উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৩৮তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৩৯)

আরাফ বাসায় আসার পর থেকে জিদ ধরেছে নবনিকে নিয়ে গ্রামে যাওয়ার। কিন্তু কেউ রাজি হচ্ছে না।সবাই বাবুদের নিয়ে মহাব্যস্ত কেউ তাদেরকে ছাড়তে চাচ্ছে না।সবার কেন্দ্রমনি এখন মেহরাব আদ্রিতা।সব থেকে মজার ব্যাপার মেহরাব আদ্রিতা সবার কথায়  হাসে যেন তারা সব বুঝতে পারছে।এই জন্য সবার আরো প্রিয় হয়ে উঠে।কেউ না জানলেও আরাফ নবনি আর আদর চৌধুরী খুব ভালো করে জানেন যে বাবুরা সব বুঝতে পারে।আর তাই হেসে খেলে থাকে।

আরাফঃনিলয় এখন বাচ্চাদেরকে আমাদের কাছে দে।বের হবো আমরা।
নিলয়ঃনা। তোরা গেলে যা বাবুরা কোথাও যাবে না।
আরাফঃআজব তো।এটা কোনো কথা। আমরা কি একা যাবো নাকি!!
নিলয়ঃতাইলে যাইস না থাক তোরাও।
আরাফঃনিলয়।বাচ্চাদের মতো করছিস কেন!!
আসাদ খানঃও ঠিকই বলছে আরাফ।তোমরাও যেয়ো না থেকে যাও।
আরাফঃআমাদের যে যেতেই হবে৷ 


আদর চৌধুরীঃআচ্ছা ঠিক আসে।সবাই রেডি হও আমরা সবাই যাবো।
নিলয়ঃএটা মানা যায়।ওয়ারদা ব্যাগ প্যাক করো।
সবাই রেডি হতে চলে যায়।আরাফ নবনি বাবুদের নিয়ে রুমে এসে পড়ে।
নবনিঃআরাফ।ওদের খুদা লেগেছে।
আরাফ একটা কাপড় এনে মেহরাব আদ্রিতার চোখে বেধে দিলো।তারপর নবনি তাদেরকে ফিডিং করালো।
সবাই গাড়িতে উঠে পরে।আদর চৌধুরী আর  আসাদ খান যাবেন না।তাদের মিটিং আসে।আদর চৌধুরী যাবেন না তাই নিলীমা চৌধুরী ও যাবেনা।আরাফ নবনি ওয়ারদা নিলয় রাজ আর বাবুরা রাওনা দেয়।
আরাফ নবনি রাজ পেছনে বসে আর নিলয় ওয়ারদা সামনের সিটে।আরাফ আর রাজ এর কাছে মেহরাব আদ্রিতা।নবনি আরাফের কাধে মাথা রাখে।ডিলেভারির পর এভাবে জার্নি করাটায় শরির অসুস্থ হয়ে পড়ছে।কিন্তু কিছুই করার নেই। সন্তান এর জন্য এতটুকুতো করতেই হবে।সে যে সাধারণ কোনো মেয়ে নয়।সে একজন মা। আর মা রা সব পারে।নবনি মুখে না বললেও আরাফ নবনি অসুবিধা ঠিকই টের পেলো।আরাফ আদ্রিতাকে ওয়ারদার কাছে দিয়ে নবনিকে বুকে জড়িয়ে নিলো।নবনিও নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পরলো।
গ্রামে পৌছাতে রাত হয়ে যায়।আদর চৌধুরী বাসা আগে থেকে ক্লিন করে রেখেছিল।গাড়ি গ্রামের চৌরাস্তায় এসে থামলো।গাড়ির এর থেকে ভিতরে যাওয়া সম্ভব না।এত বছর পরও গ্রামটা আগের মতোই আছে। কোনো উন্নয়ন হয় না।রাস্তাগুলো এতোটাই চিকন যে গাড়ি ঢোকানো সম্ভব না।সবাই গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।
আরাফ নবনিকে উঠায় না।নবনিকে কোলে তুলে নেয়।নবনির শরিরটা এতোটাই ক্লান্ত ছিল নবনি আধো আধো চোখ খুলে আরাফকে দেখে আবার চোখ বুঝে নেয়।নিলয় আর রাজ বাবুদেরকে কোলে নেয়।ওয়ারদা বাবুদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নিজের কাছে রাখে।আর বাকি জিনিসপত্র ড্রাইভার আংকেল বাসায় পৌছে দেয়।
সবাই বাড়ির মেইন দরজায় এ এসে পৌছায়।বাড়িটা পুরাতন জমিদার বাড়ির স্মৃতি ধরে রেখেছে।কারুকার্য গুলো পুরাতন আমলের কিন্তু অসম্ভব সুন্দর। সবাই বাসা দেখছে।
আরাফ বাসায় প্রবেশ করে নবনিকে একটা রুমে নিয়ে যায়।এটা আরাফ এর বাবার রুম ছিল।আরাফ নবনিকে বিছানায় শোয়ায়।তারপর বাবুদেরকে এনে নবনির পাশে রাখে। বাচ্চাগুলো সারা রাস্তা টুকুর টুকুর করে এদিক ওদিক দেখেছে।আর এখানে এসেই ঘুমিয়ে পড়ে।আরাফ মুচকি হাসে।


সবগুলো রুম খুলে দেয়া হয়েছে।শুধু আরাফ এর বড় দাদার রুম বাদে।যে যার পচ্ছন্দের রুমে চলে যায় রেস্ট নিতে।
আরাফও শুয়ে পড়ে নবনির পাশে।তার নিজেরো খুব ক্লান্ত লাগছে।রাত ১২ টা। পুরাতন আমলের ঘড়িটা শব্দ করে বেজে উঠে।শব্দে আরাফ এর ঘুম ভেংগে যায়।আরাফ চোখ খুলে দেখে নবনি বাবুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আরাফঃকখন উঠলে পাখি?
নবনিঃশিইইসসসস।অনেক আগেই উঠেছি।বাবুরা কান্না করছিল।অনেক কষ্টে চুপ করিয়ে ঘুম পারিয়েছি।
আরাফঃআচ্ছা।
নবনিঃআরাফ চলেন আমাদের বড় দাদুর রুমটা খুলতে হবে।এখন সবাই ঘুমায়।এখন ঠিক সময়।
আরাফঃহুম।কিন্তু বাবুরা!
নবনিঃআপনি কি ভুলে গিয়েছেন।ওরা নিজেদের রক্ষা নিজেরাই করতে পারে।আমাদের তাড়াতাড়ি যেয়ে তাড়াতাড়ি আসতে হবে।
আরাফঃআচ্ছা চলো।
আরাফ ব্যাগে কোরআন শরিফ এনেছিল।সেটা বাবুদের মাথার কাছে রেখে গেলো।
আরাফঃএখন চলো।
আরাফ নবনির হাত ধরে বড় দাদুর রুমটার দিকে এগোচ্ছে।রুমটা বড় একটা তালা ঝুলানো। তালাটাতে অনেক গুলে সুতো পেচানো। আরাফ এর কাছে একটা মাস্টার কিই ছিল। সেটা দিয়ে তালাটা খুলে ফেলে।নবনি সুতো গুলো টান দিয়ে খুলে ফেলে।
আরাফ নবনি বিসমিল্লাহ বলে রুমটাতে প্রবেশ করে।রুমটার দিকে তাকিয়ে তারা আশ্চর্য হয়ে যায়।এতো বছর বন্ধ থাকার পরও রুমটাতে কোনো ধুলোকনা নেই।একদম পরিষ্কার চকচক করছে রুমটা।কিছুটা সুগন্ধিও আসছে।
আরাফ তার দাদার বইগুলো দেখতে লাগলো।নবনি বেড এর কাছে ড্রয়ারগুলো চেক করতে লাগলো।
আরাফঃকিছুই তো নেই।নবনি।
নবনিঃএখানে অনেক গুলো তজবির আছে। আর একটা লকেট পেয়েছি।
আরাফ লকেটটা হাতে নিলো।লকেট খুলে ২ টা ছবি পেলো।
নবনিঃএই ছবির ছেলেটার চেহারাতো আপনার সাথে মিলে।কিন্তু পুরোটা নয়।
আরাফঃহ্যা।ছেলেটার আমার প্রতিচ্ছবি কিন্তু এটাতো আমি নই।আর পাশের মেয়েটাকেতো চিনতে পারছি না।এটা কে।


নবনিঃএই ছবিগুলো লকেটে কেন আর কি করে এলো। আপনার দাদাতো আপনাকে কখনো দেখে নেই।তাহলে আপনার মতো কারো ছবি কি করে এই লকেটে আসলো।
আরাফঃপ্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর একটিও নেই আমাদের কাছে।
নবনিঃপ্রশ্ন যখন এখানে আছে উত্তর ও এখানেই থাকবে।আমাদের আরো খুজতে হবে আরাফ।
আরাফঃহুম।আরাফ খুজতে লাগলো। আরাফ খেয়াল করলে বইগুলোর মাঝে একটা ডায়রি আছে।আরাফ ডায়রিটা হাতে নিলো।
আরাফঃনবনিইই।
নবনি অন্য জায়গায় খুজতেছিল।ঘুড়ে দেখলো আরাফ এর হাতে ডায়রি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৪০তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন