ভেতর থেকে দুর্বল, নাজুক, ভেঙে চুরচুর হয়ে আছে তা প্রকাশ করেনি একদণ্ড। কাউকে বুঝতে দেয়নি কতখানি রক্তাক্ত হয়ে আছে ভেতর-কোণ। হাতের উল্টোপিঠে আবারও দুচোখের অশ্রু ডলে নিজেকে সামাল দিয়ে উঠল। ওয়াশরুমের দরজায় মৃদু চাপ দিয়ে বেসিনের ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিল অশ্রু-মুখ। আয়নায় চোখের লালচে আভা, লালচে নাক স্পষ্ট বোঝা গেলেও গলাটা কিছু স্বাভাবিক করে বেরিয়ে পড়ল শাওলিন।
রাতের চাঁদভাসি আকাশে একটি একটি তারা ফুটছে। চুইয়ে পড়া চাঁদের আলোয় চারপাশ বড্ড উজ্জ্বল। খালি চোখে দূর দিগন্তের অপরূপ মায়া হাতছানি দিয়ে ডাকছে। গাছের ডালে ডালে খেলে যাচ্ছে দুরন্ত ঠাণ্ডা হাওয়া। বুকের ভেতরে সতেজ হয়ে উঠছে অবাধ্য মন। রাত বোধহয় নটার কাছাকাছি। যেখানটায় এসে শাওলিন বসেছে, সেটা সেলিমদের আড্ডা থেকে বেশ খানিকটা দূরেই বলা চলে। তবু সেলিমদের স্পষ্ট এখান থেকে দেখা যাচ্ছে। কাঠ কয়লা দারুণ কম্বিনেশনে দারুণ গ্রিল করছে ওরা। সঙ্গে দুটো বার-বি-কিউ চিকেন। হৈ হুল্লোড় করে জায়গাটা মাতিয়ে তুললেও শাওলিনের জায়গাটায় শব্দ কম আসছে। মাটির উঁচু ঢিবি মতোন জায়গায় ঘাস ছাওয়া বলে আরামে জুতো ছেড়ে বসে আছে ও। দু'হাঁটু বুকের কাছে ভাঁজ করে হাতদুটো হাঁটু জড়িয়ে রেখেছে। হাঁটুর থুতনি রেখে চুপ করে সামনে থাকা খালের দৃশ্যটা আপন মনে দেখছে। চওড়া খালের টলটলে পানির ওপর জোৎস্নার আলো কী যে মায়াবি লাগছে! চোখ আর ফেরাতে ইচ্ছে হলো না। ওভাবেই অপলক তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ কেমন জানি অনুভব হলো। নাক টেনে জোরে জোরে ক'বার নিঃশ্বাস নিতেই বাতাসে অন্যরকম একটা ঘ্রাণ পেল। এ ঘ্রাণ কোনো ফুলের নয়, জন্তুর নয়, বরং মনুষ্য দেহের! কড়া, তীব্র, পুরুষোচিত ঘ্রাণের মতো তীক্ষ্মভেদী! আচমকা খসমস শব্দ করে ধপ করে যেন বসল। তৎক্ষণাৎ সেই শব্দ উৎসের দিকে দৃষ্টি ফেলে বাঁয়ে তাকাল শাওলিন। ঘুটঘুটে অন্ধকারের কাছে ওদিকটা কয়লা বর্ণ! কিন্তু স্পষ্ট শুনেছে কেউ ওখানে এইমাত্রই বসলো! চারপাশ জুড়ে তীব্র কড়া ঘ্রাণ ছড়িয়ে ঠিক ওদিকটায় কেউ বসে আছে! অজানা অচেনা ভয়ে বুকটা চুপসে এলো ওর। বিপদ নাকি? কে ওখানে? অন্ধকারটা ওদিকে গুমোটপূর্ণ কেন? হাঁটু সোজা করে দৃষ্টিযুগল শাণিত করে শুধাল,
- কে ওদিকে? জবাব দিন! আমি জানি এই মুহুর্তে কেউ একজন বসে পরেছে।
কয়েক মুহুর্ত কোনো সাড়াশব্দ এলো না। নিস্তব্ধ, অসাড়, কয়লা রঙা অন্ধকারে সব নিঃশ্চুপ! শাওলিন এবার চরম ভয় পেল। এমনিই দুকাঁধে বিপদের ঝুলি সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে। এখন আবার ওদিকটায় কেমন পৈশাচিকতা এসেছে? আবার গলা ছাড়ল শাওলিন,
- কে ওখানে?
- বনমানুষ।
সেই ভারযুক্ত কণ্ঠের কাছে গা শিউরে উঠল শাওলিনের। রাতের অন্ধকারে ওই কণ্ঠের স্কেল অতি লোমহর্ষক! গম্ভীর-ভেদী ভরাট স্বর যেকোনো সুস্থ মানুষকে কাঁপিয়ে তুলতে পারবে। শাওলিন কয়েক সেকেণ্ড স্তব্ধীভূত থাকার পর কিছুটা সাড় ফিরে পেয়ে বলল,
- ব-বনমানুষ কী?
প্রশ্নের পিঠে আবারও অখণ্ড নীরবতা এসে ভিড়ল। যেন আগন্তুক পুরুষটি চট করে জবাব ছুঁড়তে আগ্রহী নয়। শাওলিন পরপর কয়েকটি ঢোক গিলে নিজেকে চূড়ান্ত ঠাণ্ডা করে নিল। কিয়ৎক্ষণ পর ফোঁস করে শ্বাস নির্গতের শব্দ হলে আগন্তুক মানুষটি বলল,
- এতো রাতে এখানে কী করছেন? এখানটা মেয়েদের জন্য নিরাপদ নয়। বাড়ি যান। রাত করে কখনো বাইরে বেরোবেন না। জায়গাটা ছাড়ুন।
অচেনা ভদ্রলোকের কথায় কিছুটা অপ্রতিভ হলো শাওলিন। এভাবে কণ্ঠ তীক্ষ্ম করে কেউ তাকে দুপ্রস্থ শোনায়নি। মাথায় গরম ক্রোধটা ঝিমঝিমিয়ে উঠলেও চুপ করে সেখানটায় বসেই রইল সে। বাঁ চোখের কোণা দিয়ে আড়চোখে দেখল, লোকটা লাইটার জ্বালাচ্ছে। স্টিলের লাইটার থেকে সদ্য জ্বলিত এক টুকরো আগুন খামের একটা কোণা জ্বালিয়ে দিচ্ছে। লাইটার বন্ধ করতেই খামের ডানকোণা থেকে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন। পুড়তে থাকা কাগুজে খামটা ছুঁড়ে দিতেই মাটির উপর আছড়ে পড়ল। অবাক হয়ে শাওলিন দেখল, খামের উপরদিককার মুখ থেকে কিছু মেয়েদের ছবি উঁকি দিয়ে আছে। চোখের সামনে জ্বলতে থাকা হলদে আলোয় লোকটাকে দেখল শাওলিন। কালো রঙের হুডিতে সমস্ত শরীর ঢেকে আছে। নাক পর্যন্ত হুডি নামানোর ফলে চেহারার কোনো অংশই উন্মুক্ত নয়। এ যেন রহস্যময় খুনিদের মতো অদ্ভুত বিচিত্র বেশভূষা! শাওলিন ব্যাপক কৌতুহল নিয়ে কিছু বলবে, তার পূর্বেই লোকটা ঠাণ্ডা গলায় বলে উঠল,
- একা এসেছেন?
- না।
- বন্ধুদল কোথায়?
- সামনের খোলা মাঠে।
- আপনি একা বসে আছেন কেন? জয়েন করুন।
- না। ওখানটায় বসে থাকতে ভালো লাগেনি। যাব না।
- ওখানটায় সবসময় আমি বসি। আজ জায়গাটা বেওয়ারিশ দখল করেছেন।
কথাটার ভেতর 'বেওয়ারিশ' শব্দ শুনে কেন জানি হাসি পেল শাওলিনের। টলটলে পানি থেকে চোখ সরিয়ে বাঁদিকে চেয়ে বলল,
- আমি দুঃখিত। এদিকে দুদিনের অতিথি হিসেবে আছি। জানতাম না এমন একটা পরিত্যক্ত জায়গায় বসে কেউ রাত্রিবিলাস করে। আপনি চাইলে জায়গাটা পরিবর্তন করে নিতে পারেন।
- প্রয়োজন নেই। বসে থাকুন। মেহমানদের জন্য সাময়িক সুবিধা বরাদ্দ করা যায়।
বাঁদিকের হলদে আলোটা ক্রমশ কমে আসলো। আবারও নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ডুব দিল জায়গাটা। চোখটা সেদিক থেকে সরিয়ে দূরবর্তী খালের পানিতে দৃষ্টি ফেলল শাওলিন। ডানদিক থেকে হালকা ভেসে আসছে নাযীফের অট্টহাসি। জায়গাটা এমন শান্ত, চুপচাপ, শব্দহীন যে চোখের পাতায় আদুরে ঘুম ছুটে আসে। শোঁ শোঁ হিমস্পর্শী হাওয়ার কাছে শিরশির করে গা। পাতলা ওড়নাটা গলা থেকে নিয়ে সমস্ত শরীর জড়িয়ে বসলো শাওলিন। বন-বনানীর ঘন নিবিড় জায়গায় ঠাণ্ডা মৌসুম পড়ে? এজন্যই কী সেলিম ও শ্রেষ্ঠারা ভারি পোশাক পড়ে বেরিয়েছে? শরীরটা বরফি ঠাণ্ডার মতো কাঁটা দিয়ে উঠল ওর। আরো জড়সড় হয়ে বসতেই কুঁকড়ে খিঁচে এইটুকুনি হয়ে রইল।
- মেহমান কী গরম পোশাক আনেননি?
শাওলিন সপাটে মুখটা বাঁদিকে ঘুরাল। লোকটা কী হুডির আড়ালে কোনোভাবে ওকে দেখছে? কোনোভাবে কী গোপন চক্ষু দিয়ে দৃষ্টি রেখেছে? কণ্ঠে চাপা বিষ্ময়বোধ নিয়ে প্রত্যূত্তর করল শাওলিন,
- আমি জানতাম না রাত বাড়লে এদিকে ঠাণ্ডা পড়ে। বিষয়টা আমার জন্য নতুন। আগে থেকে জানা ছিল না।
লোকটা ওর উত্তর শুনে কেন জানি একবার পিছু ফিরে চাইল। অন্ধকারে কী দেখল কে জানে, তবে শাওলিন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না। হঠাৎ লোকটা নিজের কোমরের দুদিক থেকে একটান দিয়ে কালো হুডিটা মাথা গলিয়ে বের করল। ঝিরঝিরে এক পশলা দমকা হাওয়ায় পাতার ফাঁকফোঁকর দিয়ে জোৎস্না কিরণ ঢুকছে। সেই ক্ষণিকের আলোয় দম বন্ধ করে শাওলিন দৃশ্যটুকু দেখতে পায়। এতোক্ষণ যে লোকটির পাশে চুপচাপ বসেছিল, সে লোকটি মজবুত-দেহী সুঠাম। গায়ের ওই হুডিটি শাওলিনের হাঁটু ছাড়িয়ে যাবে। লোকটি ডানহাতে হুডি বাড়িয়ে দিলে গাম্ভীর্য-ঘেরা কণ্ঠে বলে উঠল,
- পড়ুন। ওভার সাইজ। হাঁটু ঢেকে বসতে পারবেন।
বিস্ময়বিদ্ধ চোখ হুডির মালিকের দিকে থমকে আছে। শাওলিন জানে না এই অপরিচিত পুরুষের সামনে কেন ওর নারী ইন্দ্রিয় কাঁপছে না। অন্যসময় হলে সেলিমের সামনেও ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় তড়াক করে কাঁপতো। ইন্দ্রিয়ের এমন দ্বৈত আচরণে নিজেও খুব অবাক। কিন্তু দুর্বোধ্য একটা খটকা মনের ভেতরে দাপাদাপি করছে! যেন কিছু একটা চিনতে পেরেও চিনতে পারছে না। জ্বর ছাড়ানো মস্তিষ্ক কিছু একটা ধরতে গিয়েও ধরতে পারল না! আপাতত লোকটিকে খারাপ বলে সায় পায়নি কোনো। শাওলিন হাত বাড়িয়ে বুঝে নিল কালো সেই হুডিটি। লোকটা হুডিটি দিয়েই বসা ছেড়ে দাঁড়িয়ে পরলে চলে যেতে উদ্যত হলো। এমন সময় আবারও পা থমকে কী যেন চিন্তা করে বলল,
- কিছু একটা পরিচিতি লাগছে। কিন্তু মনে করতে পারছি না।
কথাটা বলেই স্থানটা ত্যাগ করল লোকটি। অন্ধকারে পুরোপুরি মিলিয়ে কেমন যেন হারিয়ে গেল। শাওলিন সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে পুনরায় সামনের দিকে তাকাবে, হঠাৎ কাছাকাছি কোথাও গাড়ি স্টার্ট দেবার আওয়াজে দারুণ চমকে উঠল শাওলিন। গাড়ি? এই অত্র স্থানে গাড়ি নিয়ে এই লোক এসেছে? এটা কী গাড়ি করে আসার মতো সুন্দর জায়গা? আশ্চর্যে বুঁদ হয়ে হুডিটা গায়ে জড়ালো শাওলিন। পেটের কাছে দু'পকেটে হাত দিতেই প্রচণ্ড চমকে উঠল ও! চট করে ডানহাতটা বের করতেই দেখল, একটা ছোট্ট ডিভাইস! হাতটা চাঁদের দিকে উঁচিয়ে দেখল এটা অন্য কিছু নয়, বরং একটি পেনড্রাইভ!
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা ফাবিয়াহ্ মমো সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন