উপন্যাস       :        শকুন
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
Bangla Golpo শকুন || আরশি আয়াত
শকুন || আরশি আয়াত

৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব -৫ )


'ম্যাম,আপনার কফি।'
কারো গলার আওয়াজে ধ্যান ভাঙলো হিমানীর।কম বয়সী একটা মেয়ে কফির কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে।হিমানী কফির কাপটা হাতে নেওয়ার সময় হঠাৎই মেয়েটার চোখে চোখ পড়ে যায়।ধারালো দৃষ্টিতে ওর দিকেই চেয়ে আছে।মেয়েটাকে কোনোভাবেই কাজের লোক মনে হয় না কিন্তু পরনে এই বাড়ির কাজের লোকদের ড্রেসকোড।কফিটা হাতে দিয়েই মেয়েটা কলটেপা পুতুলের মত ঘর ছাড়লো।এই বাড়িতে সবকিছু এত অদ্ভুত লাগছে কেন?হিমানী কফিতে চুমুক দিতে দিতেই ভাবলো একবার সবকিছু।আসলেই কি অদ্ভুত?নাকি ও ই বেশি ভাবছে।ওই শকুনটা দেখার পরই আজব চিন্তাভাবনা আসছে মাথায়।
থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট আর গায়ে সাদা তোয়ালে জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো রবিন।দেয়ালে লাগানো বিশাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঝারতে ঝারতে বলল,'চলো,এবার তোমাকে পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখাই।'
হিমানী ইতস্তত স্বরে বলল,'আজ না গো!শরীর খারাপ লাগছে কেন জানি!'
রবিন আয়নার সামনে থেকে সরে এসে হিমানীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর দু'হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,'কি হয়েছে তোমার?কেমন লাগছে?'
'জানি না।ভালো লাগছে না।আমাকে বাসায় দিয়ে আসো।'
'তুমি কি শকুনটা দেখে ভয় পেয়েছো?'
'জানি না।হঠাৎই কিচ্ছু ভালো লাগছে না।'
'আচ্ছা,রিল্যাক্স।জোরে শ্বাস নাও কয়েকবার।তারপর আমরা বের হবো।'
হিমানী ওর কথা মতো জোরে জোরে শ্বাস নিলো কিছুক্ষণ।এখন কিছুটা ভালো লাগছে তবুও অস্বস্তি কাটে না।সেদিন আর ওই বাড়িটা ঘুরে দেখা হয় নি।রবিন ওকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলো।
আজ শুক্রবার।রুপাকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে।রুপা চায় নি এই দেখাদেখিতে হিমানী থাকুক কিন্তু রুপার মা-ই আসতে বলেছে হিমানীকে।তাই রুপাও বলে নি আর কিছু।প্রিয় বান্ধবীকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য সকালেই সেজেগুজে রুপাদের বাসায় হাজির হয়েছে ও।রুপা তখন সবে গোসল সেরে বেরিয়েছে।ওকে দেখে হিমানী বলল,'কি রে,নতুন বউ!কি খবর?'
রুপা কিছু বলল না।কেবল লজ্জা রাঙামুখে হাসলো।হিমানী এই কথায় সেই কথায় নানাভাবে লজ্জা দিতে লাগলো রুপাকে।
দুপুরের পর এসেছে পাত্রপক্ষ।হিমানী একাই রুপাকে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ফেললো।পাত্রপক্ষের সামনে যাওয়ার সময় রুপা চাইছিলো না হিমানীও যাক ওর সাথে কিন্তু মুখ ফুটে এ কথা বলা অসম্ভব!রুপার মাও হিমানীর যাওয়া নিয়ে আপত্তি করলো না।অতঃপর পাত্র পক্ষের সামনে ও-ই নিয়ে গেলো রুপাকে।দেখাদেখি শেষে পরে জানাবে বলে চলে গেলো পাত্রপক্ষ।ওরা যাবার পর হিমানী রুপাকে খোঁচা মেরে বলল,'দুলাভাই তো তোর ওপর পুরাই ফিদা!সারাক্ষণ তোর দিকেই চেয়েছিলো।'
রুপা মেকি হাসলো।এটা যে মিথ্যে কথা সেটা ও ভালোভাবেই জানে।ও কয়েকবার সবার অগোচরে ছেলের দিকে তাকাতেই দেখেছিলো ছেলেটার নজর হিমানীর দিকে।রাগে দুঃখে নিজেরই চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে হচ্ছে ওর।এইজন্যই ও চায় নি হিমানী আসুক।ডাইনী একটা!
রাতের খাবারের পর রুপার মা ফোন করলো হিমানীকে।ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে রুপার মা বলল,'ছেলে পক্ষ না করে দিয়েছে।সেইজন্য রুপা কান্নাকাটি করছে ভীষণ।দরজা বন্ধ করে রেখেছে।তুমি একটু কথা বলো ওর সাথে।ওকে বোঝাও!'
'আন্টি আপনি চিন্তা করবেন না।আমি কথা বলছি ওর সাথে।'
'বুঝাও ওকে।'
'আচ্ছা আন্টি।'
কল কেটে হিমানী রুপাকে ফোন করলো।লাগাতার কল করার পর ফোন রিসিভ হলো।রুপার কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।কান্না জড়ানো কন্ঠেই ও চিৎকার করে বলল,'ডাইনী!তোর জন্য আমাকে কেউ পছন্দ করে না।সবাই তোকে পছন্দ করে।ছোটোবেলা থেকে তোর প্রতি আকর্ষণ সবার।আমাকে কেউ দেখেও না।'
'রুপু।শান্ত হ বোন।'
'কিভাবে শান্ত হবো?ওই ছেলে আমাকে ফোন করে তোর নাম্বার চেয়েছে।আমাকে ভালো লাগে নি ওর তোকে ভালো লেগেছে।তোর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দেবে।'
'দিলেই কি আমি একসেপ্ট করব নাকি!আর তুই ওই বেয়াদব ছেলেটার জন্য কাঁদছিস?যে বিয়ের কনে রেখে তার বান্ধবীকে পছন্দ করে তার জন্য কাঁদছিস তুই!'
'তুই না গেলে ও আমাকেই পছন্দ করতো।'
'পরে যখন আমাকে দেখতো তখন তো আমার দিকেই নজর দিতো।'
'তখন আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে থাকতো।ও তোকে পছন্দ করতো না।'
'ছাড় এসব।কাঁদিস না।তুই আরও ভালো ছেলে পাবি।'
'আমি কাউকে পাবো না তোর জন্য।তুই সব ছিনিয়ে নিবি আমার থেকে।ডাইনী আমি তোকে ধ্বংস করে দেবো।'রুপা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে কথাগুলো বলে ফোন কেটে দিলো।
হিমানীর অবশ্য খারাপ লাগলো।প্রিয় বান্ধবীর দুঃখের কারণ ও নিজেই।ও তো এসব চায় নি।এই ছেলেটা ওকে পছন্দ করে ফেললে কি হতো!হিমানীর মন খারাপ হলো।
রাত তখন একটা বেজে বিশ মিনিট।রবিনের সাথে প্রেমালাপে মশগুল হিমানী।তখনই ফোন এলো রুপার মায়ের।হিমানী রবিনের কল কেটে রুপার মায়ের ফোন রিসিভ করতেই তিনি আর্তনাদের স্বরে বললেন,'রুপা নেই।'

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৬ষ্ঠ  পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন