উপন্যাস        :         কেয়া পাতার নৌকা
লেখিকা        :          রাজিয়া রহমান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২২ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ইং

লেখিকা রাজিয়া রহমানের “কেয়া পাতার নৌকা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি  ২০২৪ সালের ২২ই ফেব্রুয়ারী থেকে লেখা শুরু করেছেন। 
কেয়া পাতার নৌকা || রাজিয়া রহমান
কেয়া পাতার নৌকা || রাজিয়া রহমান


৪৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

কেয়া পাতার নৌকা || রাজিয়া রহমান (পর্ব -  ৪৮)


তরু আসার আগেই ফাইজান ফোন সরিয়ে রাখলো।কি দরকার তরুকে অযথা কষ্ট দেওয়ার। ফাইজান তরুকে সুখী করতে চেয়েছে।যেনো তরু কষ্ট পেলে এই পৃথিবী থমকে যায়।
ফাইজানের কাছে তরুই কবে যেনো তার পুরো পৃথিবী হয়ে গেছে।
দুই কাপ চা নিয়ে আসে তরু।ফাইজান চা দেখে বললো, "সারারাত আর ঘুম হবে না আমার চা খেলে।"
তরু হেসে বললো, "আচ্ছা তাহলে খেও না তুমি। আমার অবশ্য এই ঝামেলা নেই। বরং চা খেলেই ঘুম আসবে আরো ভালো করে। "
ফাইজান বললো, "তাহলে তুমি চা খেও না।আমি খেয়ে নিই দুই কাপই।"
তরু ভ্রু কুঁচকে তাকায় ফাইজানের দিকে। কি বলছে এই লোক!
এই তো বললো চা খেলে তার ঘুম আসবে না।এখন বলছে দুই কাপ খাবে।
ফাইজান চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বললো, "আজ সারারাত কোনো ঘুম হবে না।আমি ও ঘুমাবো না,তুমি ও ঘুমাবে না।"
হুট করেই তরু বুঝতে পারলো ফাইজানের কথার মানে।সিরিয়াস হয়ে বললো, "সেসব স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করো।যা ভাবছো তার কিছুই হবে না।"
ফাইজান তরুকে কাছে টেনে নিয়ে বললো, "হবে কি হবে না দেখতে চাও তরু?"
ফাইজানের উত্তপ্ত নিশ্বাস তরুর মুখে এসে পড়লো। তরুর কেমন একটা অনুভূতি হতে লাগলো। তরুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফাইজান তরুর দুই ঠোঁট দখল করে নিলো।
ফাইজানের শক্ত আলিঙ্গনে তরুর সারা শরীর আন্দোলিত হয়।খামচে ধরে তরু ফাইজানকে। ফাইজানের এক হাত তরুর শরীর হাতড়ে বেড়ায়।
তরুর শরীর কেঁপে উঠে। একটা দীর্ঘ সময় চুমু খেয়ে ফাইজান সরে যায় তরুর উপর থেকে।
তরু বড় করে নিশ্বাস নেয়।সারা শরীর কেমন ঝিমঝিম করছে। নিজেকে স্থির করে তরু ফাইজানের দিকে তাকালো।
ফাইজানের দিকে তাকিয়ে তরু হতবাক হলো। এই একটু সময়ের মধ্যে ফাইজান ঘুমিয়ে পড়েছে!
আবার মৃদুস্বরে নাক ডাকছে!
নিজেই বললো চা খেলে ঘুম হয় না তার।অথচ এখন!
কি অদ্ভুত লোক!
তরুর ঘুম আসলো না।কেমন যেনো অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে তরুর?বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করতে লাগলো তরু।হুট করেই তরুর মন চাইছে ফাইজানের গভীর আদর পেতে।ভাবতেই লজ্জা পেয়ে গেলো তরু।
শেষে ফাইজানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগলো তরু।
খানিকক্ষণ পর তরুর হালকা চোখ লেগে এলো।সেই মুহূর্তেই শুনতে পেলো ফাইজান ফিসফিস করে বলছে,"জান,একটু একটু করে আদর দিয়ে তোমাকে মাতাল করে দিবো।"
তরু লজ্জায় ফাইজানের বুকে মুখ লুকায়।
ফাইজান মুচকি হেসে তরুকে বুকে জড়িয়ে ধরে। আজকের জন্য এটুকুই থাকুক।তরু তৈরি হোক মানসিকভাবে। ফাইজান চায় তাদের ভালোবাসাবাসির সেই মুহূর্তটার আহবান তরুর দিক থেকে আসুক।
তরু নিজে এসে ধরা দিক।
সকালে তরুর ঘুম ভাঙ্গলো ফজরের আজান শুনে।এতো দ্রুত তরুর ঘুম ভেঙে যাওয়ায় উঠে গেলো তরু।গোসল করে অযু করে নামাজ পড়ে ফাইজানকে তুললো। তরুর ভেজা চুল দেখে ফাইজান চোখ কচলে তাকিয়ে বললো, "গোসল করেছো নাকি তুমি "
তরু হ্যাঁ বলতেই ফাইজান তরুর কোলে এসে মাথা রেখে বললো, "গোসল করার মতো কিছু কি রাতে হয়েছে? আমি তো কিছু করি নি।তুমি আমার ইজ্জত ছিনিয়ে নাও নি তো জান?"
তরু লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। কি অসভ্য লোক!
কিসব বলছে!
তরুকে লজ্জা পেতে দেখে ফাইজান হেসে ফেলে।
নামাজ পড়ে ফাইজান তরুকে নিয়ে হাঁটতে বের হয়।আধা ঘন্টা দুজন হাঁটে।তারপর বাসায় ফিরে তরু রান্নাঘরে ঢুকে।
ফাইজান এগিয়ে এসে বললো, "কি রান্না করবে তুমি এখন?তৈরি হয়ে নাও,আমরা হোটেলে গিয়ে নাশতা করবো।তারপর আমরা একটা ছোট্ট ফ্রিজ কিনবো।তারপর কাঁচা বাজার,মাছ মাংস কিনবো।"
তরু ভেবেছিলো চা আর বিস্কুট খেয়ে নিবে।তাই চা বানাতে চেয়েছিলো।তৈরি হতে গিয়ে তরু একটা শাড়ি বের করে নিলো।আসার সময় রাবেয়া মেয়েকে অনেক গুলো শাড়ি দিয়েছে।
একটা হালকা গোলাপি রঙের চিকন পাড়ের সুতি শাড়ি আর সাদা ব্লাউজ পিরে তরু চুলগুলো খুলে দিলো।
ঠোঁটে একটু ভেসলিন লাগিয়ে তৈরি হয়ে বের হলো।
ফাইজান তরুর দিকে কিছুক্ষণ চুপ করে তাকিয়ে রইলো। এই অপ্সরার মতো দেখতে মেয়েটা তার বউ?
ভাবতেই কেমন সুখ সুখ অনুভূতি হচ্ছে ফাইজানের।
ফাইজান উঠে এসে একটা হেয়ার ব্যান্ড নিয়ে তরুর চুল পনিটেইল করে দিলো। তরু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে হেসে বললো, "জনসেবা করার একটু চেষ্টা করছি আরকি।তোমাকে খোলা চুলে দেখলে বাহিরের সব পুরুষ হার্ট অ্যাটাক করবে।আমি চাই না কেউ অসুস্থ হোক বুঝলে।"
তরু হেসে বললো, "আচ্ছা তাই?তুমি সুস্থ আছো কিভাবে তাহলে? "
ফাইজান ফিসফিস করে বললো, "আমি সুস্থ নেই তরু।তোমাকে দেখার পর থেকেই তো মুহুর্তে মুহুর্তে আমার অ্যাটাক হচ্ছে। তুমি নির্দয়া নারী কি বুঝবে!"
তরু বের হয়ে বললো, "না বুঝতে হবে না।আসো তো এবার।"
ফাইজান চেয়ারে বসে বললো, "না,আমাকে চুমু না খেলে আমি যাবো না।আমি ফ্লোরে বসে থাকবো।"
তরু খিলখিল করে হেসে উঠে।
ফাইজান মুগ্ধ হয়ে তাকায় সেই হাসিমুখের দিকে।মনে মনে বলে, "আমি যেনো আজীবন তোমার এই হাসিটা দেখতে পাই তরু।"

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা রাজিয়া রহমান বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহন করেন। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন তিনি। তরুণ এই লেখিকা বৈবাহিক সূত্রে লক্ষ্মীপুরেই বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জননী। পেশাগতভাবে তিনি গৃহিনী হলেও লেখালেখির প্রতি তার ভিষন ঝোক। আর তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও শখের বশে ধারাবাহিকভাবে লিখে যাচ্ছেন একের পর এক উপন্যাস। ২০২২ সালের মধ্যদিকে গর্ভকালিন সময়ে লেখিকা হিসেবে হাতেখড়ি নিলেও এরই মধ্যে লিখে ফেলেছেন “তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর” ও “শালুক ফুলের লাঁজ নাই” -এর মতো বহুল জনপ্রিয় উপন্যাস।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন