উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ১১)

শহরের স্থানীয় সদর হাসপাতালে নেওয়া হলো ফারজানা বেগম কে।বেঁচে থাকলেও তার অবস্থা শোচনীয়।গলায় ফাঁস দেওয়ার দেড় মিনিটের মধ্যে বড় ছেলের বউ সামিহা কোণার আধখোলা জানালা দিয়ে এই দৃশ্য দেখে স্বামীকে দ্রুত ডাক দিয়ে বলে।তখন অয়ন আর কিছু আত্নীয় মিলে দরজা ভেঙে ঢুকে ফারজানা বেগমকে উদ্ধার করে।তখনও ফারজানা বেগম বেঁচে ছিলেন তবে জ্ঞান ছিলো না।অতঃপর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ঔষধ খাওয়ার পর জ্বর ছেড়েছে শয়নের কিন্তু ঠান্ডায় গলা বসে গেছে।একটু আগে পাখি গরম স্যুপ দিয়ে গেছে।শয়ন খেতে খেতে নিজের ফোন চালু করলো।অয়ন আর মায়ের ফোন থেকে কল এসেছে কয়েকবার।শয়ন দেখলো কিন্তু পুনরায় কল দিলো না।কারণ ও জানে কেনো ওকে ফোন করা হয়েছে তবে চিন্তাও হচ্ছে বাড়িতে কি হচ্ছে ভেবে।

পাখি কোচিং এ যাবার জন্য তৈরি হয়ে শয়নের ঘরে এলো।শয়ন তখন বই পড়ছিলো।সারাদিনের ব্যাস্ততা,অফিস সব মিলিয়ে বই পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না।এই বইটাই আরও একমাস আগে নিয়েছিলো কিন্তু সবেমাত্র অর্ধেক পড়তে পেরেছে অথচ এমনও দিন গেছে একবসায় শ'পাচেক এর বই পড়ে ফেলেছে।সেসব এখন সোনালী অতীত!


পাখি শয়নকে গভীর মনযোগে বই পড়তে দেখে ডাকতে দ্বিধা বোধ করছিলো।তবুও ডাকতে তো হবেই নাহলে দেরি হয়ে যাবে।ও শয়নের মনযোগ আকর্ষণের জন্য হালকা গলা ঝাড়া দিয়ে বলল,'আমি কোচিং এ যাচ্ছি।'

শয়ন বই থেকে চোখ উঠিয়ে পাখির দিকে চেয়ে বলল,'আচ্ছা,যাও।সাবধানে যেও।'
পাখি মাথা নেড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।ওর যাওয়ার পানে চেয়ে শয়ন ভাবলো আজকাল এই মেয়েটার জন্য চিন্তা হয় ওর।কিন্তু কেন?

ক্লাস শেষ করে বাইরে বের হতেই পেছন থেকে এক ভাইয়া ডাক দিলো পাখিকে।ইনি বায়োলজি পড়ায় তবে নিজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলোজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।পাখি ফিরে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি বললেন,'পাখি তুমি কি ফ্রী আছো?'
'কেন স্যার?'

সবাই ভাইয়া বললেও পাখি সবসময়ই স্যার বলে।
'ফ্রী থাকলে তোমার সাথে কিছু কথা বলতাম।'
'জ্বি স্যার বলুন।'

পাখি ভাবলো পড়ার ব্যাপারে কোনো কথা হবে হয়তো তাই।আগ্রহ নিয়ে তাকালো রেহানের দিকে।রেহান এক হাত মাথার পেছনে দিয়ে বলল,'এখানে না।কোনে কফিশপে বসি?'
এবার পাখি একটু সন্দিহান গলায় বলল,'কেন স্যার?কথা বলতে কফিশপে বসা লাগবে কেন?'


'কারণ কথাগুলো এখানে বলা যাবে না।'
'আপনি কি পড়াশোনার ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চান?'
'জরুরি নয় সবসময় পড়াশোনা বিষয়ক কথাই বলতে হবে।অন্য কথাও থাকতে পারে।'
'সরি স্যার।আমার সময় নেই।'

রেহানের কথার ধরণেই পাখি অনেকটা বুঝে ফেললো।তাই মুখের ওপর না করে সেখান থেকে চলে গেলো।আর রেহান হতাশায় সেদিকে চেয়ে রইলো।আজ পর্যন্ত এত ভালো লাগা কারো প্রতি আসে নি ওর।প্রথম ক'দিন মনে করেছিলো আকর্ষণ ধীরে ধীরে চলে যাবে কিন্তু উল্টোটা হচ্ছে।জোয়ারের পানির মত ভেসে যাচ্ছে একূল।এখন ভাসাতে হবে ওকূল ও।এত সহজে হাল ছাড়বে না রেহান।সিঙ্গেল হলে কাজ সহজ হবে,মিঙ্গেল হলে একটু বেগ পেতে হবে তবে সেটাও সমস্যা।জীবনের প্রথম ভালোবাসা এত সহজে তো আর যেতে দেওয়া যায় না।

কোচিং থেকে বাসায় ফিরে পাখি দেখলো শয়ন রান্নাঘরে টুকটাক করছে কিছু একটা।দ্রুত রান্না ঘরে এসে দেখলো নুডলস রাঁধছে শয়ন।পাখি উদ্বিগ্ন স্বরে বলল,'সরুন আপনি আমি করে দিচ্ছি।অসুস্থ শরীর নিয়ে উঠলেন কেন?আমারই দোষ আমি কেন ওসব ফাউল কথা শুনছিলাম তখন?'

শয়ন মৃদুহাস্যে বলল,'আস্তে আস্তে!শ্বাস নিন।এত কথা একসাথে বললে কিভাবে হবে?আমি ঠিক আছি।শুধু নুডলস খেতে মন চাচ্ছিলো বলে বানিয়ে নিলাম।আপনি এত ব্যস্ত হবেন না।ফ্রেশ হয়ে ঘরে আসুন।আপনার জন্যও বানিয়েছি।একসাথে খাবো।'


পাখি ওর কথা ফেলতে পারলো না।মাথা নেড়ে চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মত ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলো।এরপর শয়নের ঘরে গিয়ে দেখলো ও বসে আছে নুডলস নিয়ে।পাখিকে দেখে বসার জন্য ইশারা করলো।পাখি বসতেই বলল,'আপনার পড়াশোনা কেমন হচ্ছে?'
'আলহামদুলিল্লাহ ভালো।'

'ঠিকাছে।ভালোমতো পড়বেন।একদম চিন্তা মুক্ত থাকবেন।অসুস্থ হয়ে পড়া যাবে না।'
পাখি মাথা নাড়লো।তখন শয়ন আবার প্রশ্ন করলো,'আচ্ছা,আপনি তখন কি যেনো বলছিলেন!কার ফাউল কথা শুনছিলেন বা এরকম কিছু একটা।'

পাখি ভাবলো শয়নকে এটা বলবে না বলবে না?বললে যদি খারাপ ভাবে?আরও দু একদিন দেখে তারপর জানাবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো ও।তাই কথা কাটিয়ে বলল,'ওই এক ফ্রেন্ডের কথা বলছিলাম।'
'ও আচ্ছা।'শয়ন অতকিছু না ভেবে স্বাভাবিক ভাবে নিলো।

নুডলস খেয়ে পাখি রান্নাঘরে এসে দুপুরের রান্নার প্রস্তুতি নিলো আর শয়ন নিজের বই পড়ার মনযোগ দিলো।ও চেয়েছিলো পাখির রান্নায় সাহায্য করতে কিন্তু পাখি কঠোরভাবে বলে দিয়েছে এই চিন্তা মাথায়ও আনতে না।শয়ন প্রতিবাদ করলো না আর করবেই বা কি!ওই চোখের দিকে তাকিয়ে প্রতিবাদ করার ইচ্ছে হয় নি।

রান্না শেষ পর্যায় তখন শয়ন রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে বলল,'হেল্প লাগবে?'
'আপনি উঠে এসেছেন কেন?'
'শুয়ে-বসে থাকতে ভালো লাগছে না।আমাকে বলুন কি করতে হবে করে দিচ্ছি।'
'কিচ্ছু করতে হবে না।'
'আহা!এমন করেন কেন?আমি সব পারি।আপনি বলুন শুধু।'


এত উৎসাহ দেখে পাখি হেসে বলল,'আচ্ছা তাহলে সালাদ বানিয়ে ফেলুন।আর সব হয়ে গেছে।আমি ততক্ষণে গোসল করে আসি।'
'আচ্ছা,যান।'

পাখি গোসল করতে চলে গেলো আর শয়ন সালাদ বানাতে লেগে গেলো।বানানো শেষে ড্রইং রুমে আসতেই শুনলো পাখির ফোন বাজছে বেশ কয়েকবার।শয়ন ভাবলো রিসিভ করে বলে দিবে পরে ফোন করতে।সেই ভেবে ফোন রিসিভ করে কথা বলার আগেই ও'পাশ থেকে একটা পুরুষ কন্ঠ বলে উঠলো,'আই লাভ ইউ পাখি।'

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন