উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৪১তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪২)

সকালবেলা~
এর্লাম এর শব্দে আরাফ এর ঘুম ভেংগে যায়।নবনি এখনো গভীর ঘুমে।আরাফ নবনির কপালে চুমু দিয়ে উঠে পরে।আরাফ উঠে আদর চৌধুরীর রুমে যায়।আরাফ এর ঘুম থেকে উঠে নবনি আর বাবুদের চেহারা দেখার অভ্যাস।
একজন পুরুষের কাছে তার স্ত্রী সন্তানই তার শক্তি ও সারাজীবন এর পুঁজি।এদের চেহারার দিকে তাকিয়ে সারাদিন পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।যে পুরুষ এরা নিজের ঘরে থাকা এই সুখের সন্ধান করতে পারে তারাই জীবন যুদ্ধে চিরন্তন সুখী।
আদর চৌধুরী আর নিলীমা চৌধুরী ঘুমাচ্ছেন।বাবুরা ঝুলনায় ঘুমাচ্ছে।আরাফ তাদেরকে দুই কোলে নিয়ে নেয়।কোলে নিতে দুইজনই উঠে পরে।এদের ঘুম এতো পাতলা।এখন আর আরাফকে ছাড়বে না।
আরাফঃতোমরা এত দুষ্টু কেন?হুম?জানো আব্বু এখন অফিস যাবে উঠে পরেছো!অফিস না গেলে তোমাদের জন্য সুন্দর সুন্দর খেলনা কি করে আনবে।বলো দেখি।
বাবুরা হাসে।
আরাফ মেহরাব আদ্রিতাকে নবনির দুই পাশে বসিয়ে দেয়।দুইজন এবার মাকে ঘিরে ধরে।আদ্রিতা নবনির গালে হাত দিয়ে উঠানে চেষ্টা করছে।আর মেহরাব হাতটা বার বার সরিয়ে দিচ্ছে।সে তার মাকে উঠাতে দিবে না।
আরাফ এদের কান্ডে মিটমিট করে হাসছে।আরাফ নবনির চেহারা চলে আসা চুলগুলো কানের পিছনে গুজে দিলো।তারপর গালে চুমু খেল।আরাফ এর দেখাদেখি মেহরাব ও নবনির গালে চুমু খেল।নবনি চোখ না খুলে বলে ~
_মেহরাব আপনার পুরোটা ফটোকপি।আরাফ মহাশয়।
আরাফঃমোটেও না। মেহরাব এর মধ্যে তোমার গুনও আছে।মেহরাব আমার মতো যত্ন করতে জানে ঠিকই কিন্তু তোমার মতো সহজ এ যাকে তাকে ভালোবেসে ফেলে না আর যাকে ভালোবাসে তাকে সারাজীবন ধরে রাখতে পারে যেমনটা তুমি আমাকে ধরে রেখেছো।
আরাফ নবনিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।নবনি এক হাত দিয়ে মেহরাব আদ্রিতাকে ধরে রেখেছে যেন নিচে না পরে যায়।


নবনিতাঃআর আদ্রিতা?
আরাফঃআদ্রিতা~আরাফাত নবনিতার সংমিশ্রণ। 
নবনিঃআদ্রিতা আপনার মতো সবার থেকে আল্লাদ ভালোবাসা নিতে পারে।সবার এটেনশন পেতে এক নাম্বারে থাকে।
আরাফঃআর তোমার মতো লক্ষী কিন্তু প্রতিবাদী।নিজের অধিকারটুকু আদায় করে নিতে পারে।
আরাফ এর হাতের উপর নবনির মাথা রাখাতে চাপে হাতে ঘড়ির ছাপ পরে গিয়েছে।নবনি এতক্ষন খেয়াল করে নাই।এখন দেখতে পেরে উঠে গেলো।
নবনিঃ বলেন নাই কেন! ব্যাথা পাচ্ছেন?
আরাফঃবললে কি আর তুমি আরামে ঘুমাতে পারতে?!
নবনি উঠে যাওয়ায় খাটের কিনারাটা ফাকা হয়ে যায়।আদ্রিতা সেখানে এগোতে থাকে।আরাফ নবনি খেয়াল করে নাই।কিন্তু মেহরাব গুটি গুটি করে আদ্রিতার আগে কর্নারে চলে যায়।আদ্রিতা মেহরাব এর জন্য যেতে পারে না তাই পিছনে চলে আসে কিন্তু মেহরাব অনেকটা কর্নারে চলে আসে তাই খাট থেকে  নিচে পরে যায়।মেহরাব পরে গিয়ে কান্না না করলেও আদ্রিতার চিৎকারে নবনি আরাফ সে দিকে খেয়াল করে।নবনি দেখে মেহরাব নিচে পরে গিয়েছে।নিচে আরাফ কার্পেট বিছিয়ে রেখেছিল তাই মেহরাব বেশি  ব্যাথা পায় নেই।কিন্তু হাতটা ঘষা লেগে ছিলে গিয়েছে।নবনির কলিজা ধক করে উঠলো।সাথে সাথে মেহরাবকে কোলে তুলে নেয়।
আরাফ আদ্রিতার কান্না থামাচ্ছে।আরাফ ভাবছে আদ্রিতাও ব্যাথা পেয়েছে।কিন্তু আদ্রিতা কোথাও ব্যথা পায় নেই।আর মেহরাব ব্যাথা পেয়েও খিলখিল করে হাসছে।তার হাসি দেখে আদ্রিতা কান্না থামিয়ে হাসছে।


আরাফ নবনি একে অপরের চেহারার দিক তাকিয়ে আছে।
আরাফঃআদ্রিতা ব্যাথা পায় নাই।ও মেহরাব এর ব্যাথায় কান্না করছে।
নবনিঃআর মেহরাব আদ্রিতার কান্না থামানোর জন্য হাসছে।
নবনির চোখে পানি এসে পরলো।
নবনিঃইয়া আল্লাহ এরা সবসময় একে অপরকে এভাবেই ভালোবাসে।
আরাফঃআমীন।
নবনিঃসরি আব্বু।আম্মু খেয়াল করি নেই কিন্তু তুমি খেয়াল করেছো।আমার জন্য ব্যাথা পেয়েছে আমার বাবাটা।সরি। 
মেহরাব নবনির দুই গালে ছোট ছোট দুই হাত রেখে মুচকি হাসি দিচ্ছে।যেন ও একটুও ব্যাথা পায় নাই।
আরাফ মেহরাব এর হাতে মলম লাগিয়ে দিলো।
আরাফঃআমার লক্ষী আব্বুটা।
মেহরাব আদো আদো কন্ঠে বলে উঠলো ~
আ আ আব্বু তা।
আরাফ খিলখিল করে হেসে দিলো।
মেহরাব এর দেখা দেখি আদ্রিতাও বলে উঠলো 
আ আ আব্বু ত ত তা।
আরাফঃওরে আমার ছেলে মেয়ে দুই জনেই প্রথমে আব্বু ডাক ডেকেছে।
নবনিঃহ্যা।সমস্যা নেই।আমি আরো একটা ছেলে নিবো। ও প্রথমে আম্মু ডাকবে।দেখে নিয়েন।
আরাফঃতাই নাকি বউ।তোমার এই ইচ্ছাটা আমি অবশ্যই পূরন করবো।
কথাটা বলে আরাফ চোখ টিপ দিলো।নবনি কথায় কথায় বলে ফেললোও এখন বুঝতে পারলো সে কি বললো।নবনি লজ্জা পেয়ে মেহরাবকে নিয়ে চলে গেলো।
আরাফ আদ্রিতাকে কোলে নিয়েই রেডি হচ্ছে অফিস এর জন্য।নবনি নিচে গিয়ে আদর চৌধুরীকে দেখতে পেলেন।খবর এর কাগজ হাতে নিয়ে বসে আছেন মেহরাব এর অপেক্ষায়।মেহরাব আসলে তাকে পরে শুনাবেন দেশের পরিস্থিতি।এটা উনার প্রতিদিন এর রুটিন। নবনি আর আরাফ তাকে বুঝাতেই পারলো না যে মেহরাব এগুলো কিছুই এখন বুঝে না।তিনি এই কাজ মেহরাব যখন থেকে বসতে শিখে সেই দিন থেকে করে যাচ্ছেন।তার ধারনা এখন থেকে না শেখালে ছেলে আরাফ এর মতো হয়ে যাবে।তাই ছোট থেকেই তার রক্তে রাজনীতি ঢুকাতে হবে।
নবনি মেহরাবকে আদর চৌধুরীর পাশে বসিয়ে দিলেন আর আদর চৌধুরী নিজের কাজ শুরু করে দিলেন।নবনি সবার জন্য নাস্তা রেডি করতে চলে গেলো।
ওয়ারদার ঘুম ভাংগে নিলয় এর ডাকে।নিলয় এক কাপ কফি নিয়ে ওয়ারদাকে ডাকছে।
নিলয়ঃওয়ারদা।লক্ষীটা উঠো।
ওয়ারদা উঠে নিলয়কে দেখতে পায়।
নিলয়ঃউঠে পরো।অফিস যেতে হবেতো আমার।
ওয়ারদাঃযা দেরি হয়ে গেলো। আমাকে উঠাবেন না?আপনি কেন করতে গেলেন।আমি এখনই নাস্তা বানিয়ে দিচ্ছি।


নিলয়ঃনাস্তা আমি রেডি করে রেখেছি। তুমি খেয়ে নিও আমি অফিসে করে নিবো।আমার দেরি হয়ে যাবে না হয়।
ওয়ারদাঃসরি।আমি।
নিলয়ঃশিইইসসস।
নিলয় ওয়ারদার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেল অফিস এর জন্য।
ওয়ারদাঃ আল্লাহ। আমার সাথে যা করার করতে এই মানুষটা সাথে এমনটা না হলেও পারতো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৪৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন