উপন্যাস       :         প্রেমাতাল
লেখিকা        :         মৌরি মরিয়ম
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল    :         
রচনাকাল     :         ১০ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মৌরি মরিয়মের “প্রেমাতাল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম Ebook



৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম (পর্ব - ১০)

-" চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে..."

গান শেষ হওয়ার পর কিছুক্ষণ দুজনই চুপ! তারপর তিতির বলল,

-"এই গানটা আমি কখনো শুনিনি। কিন্তু গানটা খুব সুন্দর।"

-"এটা অনেক আগের গান। মান্না দে এর গাওয়া। জানি আজকালকার ছেলে মেয়েরা মান্না দে এর গান শোনে না। কিন্তু আমি আবার ওনার অনেক বড় ফ্যান। বাবার সাথে ছোটবেলা থেকে ওনার গান শুনতে শুনতে বড় হয়েছি।"

-"আসলে আমিও আগের গান শুনিনা, আগের গানগুলো খুব বোরিং হয়। কিন্তু এই গানটা দারুন।"

-"আগের গানগুলো বোরিং না, ইন্সট্রুমেন্ট গুলো বোরিং। এখনকার মত এত আধুনিক ইন্সট্রুমেন্ট তো আর তখন ছিলনা। তুমি যদি এই গানটারই আগের ভার্শন শোনো তোমার ভাল লাগবে না। কিন্তু আগের গানগুলোর মত এত রোমান্টিক গান এখন খুব কমই হয়।"

-"তা যাই হোক, আপনি যে এত সুন্দর গাইতে পারেন আমি কিন্তু ভাবিওনি!"

-"ধুর! কি যে গাই নিজেই বুঝি!"

-"কেন কেউ কখনো বলেনি আপনাকে আপনি কেমন গান?"

-"আমি কাউকে গান শোনাই না, নিজের জন্য গাই।"

-"কেন? আপনার উচিৎ এই প্রতিভাটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া।"

-"আমার গান গাওয়াটা কোন প্রতিভা না। আর আমি গান দিয়ে কিছু করতেও চাইনা। নিজের মনের শান্তির জন্য গাই। আর মাঝে মাঝে স্পেশাল দু'একজনকে শোনাই তাও যদি ইচ্ছে করে। বাবাকে বেশি শোনানো হয়, উনি খুব পছন্দ করেন। আর..."

-"আর কি?"

-"আর বউকে শোনাবো প্রতিরাতে, সেই হতভাগিনী শুনতে না চাইলেও শোনাবো। বিরক্ত হলেও মানবো না।"

তিতির হেসে ফেলল। বলল,

-"গার্লফ্রেন্ড কে শোনান না?"

মুগ্ধ হো হো করে হেসে ফেলল। তিতির যে কায়দা করে জানতে চাইছে ওর গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা সেটা বুঝতে বাকী রইল না মুগ্ধর। তিতির বলল,

-"হাসির কি হলো?"

-"কিছুনা। চলো ঘুমাই। আমি কাল রাতেও একটু ঘুমাইনি, বাসে ঘুম আসেনা আমার।"

-"আচ্ছা"

তিতিরের গা জ্বালা করতে লাগলো। কি ভাব! গার্লফ্রেন্ডের কথা বলতেই কথা ঘুরিয়ে নিল। বদ একটা।"

তাঁবুর দুই প্রান্তে দুজন শুয়ে পরলো। শুয়েই মুগ্ধ পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলো। জানে নেটওয়ার্ক থাকার কোনই সম্ভাবনা নেই তবু একবার চেক করা জাস্ট। নাহ নেটওয়ার্ক নেই। বলল,

-"এখান্র নেটওয়ার্ক থাকলে আমাদের এরকম বিপদে পড়তে হতো না।"

-"হুম! সকালে বাসায় কথা বলেছিলাম যে বান্দরবান পৌঁছেছি। তারপর তো আর নেটওয়ার্কই পেলাম না। বাবা বোধহয় চিন্তা করছে।"

-"কেন? তুমি বলোনি পাহাড়ে নেটওয়ার্ক থাকেনা?"

-"বলেছি, ভাইয়াও নিশ্চই বলবে কিন্তু বাবা আমাকে নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা করে।"

-"স্বাভাবিক! একমাত্র মেয়ে কিনা!"

-"একমাত্র হোক আর যতগুলোই হোক মেয়েদের প্রতি বাবারা বোধহয় এমনই হয়।"

-"হ্যা, সেটাই।"

সিঙ্গেল তাঁবু, পাশাপাশি তিতির মুগ্ধ। মাঝখানে মাত্র এক হাতের দুরত্ব। তিতির মুগ্ধর উল্টোদিকে ফিরে শুয়েছিল। হঠাৎ বাইরে চোখ পড়লো তিতিরের। কাপড়ের ভেতর দিয়েও বাইরে ছায়া দেখা যায়। বাতাসের তোড়ে আগুনের উথাল পাথাল জ্বলা দেখে ওর কেমন যেন ভয় করলো। মুগ্ধর দিকে ফিরলো। মুগ্ধর চোখ বন্ধ.. যাক যখন ঘুমিয়েই পড়েছে, অস্বস্তি লাগবে না আর।

হঠাৎ তিতিরের খেয়াল হলো, ভেতর থেকে বাইরে দেখা গেলে তো বাইরে থেকেও ভেতরে দেখা যাওয়ার কথা, হোক সে ছায়া! যখন ড্রেস চেঞ্জ করছিল তখন তো ভেতরে কেউ নেই ভেবে সব খুলে ফেলেছিল। মুগ্ধ দেখেনিতো আবার? মনের মধ্যে ভয় ঢুকে গেল। পরমুহূর্তেই ভাবলো, ধুর! কিসব ভাবছে ও। যে মানুষটা নিজে লাইফ রিস্ক নিয়ে ওকে বাঁচালো তাকেই কিনা খারাপ ভাবছে! মুগ্ধ নিশ্চই দেখেনি। মুগ্ধ যদি খারাপ হতো তাহলে এই পরিবেশে ওর পাশে হাত গুটিয়ে শুয়ে না থেকে ওকে গিলে খেত! এসব ভাবতে ভাবতেই তাকালো মুগ্ধর দিকে।

তিতির কম্বল নিয়ে শুয়েছিল, মুগ্ধর নাকি শীত করছিল না তাই মুগ্ধ কম্বল গায়ে না দিয়ে মাথার নিচে দিয়ে বালিশ বানিয়ে শুয়েছিল। এখনো কম্বলে মাথা দিয়ে মুগ্ধর টি-শার্ট সরে গিয়ে গলা থেকে বুকের কিছু অংশ বেড়িয়ে ছিল। সেদিকে চোখ পড়তেই তিতিরের সারা শরীরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। তিতির চোখ ফিরিয়ে নিল। তারপর উঠে বসলো। উঠে বসতেই মুগ্ধর পায়ের দিকে চোখ পড়লো। এক পায়ের উপর এক পা ভাজ করে রেখেছে। বড় বড় লোমগুলো ওর ফরসা পায়ের উপর শুয়ে আছে। এই দৃশ্য দেখে ওর শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল। কি ভয়ঙ্কর ব্যাপার! ছেলেদেরও উচিৎ মেয়েদের সামনে ভালমতো ড্রেসআপ করা। মেয়েদের সামনে থ্রি কোয়ার্টার পড়ে পা দেখিয়ে বেড়ানো কোন বিরত্ব নয়। তিতির এবার মুগ্ধর মুখের দিকে তাকালো। মুগ্ধর ঠোঁটের নিচে বামপাশে ছোট্ট একটা তিল আছে, আগে খেয়াল করেনি। এটা তো আরো ভয়ঙ্কর জিনিস! তিতির নিজের শরীরের তিল নিজে চেয়ে চেয়ে দেখে! তিল জিনিসটা এত ভাল লাগে ওর! তিতির চোখ সরাতে পারছিল না। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ মুগ্ধ চোখ মেলে তাকালো। কয়েক সেকেন্ডের জন্য তিতিরের নিঃশ্বাস আটকে গেছিল ভয়ে। কারন, মুগ্ধ একটা পলকও ফেলছিল না। তিতিরের ভয়ে জমে যাওয়া দেখে মুগ্ধ হেসে ফেলল। তিতির যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। বুকে হাত দিয়ে বলল,

-"উফফ! আপনি সত্যিই খুব খারাপ! ভয় দেখালেন কেন?"

-"তুমি আমাকে স্ক্যান করছিলে কেন?"

-"মানে?"

-"এর চেয়ে ডিটেইলে বললে লজ্জা পেয়ে যাবে তো! তবু বলবো?"

তিতির ভাবলো, মুগ্ধ কি বুঝে ফেলল তিতির ওকে কিভাবে দেখছিল আর কি কি ফিল হচ্ছিল? তাড়াতাড়ি বলল,

-"না না, থাক!"

মুগ্ধ হেসে বলল,

-"ঘুমাচ্ছো না কেন?"

-"ঘুম আসছে না।"

-"দিনের বেলায় সিএনজিতে ওভাবে ঘুমালে রাতে ঘুম আসবে কিভাবে?"

-"ছেলেদের কাজই মেয়েদের দূর্বলতা নিয়ে খোঁটা দেয়া।"

-"আচ্ছা আচ্ছা সরি। রাগ করোনা, শুয়ে পড়ো। ঘুম আসবে একসময়।"

তিতির শুতে পড়লো। মনে মনে ভাবল, "যতটা ভাল ছেলে বলে মনে হয় ততটাও না, ফাজিলের হাড্ডি একটা। এর থেকে সাবধান থাকতে হবে।"

কিচ্ছুক্ষণ একটু পর তিতির বলল,

-"আমার খুব শীত লাগছে, সেজন্যই বোধহয় ঘুম আসছে না।"

মুগ্ধ নিজের কম্বলটাও দিল তিতিরকে। বলল,

-"এটা নাও। আমার শীত একটু কম, কম্বল গায়ে দেয়া লাগবে না।"

-"কিন্তু আপনি তো এটা দিয়ে বালিশ বানিয়েছিলেন।"

-"বালিশ লাগবে না। লাগলে বাসা থেকে নিয়ে আসতাম। তুমি এটা নাও তো।"

তিতির দুটো কম্বল একসাথে করে গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো। তারপর কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো তা টেরই পেলনা। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলো মুগ্ধ শীতে কাঁপছে। কি করবে! তাড়াতাড়ি মুগ্ধর কম্বলটা মুগ্ধর গায়ে দিয়ে দিল। তবু মুগ্ধর কাঁপুনি কমলো না। তারপর নিজেরটাও দিল। তাতেও কাজ হলোনা। নিজের ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে তা দিয়ে ওকে চেপে ধরলো। আস্তে আস্তে ওর কাঁপুনি থামলো। তিতির ওর কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আছে কিনা। না জ্বর নেই। শীতেই কাঁপছিল! এহ, খুব বীরপুরুষ সেজে ওকে কম্বল দিয়ে ঘুমানো হয়েছিল। তিতির বসে থাকলো কি করবে এছাড়া। কিন্তু ঘুমের জ্বালায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারলো না, শুয়ে পড়লো। তারপর শীত লাগায় কখন যে মুগ্ধর সাথে একই কম্বলের মধ্যে ঢুকে পড়লো তা টেরই পেলনা।

ভোরে মুগ্ধর ঘুম ভাঙতেই একটা উষ্ণ কোমলতা অনুভব করলো। তারপর চোখ মেলে তাকাতেই সেকেন্ডের মধ্যেই ওর হার্টটা যেন লাফিয়ে উঠলো। তিতির ওর বুকের সাথে লেগে ঘুমাচ্ছে! মুগ্ধ তাড়াতাড়ি সরে গেল। ছিঃ ছিঃ তিতির জেগে এরকম দেখলে কি ভাবতো!

মুগ্ধ উঠে তাঁবু থেকে বের হলো। বাইরে একটু একটু আলো ফুটেছে। এখনই বেড়িয়ে পড়তে হবে। তা নাহলে আবার কোন বিপদ চলেও আসতে পারে। মুগ্ধ তিতিরকে তাঁবুর বাইরে থেকেই ডাকলো। কিন্তু তাতে কোন লাভ হলোনা। ভেতরে গিয়ে ডাকতেও কোন সাড়াশব্দ নেই। তারপর মাথায় হাত দিয়ে ডাকলো। তিতির চোখ মেলে বলল,

-"উফফ, আপনি কেন সবসময় ঘুমাতে দেন না?"

-"ডাকাত আসছে।"

তিতির এক লাফে উঠে বসে বলল,

-"কই কই?"

মুগ্ধ হেসে দিয়ে নিজের জিনিসপত্র গুছাতে গুছাতে বলল,

-"বাহ! খুব ভাল ওষুধ তো!"

তিতির যখন বুঝলো ওকে বোকা বানানো হয়েছে তখন রাগ করে বলল,

-"আপনার মত খারাপ মানুষ আমি আগে দেখিনি।"

মুগ্ধ হাসি বজায় রেখে বলল,

-"এখন রওনা না দিলে আরো বড় বিপদ আসবে, তখন কি করবে?"

-"কি বিপদ?"

-"উঠে রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি।"

উফফ, এই ছেলের ভাব দেখলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।

ব্যাগ গোছাতে গোছাতে মুগ্ধর চোখ পড়ল আগের দিনের কেনা পেঁপেটার দিকে। পাকা টা খেয়েছিল আর আধপাকা টা রেখে দিয়েছিল। এখন সেটা পেকে গেছে। বলল,

-"ওয়াও, পেঁপেটার কথা তো মনেই ছিলনা। আমি বাইরে বসে এটা কাটি। তুমি তোমার জিনিসপত্র গুলো গুছিয়ে রেডি হয়ে নাও।"

তিতির রেডি হয়ে বের হতেই দেখলো মুগ্ধ পেঁপে কাটা শেষ। ওকে দেখেই বলল,

-"অল্প পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে, পানি শেষের দিকে।"

-", আচ্ছা প্রব্লেম নেই।"

তিতির মুখ ধুতে ধুতে মুগ্ধ তাঁবু খুলে ভাঁজ করে ব্যাগে ঢোকালো। তারপর কাটা পেঁপেগুলো একটা পলিথিনে নিয়ে বলল,

-"চলো।"

-"খেয়ে যাবনা? আমার তো খিদে পেয়েছে।"

-"যেতে যেতে খাব। এখনে বসে খাওয়া মানে সময় নষ্ট করা।"

-"আচ্ছা।"

ওরা হাটছে আর পেঁপে খাচ্ছে। পেপে খাওয়া একসময় শেষ হয়ে গেল কিন্তু রাস্তা আর শেষ হয়না। রাস্তার পাশে একটা গাছ দেখিয়ে মুগ্ধ বলল,

-"এটা কি গাছ জানো?

তিতির বলল,

-"না তো। কি গাছ?"

-"এটা আলু গাছ। কিন্তু আমরা নরমালি সবসময় যে গোল আলু খাই এটা সেটা না। এটা হলো পাহাড়ী আলু। এতবড় হয়। একটা আলুতেই / কেজি হয়ে যায়। আলুগুলো খেতে যে কি মজা! নাফাখুম থেকে নাইক্ষ্যাং আর সাতভাইখুম যাওয়ার সময় জিনাপাড়া থাকতে হবে, পাহাড়ী গ্রাম। ওখনে আমাদের এই আলুর ঝোল খেতে দিবে তুমি দেখো।"

-"ওহ!"

-"তুমি কি বিরক্ত হচ্ছো? অনেক অপ্রয়োজনীয় কথা বলি আমি?"

-"না না। বলুন না। আমার তো এসব জানতে ভালই লাগে।"

-"হুম, একটা যায়গায় যাব, অথচ সে যায়গার মানুষ কি খায়, কিভাবে জীবন কাটায়, কেমন তাদের ধ্যান ধারণা এসব না জানলে তো আর ঘোরার কোন মানে হয়নান। খালি গেলাম আর দেখে চলে আসলাম সেটা তো আর ট্রাভেলিং না।"

-"হুম!"

-"তোমার কি ঘুম পেয়ে গেল নাকি আবার?"

-"না।"

-"তাহলে কোন কথা বলছো না, শুধু হু হা করছো যে? হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে?"

-"হুম, আসলে আমি এত হাঁটিনি কোনদিন?"

-"আচ্ছা তাহলে একটু বসে যাই চলো।"

ওরা বসলো। তিতর বসেই পানি খেল। মুগ্ধ বলল,

-"অল্প অল্প করে পানি খাবে নাহলে বেশি তৃষ্ণা লাগবে।"

-"আচ্ছা।"

ওরা রাস্তার একপাশে বসে আছে। সামননে খাদ! অন্যপাশে পাহাড়ী জুম ক্ষেত। এরকম দৃশ্য দেখে কাল পর্যন্ত তিতির লাফিয়েছে। এখন সৌন্দর্যে চোখ সয়ে গেছে। মুগ্ধ হঠাৎ একটা গান ধরলো,

" চলোনা যাই বসে নিরিবিলি,

দুটি কথা বলি নিচু গলায়..

আজ তোমাকে ভোলাবো আমি

আমার মিষ্টি কথামালায়।

তোমাকে বলবো হ্যালো সুইটহার্ট..

খবর শুনেছ নাকি?

তোমার আমার প্রনয়

নিয়ে দেশজুড়ে মাতামাতি।

ঢাকা শহরের অলিগলিতে

তোমার আমার পোস্টার!

সব পত্রিকার ফ্রন্ট পেজে ছবি

তোমার এবং আমার।

আজ তোমাকে ভোলাবো আমি

আমার মিষ্টি কথামালায়।

আমাদের কথা সংসদে গেছে

দুই নেত্রী রাজি।

তারা বলেছেন আর দেরী কেন?

এখনি ডাকুন কাজি।

আজ তোমাকে ভোলাবো আমি আমার মিষ্টি কথামালায়...."

গান শেষ হতেই তিতির বলল,

-"নয় নম্বর বিপদ সংকেত!"

-"হুম।"

-"আচ্ছা গানটার মধ্যে তোমাকে বলবো হ্যালো" এর পরে মিস্টার ছিলো না? আপনি যে সুইটহার্ট বললেন?"

-"এটা তো মেয়েদের গান, তাই মিস্টার ছিল। আমি ছেলে হয়েও কি ওটা বলবো? আবার গানটাও খুব পছন্দ। তাই একটু চেঞ্জ করে নিয়েছি।"

তিতির হেসে বলল,

-"ওহ! বাই দ্যা ওয়ে.. কই ঢাকা শহরের কোন গলিতে তো আপনার কোনো পোস্টার দেখিনি কখনো।"

মুগ্ধ তাকালো তিতিরের দিকে। তিতিরের ঠোঁটে দুষ্টু হাসি। মুগ্ধ বলল,

-"কি করবো বলো পোস্টার বের হবার আগেই তো সব মেয়েরা আমাকে ছেড়ে চলে যায়।"

-"সব মেয়েরা ছেড়ে চলে যায়! মানে কয়টা গার্লফ্রেন্ড ছিল আপনার?"

-"হবে / টা। কখনো গুনে দেখিনি।"

তিতিরের মনটাই খারাপ হয়ে গেল। তবু মুখটা স্বাভাবিক রেখে বলল,

-"এতগুলো গার্লফ্রেন্ড কে সামলান কিভাবে? ধরা খেয়ে যান না?"

-"আরে তুমি ভুল বুঝছো! এতগুলো তো আর একসাথে ছিল না। একজন গেছে আরেকজন এসেছে এরকম।"

-"এতগুলো মেয়ে সবাই আপনাকে ছেড়ে গেছে, না কাউকে কাউকে আপনিও ছেড়ে দিয়েছেন?"

মুগ্ধ হেসে বলল,

-"আমি একজনকেও ছাড়িনি।"

-"খুব অবলীলায় যে এসব বলছেন? আবার হাসছেনও। আমার তো মনে হচ্ছে আপনার মাধ্যেই কোনো ঘাপলা আছে।"

মুগ্ধ অন্যদিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো!


আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মৌরি মরিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে। 

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন