উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান - Bangla Golpo - Kobiyal - কবিয়াল
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111

২৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২৪)

আর কিছুক্ষন পর ১২টা বাজবে। তিথি মেহরাব আদ্রিতা বাদে সবার মনে ভয় কাজ করছে।আরাফ আরিয়ানকে কল দিয়ে আদ্রিতাকে এখানে ডেকে নিয়েছে।তিথি অনেক কিছু করতে চেয়েছিলো কিন্তু আরাফ করতে দেয় নাই।

ডাইনিং রুমের দেয়াল ঘড়িটা আরিয়ান ২০ মিনিট স্লো করে রেখেছে।তাই ১২ টা বাজতে সবাই উইশ করে কেক কেটে নিলো।
আরাফঃঅনেক রাত হয়েছে। এইবার যে যার রুমে যাও।
তিথিঃমাত্রইতো কেক কাটলাম একটু মজাতো করতে দাও।
আদ্রিতাঃআমার ফাইল কমপ্লিট করতে হবে তিথি। কালকে প্রেজেন্টেশন আছে।অন্য সময় মজা করবো নি।
তিথিঃতোমার কাজ তো সারাজীবনই থাকবে। আজকে না হয় একটু
আরিয়ানঃসরি শালিকা।কিন্তু আমার ও সকালে অপারেশন আছে। এখন একটু ঘুমানো প্রয়োজন।
তিথির মন খারাপ হয়ে গেলো।

মেহরাবঃতিথি আজকে আদ্রিয়ান নেই তো। তাই কোনো আনন্দও অনুভব হচ্ছে না।আদ্রিয়ান আসলে আমরা আবার পালন করবো নি।
তিথিঃহুম।আচ্ছা।
নবনিঃএখন সবাই যেয়ে শুয়ে পড়ো।
মেহরাব আদ্রিতা তিথি চলে গেলো।নূর আরিয়ানকে আরাফ নবনি দাড়াতে বললো তাই তারা যায় নাই।
আরাফঃরুমের লাইট অফ করো না তোমরা।আর যাই হোক আজকে রাতটা আলাদা থাকবে।কোনো কিছু অস্বাভাবিক দেখলে আমাকে কল করবে।আমরা অপেক্ষায় থাকবো।
নূরঃআচ্ছা।
আরিয়ানঃহুম।
নবনিঃসাবধান থেকো।আর ৫ মিনিট বাকি।
আরিয়ান নূর দ্রুত চলে গেলো মেহরাব আদ্রিতার কাছে। 
মেহরাব ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে।
মেহরাবঃলাইট অফ করে চলে এসো।শীত পড়ছে অনেক।উষ্ণতা লাগবে।তাড়াতাড়ি এসে পড়ো তো।

নূর দরজা আটকে দিলো।
নূরঃলাইট জ্বলবে আজকে।আমার ভয় করে অন্ধকারে।
কথাটা বলতে বলতে নূর কম্বলের নিচে ঢুকে পড়লো।
মেহরাব নূরকে জড়িয়ে ধরলো।
মেহরাবঃআজকে কি তাহলে লাইট জ্বালিয়ে তোমাকে জ্বালাবো?
কথাটা বলে চোখ টিপি মারলো।
নূরঃঘুমান চুপচাপ। আমার ঘুম আসছে।
মেহরাব এর হাসি মুখটা চুপসে গেলো।
মেহরাবঃআমার আজকে জন্মদিন নূরপাখি।
নূরঃহুম তো?

মেহরাব আর কিছু বললো না।রাগ করে অন্য পাশ ঘুরে শুয়ে পড়লো।মেহরাব চোখ বুঝতেই নূর দেয়াল ঘড়িতে দেখলো আর ১ মিনিট বাকি ১২ টা বাজতে।নূর আয়াতুল কুরসি পড়ে মেহরাবকে ফু দিয়ে দিলো।

এদিকে আরিয়ান রুমে প্রবেশ করার পর ও আদ্রিতার কোনো হেলদোল নেই।সে এক ধ্যানে ল্যাপটপ এ কাজ করছে।আরিয়ান তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো।
আরিয়ান এর সাংসারিক জীবনে এটা আজ নতুন কিছু না।বিয়ে পর প্রতি রাত এমনই কাটে।আদ্রিতার সারা রাত কাজ করবে।আর ভোরের নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে।সকালে আরিয়ান এর চোখ খোলার আগেই অফিসে চলে যায়।আদ্রিতার এই অবহেলাগুলো গায়ে কাটা দিয়ে উঠলেও মুখ বুঝে সহ্য করে নেয় আরিয়ান। কারন সে এই অবহেলাগুলোতে অভ্যস্ত।
আরিয়ান এর মা বাবা দুইজনই বড় মাপের ডাক্টার।কাজের তাগিদে সারা বছর দেশে বিদেশে ভ্রমন করে ব্যস্ততায় কাটান।এমনও দিন গিয়েছে আরিয়ান না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেও দেখার মতো কেউই থাকতো না।

মাঝে মাঝে আরিয়ান এর খুব করে মনে হয় তার মা বাবার রক্তের সন্তান না সে।কিন্তু আবার নিজেই নিজেকে বুঝায় হয়তো তার ভবিষ্যৎ এর জন্যই তারা এতো খাটুনি খেটে টাকা উপার্জন করে।
আরিয়ান বিছানায় বসে মোবাইল ঘাটছে।মোবাইল চালানোটা শুধুই অযুহাত।আরিয়ান মূলত মোবাইল এর পাশাপাশি আদ্রিতার উপর নজর রাখছে।
ঠিক ১২ টা বাজতেই আদ্রিতার কপালে ভাজ পড়ে গেলো।চোখ গুলো নীল রং ধারন করলো।সামনে থাকা ল্যাপটপটার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে আদ্রিতা।
আরিয়ান নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।আধুনিক যুগে পা দিয়ে মেডিকেল সাইন্স পড়ে এমন ঘটনা অবিশ্বাস করাটাই স্বাভাবিক আরিয়ান এর।আরিয়ান কিছুক্ষন এর জন্য বরফের মতো জমে গেলো।

অনেকক্ষন তাকানোর ফলে ল্যাপটপটায় আগুন ধরে যায়।আগুন দেখে আরিয়ান এর স্থির হয়ে যাওয়া ব্রেনটা সচল হয়ে পড়ে।আরিয়ান তাৎক্ষণিক দৌড়ে যেয়ে ল্যাপটপটা আদ্রিতার কোল থেকে নিচে ফেলে।আদ্রিতা রাগান্বিত হয়ে আরিয়ান এর দিকে তাকায়।
আরিয়ান আদ্রিতাকে উচু গলায় এক ধমক দেয়।আদ্রিতা কেপে উঠে আরিয়ান এর ধমকে।চোখগুলো স্বাভাবিক রং ধারন করে।
আদ্রিতাঃআরিয়া... নামটা পুরো উচ্চারণ এর আগে আদ্রিতা জ্ঞান হারায়।
আরিয়ান আদ্রিতাকে পাজকোলে তুলে নিয়ে বিছানায় রাখে।দ্রুত আরাফ নবনিকে কল করে আসতে বলে।

নূর এর চোখটা লেগেই আসছিলো তখনই সারা ঘরে রজনীগন্ধা ফুলের সুবাস ছড়িয়ে যায়।ঘ্রানটা এতোই তীব্র ছিলো যে নবনির ঘুম ভেঙে যায়।নবনি চোখ খুলে ঘরটা অন্ধকার পায়।নবনি অবাক হয়ে যায় কারন সে লাইট জ্বালিয়ে রেখেছিলো।হাত দিয়ে পাশে থাকা মেহরাবকে ছোয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু মেহরাবকে পাশে পায় না।নূর এইবার ভয় পেতে শুরু করে তখনই ঘরটা সাদা আলোয় আলোকিত হয়ে যায়।আলোর তীব্রতায় চোখ খুলে রাখা দায়।নবনি সুতির ওড়নার চোখে বেধে আয়াতুল কুরসি পড়তে পড়তে চোখটা খুলে।
সুতির ওড়নার আড়ালে ঝাপসা ঝাপসা যা দেখে তা দেখে নূর এর চোখগুলো আপনা আপনি বড় হয়ে যায়।নূর এর সামনে থাকা মেহরাব একটা রাজকীয় সিংহাসনে বসে আছে।মেহরাব এর চোখ দুটো বন্ধ।হয়তো গভীর ঘুমে।কিন্তু ঘুমের মাঝেও ঠোঁটে মুচকি হাসি বিদ্যামান।মেহরাব এর মাথার উপর নীল বড় ফেনা তোলা সাপ ছায়া দিয়ে রেখেছে।নূর মোবাইলে দেখলো সময় ১২ টা ১। আস্তে আস্তে আলো কমে আসলো। সাপটা মেহরাবকে বিছানায় রেখে চলে গেলো।নূর কাপাকাপা হাতে মেহরাব এর গায়ে হাত দিতেই মেহরাব জেগে উঠলো।

মেহরাবঃঘুমাও নাই?নূর। 
নূর মেহরাব এর কন্ঠ শুনে নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক করে নিলো।
নূরঃঘুম আসছে না।
মেহরাব তার মন ভোলানো হাসি দিয়ে নূরকে বুকে জড়িয়ে নিলো।নূর খেয়াল করলো মেহরাব এর গা অত্যন্ত গরম উত্তপ্ত। নূর সেই তাপ সহ্য করতে পারছে না।তবুও দাত খিচে চুপ করে আছে।মেহরাব কিছুক্ষন পরই ঘুমিয়ে পড়ে।আর গা টাও শীতল হয়ে আসে।নূর দীর্ঘশ্বাস নেয়।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

২৫ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন