উপন্যাস : তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
1111111111111111111111
১৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২০)
সকাল ৮ টার এলার্ম বাজতেই আরিয়ান এর ঘুম ভেঙে গেলো।চোখ খুলে আদ্রিতাকে বুকে দেখে ঠোঁট গুলো আপনা আপনি প্রসারিত হয়ে গেলো।আদ্রিতাকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলো।
আদ্রিতাঃউহুম।কি করছেন? ঘুমাতে দেন।
আরিয়ানঃচোখটা খুলেন মহারানী।৮ টা বাজে।অফিস যাবেন না?
আদ্রিতাঃইচ্ছে করছেনা।ঘুমাবো।
আরিয়ানঃবিয়ের পরের দিনই কাজে ফাকি দিচ্ছেন ?পরে বলবেন আমার দোষ!!
আদ্রিতা মিট মিট করে চোখ খুললো।আরিয়ান মুচকি হাসি দিয়ে আদ্রিতার দিকে তাকিয়ে আছে।আদ্রিতাঃGood Morning. ডাক্টার সাহেব।
আরিয়ানঃGood Morning মহারানী।
আদ্রিতাঃমহারানী?
আরিয়ানঃহুম।আমার রাজ্যের রানী।এখন উঠেন। বাসায় মা বাবার সাথেও কথা বলতে হবে।
আদ্রিতাঃহুম।
আদ্রিতা উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।আরিয়ান রেডি হবে এমন সময় তিথির চেচানোর শব্দ পেলো।চিল্লাচিল্লির শব্দে আদ্রিতাও ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
আদ্রিতাঃআরিয়ান।তিথির গলার আওয়াজ না?
আরিয়ানঃহ্যা।গায়ে ওড়না দিয়ে দিয়ে নেমো।আমি দেখছি।
আরিয়ান কথাটা বলে বেরিয়ে গেলো।
মেহরাবঃতুমি এসব কি বলছো তিথি?
নূরঃতুমি ভুল বুঝছো।আমাকে একটা বার বলার সুযোগ দাও।
তিথি আবারো গলার আওয়াজ বাড়িয়ে দিলো।
তিথিঃকি বুঝাবে?কি বোঝানো বাকি আছে তোমার?আমি নিজের চোখে দেখেছি। তুমি তা অস্বীকার করতে পারবে?
নূরঃআমি বলছি না তুমি ভুল দেখেছো।কিন্তু তুমি ভুল বুঝেছো।
আদ্রিয়ান চোখ কচলাতে কচলাতে নিচে নেমে আসলো।তিথির দিকে না তাকিয়ে নূরকে জিজ্ঞেস করলো।
আদ্রিয়ানঃকি হয়েছে ভাবি?সকাল সকাল এত শব্দ কেন?
আরাফ নবনিও সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসলো।
তিথিঃউনাকে কি জিজ্ঞেস করছিস?আমাকে জিজ্ঞেস কর।আমি বলছি তোকে।
আদ্রিয়ান তিথির দিকে ঘুরে দাড়ালো।
আদ্রিয়ানঃহ্যা। বল কি বলবি?
তিথিঃতুই ফজর এর সময় নূর আপুনির কোলে মাথা রেখে ঘুমাস নেই?
আদ্রিয়ান সোজাসাপ্টা উত্তর দিলো।
আদ্রিয়ানঃহ্যা।তো?
তিথিঃদেখলেন মেহরাব ভাইয়া?আপনার বউ কিভাবে আপনাকে ঠকাচ্ছে?
আরাফঃকি হচ্ছে এখানে?আমাকে বলবে তোমরা?
আদ্রিতাও সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো।
মেহরাবঃআমি অফিসের জন্য বের হবো এমন সময় তিথি আসে আমার কাছে।এসে বলে নূর আর আদ্রিয়ান এর নাকি ভালোবাসার সর্ম্পক চলছে।নূর আমাকে ঠকাচ্ছে।আমার অনুপস্থিতিতে আদ্রিয়ান এর কাছে গিয়েছিল।আদ্রিয়ান নূর এর কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে।আরো অনেক কিছু।
আমি এগুলো অবিশ্বাস করায় তিথি রেগে যায়।আর বাকি সব কিছু তোমাদের সামনে।
আদ্রিয়ান এর চোখ মূহুর্তেই লাল হয়ে গেল।আদ্রিয়ান রেগে সামনে থাকা কাচের টি টেবিলটায় এক ঘুষি মারলো।টি টেবিল ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।আদ্রিয়ান এর হাত এর বিভিন্ন জায়গায় কাচ ঢুকে গিয়েছে।আদ্রিতা এক টান দিয়ে আদ্রিয়ান এর হাত ওড়নার মাঝে বেধে নিলো।নূর দৌড়ে ফাস্ট এড বক্স নিয়ে আসলো।নবনি রেগে আদ্রিয়ানকে মারতে যাবে তখনই আরাফ হাত আটকে নিলো।
আরাফঃনবনি পাখি।এই ভুল কখনোই করবে না।আমার সন্তানদের গায়ে ফুলের টোকা ও দিবে না।
নবনি রেগে দূরে সরে আসলো।একবার ফিরে তাকালো পর্যন্ত না আদ্রিয়ান এর দিকে।নূর হাতে ব্যান্ডেজ করতে নিলে হাত কাপতে থাকে।আরিয়ান বক্সটা নিয়ে নেয় নূর এর কাছ থেকে।
আরিয়ানঃআমি করছি ভাবী।
নূর এর চোখে পানি টলটল করছে।তিথি সেখানেই জমে গিয়েছে।সবসময় হাসি মুখে থাকা আদ্রিয়ান এর যে এতো রাগ তা সে কখনো কল্পনাও করতে পারে নাই।
আদ্রিয়ান এখনো রক্তবর্ন ধারন করা চোখ গুলো দিয়ে তিথির দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।
আদ্রিয়ানঃএখন বলেন মিস তিথি!!আমার ভাবীর উপর এতো গুলো আরোপ লাগানোর সাহস কোথ থেকে পান আপনি?
মেহরাব ভাইয়া আপনাকে না নূর ভাবীকে ভালোবাসে সেই আক্রোশ মেটালেন নাকি?
তিথিঃতুই এগুলো কি বলছিস আদ্রিয়ান? তোর কি আমাকে এমন মনে হয়?
আদ্রিয়ানঃআমি তো তোকে সারাজীবনই ভুল বুঝে আসলাম।আমার মনে হওয়াটাতো আর ম্যাটারই করে না।
মেহরাবঃতিথি আমাকে ভালোবাসে মানে!!!
আদ্রিয়ানঃহ্যা।তিথি তোমাকে ভালোবাসে।
মেহরাবঃকিন্তু তুই তো
নূর মেহরাব এর হাত চেপে ধরে। মেহরাব আর কিছু বলতে পারে না।
আদ্রিয়ানঃআমার যদি নূর ভাবীর সাথে সর্ম্পক থাকেও তাতে তোর কি?
আমি ভাবীর কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলাম তাতে আমার ভাই আমাকে এসে দুইটা চড় মারতেই পারতো।উনার কাছে আমি জবাবদিহি হতেই পারতাম কিন্তু আমাকে আর আমার ভাবীকে প্রশ্ন করার তুই কে??
তিথি কেপে উঠলো আদ্রিয়ান এর রূঢ় কন্ঠ শুনে।ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
তিথিঃ আমার কি মানে!তুই জানিস না আমি তোকে কারো সাথে সহ্য করতে পারি না?
আদ্রিয়ানঃকেন পারবিনা?তুই তো মেহরাব ভাইয়াকে ভালোবাসিস।কই মেহরাব ভাইয়ার বিয়ে তো ঠিকই সহ্য করে নিলে।এই বাসায় আসার পরও কোনো ঝামেলা করলি না।রাতে মেহরাব ভাইয়া নূর ভাবির সাথে ছিল জেনেও তুই শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছিস।
কিন্তু আজ সকালে আমাকে নূর ভাবি সাথে কেন মেনে নিতে পারলি না?আমাকে নিয়ে এতো ইন্সিকিউর কেন?
তিথিঃজানি না আমি।মেহরাব ভাইয়াকে নূর আপুনির সাথে দেখে আমার খারাপ লেগেছে কিন্তু তোকে নূর ভাবির সাথে দেখে আমার কলিজা ছিড়ে গিয়েছে।আমি পারি না সহ্য করতে।
তিথি কাদতে লাগলো।
আদ্রিয়ানঃএকদম কাদবি না।তোর এই কান্না আমার একদম সহ্য হয় না।এখনই আবার শ্বাসকষ্ট উঠে যাবে।
তিথিঃআমি কাদলে তোর কি?আমি তো তোকে প্রশ্ন করার মতো কেউ না।
আদ্রিয়ানঃআব্বু।এটাকে আজকেই ওর মা বাবার কাছে গ্রামে পাঠাও।আমি আর এক মূহুর্ত ওকে সহ্য করতে পারবো না।
তিথিঃতোকে সহ্য করতে হবে।সারাজীবন করতে হবে। আমি কোথাও যাচ্ছি না তোকে ছেড়ে।
আদ্রিয়ানঃকেন যাবি না?কেন থাকবি আমার কাছে?বল। আছে কোনো উত্তর?
আদ্রিয়ান উলটো পথে হাটা ধরলো।
তিথিঃভালোবাসি আমি তোকে।গাধা।
আদ্রিয়ান এর পা যে জমিন আকড়ে ধরলো।আর এক পা ও আগাতে পারছে না। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।আদ্রিয়ান চোখ মুছে ঘুড়ে দাড়ালো।
আদ্রিয়ানঃকি বললি?
তিথিঃভালোবেসে ফেলেছি আমি তোকে রাম গাধা।তোর সাথে অন্য কাউকে মেনে নিতে পারবো না।কখনোই না।তার জন্য যদি সারাজীবন আমার তোকে পাহাড়া দিয়ে রাখতে হয় আমি তাই করবো।
আদ্রিয়ানঃকিন্তু আমি তোকে ভালোবাসি না।
নূরঃকি বলছো? আদ্রিয়ান?
আদ্রিয়ানঃঠিকই বলছি।ভাবী।আমি আর ওকে আমার জীবনে চাই না।আচ্ছা তুমি যদি আজকে সকালে আমার কাছে না আসতে তাহলে তো ও আমার লাশকে এখন ভালোবাসার কথা বলতো তাই না?
আদ্রিতাঃমুখ সামলে কথা বল। আদ্রি।মার খাবি আমার হাতে।
নূরঃআদ্রিয়ান কালকে রাতে ওভার স্লিপিং পিলস নিয়েছিলো।আজকে সকালে ওকে ঘুম থেকে না জাগালে ও ঘুমের মধ্যে স্টোক করতে পারতো।
কথাটা শুনে সবার পায়ের নিচের জমিন সরে গেলো।
নবনিঃকি বলছো?নূর।আমার ছেলে এই কাজ করেছে?
আরাফ রেগে তাকালো আদ্রিয়ান এর দিকে।
আরাফঃআমি তোর দ্বারা এটা আশা করি নাই। আদ্রিয়ান।
মেহরাব থাপ্পড় মারতে নিও হাত নামিয়ে নিলো।
নূরঃআপনার সবাই একটু শান্ত হোন।আদ্রিয়ান এর অবস্থা ভালো ছিলো না কালকে।আর আপনাদের ওর উপর রাগে একটা বার এটা ভাবা উচিত যে এতোগুলো মানুষ থাকতেও কেউ ওর কষ্টের টের পায় নাই কালকে।
কতটা কষ্টে থাকলে একটা মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় তা শুধু ওই ব্যাক্তিই বুঝে।আমরাতো পারি শুধু তাকে শাসন করতে কিন্তু একটা বার নিজের ব্যর্থতা গুলো টের পাই না।হ্যা।আমাদেরই ব্যর্থতা যে আমরা থাকতেও আমাদের আপনজন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।আমরা নিজেদের ব্যাক্তিগত জীবনে এতোটা ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে আমাদের মাঝখানে যে একজন মানসিক অসুস্থ ব্যাক্তি আছে তা নজরেই পড়ে না।
সকালে আমি আদ্রিয়ানকে বিধস্ত অবস্থায় পাই।ওর অবস্থা এমন ছিলো যে ও যে কোন সুযোগ পেলে নিজের ক্ষতি করে ফেলবে।তাই আমি ওকে মায়ের মতো সামলে নিয়েছিলাম।
আমার আর আদ্রিয়ান এর ভালোবাসার সম্পকতো আছে। আদ্রিয়ান আমাকে ভাবী মায়ের মতো ভালোবাসে।আর আমি ওকে আমার সন্তানের মতো।
একটা সন্তান যেমন কষ্ট পেলে মায়ের আচলে লুকিয়ে পড়ে ঠিক তেমনই আদ্রিয়ান আমার আচলের ছায়ায় একটুকরো শান্তি খুজে পেয়েছিলো।আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে ও।
তিথিঃকিন্তু কেন?কেন ও স্লিপিং পিলস নিলো?
আদ্রিয়ানঃহা হা হা।হা হা হা।
হাসালি রে তিথি।হাসালি আমাকে।
তিথি অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ান এর দিকে।
আদ্রিয়ানঃতুই আমাকে অন্য কোনো মেয়ের সাথে সহ্য করতে পারিস না।অথচ নিজে দিব্যি আমার বুকে মাথা রেখে আর একজনকে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে পারিস।
আমি আজকে তোকে না প্রশ্ন করে নূর ভাবীকে করায় তুই এই সামান্য অবহেলাটুকু মেনে নিতে পারলি না আর আমি দিনের পর দিন বছরের পর বছর তোর অবহেলা গুলো মুখ বুঝে সহ্য করে বেচে আছি।
ভাইয়ার সাথে তো তোর ২ থেকে ৩ মিনিট কথা হতো কিন্তু আমি তো তোকে প্রতিদিনই ফোন দিয়ে ২/৩ ঘন্টা কথা বলতাম।তবুও আমি তোর কাছে মূল্য কেন পাই না বলবি!!কেন"!!
এতোকিছু মেনে নিয়েও আমি নিজেকে ঠিক রেখেছিলাম কারন আমি মনে করতাম তুই হয়তো আজ বুঝবি হয়তো কাল বুঝবি।কিন্তু তুই কোনোকালেও বুঝলি না।
আর কালকে তো তুই আমার শেষ আশাটুকু ভেঙে চুরমার করে দিলি যখন বললি তুই মেহরাব ভাইকে ভালোবাসিস।নূর ভাবী না থাকলে আমি সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম না।
মেহরাব আদ্রিতা আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।
আদ্রিতাঃআই এম সরি।ভাই। আমরা তোর যত্ন নিতে পারি নাই।
মেহরাবঃআমাকে তো তুই সব সময় আগলে রেখেছিলি। যখন তোকে আমার প্রয়োজন হলো আমি তোর পাশে ছিলাম না।আমাকে ক্ষমা করে দিস ভাই।
নবনির চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো।
নবনিঃআমি মা হিসেবে ব্যর্থ হয়ে গেলাম আরাফ।
আরাফঃমোটেও না।একবার তাকাও তোমার ছেলে মেয়েদের দিকে।ওরা একজন আর এক জন এর ঢাল।বিদেশে থেকেও ওদের একে অপরের প্রতি এক বিন্দু পরিমান টান কমে নাই।
আর নূরকে তো তুমি নিজ হাতে গড়েছো।আজ দেখো ও ঠিক সবটা সামলে নিয়েছে।আজ আমি নূর এর মাঝে নবনিতাকে দেখতে পাচ্ছি।
নবনি মুচকি হাসলো।আরাফ নবনির চোখ এর পানি মুছে দিলো।
আরাফঃএদিকে আয় তোরা সব।তোদের মা কান্না করছে।
আদ্রিয়ান মেহরাব আদ্রিতা নবনির কাছে দৌড়ে আসলো।নবনি সন্তানদেরকে দুই হাতে মাঝে জড়িয়ে নিলো।
আরিয়ানঃনূর ভাবী। আমরা তো কেউ না।চলো আমরা চলে যাই।
আরাফঃনাটকবাজ জামাই আমার। এদিকে আয়।আরিয়ান আরাফকে জড়িয়ে ধরলো।
নূর দূর থেকেই সবকিছু দেখছে।
নবনিঃকি হলো আমার বাসার বউদের কি আলাদা দাওয়াত দিতে হবে?নূর তিথি আসো আমার কাছে।
আদ্রিয়ান উঠে দাড়ালো।
আদ্রিয়ানঃতোমার কি আরো ছেলে আছে নাকি?এটাকে কার বউ বানাচ্ছো?
নবনিঃকার আবার তোর।
আদ্রিয়ানঃআমি মরে গেলোও এই বোকা মেয়েকে বিয়ে করবো না।মাথায় কিচ্ছু নেই।আদ্রিয়ান চৌধুরীর মতো আর্মী অফিসার এমন বুদ্ধিহীন মেয়ে ডিজার্ভ করে না।
আদ্রিয়ান ধপ ধপ করে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলো।
সবাই উচ্চস্বরে হেসে দিলো।তিথি রেগে আগুন হয়ে গেলো।
তিথিঃআমি না হয় কম বুঝি।তাই বলে তোমার ছেলে বলতে পারতো না আমাকে?একবার ও তো বলে নাই ও আমাকে ভালোবাসে।এখন আবার এটিটিউড দেখাচ্ছে।
আদ্রিয়ান আবার ফিরে আসলো।
আদ্রিয়ানঃচৌধুরী বংশের ছেলেরা কখনো ভালোবাসি বলে না।শুধু বুঝায়।বুদ্ধিমান মেয়েরা বুঝে নেয়। যেমন নূর ভাবি আর আম্মু।আর বুদ্ধিহীন বালিকারা শুধু পারে চেচাতে আর রাগতে।রাগ ভাংগানোর বেলায় এরা একদম জিরো।
আদ্রিয়ান কথাটা বলেই শো করে বাতাসের বেগে চলে গেলো।
নবনিঃঠিকই বলেছে।আদ্রিয়ান। এরা বাপ মা ছেলেদের দ্বারা আই লাভ ইউ নামক ৩ টি শব্দ উচ্চারন করা খুব কঠিন।এতো দিন আমি জ্বলছি।জন্মের পর থেকে নূর জ্বলছে। এখন তুমিই জ্বলো।
নূর কথাটা বলে উপরে চলে গেলো।আরাফ রেগে পিছু নিয়েছে তাকে নাকি এসব কথা বলে অপমান করা হয়েছে।
তিথিঃআই এম সরি নূর আপুনি।
নূরঃধুর। তুইতো আমার কাছে আদ্রিয়ান এর মতোই। আমি তোর কথায় রাগ করি নাই।যে রাগ করেছে তার রাগ ভাংগা।
তিথিঃকিহ!!আমি যাবো না ওর সামনে।এই আদ্রিয়ানকেতো আমি চিনিই না।কত রাগী।
আদ্রিতাঃতোমরা খালি আমার বাপ ভাইয়ে রাগই দেখো ভালোবাসো না।তোমার সাথে রেগে থাকলে কি আর বলে যেতো রাগ ভাংগাতে।তুমি আসলেই খুব বোকা তিথি।
আরিয়ানঃহয়েছে হয়েছে।নিজে স্বামীর ভালোবাসা পাত্তা দেয় না।আবার ভাবীদের এডভাইস দেয়।
আদ্রিতাঃকি বললেন?
আরিয়ান রুমের দিকে ভৌ দৌড় দিলো।আদ্রিতাও পেছনে ছুটলো।
তিথিঃআমি আসছি।
নূরঃদাড়াও তিথি।
আদ্রিয়ান এর নাস্তা রান্না ঘরে রাখা আছে নিয়ে যাও।আর এই ওষুধগুলো খাওয়ায় দিও।
তিথি লজ্জা পেয়ে পালিয়ে গেলো।
সবাই যেতেই মেহরাব নূরকে জড়িয়ে ধরলো।
মেহরাবঃতো আসতেই এসব করে বেড়ান আপনি?হুম?
নূরঃছাড়েন তো।এটা আপনার বেডরুম না। লিভিং রুম।কাচ গুলো ও পরিষ্কার করতে হবে।কারো পায়ে বিধে যাবে।
মেহরাব নূরকে কোলে তুলে নিলো।
মেহরাবঃসবার পায়ে জুতা আছে।তোমার পায়ে নাই কেন?তোমার পায়েই তো সবার আগে বিধবে।সবার খেয়াল রাখতে রাখতে নিজেরটা ভুলে যাও কেন?
নূরঃআমার কাছে আল্লাহর মেহের আছে না?
মেহরাবঃতোমাকে আমার জন্য পাঠিয়েছে।আমাকে তোমার জন্য না।
নূরঃওই একই।
মেহরাব নূরকে রুমে নিয়ে নামিয়ে দিলো।
মেহরাবঃনাস্তা রুমে পাঠাচ্ছি।তোমার দেবর তো নিচে কাচ বিছিয়েই রেখেছে।কেউ আর নিচে নামবে না। আমি যাওয়ার সময় সার্ভেন্টকে বলে যাচ্ছি সবার রুমে খাবার পাঠিয়ে দিতে।আল্লাহ হাফেয।
মেহরাব নূর এর কপালে চুমু একে চলে গেলো।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
২১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন