উপন্যাস       :         অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০৮)

আজকে মনটা খুব খারাপ। আমার ভালো থাকাটা গ্রামে উড়াল দিবে কালকে।উনার নাকি ভাইয়ের বিয়ে।আমার কি হবে!আমার সময় কাটবে কি করে?লোকটা একটা পঁচা ব্যাক্তি। 
এসব ভাবছিলাম আফিফ এর কল আসে।রিসিভ করে চুপ করে আছি।
আফিফঃকি হলো? আমার জানপাখিটা ফুলে আছে কেন?
সিমরানঃআপনার কি? 
আফিফঃআমারইতো সব।
সিমরানঃআপনার নামে আমি মামলা করবো।আদালতে বিচার বসাবো৷ সিমরান এর আদালতে। 
আফিফঃঠিক আছে বসান।আমি ও উকিল আনবো ম্যাডাম।
সিমরানঃমিস্টার আফিফ আরহাম ফাইয়াজ আপনি মিস সিমরানকে ছেড়ে যাওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত। আপনি কি নিজের পক্ষে কিছু বলতে চান?
আফিফঃহ্যা।ম্যাডাম।আমি আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াতে ২ দিন এর জন্য যেতে চাচ্ছি।আমাকে দয়া করে পারমিশন দিয়ে বাধিত করুন।
সিমরানঃহা হা হা। আপনি কি দরখাস্ত লিখছেন?
আফিফঃআমি তো আপনার মতো প্রফেশনাল নই ম্যাম।
সিমরানঃঠিক ঠিক আসে।পাম মারতে হবে না।
আফিফঃআপনি কি বেলুন যে পাম দিবো?
সিমরানঃবেশি কথা বলেন।আপনার শাস্তি বাড়ানো হলো।আপনি বিয়ের থেকে আসার পর আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবেন।বুঝলেন?
আফিফঃজ্বি ম্যাডাম।আপনি যা হুকুম করেন।
সিমরানঃহি হি হি।


আফিফঃগান শুনবেন ম্যাডাম? 
সিমরানঃপারেন?
আফিফ~
Mareez-e-Ishq hoon main, kar de dawaa
Mareez-e-Ishq hoon main, kar de dawaa
O o ho...
Talab hai tu, tu hai nasha
Ghulam hai dil ye tera
Khulke zara jee loon tujhe
Aaja meri saanson mein aa
Talab hai tu, tu hai nasha
Ghulam hai dil ye tera
Khulke zara jee loon tujhe
Aaja meri saanson mein aa
Mareez-e-Ishq hoon, main kar de dawa
Haath rakh de tu dil pe zara
O o... haath rakh de tu dil pe zara
Tujhe mere rab ne milaya
Maine tujhe apna banaya
Ab na bichadna Khudaya
Tujhe mere rab ne milaya
Maine tujhe apna banaya
Ab na bichadna Khudaya
Mohabbat rooh ki hai laazim ghiza
Haath rakh de tu dil pe zara
O o... haath rakh de tu dil pe zara
O o ho...
Chaha tujhe maine wafaa se
Maanga tujhe maine duaa se
Paaya tujhe teri adaa se
Chaha tujhe maine wafaa se
Maanga tujhe maine duaa se
Paaya tujhe teri adaa se
Karam hadh se hai zyaada mujhpe tera
Haath rakh de tu dil pe zara
O o... haath rakh de tu dil pe zara
O o... haath rakh de tu dil pe zara
সিমরানঃWowww.আপনি এতো সুন্দর গান করতে পারেন!
আফিফঃএকটু আকটু পারি আর কি।
সিমরানঃএটা কি ছিলো?
আফিফঃপ্রকাশ।ভালোবাসার প্রকাশ। I will miss you a lot..
সিমরানঃ I love u a lot..i m getting more addicted day by day. 
আফিফঃআমিও এটাই চাই তুমি আমার প্রতি আসক্ত থাকো।আর শুধুই আমার উপর।
সিমরানঃনিজের খেয়াল রাখবেন।আর তাড়াতাড়ি এসে পরবো। 
আফিফঃআচ্ছা।আমি এখন যাই?


সিমরানঃযাই না আসি!
আফিফঃআসি।ঘুমিয়ে পরো।
আফিফ আয়াতুল কুরসি পরে ফু দিয়ে দিলো।ঘুমিয়ে পরো লক্ষীটা। আমার সকালে চলে যাবো।গ্রামে নেট পেলে যোগাযোগ করবো।
সিমরানঃআচ্ছা।
আফিফ কল রেখে দিলো।কিন্তু মনটা এখন ফুরফুরে হয়ে আছে।গানের শব্দগুলোর রেশ কাটছে না।কি সুন্দর করে মন ভালো করে দিয়ে গেলো।একা একা হাসছি কেয়া মনির আগমন।
কেয়াঃশেষ কথা বলা?
সিমরানঃহুম।
কেয়া মনি আমার বান্দুবির মতো।আপুর সাথে সব কিছু শেয়ার করা যায়।
কেয়াঃএই নে তোর চা।
সিমরানঃদাও।আচ্ছা কেয়া মনি তুমি কাউকে ভালোবাসো না কেনো?
কেয়াঃভালোবাসার জন্য ভালো রাখার মতো কারো থাকা খুব দরকার।আমার নেই।
সিমরানঃআমি আছি না?এভাবে বলো কেন?
কেয়া মনি আমাকে জড়িয়ে ধরলো তুই তো আছিসই।
বাইরে শো শো বাতাস চলছে।আমি আর কেয়া মনি বারান্দায় বসে আছি।আর চা খাচ্ছি।সময়টা খুব ভালো লাগছে।
কেয়াঃতুই কি ওকে সত্যিই ভালোবাসিস?
সিমরানঃভালোবাসি কি না জানি না শুধু এতটুকু জানি উনি সাথে থাকলে আমি খুব ভালো থাকি।উনার অনুপস্থিতি আমাকে অনেক পোড়ায়। 
কেয়াঃতুই তো আচ্ছা প্রেমে পরলি।দেখিস ডুবে যাস না। সাতার জানিস তো?
সিমরানঃএভাবে বলো না। ভয় করে তো।
কেয়াঃআচ্ছা আচ্ছা।আর বলবো না।চল শুয়ে পড়ি। 
সিমরানঃআচ্ছা।
সকালে কেয়া মনির ডাকে ঘুমটা ভাংগে।ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলটা হাতে নেই।নিতেই কাংখিত মানুষ এর মেসেজ দেখে চেহারায় হাসির ঝলক ফুটে।
আফিফ~
আমি রাওনা দিয়েছি।তুমি উঠে নাস্তা করে নিও।পৌছায় মেসেজ দিবো।নিজের খেয়াল রেখো।আমি তাড়াতাড়ি এসে পরবো।আই উইল মিস ইউ টু।লাভ ইউ।❤️আল্লাহ হাফেয।
আফিফ চলে গিয়েছে।মনটা বিষন্নতায় ভরে উঠলো।
উঠে নাস্তা করতে গেলাম।
কেয়াঃকি হলো মুখ ঝুলিয়ে রেখেছিস কেন?
সিমরানঃআজকে আমার মন ভালো নেই।
বিকিঃতোর মনে আবার কয় নাম্বার ঠাটা পরসে?
সিমরানঃবিক ব্রো।মেজাজটা খারাপ করবা না বলে দিলাম।
বিকিঃতোর মেজাজ রে আমি ভয় পাই লাগে?
সিমরানঃকেয়া মনি কিছু বলো না?!!
কেয়াঃবিকি মাইর খাবি।ওরে জ্বালাছিস কেন?চুপচাপ খা।
সিমরানঃআমি তোমাদের সাথ খাবোই না।
উঠে মাম্মার পাশে যেয়ে বসলাম।
মাম্মাঃকি হয়েছে?
সিমরানঃখাওয়ায়া দাও আমাকে। 


মাম্মাঃএটা আবার কেমন কথা।
সিমরানঃনা খাওয়ায় দিলে না খেয়েই উঠে যাবো।
আম্মুঃচুপচাপ খা।মানুষরে জ্বালাছিস কেন।
আমার এমনেই মন খারাপ। আরো মন খারাপ হয়ে গেলো।উঠে যেতে নিলে মাম্মা হাত ধরে বসায়।তারপর খাওয়া দিতে লাগে।
আমি মিটমিট করে হাসতে লাগলাম। আমার হাসি দেখে কেয়া মনি বিকি ভাইয়ার কলিজা জ্বলে পুড়ে ভুনা হয়ে গেলো।আর আম্মুতো এদিকে তাকাচ্ছেই না।
বেচারা আমার মামাতো ভাই বোন। উনাদের বাবার হাতে ভালোবাসা আমি নিচ্ছে আর তারা এতিম এর মতো অসহায় মুখ করে বসে আছে।এদের অসহায় মুখ দেখে আমার আব্বুর অনেক মায়া উতলে পরলো।
আব্বুঃতোমরা এদিকে আসো আমি খাওয়ায় দিচ্ছি।
কেয়া মনি আর বিকি ভাইয়া দৌড়ে চলে গেলো।এবার হিংসায় আমার কলিজা ভুনা হয়ে গেলো।ওরা আমাকে দেখিয়ে মজা করে খাচ্ছে।আর আমি ওদের দিকে তাকাচ্ছি ও না।
খাওয়া শেষে চা রান্না করার পাল্লা।চা রান্না করার দায়িত্বটা আমার আর কেয়ামনির দুই জন এর একজন এর পালন করতে হয়।কিন্তু আমি আর কেয়ামনি দুইজনই বরাবরে অলস টাইপের।আমি আস্তে করে কেটে পরবো সেখান থেকে বিকি ভাইয়া ধরা খাওয়ায় দিলো।
বিকিঃকি রে চা রান্না না করে কই পালাস?
সবার চোখ আমার উপর।
সিমরানঃআমি কই পালাচ্ছি।আমি তো চা রান্না করতেই যাচ্ছিলাম। কেয়া মনি বললো সে রান্না করবে তাই আমি একটু বারান্দায় যাচ্ছিলাম।
কেয়াঃআমি রান্না করবো না?
কেয়ামনি আমার দিকে কট মট করে তাকালো।এই চাহনিতে আমি পুরোটাই থ হয়ে গেলাম।
কেয়াঃআমারতো মাথা ব্যাথা করছে আজকে তুই রান্না কর।
কি আর করার গেলাম চা রান্না করতে।বিকি ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি হাসছে।আমি মনে মনে ভাবছি তোরে আমি দেখে নিবো।
চা রান্না করে সবাইকে দিলাম।এখানে আমি আর এক দফা ভুল করে ফেলি।চা আমি এতো ভালোই রান্না করি যে মাম্মা খুশির ঠেলায় ঘোষনা করে ফেলে যে এখন থেকে রোজ সকালের চা আমিই বানাবো।আচ্ছা মুসিবত তো।কেয়া মনি আর বিকি ভাইয়া হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।এ থেকে আমরা কি শিখলাম জনগন যে কখনো ভালো রান্না করতে যাবেন না।পরে বিপদ এ পড়ার পুরোপুরি আশংকা আছে।
সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলো।আফিফ এর কোনো খবর নেই।লোকটা সেখানে যেয়ে কোনো নতুন কাউকে পেলো নাকি তাও তো জানি না।উল্টা পালটা কিছু করলে খবরই আসে।


আমি ফেসবুক এ তার প্রোফাইল চেক করছি।একটা ছবি দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ।আফিফ মিষ্টি আপুর মামাতো বোন এর সাথে দাঁড়িয়ে তুলেছে পিকটি।ছবিতে ও মেয়ের হাত আফিফ এর  বুকে রাখা। আর আফিফ এর শার্টের উপর এর সাইডের দুইটা বোতাম খোলা। মেজাজ আমার ৪২০ ডিগ্রিতে উপরে উঠে গেলো
কত বড় সাহস।অন্য কোনো মেয়ে গায়ে হাত দিবে কেন!আর শার্টের বোতাম খোলা কেন থাকবে।তোর খবরই আছে মেন্ডাক এর বাচ্চা মেন্ডাক।একবার আয় তুই খালি ঢাকা। তারপর তোরে বুঝাচ্ছি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন