উপন্যাস : শকুন
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
শকুন || আরশি আয়াত |
৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ৬)
বা হাতের কব্জিতে ধারালো ব্লে'ড চালিয়েছিলো রুপা।একটুর জন্য রগ পুরোপুরি কাটে নি তার আগেই জ্ঞান হারিয়েছিলো ও।অনেকটা সময় ধরে মেয়ের ঘরের দরজা বন্ধ বলে ওর পরিবারের সবাই ভীষণ চিন্তা করছিলো।একপর্যায়ে রুপার মা ওকে খেতে ডাকতে এসে খেয়াল করেন বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে তরল এসে তার পায়ে লাগছে।তিনি আরও ভালো করে খেয়াল করতেই গগণ কাপিয়ে চিৎকার দিলেন।তার চিৎকারে বাসার সবাই ছুটে এলো।অবস্থা শোচনীয় দেখে রুপার বাবা তখনই আশেপাশের প্রতিবেশীদের সাহায্যে রুপার ঘরের দরজা ভেঙে ওকে উদ্ধার করে।মেঝেতে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে ও।র'ক্তের ধারা বয়ে চলছিলো তখনও।শ্বাস চলছে কি না বোঝা যাচ্ছে না।র'ক্ত বন্ধের প্রচেষ্টা চলছে।দ্রুত ওকে হাসপাতালে নেওয়া হলো।কেউই কোনো আশা দিতে পারছেন না।রুপার মা কাঁদতে কাঁদতে পাগল হয়ে যাবার দশা।তিনি কোনোরকমে হিমানী ফোন করে বললেন,'রুপা নেই।'আর সাথে সাথেই আবারও জ্ঞান হারালেন।
হিমানী নিজের বাবা-মা'কে তখনই ডেকে উঠিয়ে রুপা আর ওর বাড়ির অবস্থা বলল।ওর কথা শুনে তারাও চিন্তায় পড়ে গেছে।হিমানীর বাবা হিমেল তালুকদার চিন্তিত স্বরে বললেন,'কিন্তু এত রাতে গাড়ি ম্যানেজ করব কিভাবে?'
হিমানী কাঁদতে কাঁদতে বলল,'বাবা,আমি এখনই যাব।রুপার এই অবস্থা আমার জন্যই হয়েছে।'
'কিন্তু মা...'
হিমানীর বাবা আর কিছু বলতে পারলেন না তার আগেই হিমানী দৌড়ে সদর দরজার দিকে চলল।পেছন পেছন ওর মা-বাবা দুজনই এলেন।ওই অবস্থায়ই কোনোরকমে একটা সিএনজি নিয়ে ওরা হাসপাতালে এসে পৌঁছালো।রুপাকে তখন আইসিইউ তে রাখা হয়েছে।মুখে অক্সিজেন মাস্ক আর হাতে স্যালাইন চলছে।হিমানী দরজার বাইরে থেকেই প্রিয় বান্ধবীকে দেখলো একবার।সবকিছুর জন্য নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে এখন।
রুপার মা'কে নিয়ে ওর বাবা বাসায় গেছেন।হাসপাতালে আছে রুপার ছোট ভাই রুপম আর হিমানী।রবিনও আসছে।একটু আগেই হিমানী ওকে ফোন করে জানিয়েছে।যদিও হিমানী ওকে আসতে বলে নি কিন্তু তবুও আসছে রবিন।হিমানীর বাবা,মা চলে গেছেন খানিকক্ষণ আগে।মেয়েকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু হিমানীর জেদ যতক্ষণ পর্যন্ত রুপার জ্ঞান না ফিরছে ততক্ষণ ও এখান থেকে নড়বেও না।
রবিন যখন পৌঁছেছে তখন রাত সোয়া দুইটা।রুপার ভাই বেঞ্চে হেলান দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে জেগে ছিলো শুধু হিমানী।বাকি রাতটুকু রবিন হিমানীর পাশেই বসেছিলো।একমুহূর্তের জন্য চোখ বন্ধ করে নি আর হিমানী অস্থিরতায় ছটফট করেছে শুধু।ভোরেই রুপার বাবা-মা আবার হাসপাতালে এসেছে।রুপার মা হিমানীর কাছে এসে ধরা গলায় বলল,'যাও,মা।বাসায় যাও।খেয়ে,ঘুমিয়ে নাও কিছুক্ষণ।'
'না,আন্টি।ওর জ্ঞান ফিরলে আমি যাব।'
'পাগলামি করে না মা।ওর জ্ঞান ফিরলে আমি তোমাকে ফোন করব।তুমি যাও।তোমার মা চিন্তা করছে।'
'আন্টি আ...'
'রিকুয়েষ্ট করছি তোমাকে।'
রুপার মায়ের কথা ফেলতে পারলো না হিমানী।যাওয়ার পথে রবিনও ছিলো সাথে।হিমানী আফসোসের সুরে বলল,'আমি যদি জানতাম এমন কিছু হবে। আমি কখনোই যেতাম না ওদের বাসায়।'
'তুমি শুধু শুধুই নিজেকে দোষী বানাচ্ছো।এখানে তো তোমার দোষ নেই।'
'রুপাও আমাকে দোষী ভাবে।'
'না,ওসব ও রাগের মাথায় বলেছে তোমাকে।'
'আমি জানি ও আর আমাকে আগের মত ভালোবাসবে না।'
'না বাসুক।তবুও আমি চাই ও সুস্থ হয়ে উঠুক।'
'ও তাড়াতাড়িই সুস্থ হয়ে উঠবে।তুমি চিন্তা করো না।'
হিমানী মাথা নাড়ালো।ওর চিন্তা কমছেই না।যতক্ষণ পর্যন্ত রুপার জ্ঞান না ফিরবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই অস্থিরতা কাজ করবেই।
শামীম দু'রাত ধরে একটা ভ'য়ানক স্বপ্ন দেখছে।কি অদ্ভুত বাজে স্বপ্ন!এমন স্বপ্ন এর আগে কখনোই দেখে নি ও।স্বপ্নে ওর লাশ খাটিয়ায় শোয়ানো আছে।চারপাশে কোনো মানুষ নেই।অজস্র শকুন ঘোরাফেরা করছে।কয়েকটা শকুন কা'মড়ে কা'মড়ে ওর মাংস তু'লে নিচ্ছে।ও ব্যাথা পাচ্ছিলো কিন্তু কিছুই বলতে পারছিলো না।একপর্যায়ে শকুনগুলো ওর শরীরের সব মাংস খেয়ে ফেলেছে।আর তখনই ও জেগে উঠেছে।জেগে ওঠার পর আরও অদ্ভুত ব্যাপার হলো ওর সারা শরীরে অসহনীয় ব্যাথা হচ্ছিলো।দু'দিন ধরে ঘুমালেই এই স্বপ্ন দেখছে।তাই আজকে আর ঘুমালো না।লাইট বন্ধ করে অফিসের কাজ করতে বসলো।হঠাৎ মনে হলো কেউ চেয়ে আছে ওর দিকে।ও লাইট জ্বেলে সারাঘরে চোখ বুলিয়েও কাউকে পেলো না।এবার ভয় হতে শুরু করলো।এমনিতেই স্বপ্নের ঘটনায় অস্থির হয়ে আছে।তাই অল্পতেই ভয় পাচ্ছে।ও ভাবলো এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।কাল ভালো কোনো তান্ত্রিকের কাছে যেতেই হবে।ও অবশ্য একজনের খোঁজ নিয়ে রেখেছে।কালই যাবে।কিন্তু আজ রাত'টা পার করতে হবে কোনোভাবে।শামীম আর লাইট বন্ধ করলো না।সারাক্ষণ জেগেই ছিলো কিন্তু মাঝরাতে চোখটা বন্ধ হয়েছিলো একটু আর তখনই পঁচা রক্তের গন্ধে ভরে গেলো সারা ঘর।শামীম ঘুম থেকে জেগে উঠলো।তীব্র গন্ধে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে।এই গন্ধ আসছে কোথা থেকে!ঘরে আর টিকতে না পেরে দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো ও।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন