উপন্যাস : ভাঙা বোতাম
লেখক : ঋক্ষ/এফ এ শাহেদ
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
এফ এ শাহেদ (ঋক্ষ)র “ভাঙা বোতাম” শিরোনামের এই উপন্যাসটি তার অনুরোধক্রমে কবিয়াল ডট কমে প্রকাশ করা হল। আজ প্রকাশিত হলো এই উপন্যাসটির প্রথম পর্ব।
![]() |
ভাঙা বোতাম || ঋক্ষ |
ভাঙা বোতাম || ঋক্ষ
৩য় পর্ব
পাশের ফাঁকা রাস্তাটি ধরে যে গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে তারই একটি সাদা গাড়ির পিছনের ছিটে অর্ক বসা, পাশে এক অতি সুন্দরী। আচমকা ভুত দেখার মত মনে হল লাবুর। নিজেকে সামলে অর্কের নাম্বারে ডায়াল করলো সে, কিন্তু নাম্বার বন্ধ। কল ঢুকবে না এটাই স্বাভাবিক ছিল। ঘড়িতে এখন বেলা ১১ টা ৩০, ওর ফ্লাইট ছিল আরো ৩০ মিনিট আগে মানে ১১ টায়। লাবু বুঝতে পারল সে ভুল দেখেছে, গাড়িতে অর্কের থাকার কথা নয় এটি নিছকই হ্যালোসিনেশন।
লাবুর গাড়ি চলতে শুরু করছে, কমতে শুরু করেছে যানজট। অপরদিকে তার মাথায় বাঁধতে শুরু করছে চিন্তার জট। চিন্তার সাগরে ডুবে লাবু যখন বাড়িতে পৌছাল, তখন প্রায় ১ টা বাজে। এরই মধ্যে ওদের ছেলেটা গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
ঘরে ঢুকেই বিছানায় গা এলিয়ে দিল লাবু। এমন ভর দুপুরে সে সাধারণত ঘুমায় না, কিন্তু ক্লান্তির ডানায় ভর করে হারিয়ে গেল গভীর ঘুমে। লাবুর ঘুম ভাঙল ভয়ংকর এক স্বপ্নে। তার সারা শরীর রক্তে ভেজা সে দাড়িয়ে আছে জাহাজের ডেকের এক প্রান্তে।
কি হচ্ছে তার সাথে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। লাবু দেখল জানালা দিয়ে তখনও সূর্যের আলোর ছটা ঘরে প্রবেশ করছে। তবে তার রক্তিম আভা জানান দিচ্ছে এখনই ডুবে যাবে ওটা। সে বিছানা থেকে উঠতে যাবে এমন সময় টেলিফোনটি বেজে উঠল। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে এল অর্কের কষ্ঠ। নেপাল পৌঁছে হোটেল থেকে কল করেছে সে। অর্ক, লাবু কেমন আছে প্রশ্ন করেই, এক নাগাড়ে তার সেখানে যাওয়া ও হোটেল সম্পর্কে বলতে শুরু করল।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমুন্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামতে তার সময় লেগেছে প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। কাঠমুন্ডু থেকে আরো ৩২ কিলোমিটার দুরে বিশ্বের সবচেয়ে উচু গ্রাম, নাগরকোট। সেখানেই একটি হোটেলে উঠেছে অর্ক।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটি প্রায় ২১৭৫ মিটার উচুতে। কাঠমুন্ডু থেকে নাগরকোটের রাস্তার উচ্চতা যা, তাতে দিনের বেলা কোনো দুর্বলচিত্তের মানুষ যাতায়াত করলে নিশ্চিত ভয় পেয়ে যাবে। তবে সেখানের মনোরম প্রকৃতি চুম্বকের মতো টানে মানুষকে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে জীবনের অতি সাধারণ অনুভুতিগুলোও অসাধারন হতে বাধ্য।
নাগরকোটে হোটেলে থাকবে অর্ক। ভোর বেলায় সূর্যদয়ের সময় ব্যালকনি থেকে এভারেস্ট এর শৃঙ্গ দেখবে । এখানে ভোরবেলায় সূর্যের আলো শুভ্র তুষারবেষ্টিত এভারেস্ট শৃঙ্গে পরবার সাথে সাথে আশেপাশের সবকিছু কেমন মায়াবী সোনালী বর্ণ ধারণ করে। এমন অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য আমাদের প্রতিদিনের পৃথিবীতে খুব কমই দেখা যায়।
অর্ক, লাবুকে বলল: “আগামীকাল হয়তো নাগারকোট থেকে পোখারা যাব। ২২৬ কি.মি. পথ, গাড়িতে প্রায় ৭ ঘন্টা সময় লাগবে যেতে। পোখারার ন্যাচারাল বিউটি এক কথায় আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।” সেই সাথে সেখানে আছে রাফটিং, প্যারাগ্লাইডিং,কায়াকিং,বাঞ্জি জাম্পি,ক্যানিং এর মত সুবিধা। এছাড়া পোখারার বিখ্যাত আকর্ষণ ফেওয়া লেক, এটাও মিস করবো না”। “কাজের ফাঁকে এই প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য আাঁকে বাচিয়ে রাখবে। লাবু, এতকিছুর মাঝে আমি তোমাকে খুব মিস করছি। ” এক নাগাড়ে বলে একটু দম নিল অর্ক।
লাবু চুপচাপ রিসিভার ধরে আছে, এতক্ষণে লাবুর নিরবতা বুঝতে পেরেছে অর্ক। কিছুটা সময় চুপ থেকে অর্ক লাবু কে বলল “তোমার কি শরীর খারাপ? কিছুই বলছো না, কোন সমস্যা কি?” লাবু তার নিরবতা ভেঙে পুরোপুরি প্রসঙ্গের বাইরে প্রশ্ন করল অর্ককে, “আচ্ছা তুমি কি নেপাল গেছ?” লাবুর প্রশ্নে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হল অর্ক। হালকা গলা ঝাড়া দিয়ে বলল, কি বলছ তুমি? লাবু বলল না মানে, আমি জানতে চাইছি কয়টাই নেপাল পৌছেছিল। অর্ক একটু চুপ থেকে বলল, ১২ টা ২০ মিনিটে ।
অর্ক আর কথা বড়াল না, সে লাবুকে নিজের খেয়াল রাখতে বলে ফোন রেখে দিল। লাবু লাইন কেটে যাওয়ার পরও কিছুক্ষণ রিসিভার কানে ধরে দাড়িয়ে আছে।
লাবুর কোন কারণ ছাড়াই মন খারাপ। ভর-সন্ধায় বেডরুমের ছোট বারান্দাতে বসে আছে সে। দেওয়ালে লাগানো সেল্ফের ফুলের টবে পানি দিচ্ছে লাবু। কাজটি সে করছে কোন কারণ ছাড়াই, গাছ গুলোতে পানির দরকার নেই বুঝেও সে পানি ঢালছে । তার বারান্দাটা বেশ সুন্দর, সেল্ফ ভর্তি বাহারি অর্কিড আর ছোট ফুল গাছে সাজানো। তার নিচে রাখা বাহারি নকঁশা আঁকা কলস। আকারে ছোট কলসগুলো ঝুলানো বারান্দার গ্রীলে। লাবুর মন খারাপ থাকলে বারন্দাতে বসে থাকে, কিন্তু আজ সেটাও ভাল লাগছে না।
হঠাৎই তার মনে হল লাবু তার বড় বোনকে চিঠি লিখবে। যদিও লাবু তার বোনের সাথে ফোনে নিয়মিত কথা বলে। কিন্তু লাবুর মনে হয়, চিঠিতে মনের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ভাব যেভাবে প্রকাশ করা যায়। ফোনে কথা বলে সে ভাবে বলা যায় না।
লাবুরা ২ বোন ১ ভাই, লাবু সবার ছোট । লাবুর ভাই মেজ, সে বাবা মায়ের সাথে তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোর থাকে, ওখানে নিজের ব্যবসা আছে। ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকায় যোগাযোগ কম হলেও লাবুকে অনেক ভালবাসে তার ভাই।
লাবু তার বড় বোন নিলা কে চিঠি লিখতে বসল। সে স্বামী সন্তান নিয়ে কানাডা থাকে । বছরে ১ বার আসে নিলা, তবে গেল ২ বছর করোনার কারণে দেশে আসতে পারেনি। লাবু নিলাকে, নিল আপু ডাকে।
প্রীয় নিল আপু,জানি ভাল আছো, তাই জানতে চাইলাম না। আর আমি জানতে চইলেই কি? তুমি তো আর আমাকে চিঠিতে উত্তর দিবে না, কল করে বলবা। আপু, আজ মনটা অনেক খারাপ। যে কারণে, অনেক দিন পর তোমাকে লিখতে বসলাম। আপু কিছু ছোট ছোট বিষয় নিয়ে আমি খুবই চিন্তীত। যে বিষয় সম্পর্কে আগে কখনো বলিনি তোমাকে, যা এখন লিখছি তোমাকে।মুল ঘটনায় আসি, গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে অর্থ্যাৎ আমার গর্ভে যখন আমাদের ছেলে মুগ্ধ, চার বা পাঁচ মাস তখন থেকে শুরু হয়। অর্ক প্রতি মাসে কাজের উদ্দেশ্য দেশের বাইরে যাওয়া শুরু করে, এবং তিন থেকে চার দিন পর বাড়িতে আসে। এই তিন চার দিন সে যোগাযোগের বাইরে থাকে পুরোপুরি। এ বিষয়ে কোন মাথাব্যথা ছিল না। কারণ সে যেহেতু অফিসের কাজে যেত বলে আমাকে জানাত। এবং ফিরে এসে আগের মত স্বাভাবিক আচারণ করত। এমনকি আমার প্রতি তার ভালবাসারও কমতি হয়নি ।নিল আপু, আমি যে সন্দেহটা করছি তা সত্য কিনা বুঝতে পারছি না। প্রথম যে ঘটনাটা ঘটেছে আজ থেকে দেড় বছর আগে। সেবার অর্ককে বিমানবন্দর নামিয়ে বাসায় ফিরছি। বাসায় ঢোকার আগ মুহূর্তে আমি ড্রাইভারকে বললাম, বাসায় না একটু নীলক্ষেত যাব আমি। কিছু বই কিনতে হবে। ড্রাইভার বলল আফা আজতো নীলক্ষেত বন্ধ,সাথে গাড়ীতে কাজ করাতে হবে। স্যার বলেছে গাড়ী আজই সার্ভিসে দিতে।নিলু আপু, সে দিন নীলক্ষেতের মার্কেট খোলা ছিল, কারণ নীলক্ষেত মঙ্গলবার বন্ধ থাকে ওইদিন শুক্রবার ছিল। কিন্তু তার মাত্র ঘন্টা খানেকের মধ্যে বাড়ি ফিরে এলো ড্রাইভার। তার চোখ মুখ রক্তবর্ণ, সে বাড়িতে ঢুকেই বলল ভুল হয়েছে আফা, আজ নীলক্ষেত খোলা আপনাকে নিতে আসছি।আমিও কিছু না বলে গাড়িতে উঠি, গাড়ি চলতে শুরু করে । হঠাৎই পাশের সিটে ছোট মদের বোতলটা আমার চোখে পড়ল। এটি অর্কের পছন্দের পকেট শ্যাম্পেনের বোতল। আপু, আমার স্পষ্ট মনে আছে এটি ছিল ওর ব্যগের ভিতর। আর ব্যাগটি বিমানবন্দরে শেষ আমি অর্কের হাতে তুলে দিয়েছি। সুতরাং এটি এখানে থাকার কথা নয় কোনভাবেই। আমি ড্রাইভারকে প্রশ্ন করলাম তোমার স্যার কি ফ্লাইট মিস করছে? সে ধাক্কার মত খেল, থতমত খেয়ে বলল না আফা চলে গেছে। ড্রাইভার মিথ্যা বলছে, লুকিং গ্লাসে তার লাল হয়ে ওঠা মুখটা দেখা যাচ্ছে। আমি নীলক্ষেত গেলাম না বাসায় ফিরে এলাম।আপু, তার ঠিক তিন মাস পর অর্ক আবার বিদেশ যায়। এর একদিন পরই চট্রগাম থেকে আমার ভার্সিটির এক বন্ধু ফোন করে। সে চট্রগ্রাম বন্দরে চাকুরী করে । আমি ফোন রিসিভ করতেই সে বলে, কিরে ডিবি দুলাভাই নিয়ে কক্সবাজার প্রমোদ ভ্রমণে আসছিস আমার সাথে দেখা করবি না? না এটাও তোদের গোপন ভ্রমণ । আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম কক্সবাজার! তুই আমাকে দেখছিস ? সে বলল না দুলাভাইকে দেখলাম তবে সাথে এক জন মেয়ে, মনে হল তুই। আমি বললাম, আমি তো ঢাকাতে ! ও কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল তা হলে আমি ভুল দেখেছি হয়ত। সেদিন আমি না বুঝতে পারলেও, পরে বুঝতে পেরেছি ও আসলে ভুল দেখেনি।নিলু আপু, গত জুনে অর্ক যথারিতী তিন দিনের বিদেশ ভ্রমণ সেরে বাড়ি ফিরেই অনেক ব্যস্তভাবেই অফিস চলে যায়। আমি অর্কের পোশাক গুলো উঠিয়ে রাখতে গিয়ে বাধে বিভ্রাট। কোর্টের ভিতরের পকেটে পাই একটা ’এ্যভোন ব্রান্ডের ব্যবহৃত লিপ লাইনার’, সঙ্গে মেলে ’হোটেল দ্যা কক্স টুডের’ একটি ফুড ভাউচার। খাবারের মেনু আর ডেট দেখে আমার বুঝতে বাকি থাকে না তার বিদেশ ভ্রমণ কতটা আয়েশি আর গুরুত্বপূর্ন ।গত দুই মাস আগে অর্ককে আবার আমি বিমানবন্দরে পৌছতে যাই। তবে এবার তার পিছু নেবার ছকটা আগে থেকে সাজিয়ে রাখি। আমি কক্সবাজার যাই তবে গোপনে। কারণ ড্রাইভার তার একজন বিশ্বস্ত চর তা এত দিনে বুঝতে পারি। সুকৌশলে তাকে কিছু টাকা দিয়ে ছুটিতে পাঠাই। ওই দিন দুপুরের ফ্লাইটে আমি কক্সবাজার পৌঁছাই। সেখান থেকে সোজা সেই স্থানে পৌছাই, যেখান থেকে প্রতি মাসেই একটি বিলাশি স্টিমার ছেড়ে যায়।আমি তার নিরপদ দুরত্বে অবস্থান করছি । আমার যে বন্ধুটি সেখানে চাকুরী করে সে আমাকে গত ৬ মাস ধরে খুটিনাটি সকল তথ্য দিয়ে আসছে। তার সকল তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরাও প্রস্তুত। বিলাশি সেই নৌযানটি অনুসরণ করতে তার পাশেই আমাদের একটি বড় ট্রলার প্রস্তুত।সারি সারি ঝাউবন, বালুর নরম বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র। বিকেলের সমুদ্রতীরে সোনালী রোদের সাথে, নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকত। অপরূপ সুন্দর বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কিন্তু সে রুপকে উপেক্ষা করে জনতার ভিড় বিলাশি সেই স্টিমার ঘিরে। তারা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে স্টিমারটিতে থাকা অপূর্ব সুন্দরী সিনেমার নায়িকাকে এক নজর দেখতে। আমিও পাশের ট্রলার থেকে অপলক তাকিয়ে ছিলাম এক নজর দেখে নিজেকে ধন্য করতে তবে নায়িকা নয় অর্ককে।হঠাৎই জনতার হাততালি আর জোর সোরগোল শুরু হল. দেখতে পেলাম অপরুপা সেই নারী ডেকের উপর দাড়িয়ে হাত নাড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে। আমাদের ট্রলারটিও কাঁপুনি দিয়ে ইঞ্জিন চালু হল। আমি যাকে দেখব বলে অধির আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম তাকে পেলাম না।সুন্দর সাজানো স্টিমারটি সজোরে ছুটলে আরো গভীর সমুদ্রের দিকে। আমাদের ট্রলারটি তখনও সরছে না; কে যেন বলল নিচে আটকে গেছে। পানির গভিরতা এখানে দুই লিংকের একটু বেশি । মিনিট খানেক পর আমাদের ট্রলারটিও চলতে শুরু করল। আমরা এমন ভাবে যাচ্ছিলাম যেন মনে না হয় আমরা তাদেরকে অনুসরণ করছি।মূল সৈকত থেকে আমরা প্রায় ১০ নটিকেল দূরত্বে হিমছড়ির কাছ দিয়ে চলছি। স্টিমারটির গতি বাড়ছে, একই ভাবে আমাদের সাথে তার দূরত্বও ক্রমশ বাড়ছে। সন্ধ্যার আধার ধীরে ধীরে আরো গাঢ় হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমি একবারের জন্যও অর্ককে দেখতে পাইনি। সুন্দরী নায়িকাকে দেখেছিলাম কয়েকবার । তবে কি, সে আমাকে দেখেছিল? নাকি আমাদের নৌ যানটিকে ওদের অনুসরণ করছে বুঝতে পেরেছিল আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।আমরা প্রায় ১৮ নটিকেল দূরে চলছি । ইনানী বা হিমছড়ি কোন একটি স্থান আবছা দেখা যাচ্ছে কিন্তু স্টিমারটি ধীরে ধীরে গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর স্টিমারটির পিছু ছাড়লাম। হতাশ হয়েই ফিরে এলাম শুণ্য হাতে। ওই রাতের ফ্লাাইটেই ঢাকা ফিরে এলাম আমি।আপু তুমি আমাকে বলতে পারো আসলে অর্ককে কি আমি সন্দেহ করব না তার কাছে জানতে চাইবো সব ঘটনা? সে কি আসলেই বিশেষ কোন আকর্ষণে জড়িয়ে গেছে!অনেক লিখে ফেলেছি তোমাদের জন্য শুভ কামনা রইল, ভাল থেকো সবাই।ইতিলাবণী
যে স্টিমারটি নিয়ে সুন্দরী নায়িকা ভ্রমণে বের হয়েছে তাতে আছে ১টি ক্যান্টিন, ১টি সুইমিংপুল,পুলের পাশে সুন্দর গাছে সাজানো। এছাড়া আছে একটি ছোট বার, ১১টি কেবিন সহ আরো সুযোগ-সু্বিধা। জাহাজের নাবিক আছে ৩ জন। এক কথায় বলা চলে আয়েশি সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এতে।
স্টিটিমারটি এখন সেন্টমার্টিন থেকে প্রায় ২০ নটিকেলমাইল পশ্চিমে। নাফ নদী ছেড়ে যখন প্রথম সমুদ্রে পড়ে জলযানটি, ঢেউয়ের তালে মাতম নাচ জুড়েছিল ওটা। এখন সে উত্তাল ঢেউ অনেকটাই শান্ত । আকাশে তারা ফুটতে শুরু করেছে, বিশাল নীল জলরাশি ছবির মত দেখাচ্ছে।
(চলবে)
লেখক সংক্ষেপ :
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন