উপন্যাস       :        শকুন
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
Bangla Golpo শকুন || আরশি আয়াত
শকুন || আরশি আয়াত

৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ৯)


হিমানীদের বাড়িতে যে মেয়েটা কাজ করে ওর নাম মিতা।কড়কড়ে দু'টো হাজার টাকার নোট দিয়ে ওকেও হাত করে ফেললো শামীম।মেয়েটাকে দিয়েই 'প্যাড'টা হিমানীর বাসায় রেখে আসার ব্যবস্থা করলো ও।এবার দেখা যাক কি হয়!
কলেজ থেকে ফেরার সময় রুপাকে দেখতে গিয়েছিল হিমানী।রুপা তখন ঘুমাচ্ছিলো।ওর পাশে বসে কিছুক্ষণ মাথায় হাত বুলিয়ে উঠে পড়লো।আজকাল কলেজের ক্লাস গুলো ভালো লাগে না,পড়ায় মন বসে না,পাশের সীটে প্রিয় বান্ধবীকে না দেখলে ভালো লাগে না কিছুই।রাস্তায় আনমনে হাঁটতে হাঁটতে এসবই ভাবছিলো ও।হঠাৎ কারো ডাকে হাঁটা থেমে যায়।কেউ নাম ধরে ডাকছে।আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজলো ও।ভালো করে লক্ষ্য করতেই রাস্তার ওপর পাশে একটা মেয়েকে দেখতে পেলো।কালো বোরখা,হাত মোজা,পা মোজা পরা।নিকাবের আড়ালে শুধু চোখজোড়া ছাড়া আর কিছুই দেখা গেলো না।মেয়েটা হাত নেড়ে ওকে দাঁড়াতে বলল সেখানেই।হিমানী কৌতুহল নিয়ে দাঁড়ালো।কিন্তু হঠাৎ কিছু একটা হলো!একদম চোখের সামনে!পলক ফেলতে ভুলে গেলো ও।সারা শরীর অসাড় হয়ে গেলো।নিজেকে একটা জীবন্ত মূর্তি মনে হতে লাগলো।যার জীবন আছে কিন্তু নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই।
স্পট ডে'ড!ভারী মালবাহী ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে একটি মেয়ে ছিটকে সামনের বাসের সাথে বাড়ি খেয়ে সেখানেই মা'রা যায়।সেই দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলো সেখানে।ওদের মধ্যে হিমানীও ছিলো।মেয়েটার মুখের কাপড় যখন সরানো হয় তখন ওর র'ক্তেভেজা মুখটা হিমানীর চেনা চেনা লাগে।কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারে না।
রাতে খেতে বসে মেয়েকে অন্যমনস্ক দেখে হিমানীর মা জেবা সুলতানা বললেন,'কি হয়েছে রে তোর?কলেজ থেকে এসেই চুপচাপ!অন্যমনস্ক হয়ে কি যেনো ভাবছিস!মা'কে বলা যায়?'
হিমানী ইতস্তত করতে করতে বলল,'আজ চোখের সামনে একটা এক্সিডেন্ট দেখেছি।'
'কি বলছিস!কিভাবে হলো?'
'আমি রুপার সাথে দেখা করে বাসায় ফিরছিলাম তখন একটা মেয়ে আমাকে দাঁড়াতে বলে।মেয়েটা রাস্তার ওপাশে ছিলো।রাস্তা পার হয়ে আমার কাছে আসার সময়ই এক্সিডেন্ট হয়।একটা ট্রাক ওকে ধাক্কা দেয় ও ছিটকে গিয়ে সামনের বাসে বাড়ি খায়।আর সেখানেই মা'রা যায়।এই ঘটনাটা এত দ্রুত হয়েছে যে আমি কিছু বুঝতেই পারলাম না।মানুষের ভিড় ঠেলে যখন আমি ওর মুখটা দেখলাম তখন ওকে আমার চেনা লাগলো।কিন্তু মনে করতে পারছি না কোথায় দেখেছি ওকে।আর ও কি বলতে চেয়েছিলো আমাকে?
মিসেস জেবা সব শুনে নিজের চেয়ার ছেড়ে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললেন,'একদম চিন্তা করে না,মা।প্রতিদিন কতশত এক্সিডেন্ট হয়।এগুলো তো আমাদের হাতে না।তুই একদম অতিরিক্ত কোনো চিন্তা করে শরীর খারাপ করিস না।'
'আচ্ছা,মা।'
যদিও হিমানীর চিন্তা কমলো না তবুও যেন একটু শান্তি পেলো।
ইফতির দাদাকে সব খুলে বলল শামীম।তিনি শামীমের ঘর দেখতে চাইলেন।তাই ওরা মিলে ইফতির দাদা ইকবাল হাসানকে শামীমের বাসায় নিয়ে এলো।বৃদ্ধ হলেও শরীরে এখনও যথেষ্ট বল বিদ্যমান।একাই পুরো ফ্ল্যাট'টা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন।সবশেষে তিনি বললেন আজকে রাতটা তিনি এখানেই থাকবেন।তাও একা।ইফতি রাজি হয় নি বৃদ্ধ মানুষ এভাবে একা থাকাটা ভয়ের।যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে বাবা-মাকে কি জবাব দেবে?কিন্তু ইকবাল হাসান নাছোড়বান্দা।তিনি একাই থাকবেন।দাদার জেদের কাছে হার মেনে ইফতি নিমরাজি হলো।
আজ সারাদিনে একবারও কথা হয় নি রবিনের সাথে।বাবার অফিসের কাজে চট্টগ্রাম যেতে হয়েছে ওর।মেসেজে বলেছিলো ভীষণ ব্যস্ত থাকবে আজকে।ফ্রী হয়ে নিজেই কল করবে।তাই হিমানী আর ফোন করে নি।ওর ফোনের অপেক্ষা করতে করতেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।হঠাৎ মাঝরাতে আচমকাই জেগে উঠলো কিছু একটা দেখে।মনে পড়েছে!দ্রুত ফোনটা হাতে নিয়ে কল করলো রবিনকে।ওর ফোন বন্ধ।উত্তেজনা আর অতিরিক্ত টেনশনে ওর দম বন্ধ হয়ে যাবার জোগাড়।সারারাত এলোমেলো পায়চারি করতে করতে রবিনকে মিনিটে মিনিটে ফোন করেছে।অবশেষে ভোরের দিকে ক্লান্তিতে চোখবুঁজে আসে ওর।আর তখনই ফোন বাজে।রবিন ফোন করেছে।রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে লাগাতার প্রশ্নবাণ ছোঁড়া শুরু হয়।চিন্তিত গলায় রবিন বলতে থাকে,'কি হয়েছে তোমার?দুইশো তিয়াত্তরটা কল!সব ঠিকাছে তো?আমার ফোনে চার্জ ছিলো না তাই কল,মেসেজ করতে পারি নি।আমার প্রচুর চিন্তা হচ্ছে।তুমি কি ঠিকাছো?আমি বের হয়েছি মাত্রই।তুমি ভয় পেয়ো না।আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো।'
একমুহূর্তের জন্য ভালোলাগা ছুঁয়ে গেলো হিমানীকে।এর আগে কারো জন্যই এতটা অনুভব হয় নি।আজকাল হিমানীর মনে হয় সত্যি সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছে ও।রবিনের কথার জবাবে হিমানী বলল,'শান্ত হও।আমার কিছু হয় নি।একটা ঘটনা আমাকে কাল থেকে পেরেশান করে রেখেছে।'
'কি ঘটনা?'
হিমানী সবকিছু খুলে বলল ওকে।সবশুনে রবিন বলল,'ওই মেয়েটাকে কোথায় দেখেছো মনে পড়েছে কিছু?'
'হ্যাঁ'
'কোথায়?'
'তোমার বাড়িতে।'
রবিন বিষ্মিত হয়ে স্বগোতক্তি করলো,'আমার বাড়িতে!মানে?'
'হ্যাঁ ওই যে আমাকে কফি দিলো যে মেয়েটা!'

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন