উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ             :         
প্রকাশকাল    :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

১৬তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১৭)

প্রায় রাত হয়ে এসেছে।আরাফ বের হওয়ার পর থেকে গাড়ি জোরেই চালিয়ে যাচ্ছে।নবনির কোনো কথাই তার কানে যাচ্ছে না।নবনি কোনো কিছুতেই আরাফের রাগ কমাতে পারছে না।আরাগ গাড়ির উপর সব রাগ ঢালছে।
নবনিঃআরাফ আপনি গাড়ির স্পীড কমাবেন?
আরাফ dont care মুড এ বসে আছে।যেন গাড়িতে ও ছাড়া আর কেউ নেই। 
নবনিঃআরায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াফ।
আরাফ ব্রেক লাগালো।
আরাফঃএই মেয়ে কি হয়েছে!!?কানের সামনে কেউ এভাবে চিল্লায়?এখনই তো আমার একমাত্র কানটা শহিদ হয়ে যেত।
নবনিঃহি হি হি। নবনি হাসছে হাসছেই। 
আরাফ রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।
নবনি হাসি থামিয়ে আরাফের কলার ধরলো।
নবনিঃHow dare you! আপনাকে এত সাহস কে দিল?ঘরে বউ রেখে পরকিয়া করেন কি করে?
আরাফঃকই বউ রেখে পরকিয়া করলাম। তুমি দেখেছো করতে?
নবনিঃদেখেছি মানে আপনি নিজেই তো বলেছেন।
আরাফঃআমি কবে বললাম?
নবনিঃকিহ!এখন অস্বীকার করছেন।
আরাফঃআমি তোমাকে বলছি লিজার সাথে সর্ম্পক আসে?
নবনিঃতো কি বলছেন?
আরাফঃআমি বলেছি লিজার সাথে সর্ম্পক ছিল।এখন আছে বলি নেই।বিয়ের কথা যেদিন হইসে তার আগে থেকেই আমার ওর সাথে কোনো সর্ম্পক নেই।তোমার কিডন্যাপ হওয়ার দিনই ওর সাথে সব শেষ হয়ে যায়।
নবনির মুখটা ছোট হয়ে যায়।
নবনিঃতার মানে বিয়ের আগে Relationship এ ছিলেন।৪ বছরের ভালোবাসা সেটা শুধু মন ভোলানোর জন্য বলেছিলেন।
আরাফঃবউদের এই এক সমস্যা। সব একধাপে উপরে বুঝে।তোমাকে আমি সতিই ভালোবাসি বলে খুঁজে পাওয়ার পর দেরি না করে বিয়ে করে ফেলেছি।আর ওর সাথে যা ছিল সবটাই অভিনয়। আমার একটা কাজ ছিল যেটা হাসিল করার জন্য আমাকে এই অভিনয়টা করতে হয়।
নবনিঃকি কাজ?! 
আরাফ নবনির মাথা বুকে নিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলো।
আরাফঃনবনি আমি এমন একটা কাজ করি যে কাজে গোপনীয়তাই সবার আগে Priority দিতে হয়।এই জন্য আমি তোমাকে কিছুই বলতে পারছি না।আর বললে তুমি আমাকে ভয় পাবে।
নবনিঃআপনি কি মানুষ খুন করার কাজ করেন?
আরাফঃঠিক এমনই।আবার পুরোপুরি এমনটা নাও।
নবনিঃআপনি সাইন্স এর স্টুডেন্ট ছিলেন।সব কথা ঘুরিয়ে বলেন। সোজাসোজি বলা যায় না।
আরাফঃআচ্ছা নবনি তোমার কি সত্যিই মনে হলো আমি তোমাকে অস্বীকার করবো?
নবনিঃSorry রাগে বলে ফেলছি।
আরাফ বুকে হাত দিয়ে দেখালো এই খানে খুব কষ্ট পেয়েছি।নবনি আরাফের বুকে ঠোঁট ছোয়ালো।
নবনিঃ আরাফ। শুনেন না।


আরাফঃবল।
নবনিঃশুনেন না।
আরাফঃবলওওওওও।
নবনিঃআদর লাগবে।
আরাফ গাড়ির ব্রেক কষলো।
আরাফঃতুমি নবনিতো নাকি রাত বিরাতে ভুতে ধরেছে।
নবনিঃভুতে ধরবে কেন!
আরাফঃতুমি তো বিয়ের আগে এত রোমান্টিক ছিলে না।
নবনিঃবিয়ের আগে তো আপনি আমার স্বামী ছিলেন না।
আরাফঃতাই না।তোমার সবসময় বেটাইমেই আদর পেতে মন চায়।ড্রাইভ করতে করতে জংগলে এসে পরেছি।এখন বাসায় যেতে যেতে বাকি রাত ও পার হয়ে যাবে।
নবনিঃকে বলছিলো আপনাকে জংগলে আসতে?এখন কি হবে! যদি কোনো ভুতে ধরে।
আরাফঃনবনি ভুত হয় না। বুঝছো।তুমি আয়তুল কুরসি পড়।
নবনি আয়াতুল কুরসি পরতে থাকে। আরাফ গাড়ি স্টার্ট দেয়।আরাফ অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছে না।গাড়ির হেডলাইট গুলো কাজ করছে না।হুট করে ভীষণ জোরে শব্দ হলো।নবনি কেপে উঠলো।আরাফের মনে হলো গাড়ির সামনে কেউ ছিল।যাকে আরাফ উড়িয়ে দেয়।নবনি ভয় পাবে বলে আরাফ নবনিকে কিছুই বলে না।
আরাফঃনবনি গাড়ির টায়ার পাঞ্চার হয়ে গিয়েছে। তুমি বসো আমি দেখছি।
নবনি আরাফের হাত ধরে রাখলো।
নবনিঃআরাফ। আমিও যাবো।
আরাফঃনবনি আমি ঘুরতে যাচ্ছি না।তুমি গাড়িতে বসে আয়াতুল কুরসি পরো।আমি দেখে আসছি।
আরাফ এর কথাটা নবনিকে আরো ভয় দেখিয়ে দিলো।তাই নবনিও নেমে পরে। যাই হোক আরাফ কে একা ছাড়বে না।
আরাফ নেমে আশেপাশে ফোনের লাইট দিয়ে দেখে কিছুই পায় না।কিন্তু গাড়িতে রক্ত লেগে আছে।তার মানে কেউ অবশ্যই ছিল।কিন্তু আরাফ পিছনের জায়গায়টাতে যেয়ে দেখে যেখানে গাড়িতে শব্দ হয়েছিল। কাউকে পায় না।ফিরে এসে দেখে নবনি বাইরে। 
আরাফঃনবনি।কেন নামলে কথা বললে শুনো না কেন?
নবনিঃআপনি ওইদিকে গেলেন তাই ভয় লাগছিল।আরাফঃএখন গাড়িতে ঢুকো।
নবনি বসার আগে কিছু একটা নবনির শরীর স্পর্শ করলো।নবনি খুব ঠান্ডা অনুভূত হলো।
আরাফ নবনির হাত ধরে গাড়ির ভিতরে নেয়।নেয়ার সময় নবনির হাত ঠান্ডা হয়ে ছিল।
আরাফঃনবনি শীত করছে।
নবনিঃহুম।
আরাফ নিজের জ্যাকেট পরিয়ে দিল।আরাফ খেয়াল করলো নবনি চুপসে গিয়েছে। কিছুই বলছে না।আরাফ দোয়া পরে নিজের আর নবনির শরির বন্ধ করলো।দোয়া পরার পরে নবনি হঠাৎই গরম হয়ে গেল।আরাফ ভাবলো জ্যাকেট পরানে এমনটা হয়েছে।জংগল পার হতেই আরাফ খেয়াল করলো কয়েকটা গাড়ি আরাফের পিছু নিয়েছে।আরাফ গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দেয়।কিন্তু গাড়ির ফিউল শেষ হয়ে আসছে। 
আরাফঃনবনি আমাকে ওয়াদা করো তুমি গাড়ি থেকে নামবে না।
নবনিঃকিন্তু কেন?
আরাফঃনবনি প্লিজ ওয়াদা করো।
নবনিঃআমি কেন এমন করবো।
আরাফঃআজকে বাসায় ফিরতে পারলে আমি তোমাকে সব বলবো।আমি কি কাজ করি সব। 
নবনিঃআচ্ছা ওয়াদা। 
আরাফঃনবনি আমাদের পিছনে গুন্ডারা লেগেছে।তারা শুধু আমাকে চায়।আমাকে পেলে ওরা তোমার কোনো ক্ষতি করবে না।আমি গাড়ি সেফ এ রাখছি। এখানে ওরা তোমাকে দেখবে না।তুমি গাড়ি থেকে নামবে না।ওরা চলে গেলে তারপর আসবা।


নবনিঃনা। আমি আপনাকে একা ছাড়বো না 
আরাফঃনবনি আমি বেচে ফিরবো তোমার কাছে।কিন্তু ওরা তোমার ক্ষতি করলে আমি আর বাচতে পারবো না।তুমি নেমো না।আমার মারা গেলেও আমার বউ এর সম্মানে একটা দাগ ও পরতে দিবো না।
আরাফ গাড়ি লক করে রিমোট পকেটে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
নবনি হাজার চেষ্টা করেও গাড়ি খুলতে পারছে না।
গুন্ডা গুলো আরাফকে খুবলে খাওয়ার জন্য একসাথে ঝাপিয়ে পরে আরাফ এক এক করে সবাইকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে।
আরাফঃতোদের মতো ভাড়াটিয়ে গুন্ডা আমার কিছুই করতে পারবে না।
গুন্ডা গুলো ক্ষেপে গুয়ে আরাফের সাথে লড়তে থাকে।মারামারিতে আরাফের হাতের রিংটি খুলে পরে যায় যেটা নবনি বিয়ের সময় পরিয়ে ছিল।আরাফ রিংটা নিতে গেলে একটা গুন্ডা আরাফের মাথায় ইট দিয়ে মারতে চেয়েছিল।সে আর মারতে পারে না।আরাফ ঝুকে যাওয়ায় ইট মাথায় লাগে না।
আরাফঃ নবনি পাখি। You saved me.বলেই উলটো ঘুরে ওই গুন্ডাটার হাত মচকিয়ে দেয়।
একটা গুন্ডা আরাফকে গুলি করে দেয়। গুলি আরাফের হার্টের পাশে লাগে। আরাফ মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুন্ডাগুলো আরাফকে ইচ্ছেমতো মারতে থাকে।
নবনি এখানে ছটপট করতে থাকে। বের হওয়ার জন্য। সেকোনো মতেই গাড়ির লক খুলতে পারছে না।
গুন্ডাগুলা যাওয়ার পর আরাফ রির্মোট দিয়ে গাড়ির লক খুলে দেয়।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


১৮তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন