উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৩৭তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৩৮)

সকলের অপেক্ষার অবসান ঘটে ডাক্টার এর আসায় ডাক্টার আরাফ এর কাছে এসে দাঁড়ায়।
আরাফঃডক্টর ইস শি অলরাইট?!
ডাক্টারঃএমারজেন্সি ব্লাড দরকার।ম্যানেজ করেন আর এই ওষুধ গুলো নিয়ে আসেন।
আরাফ এর বাবা ব্লাড ব্যাংকে ফোন দেয়।নিলয় আরাফ এর হাত থেকে কাগজ নিয়ে ওষুধ আনতে দৌড় দেয়।ওয়ারদা বাবুদের জন্য প্র‍য়োজনীয় জিনিসগুলো আনতে যায়।
আরাফ একা অপারেশন থিয়েটারের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
আরাফঃডক্টর আমকে ভিতরে যেতে দিন প্লিজ।
ডক্টরঃনা। আপনি ভিতরে যেতে পারবেন না।
আরাফঃপ্লিজ ডক্টর।শি নিডস মি।
ডক্টরঃআপনি ভয় পাবেন।
আরাফঃনা কিছু হবে না।প্লিজ। আই রিকোয়েস্ট ইউ।
ডক্টরঃওকে ফাইন।
আরাফ ভিতরে প্রবেশ করলো।নবনির চেহারার দিকে তাকিয়ে বুকটা ধক করে উঠলো।চেহারাটা ব্যাথায় নীল হয়ে গিয়েছে।আরাফ নবনির হাত নিজের দুই হাতের মাঝে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করলো।
নবনি আরাফ এর দিকে তাকিয়ে সাহস খুজে পেল।যেন এটারই অপেক্ষায় ছিল।
আরাফ নবনির সাথ হাসি মুখে কথা বলতে লাগলো যেন কিছুই হয় নাই।আরাফ এর দেয়া সাহসে নবনি ফুটফুটে দুই সন্তান এর জন্ম দিলো।প্রথমে মেহরাব দুনিয়ায় আসলো।ডক্টর মেহরাবকে আরাফ এর হাতে তুলে দেয়।মেহরাব আরাফকে দেখে কান্না করার জায়গা মুচকি হেসে দেয়।
নবনি খুব কষ্টে দুইটা কথা বলে।
নবনিঃআপনার ফটোকপি। এসেই হেসে দিলো।
আরাফ ও মুচকি হেসে বাবুর কপালে কিস করলো।


তার ২ মিনিট পর আদ্রিতা দুনিয়ায় আসলো।এসেই কান্না করে দিলো।ডক্টর আরাফ এর কোলে দিতেই চুপ হয়ে গেলো।আরাফ দুইজনকে দুই হাতে নিলো।
আরাফঃআর আদ্রিতা তোমার মতো। আমার পাগল।
নবনিঃবাবার আল্লাদি।
নবনি কিছুক্ষন পরই জ্ঞান হারালো।
আরাফঃনবনি।নবনিইইই।
ডক্টরঃডোন্ট ওয়ারি মিস্টার আরাফ।আমি তাকে ঘুমে ইঞ্জেকশন দিয়েছি।নার্স দেখো রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে কিনা।আপনি বাইরে যান।নবনিকে কেবিনে দিয়ে দিচ্ছি। 
আরাফঃনা। কেন!ওদেরকে দিবো না।
ডক্টরঃআর এ ক্লিন করে দিচ্ছিতো। আপনার কাছেই দিবো।
আরাফঃআচ্ছা ঠিক আসে।বি কেয়ারফুল ওরা যাতে একটুও ব্যাথা না পায়।
ডক্টরঃআচ্ছা আচ্ছা।
আরাফ নবনির কপালে চুমু দিয়ে বাবুদেরকে নার্সদের কাছে দিয়ে  বাইরে চলে আসলো।
বাইরে সবাই চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে।নবনি বাবা আর ভাইয়ো অনেকক্ষন যাবত অপেক্ষা করছিল।
আরাফ থমথমে মুখে তাদের পাশে যেয়ে দাড়ালো।
আসাদ খানঃবাচ্চারা কেমন আছে?
আদর চৌধুরীঃনবনি মা কেমন আছে?
আরাফ এর চেহারা দেখে সবার মন কু ডাক দিচ্ছে।
আরাফ আদর চৌধুরী আর আসাদ খানকে এক সাথে জড়িয়ে ধরলো।নিলয় আর রাজ আরাফ এর দুই কাধে হাত রাখলো।
আরাফঃআমি বাবা হয়ে গেছি।বাবারা।
সবাই আহম্মক হয়ে গেলো।
নিলয়ঃকিহ!!তুই তাইলে এতো নাটক করলি কেন!?
আরাফঃআরাফ চৌধুরী বাবা হয়েছে আর নাটক না করলে হয় নাকি!?
সবাই হো হো করে হেসে দিলো।
নাস মেহরাবকে আদর চৌধুরীর কোলে আর আদ্রিতাকে আসাদ খান এর হাতে দিলো।
আদর চৌধুরীঃবাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।আমার রাজনীতিবীদ দাদুভাই।
আরাফঃএখনই দিয়ে দাও রাজনীতিতে দেরি করো না।
আসাদ খান হো হো করে হেসে দিলেন।
আসাদ খানঃআর আমার ছোট্ট নবনিপাখি।
নিলয় আর রাজ প্রতিবাদ করতে লাগলো কোলে নেয়ার জন্য।কিন্তু আদর চৌধুরী আর আসাদ খান দিচ্ছেনই না।
ওয়ারদাঃনবনি কেমন আসে ভাইয়া!
আরাফঃআলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো।
নিলয়ঃআমাকে দাও। আমি ওর চাচা আর ও আমার মেয়ের জামাই ও হবে। আমার সাথে এমন করতে পারো না তোমরা।


আদর চৌধুরীঃমেয়ে জামাই হলে তুই মেয়ে দিবি।আমরা ছেলে দিবো কেন!?
নিলয়ঃআমাকে না দিলে আমি কিন্তু মেয়ে দিবো না।
ওয়ারদাঃতুমি না দিলে আমিই দিবো।আমার মেহরাবকে খুব পচ্ছন্দ হয়েছে।
মেহরাব ওয়ারদার কথায় হাসে।আরাফ সেটা দেখে মেহরাবকে তার বাবার কাছ থেকে নিয়ে ওয়ারদার কোলে দেয়।ওয়ারদা অবাক হয়ে যায়।
আরাফঃতোমার মেয়ে জামাইকে তুমি সামলাও।
ওয়ারদাঃও আমার মেয়ে থেকেও আগে। আমার প্রথম ছেলে। 
নিলয়ঃএটা ঠিক না।
আরাফঃতুই আমার  সাথে চল।
আরাফ নিলয়ের কাধে হাত দিয়ে রাজকেও টানতে টানতে সাথে নিয়ে গেলো।মিষ্টি আর খেলনা আনতে হবে। ঘর সাজাতে হবে কত কাজ।আরাফ ওদেরকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় সব কাজ করতে।তারপর নবনির কাছে আসে।
এখন কেবিনে আরাফ নবনি মেহরাব আর আদ্রিতা।
বাকিরা বাসায় এদেরকে নিয়ে যাওয়ার আয়োজনে নেমে পরেছে।নবনির এখনো জ্ঞান ফিরে নাই।
আরাফঃতোমরা কি পেট থেকে বের হয়ে কথা বলতে ভুলে গেলে নাকি?একটা কথাও বললা না।
মেহরাবঃতুমিতো নিষেধ করেছিলে।কথা বলতে।
আদ্রিতাঃভাইয়া বলে নেই তাই আমিও বলি নেই।
আরাফঃতোমরা এতো লক্ষী একবার বলায় এখন পর্যন্ত মনে রেখেছো!?
আদ্রিতাঃআমার একটা বিচার আসে।
মেহরাবঃআমার ও।
আরাফঃআসতে না আসতেই বিচার শুরু হয়ে গিয়েছে।কি বিচার বলো?
আদ্রিতাঃতুমি আমাকে পরে এনেছো কেন ভাইয়াকে আনতে পারলা না!!এখন সারাজীবন ছোট হয়ে থাকতে হবে।
আরাফঃআসলেই তো। এটাতো কঠিন সমস্যা।কিন্তু কি করবো ডক্টরতো ওকেই আগে আনলো।আমি কি করতাম বলোতো।
আদ্রিতাঃএটা ঠিক না। আমি রাগ করেছি।
আরাফঃআচ্ছা ঠিক আসে।মেহরাব আগে দুনিয়ায় আসলেও আদর এর ভাগ তুমি সবার আগে পাবে।ঠিক আসে!!
আদ্রিতাঃইয়ে।ঠিক আসে।
আরাফঃএখন মেহরাব এর বিচারটা শুনি।কি হয়েছে আব্বু বলো!?
মেহরাবঃতুমি আমাকে ওয়ারদা আন্টির মেয়ের জামাই বানালে কেন!!আমি বলসি তোমাকে আমি উনার মেয়েকে বিয়ে করবো?
আরাফঃকেন করবে না!?
মেহরাবঃআমি কাউকেই বিয়ে করবো না।মেহরাব চৌধুরী কোনো মেয়ের প্রেমে পরবে না।
নবনি হো হো করে হেসে দিলো।
আরাফঃতুমি কবে জাগলা?
নবনিঃযখন আপনি বিচার নালিশ নিয়ে বসেছিলেন।


আরাফঃহাসলে কেন?
নবনিঃবাপ কা বেটা।ফুল ফটোকপি আপনার।হি হি হি।
আরাফঃআজকে যে বললা না বিয়ে করবা না কোনো দিন বইলা নিয়ো বিয়ে করবা খবর করে ছাড়বো। তুমি এখনো তোমার বাবা ইতিহাস জানো না।জানলে এটা বলতা না।
মেহরাবঃবলবো না। 
আরাফঃঠিক আসে।দেখা যাবে।
মেহরাব কিছু বলতে নিয়েও চুপ হয়ে গেলো।
আরাফঃকি হয়েছে!?চুপ করে গেলে কেন?!
আরাফ খেয়াল করলো নার্স কেবিনে প্রবেশ করলো।
নার্স নবনিকে ওষুধ দিয়ে চলে গেলো।
আরাফঃমেহরাব কি করে বুঝলে?
মেহরাবঃআমি পায়ের আওয়াজ শুনতে পাই আব্বু।
আদ্রিতাঃআমিও।
আরাফঃকি গুনী ছেলেমেয়ে গো।
নবনিঃহ্যা। গো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৩৯তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন