উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান - Bangla Golpo - Kobiyal - কবিয়াল
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111

২৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২৭)

আরাফ পরির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।পরি অবিশ্বাস্য নয়নে আরাফকে দেখছে।
পরিঃতুমি এখানে?কিভাবে?কি করে?
আরাফ বাকা হাসলো।
আরাফঃআমি যে কি তা তো তুমি খুব ভালো করেই জানো। তাই না পরি?মনে আছে তো অতীতে কি করে নাক চুবানি খাওয়াইছিলাম?
পরির মনে পড়ে যায় আরাফ তাকে দিয়ে ঘর মুছানো সহ কত কাজ করিয়েছিলো।
আরাফঃতাহলে এখানে আসা তো আমার কাছে কঠিন কিছু না তাই না?
আর এটাই না আমি তোমার আর তোমার নতুন প্রেমিকের ব্যাপারে ও সবটা জানি।
পরিঃকি জানো তুমি?

আরাফঃএই যে তোমাদের একটা বাবুও আছে।আর ওই বাচ্চাটা আমার কাছে।
পরিঃতুমি জানো ওই বাচ্চা কে?
আরাফঃহুম।খুব ভালো করে জানি।আর এখন ওই বাচ্চাকে মেরে ফেলতেও আমি দুইবার ভাববো না।কারন কথা যখন আরাফাত চৌধুরীর পরিবারে আসে তখন আরাফাত চৌধুরী কাউকেই ছাড় দেয় না।কাউকেই না।

পরিঃনা।তুমি ওকে কিছু করবে না।
আরাফঃতাহলে গড়গড় করে নিজের গুনাহ গুলো কবুল করতে শুরু করো।
পরিঃআমি বলছি।সব বলছি।
নূর ডায়রি খুজতে খুজতে মেহরাব থেকে আলাদা হয়ে যায়।হুট করে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়।

নূরঃঅন্ধকার কি করে হতে পারে?এখন তো দুপুরবেলা। সূর্যের আলো ছড়িয়ে থাকার কথা।
নূর অনেকগুলো চিৎকার এর আওয়াজ শুনতে পেলো।নূর কাপা কাপা পায়ে সামনে এগিয়ে গেলো কি আছে দেখার জন্য।সামনে যেতেই দেখতে পেলো কিছু সাদা অবয়ব রুমের ভিতর ছোটাছোটা করছে।অবয়ব গুলোর চেহারা এতোটাই বিভৎস নূর চিৎকার দিয়ে উঠলো।চিৎকারে অবয়ব গুলোর দৃষ্টি নূর এর উপরে পড়লো।

অবয়বদের মাঝে একজন বলে উঠলো।
_কতদিন ধরে মানুষের রক্ত সেবন করা হয় না।
অন্য জন বলতে লাগলো।
_আর তুই তো জানিস আমার মানুষ এর হাড় চিবাতে কতো ভালো লাগে।
পাশ থেকে আরো এক জন বলে উঠলো।
_দোস্ত তোরা হাড় আর রক্ত খাইস।আমাকে মাংস দিস।

নূর এর গন্ধে গা গুলিয়ে আসছে।নূর উঠে দৌড় দিলো।দৌড়াতে দৌড়াতে একটা সাদা মানুষ রূপি অবয়বের সাথে ধাক্কা খেলো।নূর তাকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।
রাজপ্রাসাদে ঢোকার সময় নূর একটা ছবি দেখেছিলো।উনার চেহারা অবিকল ওই ছবিটার মতো।পরি এসে পড়ায় আর জিজ্ঞেস করা হয় নাই আরাফকে এই লোকটা কে।
লোকটার চেহারায় এক অদ্ভুত মায়া জড়ানো।চোখ গুলো গাড় নীল একদম মেহের এর মতো।শুভ্র পাঞ্জাবিতে লোকটাকে অসাধারণ লাগছে।তার গা থেকে মিষ্টি সুগন্ধি ভেসে আসছে।

_কে তুমি?
নূরঃআমি আমি আম
_ভয় পেয়ো না। আমাকে বলো কে তুমি এভাবে পালাচ্ছিলে কেন?
নূর কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওই অবয়ব গুলো বিভৎস চেহারা নিয়ে হাজির হলো।তাদের কারো কারো গলা থেকে মাথা আলাদা,  কারো পায়ের নখ ওঠানো সেখানে থেকে রক্ত ঝরছে,কারো পেটের ভুরি ঝুলে আছে।

নূর কাপতে কাপতে লোকটার পিছনে চলে আসলো।লোকটা গাড় নীল চোখ গুলো দিয়ে রাগান্বিত নয়নে অবয়ব গুলোর দিকে তাকালো।অবয়বগুলোর মাঝে একজন বলে উঠলো।
_ও আমাদের খাবার। ওকে দিয়ে দে আমাদের কাছে।
লোকটা বলে উঠলো তোদের সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি। তোরা আমার সামনে কথা বলার সাহস কি করে পাচ্ছিস?জানিস কে আমি?
_কে তুই?
দেখাচ্ছি আমি কে!!

লোকটা সূরা পড়তে শুরু করলো।সূরার শব্দে অবয়ব গুলোর কানে আগুন ধরে গেলো।কান গলে পড়তে শুরু করলো।অবয়ব গুলো কানে হাত দিয়ে পালিয়ে গেলো।যাওয়ার সময় একজন অবয়ব অনেক কিছু বললো~
এর প্রতিশোধ তোর ছেলেকে দিয়ে মিটাবো।বাকিরা নতুন বলে তোকে চিনে নাই।কিন্তু আমি জানি তুই কে।কারন আমি এই রাজপ্রসাদে ৬০ বছর যাবত আছি।
লোকটা বলে উঠলো আমার কোনো ছেলে নাই।

_আছে।আমি জানি আছে।কারন আমার স্ত্রীই তোর স্ত্রীর দাসী ছিলো।তোর স্ত্রীর মৃত্যুর পর সেই তোর ছেলেকে মানুষের দুনিয়ায় রেখে এসেছে।বিনিময় ওই দম্পত্তি আমার স্ত্রীকে রাজ ভোগ করিয়েছে।
লোকটা হুট করে বিচলিত হয়ে উঠলো।
_কোথায় আমার ছেলে?কার কাছে দেয়া হয়েছে আমার ছেলেকে?
সে আসবে।শ্রীঘ্রই সে আসবে রাজপ্রাসাদে।তোর ছেলেই হবে এই রাজ্যের রাজা।কিন্তু তার আগেই আমি তাকে মেরে ফেলবো।

লোকটা বিভৎস হাসি হেসে চলে গেলো।
লোকটা চিৎকার করে ডাকলো।
আমার ছেলে কোথায়?বলে যা আমাকে।
লোকটা মাটিতে বসে পড়লো।
ধন্যবাদ আপনাকে।আর এভাবে ভেঙে পড়বেন না।আল্লাহর উপর আস্থা রাখুন।
লোকটা যেন শক্তি ফিরে পেলো।
_আল্লাহর উপর আস্থা রেখেই তো বেচে আছি।না হলে তো আমার বাচার কোনো কারনই অবশিষ্ট ছিলো না এতদিন।স্ত্রী ছেলেকে জন্ম দিতে যেয়ে মারা যায়।আর আমি সেখানে মরা বাচ্চা পাই।প্রথমে ভালোবাসা তারপর স্ত্রী সন্তান সব হারিয়ে আমি নিঃস হয়ে পড়েছিলাম।তবুও বেচে ছিলাম।

আমি এতো দিন জানতাম আমার ছেলেও মারা গিয়েছিলো।কিন্তু এই বুড়ো জ্বিন এর কথা মতো সেটা আমার ছেলে না।অন্য কারো মারা যাওয়া বাচ্চা।তাহলে আমার ছেলে কার কাছে?আমার ছেলে কোথায়?
নূরঃদেখলেন তো। আল্লাহ আপনাকে এতোদিন এমনি এমনি বাচিয়ে রাখে নাই।আপনি বেচে ছিলেন হয়তো আপনার ছেলের জন্য।আবার অন্য কোনো মহৎ কাজে জন্য হয়তো বেচে আছেন।
লোকটাঃতুমি একদম ওর মতো কথা বলো।
নূরঃও কে?
লোকটাঃআল্লাহর পর যদি কাউকে সেজদাহ করার নিয়ম থাকতো আমি তাকে করতাম।
নূরঃআপনার স্ত্রী?
লোকটা মলিন হাসলো।
লোকটা~কে তুমি?
নূর~নূর মেহরাব চৌধুরী।
 
মেহরাব নূরকে হারিয়ে চারপাশে খুজতে লাগলো।কিন্তু রাজপ্রাসাদটা পুরো গোলক বুলবুলাইয়ার মতো।সব পথ একই রকম।কোনটা শুরু কোনটা শেষ কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
মেহরাব এর সামনে কিছু অবয়ব হাজির হলো। 

অবয়ব~ওই মেয়েকে তো কিছু করতে পারলাম না কিন্তু এইটাকে আমরা ছাড়বো না।
_দেরি করিস না।কারো আসার আগে এটাকে ভক্ষন করতে হবে।ওই মেয়েকে না খেতে পেরে আমার খুদা বেড়ে গিয়েছে।

মেহরাব এর নীল চোখগুলো গাড় হতে শুরু করলো।যেই অবয়ব মেহরাব এর উপর হামলা করবে তখনই মেহরাব এর মাথার উপরে বড় একটা সাপ ফেনা তুলে দাড়ালো।সাপটা এক এক করে কিছু অবয়বকে ছোবল দিতে শুরু করলো।বেচে যাওয়া অবয়ব গুলো ছুটে পালালো।

অবয়ব গুলো যেতেই সাপটা একজন মেয়ের রুপ ধারন করলো।মেয়েটা অপরূপ সুন্দরি।একবারে পরীদের মতো।মেয়েটা সাপ থেকে মেয়ের রূপ ধারন করতেই মেহরাব চোখ নামিয়ে নিলো।আর একবার ও মেয়েটার দিকে তাকালো না।মাটির দিকে চোখ রেখেই মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলো ~
মেহরাবঃকে আপনি?

মেয়েটা মুগ্ধ হয় মেহরাব এর আচরনে।
_আমি তওফিকা। আপনার দেহরক্ষী পরি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

২৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন