উপন্যাস       :        শকুন

লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
Bangla Golpo শকুন || আরশি আয়াত
শকুন || আরশি আয়াত

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ১০)


হিমানীর কথা শুনে রবিন বিষ্মিত স্বরে বলল,'কি বলছো!কোন মেয়ে?আর বাসা থেকে তো আমাকে কিছুই জানায় নি!'
'হয়তো তুমি ব্যস্ত ছিলে তাই।'
'হ্যাঁ সেটাও ঠিক।আচ্ছা,তুমি একটু অপেক্ষা করো।আমি বাসায় ফোন দিয়ে কনফার্ম হয়ে তোমাকে জানাচ্ছি।'
'আচ্ছা।'
রবিন ফোন কাটার পর হিমানী ঘর ফ্রেশ হতে গেলো।এখন তৈরি হয়ে আগে হাসপাতালে তারপর ক্লাসে যাবে।আর রবিনের সাথে ছুটির পর দেখা হবে।
ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই রবিনের ফোন এলো।রিসিভ করতেই রবিন বলল,'মা'কে ফোন করেছিলাম।তোমার কথামতো জিজ্ঞেসও করেছিলাম কিন্তু মা বলল এমন কোনো ঘটনাই ঘটে নি।'
'কি বলছো!আমি সত্যিই মেয়েটাকে তোমাদের বাসায় দেখেছিলাম।আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে।'
'আচ্ছা,তুমি চিন্তা করো না।আমি দেখছি।যদি সত্যিই এমন কিছুই হয় তাহলে আমি তোমাকে জানাবো।'
'ঠিকাছে।তুমি সাবধানে আসো।'
'আচ্ছা।'
ঘুম ভাঙতেই ইফতি আর শামীম দ্রুত ইকবাল হাসানের কাছে এলো।তিনি তখন তসবিহ পড়ছিলেন।তাদের দেখে ইশারায় বসতে বললেন।ওরা বসে অপেক্ষা করতে লাগলো তার তসবিহ পড়া শেষ হওয়ার জন্য।তসবিহ পড়া শেষ হতেই ইকবাল হাসান শামীমকে বললেন,'তুমি যে মেয়ের ওপর কালোজাদু করতে চেয়েছিলে তার ওপর কারো বিশেষ নজর আছে।তার ক্ষতি করা সহজ নয়।যে তার ক্ষতি করতে চাইবে সে-ই ধ্বংস হবে।তাই তোমার করা জাদু কাজ করে নি উল্টো সেটা তোমার ওপরই এসেছে।'
শামীম ভয় পেয়ে গেলো সব শুনে।অসহায় কন্ঠে বলল,'এখন আমার কি হবে?'
'ওই তান্ত্রিকের কথামতো যদি তুমি করতে পারতে তাহলে সমস্যাটা শেষ হয়ে যেতো কিন্তু এখন আর হাত কিছু নেই।'
শামীম ইকবাল হাসানের হাত ধরে কাকুতিমিনতি করে বলল,'দাদু প্লিজ এভাবে বলবেন না।কিছু একটা করুন।'
ইকবাল হাসান শামীমের মাথায় হাত রেখে বললেন,'আমি দেখছি কি করা যায়।আপাতত তুমি আমার এই আংটিটা নিজের কাছে রাখো।এটা কখনো খুলবে না।'
তিনি নিজের মধ্যমা আঙুল থেকে নীল রঙের পাথর বসানো পিতলের আংটি খুলে শামীমকে দিলেন।ও সেটা দ্রুত পরে নিলো।এরপর ইফতি ওর দাদুকে নিয়ে চলে গেলো বাসায়।
কলেজ ছুটির পর হিমানী কলেজ থেকে বেরিয়ে রবিনকে ফোন করলো।ফোন রিসিভ করে রবিন বলল,'আর দশমিনিট অপেক্ষা করো,প্লিজ।কাছাকাছিই আছি।'
'আচ্ছা,আসো।'
হিমানী কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো রবিনের জন্য।কথামতো বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় নি ওকে।রবিন কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলো।এরপর ওর দু'জন চলল থানায়।মেয়েটার লাশ পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়েছে।ওসির থেকে পারমিশন নিয়ে ওরা হাসপাতালে গেছে মেয়েটাকে আইডেন্টিফাই করতে।হিমানী নিশ্চিত ছিলো মেয়েটাকে দেখলে রবিন ঠিকই চিনতে পারবে কিন্তু লাশের মুখ থেকে কাপড় সরাতেই রবিনের ভ্রু কুঁচকে গেলো।বিরক্তির স্বরে বলল,'নাহ!এই মেয়ে তো আমাদের বাসায় কাজ করে না।একে কখনো দেখেছি বলেও মনে পড়ে না।'
'কিন্তু আমি যে সেদিন দেখলাম।'
'তাহলে কি আমি মিথ্যে বলছি।'
'আমি সেটা বলছি না।কিন্তু আমি কাকে দেখলাম তাহলে?'
'তুমি ভূল দেখেছো।সেদিন তুমি শকুনটা দেখে ভয় পেয়েছিলে তাই উল্টাপাল্টা চিন্তা আসছিলো মাথায়।'
হিমানী কিছু বলল না।এক দলা প্রশ্নের জট নিয়ে চুপচাপ বাসায় ফিরলো।নিজের চোখকে কি অবিশ্বাস করা যায়?আসলেই এটা মনের ভূল ছিলো নাকি দৃষ্টি সীমার বাইরেও কিছু হচ্ছে।
আজ অমবস্যার রাত।নিকষ কালো আধারে ছেয়ে আছে ধরণী।লাল রঙের একটা বৃত্তের ভেতর দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে কোথাও।আশেপাশে অজস্র বাদুড় উড়াউড়ি করছে।দূরে কোথাও করুণ আর্তনাদে কুকুর ডাকছে।বৃত্তের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে কেউ উলঙ্গ শরীরে মন্ত্র জপছে।হাতে মড়া পোড়ানো ছাই।প্রত্যেকবার মন্ত্র পড়া শেষ হতেই এক মুঠো ছাই নিক্ষেপ করছে আগুনে।সামনের অমাবস্যায় হিমানীর বয়স বিশ হবে।আর তখন থেকেই শুরু হবে আসল কাজ।তাই আগে থেকেই এই প্রস্তুতি।কোনোভাবেই যেন কিছু পন্ড না হয় সেটা দেখতে হবে।
বেশ তুমুল ঝগড়া করে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমাতে গেছে হিমানী।আজ রাতে কথা বলার সময় ওই মেয়েটাকে নিয়ে এককথা দু'কথা হতে হতে সেটা ঝগড়ায় রুপান্তরিত হয়।রবিন কোনোভাবেই মানতে রাজি নয় মেয়েটা ওদের বাসায় কাজ করতো আর হিমানীর কথা হলো ও মেয়েটাকে ওই বাসায়ই দেখেছে।এবং এটা স্পষ্ট মনে আছে মেয়েটার গায়ে ওদের বাসার মেইডদের ড্রেসকোড ছিলো।হয়তো ঝামেলার জড়ানোর ভয়ে ওরা স্বীকার করছে না।রবিন প্রাণপণে চেষ্টা করেও বুঝাতে পারলো না ওকে।অতঃপর ঝগড়ার মাঝপথেই ফোন বন্ধ করে কাঁদতে কাঁদতে শুয়ে পড়লো হিমানী আর শুতেই ঘুমিয়ে গেলো।যেনো কোনো জাদুবলে ঘুম চলে এসেছে ওর।
রুপাকে আজ ডিসচার্জ দেওয়া হয়েছে।এখন ও প্রায়ই সুস্থ।আজ কলেজেও যাবে।রেডি হয়ে চলে এলো হিমানীদের বাসায় ওকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।হিমানীও মন খারাপ নিয়ে তৈরি হচ্ছিলো কলেজে যাবার জন্য।হঠাৎ প্রিয় বান্ধবীকে চোখের সামনে দেখে খুশী হয়ে গেলো।মন খারাপটা কিছুক্ষণের জন্য উড়ে গেলো।খুশীতে জড়িয়ে ধরলো বান্ধবীকে।আর তখনই হিমানীর মনে হলো রুপার শরীর অস্বাভাবিক ভাবে ঠান্ডা।যেন কোনো মৃত মানুষ!

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন